ব্যক্তিরূপে ঈশ্বর নিজেকে তদীয় পুত্রে প্রকাশ করিয়াছেন । যীশু, পিতার “প্রতাপের প্রভা ও তত্ত্বের মুদ্রাঙ্ক” ( ইব্রীয় ১ : ৩), মানবাকারে পৃথিবীতে অবস্থান করিয়াছিলেন । মূর্তিমান ত্রাণকর্তারূপে তিনি পৃথিবীতে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন । দেহধারী ত্রাণকর্তারূপে তিনি উর্দ্ধে আরোহণ করিয়াছিলেন । ব্যক্তিরূপী ত্রাণকর্তারূপে তিনি স্বর্গীয় বিচারালয়ে আমাদের জন্য পিতার নিকটে অনুরোধ করিতেছেন । “মনুষ্যপুত্রের ন্যায় এক ব্যক্তি” (প্রকাশিত ১ : ১৩) । ঈশ্বরের সিংহাসনে সম্মুখে আমাদের পক্ষে সেবাকার্য্য করিতেছেন । CCh 253.4
মানবগণ যেন সম্পূর্ণ বিনষ্ট না হইয়া তাহাদের সৃষ্টিকর্ত্তার সহিত সুপরিচিত হইতে পারে, তজজন্য জগতের জ্যোতি খ্রীষ্ট, স্বীয় ঈশ্বরত্বের অত্যুজ্জ্বল দীপ্তি আবৃত রাখিয়া মানবের সহিত মানবরূপে বাস করিবার নিমিত্ত এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হইয়াছিলেন । খ্রীষ্টের মাধ্যমে প্রকাশিত হওন ভিন্ন, অন্য কোন উপায়ে কোন মানব কখনও ঈশ্বরকে দেখে নাই । CCh 254.1
মানব ঈশ্বর যাহা জানাইতে চাহেন, তাহা জানাইবার জন্য খ্রীষ্ট এই জগতে আসিয়াছিলেন । উর্দ্ধস্থ স্বর্গে, নীচস্থ পৃথিবীতে এবং পৃথিবীর নীচস্থ বিশাল জলাধিমালার মধ্যে আমরা ঈশ্বরের শিল্প-নৈপুণ্য দেখিতে পাই । সমুদয় সৃষ্টবস্ত, তাঁহার শক্তি, তাঁহার জ্ঞান ও তাঁহার প্রেমের বিষয় বর্ণনা করে । কিন্ত খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের ব্যক্তিত্ব যে ভাবে প্রকাশিত হইয়াছে, নক্ষত্রগণে, কিংবা সমুদ্রে, অথবা জলপ্রপাতে সে ভাবে প্রকাশিত হয় নাই । CCh 254.2
ঈশ্বর দেখিতে পাইলেন যে, তাঁহার ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র এই উভয়ই সম্যকরূপে চিত্রিত করিবার নিমিত্ত প্রকৃতি অপেক্ষাও স্পষ্টতর এক অভিব্যক্তির প্রয়োজন । তজজন্য অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রকৃতি ও গুণাবলী মানব দৃষ্টিতে যতটা সহনীয়, ততটা প্রকাশার্থে ঈশ্বর তদীয় পুত্রকে এই জগতে প্রেরণ করিয়াছিলেন । CCh 254.3
প্রাকৃতিক পদার্থের মধ্যে— পুষ্পে, বৃক্ষে, তৃণশিখায় ঈশ্বর ব্যক্তিরূপে বিরাজিত, ইহা প্রতিরূপে প্রদর্শন করা যদি ঈশ্বরের অভিপ্রেত হইত— তাহা হইলে খ্রীষ্ট যখন এই জগতে অবস্থিতি করিতেছিলেন, তখন কি তিনি তাহা তাঁহার শিষ্যদিগকে জানাইতেন না ? কিন্ত খ্রীষ্টের শিক্ষায় ঈশ্বর সম্বন্ধে কখনও এইরূপ ব্যক্ত হয় নাই । ব্যাক্তিরুপী ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে খ্রীষ্ট ও তাঁহার প্রেরিতগণ সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করিয়াছেন । CCh 254.4
পাপী মানব বিনষ্ট না হইয়া যাহা সহ্য করিতে পারিত, খ্রীষ্ট, ঈশ্বর সম্বন্ধে তাহার সমস্তই প্রকাশ করিয়াছিলেন । তিনি ঐশ্বরিক গুরু, তিনি জ্ঞান দাতা । ঈশ্বরলিখিত বাক্য ভিন্ন ও খ্রীষ্টের মাধ্যমে ভিন্ন অন্য কোন উপায়ে প্রত্যাদেশ দান করা ঈশ্বর যদি আমাদের পক্ষে আবশ্যক মনে করিতেন, তবে তিনি তাহাই করিতেন । CCh 255.1