Go to full page →

২১ - শারীরবৃত্তি সম্পর্কে আলােচনা EdBen 182

“আমি ভয়াবহ ও আশ্চর্যজলে র্নিমিত।”

মন ও আত্মা যখন দেহের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হবার পথ খুঁজে পায়, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক শক্তি তখন ব্যাপকভাবে দৈহিক শক্তি এবং কাজের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে; দৈহিক স্বাস্থ্য যা কিছুর উন্নতি বাড়িয়ে তােলে, তা একটি বলিষ্ঠ মন এবং সুষম চরিত্র গঠনে সাহায্য করে। সুস্বাস্থ্য বিহীন কেউই নিজেকে তার সহমানব এবং তার স্রষ্টাকে সূক্ষ্মভাবে বুঝতে পারে না, এবং তার কাজও সুসম্পন্ন করতে পারে না। সুতরাং যেমন চরিত্রের প্রতি তেমনিভাবে স্বাস্থ্যের প্রতিও সুনজর দিতে হবে। শারীরবৃত্তি এবং স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত জ্ঞান হবে সকল শিক্ষা প্রচেষ্টার মূল। EdBen 182.1

যদিও শারীরবৃত্তি সম্পর্কে এখন মােটামুটি সবাই কিছু না কিছু জ্ঞান অর্জন করেছেন, তবুও স্বাস্থ্যনীতি সম্পর্কে ভীতিকর একটি উদাসীনতা দেখা যায়। এমন কি যাদের এ সব নীতি সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে, তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক লােকই এর অনুশীলন করে থাকেন। মানুষ যেন ঝোকের ওপরে অন্ধের ন্যায় চলছে, সঠিক নিয়ম অনুসারে না চলে বরং সুযােগের বশীভূত হয়ে চলছে। EdBen 182.2

যুবক-যুবতিরা, জীবনের প্রভাতে তাদের উচ্ছলিত শক্তির মূল্য সম্পর্কে খুব অল্পই উপলব্ধি করে থাকে। একটি সম্পদ যার দাম সােনার চেয়ে বেশি, যা উঁচু পদমর্যাদা অথবা ধনসম্পদের চেয়েও আবশ্যকীয় তা কত সামান্য জ্ঞানেই না ধারণ করা হচ্ছে! কত বেপরােয়া ভাবে অপব্যয় করা হচ্ছে! ধন-সম্পদ ও ক্ষমতার লােভে কত লােকই না সংগ্রাম করে স্বাস্থ্য হারাচ্ছে; তার কাঙ্ক্ষিত বস্তুর লক্ষ্যে প্রায় পৌছেও, কেবল অসহায় হয়ে পড়ে রয়েছে, অন্যদিকে অন্য ব্যক্তি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে দীর্ঘাকাক্ষিত পুরস্কার লাভ করেছে। কেবল ইহজগৎ এবং পরজগতের প্রত্যাশা বিসর্জন দেবার জন্য রােগাক্রান্ত অবস্থায় স্বাস্থ্য নীতির প্রতি অবহেলার পরিণামের মধ্য দিয়ে কত লােকেই না মন্দ অভ্যাস চর্চায় লিপ্ত হয়েছে! EdBen 182.3

শারীরবৃত্তি অধ্যয়নের ছাত্র-ছাত্রীরা দৈহিক শক্তি এবং এর সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের প্রতি দৃষ্টি দেবে যেন জীবনের মহা সংগ্রামে বিশেষ কৃতকার্যতা অর্জন করতে পারে। EdBen 183.1

ছােট বেলা থেকেই শিশুদের সহজ ও সরল ভাষায় শারীরবৃত্তি এবং স্বাস্থ্যের মূল-নীতি শিক্ষা দিতে হবে। ঘরে মা-ই এই কাজের সূচনা করবেন এবং তা বিশ্বস্তভাবে বিদ্যালয়ে পরিচালিত করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের বয়স বাড়বে, এবং এ ক্ষেত্রে তাদের এমনভাবে শিক্ষা দিতে হবে যেন তারা যে ঘরে বসবাস করে, সেখানে তারা এর অনুশীলন করতে পারে। তাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শক্তি সংরক্ষণের দ্বারা অসুখ-বিসুখের বিরুদ্ধে সচেতনতার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে শিক্ষা দিতে হবে, এবং যতদূর সম্ভব, শরীরের গঠন প্রণালী, কাঠামাে, এ সবের ব্যবহার এবং যত্ন নেয়া সম্পর্কেও শিক্ষা দিতে হবে। EdBen 183.2

