খ্রীষ্টের প্রতি প্রেমের নিদর্শন স্বরূপ দরিদ্রেরা যে দান করিয়া থাকে, ধর্ম্মধামের তৌলযন্ত্রে তাহার পরিমাণ অনুযায়ী মুল্য নিরূপণ করা হয় না, কিন্তু যে প্রেমে প্রোণোদিত হইয়া দান করা হয়, তাহারই মূল্যাবধারণ করা হয়। ধনবানেরা প্রচুর দান করিয়া যেমন যীশুর প্রতিজ্ঞার ফল প্রাপ্ত হইবে, দানার্থ যাহাদের খুব অল্পই আছে, কিন্তু সেই অল্পই যাহারা স্বেচ্ছাপূর্ব্বক দান করিবে, সেই দানশীল দরিদ্র লোকেরাও যীশুর প্রতিজ্ঞার ফল প্রাপ্ত হইবে। দরিদ্রলোক তাহার অল্প যাহা আছে, তাহাই ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গ করিয়া বাস্তবিকই হৃদয়ে কষ্ট অনুভব করে। তাহার নিজের আরামের জন্য প্রকৃতই যাহা দরকার, এমন কোন বিষয়বস্তু হইতে নিজেকে বঞ্চিত করে; কিন্তু ধনবান প্রাচুর্য্যের মধ্য হইতে দান করে বলিয়া, তাহার কোনই অভাব বোধ করিতে হয় না; প্রকৃত যাহা প্রয়োজন, তাহার কিছুই হইতে তাহার বঞ্চিত হইতে হয় না। এই জন্য দরিদ্রলোকেরা উপহারে এমন একটা পবিত্রতা আছে, যাহা ধনবানের দানে দেখিতে পাওয়া যায় না, কারণ ধনবান আপন প্রাচুর্য্য হইতে দান করে। মানবের মঙ্গলার্থেই ঈশ্বর স্বীয় পরিণামদর্শিতার অন্ত নাই। ঈশ্বরের দাসগণ তাঁহার আরম্ভের বিধান পালন করিলে সকলেই এক একটী উদ্যোগী কার্য্যকারী হইতে পারিবে।153T 398, 399; CCh 151.1
ছোট ছোট বালক বালিকাদের উপহার ঈশ্বরের দৃষ্টিতে প্রীতিজনক ও গ্রাহ্য হইতে পারে। যেরূপ আত্মায় অনুপ্রানিত হইয়া দান করা হইবে, দানের মুল্য সেইরূপ ভাবে নির্ণীত হইবে। দরিদ্রগণ প্রেরিত পৌলের নিয়মানু্যায়ী প্রতি সপ্তাহে অল্প কিছু কিছু রাখিয়া ধনভান্ডারের বৃদ্ধি কল্পে সাহায্য করিতে পারে, আর এই দান ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ রূপে গ্রায্য হয়, কারণ তাহাদের ধনবান ভাতৃগণ যত বড় ত্যাগ স্বীকার করে, ইহারা ঠিক্ তত বড়, এমন কি তাহাদের অপেক্ষা অধিকতর বড় ত্যাগ স্বীকার করে। ধারাবাহিক দানের পরিকল্পনা প্রত্যেকটী পরিবারকে অনাবশ্যক দ্রব্যের জন্য অর্থব্যয়ের প্রলোভন হইতে রক্ষা করিবে ; এবং ধনবানগণকে অমিতব্যয়িতা হইতে রক্ষা করিয়া তাহাদের পক্ষে আর্শীর্ব্বাদস্বরূপ হইবে।163T 412; CCh 151.2
সর্ব্বান্তঃকরণে দান করিলে, তাঁহার ফলস্বরূপ মন ও হৃদয় আত্মার সহিত ঘনিষ্ঠতার সহযোগিতা রক্ষার্থে পরিচালিত হয়।176T 390; CCh 152.1
ঈশ্বরের কার্য্যার্থে দান করিবার নিমিত্ত প্রেরিত পৌল এক নিয়ম স্থির করিয়াছেন, এবং উহা পালনে আমাদের নিজেদের ও ঈশ্বরের কি ফল হইবে তাহাও বলিয়া দিয়াছেন। তিনি বলেন, “প্রত্যেক ব্যক্তি আপন আপন হৃদয়ে যেরূপ সঙ্কল্প করিয়াছে, তদনুসারে দান করুক, মনোদুঃখ- পূর্ব্বক, কিংবা আবশ্যক বলিয়া না দিউক; কেননা ঈশ্বর হ্রষ্টচিত্ত দাতাকে ভালবাসেন।” “আমি বলি এই, যে অল্প পরিমাণে বীজ বুনে, সে অল্প পরিমানে আশীর্ব্বাদের সহিত শস্যও কাটিবে।” “আর ঈশ্বর তোমাদিগকে সর্ব্বপ্রকার অনুগ্রহের উপচয় দিতে সমর্থ ; যেন সর্ব্ববিষয়ে সর্ব্বদা সর্ব্বপ্রকার প্রাচুর্য্য থাকায় তোমরা সর্ব্বপ্রকার সৎকর্ম্মের নিমিত্ত উপচিয়া পড়।” (.........আর যিনি বপনকারীকে বীজ ও আহারের জন্য খাদ্য যোগাইয়া থাকেন, তিনি তোমাদের বপনের বীজ যোগাইবেন এবং প্রচুর করিবেন, আর তোমাদের ধার্ম্মিকতার ফল বৃদ্ধি করিবেন;) এইরূপে তোমরা সর্ব্বপ্রকার দানশীলতার নিমিত্তে সর্ব্ব বিষয়ে ধনবান হইবে, আর এই দানশীলতা আমাদের দ্বারা ঈশ্বরের প্রতি ধন্যবাদ সম্পন্ন করে।” ২ করিন্থীয় ৯ ঃ ৬-১১।185T 735; CCh 152.2