কেবল বিরক্তিকর খাটুনির মধ্যে ডুবাইয়া না রাখিয়া স্ত্রী ও মাতাকে অধ্যয়নে সময় ক্ষেপণ করিতে, সকল বিষয় ভালরুপে জানিতে, স্বামীর সঙ্গিনীর হইতে এবং তাহার সন্তানসন্ততিগনের মনের বিকাশার্ধে তাহাদের সংস্পর্শে আসিতে দেওয়া উচিত । উন্নততর জীবন যাপনের নিমিত্ত তাহার প্রিয় সন্তানগণকে প্রভাবান্বিত করনার্থে এক্ষনে তাহার যে সুযোগ আছে, সেই সুযোগ জ্ঞানপূর্ব্বক ব্যবহার করিতে দেওয়া কর্ত্তব্য প্রিয়তম ত্রানকর্ত্তাকে প্রতিদিনের সঙ্গী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু করনার্থে স্ত্রী বা মাতাকে সময় ক্ষেপন করিতে দেওয়া উচিত । ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়নের জন্য এবং সন্তানসন্ততিগণের সহিত ক্ষেত্রে যাইয়া ঈশ্বরের সৃষ্টিকার্য্যের সৌন্দর্যের মধ্য দিয়া ঈশ্বরের বিষয় শিক্ষা লাভের নিমিত্ত স্ত্রী বা মাতাকে সময় আতিবাহিত করিতে দেওয়া বিধেয় । CCh 374.1
স্ত্রী বা মাতা সর্ব্বদা প্রফুল্লিত ও উল্লাসিত থাকুক । যে সেলাই কার্য্যের কোন অন্ত নাই । প্রতিটী মুহুর্ত্ত তাহাতে ক্ষেপন না করিয়া দিনের কর্ত্তব্য কার্য্যগুলি সমাপানান্তে মধুর পারিবারিক মিলনে মিলিত হইয়া সন্ধ্যাবেলাটী আমোদ-আহ্লাদে যাপন করা কর্ত্তব্য । এইরূপ করিলে বহু বয়স্ক ব্যক্তি আড্ডা-ঘরে, কিংবা নাচ-ঘরে না যাইয়া নিজে গৃহে আপন পরিজনগনের সহিত আমোদ-আহ্লাদে সময় অতিবাহিত করিতে পছন্দ করিবে । বহু বালক রাস্তায় রাস্তায় খুরিয়ে না বেড়াইয়া, কিংবা মোড়ের মুদিখানায় দাঁড়াইয়া না থাকিয়া গৃহের আনন্দ উপভোগ করিবে । বহু বালিকা হীন ও কুপথগামীদের সঙ্গ হইতে রক্ষা পাইবে । ঈশ্বর যেরূপ নিরূপণ করিয়াছিলেন, মাতাপিতা ও সন্তানসন্ততিগণের পক্ষে গৃহের প্রভাব তেমনে সার জীবনের জন্য একটী আশির্ব্বাদ স্বরূপ হইবে । CCh 374.2
প্রায়ই এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়, - ” স্ত্রীর কি নিজের কোন ইচ্ছা নাই?” বাইবেলে সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত আছে যে, স্বামী পরিবারের মস্তক । অতএব, ” নারিগন, তোমরা... নিজ নিজ স্বামীর বশীভূতা হও ।” এই উপদেশটী যদি কেবল এই কথাগুলি দ্বারাই সমাপ্ত হইত, তাহা হইলে হয়তো বলিতে পারিতাম যে, স্ত্রীর অবস্থা আদৌ বাঞ্ছনীয় নহে ; কিন্তু ঐ একই উপদেশে ইহাও উক্ত আছে যে, “যেমন প্রভুর, তেমনি ।” আমাদের ঈশ্বরের আত্মার একান্ত প্রয়োজন, নতুবা আমরা গৃহে কস্মিনকালেও ঐক্য বসবাস করিতা পারে না । স্ত্রীর মধ্যে যদি খ্রীষ্টের আত্মা বাস করেন, তবে তিনি তাহার কথাবার্ত্তায় সতর্ক থাকিবেন, তাহার মেজাজ বশে রাখিবেন এবং তিনি স্বামীর বশীভূতা থাকিবেন, তথাপি তিনি কখনও মনে করিবেন না যে, তিনি স্বামীর ক্রীতদাসী, কিন্তু তিনি নিজেকে স্বামীর সঙ্গিনী বলিয়া মনে করিবেন । স্বামী যদি ঈশ্বরের দাস হন, তবে তিনি স্ত্রীর উপরে প্রভুত্ব করিনে না ; এবং স্বেচ্ছাচারী কিংবা উৎপীড়ক হইবেন না । অত্যধিক উদ্বেগের দ্বারা গ্রহ-প্রীতি রক্ষা করা যায় না, কারন গৃহে যদি সদাপ্রভুর আত্মা বিরাজ করেন, তবে তাহা স্বর্গের প্রতিরুপ হইয়া উঠে । একজনে ভুল করিলে অন্যে খ্রীষ্টের ন্যায় সহিষ্ণুতা দেখাইবে এবং উদাসীন ভাবে দূরে সরিয়া যাইবে না । CCh 374.3