এমন অনেকগুলাে বিষয় রয়েছে যা স্বভাবত শারীরবৃত্তি আলােচনার অন্তর্ভুক্ত নয়, যা বিবেচনা সাপেক্ষ, যা সাধারণত এই বিষয়টির মধ্যে যে সব প্রয়ােগ বিদ্যা শিক্ষা দেয়া হয়, তার চেয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনেক মূল্যবান। এসব ক্ষেত্রে শিক্ষার নীতিমালার ভীতি-স্বরূপ, যুবকযুবতীদেরকে শিক্ষা দিতে হবে যে, প্রকৃতির নিয়মই ঈশ্বরের নিয়ম—দশ আজ্ঞার মত এটি সত্য। যে নিয়ম বা ব্যবস্থা আমাদের দৈহিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখে, ঈশ্বর সে সকল প্রতিটি শিরা-উপশিরা, মাংসপেশী দেহের তন্তুর ওপরে লিখেছেন। অবহেলা অথবা অসতর্কতাবশত এ সব নিয়ম-কানুন অমান্য করা আমাদের সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে একটি পাপ। EdBen 183.3

তাহলে এ সব নিয়ম বিশদভাবে সবাইকে জানানাে কতই গুরুত্বপূর্ণ! খাদ্য, ব্যায়াম, শিশুদের যত্ন, অসুস্থদের সেবা যত্ন, এবং এ ধরণের অনেক ব্যাপারে স্বাস্থ্য-নীতির প্রয়ােগ অত্যন্ত অপরিহার্য। EdBen 183.4

দেহের উপরে মনের প্রভাব, এবং মনের ওপর শরীরের প্রভাব—এ সবের ওপরে গুরুত্ব দিতে হবে। মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক শক্তি, যা মানসিক ক্রিয়া থেকে আসে তা সমগ্র অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে শক্তিশালী করে, এবং এভাবে তা রােগ প্রতিরােধের মূল্যাতীত সহায়ক, এবং এ বিষয়ে সবাইকে ভালােভাবে দেখিয়ে ও বুঝিয়ে দিতে হবে। ইচ্ছাশক্তি ও আত্ম নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব, উভয়ই স্বাস্থ্য সংরক্ষণ এবং সুস্থতার ক্ষেত্রে কাজ করে, একদিকে বিষন্নতা এবং এমন কি ক্রোধের ধ্বংসাত্মক পরিণতি, অসুখী মনােভাব, স্বার্থপরতা অথবা অপবিত্রতা এবং অন্য দিকে উৎফুল্লতা, নিঃস্বার্থপরতা, কৃতজ্ঞতা ইত্যাদি যার মধ্যে আশ্চর্য জীবনদায়ী শক্তি পাওয়া যায়। EdBen 183.5

একটি শারীরবৃত্তিক সত্য রয়েছে যা আমাদের বিবেচনা সাপেক্ষশাস্ত্র অনুসারে, “সানন্দ হৃদয় স্বাস্থ্যজনক।” হিতােপদেশ ১৭:২২ । EdBen 184.1

ঈশ্বর বলেন, “তােমার চিত্ত আমার আজ্ঞাসকল পালন করুক “কারণ তদ্বারা তুমি আয়ুর দীর্ঘতা, জীবনের বৎসর বাহুল্য, এবং শান্তি প্রাপ্ত হইবে।” “কেননা যাহারা তাহা পায়, তাহাদের পক্ষে তাহা জীবন, তাহা তাহাদের সর্বাঙ্গের স্বাস্থ্যস্বরূপ।” শাস্ত্র বলে, “মনােহর বাক্য” কেবল “প্রাণের পক্ষে মধুর” নয়, কিন্তু উহা “অস্থির পক্ষে স্বাস্থ্যকর।” হিতােপদেশ ৩:১, ২; ৪:২২; ১৬:২৪। EdBen 184.2

