খ্রীষ্ট ঘোষণা করিয়াছিলেন যে, ঐশ্বরিক আত্মার প্রভাব শেষ পর্যন্ত তাঁহার অনুগামীগণের সহিত বিদ্যমান থাকিবে । কিন্তু যে ভাবে এই প্রতিজ্ঞার মূল্যাবধারণ করা উচিত ছিল, সে ভাবে করা হয় না ; এই জন্য ইহার পূর্ণতা যে ভাবে দেখা যাইতে পারিত, সে ভাবে দেখা যাইতেছে না । পবিত্র আত্মা দানের প্রতিজ্ঞা এমন একটী বিষয়, যাহার সম্বন্ধে অতি অল্পই চিন্তা করা হয় ; আর ইহার ফল কেবল হইতে পারে,—আধ্যাত্মিক শুষ্কতা, আধ্যাত্মিক অন্ধকার, আধ্যাত্মিক অবনতি ও মৃত্যু । নগণ্য বিষয় সমূহে মনোনিবেশ দেখা যাইতেছে এবং ঐশ্বরিক শক্তি—যাহা মণ্ডলীর শ্রীবৃদ্ধির ও উন্নতির জন্য আবশ্যক এবং যাহা ইহার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য আশির্ব্বদ সমূহ আনয়ন করিবে —তাহা অশেষ প্রচুররুপে দান করিবার অঙ্গীকার থাকিলেও তাহার অভাব দেখা যাইতেছে । CCh 301.2
সুসমাচার প্রচার কার্য্য এত শক্তিহীন হইবার মুখ্য কারণ,—পবিত্র আত্মার অভাব । বিদ্যা, ধীশক্তি, বাগ্মিতা ও প্রত্যেক প্রকারের স্বাভাবিক কিংবা অর্জিজত প্রতিভা থাকিতে পারে ; কিন্তু ঈশ্বরের আত্মার উপস্থিতি না থাকিলে, কোন হৃদয় স্পর্শ হইবে না, কোন পাপীর মন পরিবর্ত্তিত হইবে না । অন্য পক্ষে, তাহারা যদি খ্রীস্টের সহিত সম্মিলিত থাকে, তাহারা যদি পবিত্র আত্মার দান প্রাপ্ত হয়, তাহা হইলে তাঁহার সর্ব্বাপেক্ষা দীন ও সর্ব্বাপেক্ষা অশিক্ষিত শিষ্যগণও এমন এক শক্তি পরিহিত হইবে, যদ্দারা হৃদয়ের পরিবর্ত্তন সাধিত হইবে । বিশ্বমণ্ডলে সর্ব্বাপেক্ষা শক্তিশালী প্রভাব বিস্তারের নিমিত্ত ঈশ্বর তাহাদিগকে প্রণালী সদৃশ করিবেন । CCh 302.1
সত্য সম্বন্ধে মহাপরাক্রমে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত শিষ্যগণ উদ্যোগে উদ্দীপিত হইয়াছিলেন । মুক্তি-প্রেমের কাহিনী, খ্রীস্টের জীবন-চরিত, ও তাঁহার ক্রুশের উপাখ্যান অন্যকে জানাইবার দৃঢ়সঙ্কল্পে আমাদের হৃদয় কি উদ্দীপিত হওয়া কর্ত্তব্য নহে ? অবিরত ব্যাকুল প্রার্থনার উত্তরস্বরূপ আজও কি ঈশ্বরের আত্মা আসিবেন না, এবং সুসমাচার প্রচার কর্য্যের জন্য মানবকে তাঁহার শক্তিতে পুর্ণ করিবেন না ? তাহা হইলে, মণ্ডলী এত দুর্বল ও পবিত্র আত্মাহীন কেন ? 48T 21, 22 ; CCh 302.2
আমাদের মণ্ডলী সমূহের মধ্যে বর্ত্তমানে যেরূপ অবস্থা দেখা যায়, মণ্ডলীর সভ্যগণের মন পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত হইলে বাক্যে, সেবাকার্য্যে ও আধ্যাত্মিকতায় তদপেক্ষা অধিকতর উন্নত এক আদর্শ দেখা যাইবে । মণ্ডলীর সভ্যগণ জীবন-জলে সতেজ হইবে, শ্রমিকগণ এক নেতৃত্বে, এমন কি খ্রীস্টের নেতৃত্বে কার্য্য করিয়া তাহাদের গুরুকে আত্মায়, বাক্যে, ও কার্য্যে প্রকাশ করিবে এবং যে মহৎ ও অন্তিম কার্য্যে আমরা নিযুক্ত, তাহা পরিসমাপ্তির জন্য একজন অন্যকে উৎসাহিত করিবে । একতা ও প্রেম সুষ্ঠু ভাবে বৃদ্ধি পাইতে থাকিবে, যদ্দ্বারা জগতের লোকেরা জানিতে পারিবে যে, পাপীর মুক্তির জন্য ঈশ্বর তাঁহার পুত্রকে মৃত্যুভোগ করিতে এই জগতে প্রেরণ করিয়াছিলেন । ঐশ্বরিক সত্য গৌরবান্বিত হইবে, আর ইহা জ্বলন্ত প্রদীপের ন্যায় দীপ্তি দিতে থাকিবে বলিয়া আমরা ইহা অধিকতর স্পষ্ট রূপে বুঝিতে পারিব ।58T 211 ; CCh 302.3
আমাকে দেখান হইয়াছিল যে, ঈশ্বরের লোকেরা নিজেরা যদি কোন চেষ্টা না করে, কিন্তু পবিত্র আত্মা তাহাদের মধ্যে আসিয়া তাহাদের অপরাধ দূর করিয়া দিবেন ও তাহাদের ভুল সংশোধন করিবেন,—তাহারা যদি এই অপেক্ষায় বসিয়া থাকে ; পবিত্র আত্মা তাহাদিগকে মাংসের ও আত্মার মালিন্য হইতে শুচি করিবেন এবং তৃতীয় দূতের উচ্চরবে নিয়োজিত হইবার যোগ্য করিবেন,—তাহারা যদি কেবল ইহারই উপরে নির্ভর করে, তবে তাহারা লঘুরূপে নির্ণীত হইবে । ঈশ্বর যাহা করিতে আদেশ দিয়াছেন, তাহা করিয়া, যথা— মাংসের ও আত্মার মালিন্য হইতে নিজেদিগকে শুচি করিয়া এবং ঈশ্বর-ভয়ে পবিত্রতা সিদ্ধ করিয়া যাহারা নিজেদিগকে পবিত্র আত্মার জন্য প্রস্তুত করিয়াছে, তাপশান্তি বা ঈশ্বরের শক্তি কেবল তাহাদেরই উপরে আসিবে ।61T 619. CCh 303.1