বাইবেলের সুগভীর সত্যটি যুবক-যুবতিদের বুঝতে হবে যে, ঈশ্বরের কাছে জীবনের উনুই আছে।” গীতসংহিতা ৩৬:৯। তিনি কেবল সবার জীবনের উদ্ভাবক নন, কিন্তু যা কিছু বেঁচে আছে তার সব কিছুর জীবনও তিনি। তা তাঁরই জীবন যা আমরা সূর্যরশ্মি, বিশুদ্ধ মধুর সমীরণ, আমাদের দেহ গঠনকারী, এবং শক্তিদানকারী খাদ্য থেকে পেয়ে থাকি। আমরা তাঁর জীবন দ্বারাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা এবং প্রতি মুহূর্তে বেঁচে থাকি। পাপের কারণে বিকৃত না হলে, তার সব দানই জীবনদায়ী, স্বাস্থ্য সম্মত এবং আনন্দ দায়ক। EdBen 184.3

“তিনি সকলই যথাকালে মনােহর করিয়াছেন” (উপদেশক ৩:১১); এবং প্রকৃত সৌন্দর্য পুনরায় লাভ হবে, ঈশ্বরের কাজ নষ্ট করে নয়, কিন্তু তার ব্যবস্থামালার সঙ্গে ঐক্য রক্ষা করেই তা লাভ হবে, যিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, এবং যিনি সৌন্দর্য এবং বিশুদ্ধতায় আমােদিত হন। EdBen 184.4

দেহের কাজ ও গঠন সম্পর্কে আলােচনায় দেহের মাধ্যম সমূহের আশ্চর্য অভিযােজনের প্রতি, সমন্বয়পূর্ণ কাজে, এবং বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নির্ভরশীলতার প্রতি মনােযােগ দিতে হবে। এভাবে যখন ছাত্রে-ছাত্রীর আগ্রহ বাড়বে এবং সে শরীর চর্চার গুরুত্ব বুঝতে পারবে, তখন শিক্ষকের। দ্বারা, সঠিক অভ্যাস গঠনে আরও কিছু করা সম্ভব হবে। EdBen 184.5

সবার প্রথমে লক্ষ্য হবে সঠিকভাবে বসা এবং দাঁড়ানাে। ঈশ্বর মানুষকে সম্পূর্ণ ঋজু করে সৃষ্টি করেছেন, এবং তিনি আশা করেন যেন সে কেবল দৈহিক নয়, কিন্তু মানসিক এবং নৈতিক সুযােগ সুবিধার সৌন্দর্য এবং মর্যাদা এবং প্রশান্তি সৎ সাহস এবং আত্ম-নির্ভর শিক্ষার অধিকারী হয়। শিক্ষক আদর্শ এবং দৃষ্টান্ত স্থাপনের মাধ্যমে এই বিষয়ে শিক্ষা দেবেন। কিভাবে সােজা হয়ে বসতে, উঠতে এবং হাঁটতে হয়, তা তিনি দেখিয়ে দেবেন; ছাত্র-ছাত্রীদের বলে দেবেন, যেন তারা এই অভ্যাস ধরে রাখে । EdBen 185.1

পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং গলার স্বরের ব্যবহার। যে ব্যক্তি সােজা হয়ে বসবে এবং দাঁড়াবে, স্বভাবত, সে সঠিকভাবে নিঃশ্বাস নিবে এবং ছাড়বে। কিন্তু শিক্ষক তার ছাত্র-ছাত্রীদের গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের গুরুত্বের ওপর জোর দেবেন। শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র, রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে, দেহের গােটা যন্ত্রগুলােকে শক্তিমন্ত করে, ক্ষুধা বাড়ায়, হজম শক্তি বাড়ায়, এভাবে কেবল শরীরকে সতেজ রাখে না, কিন্তু মনকেও সুঠাম এবং প্রশান্ত রাখে। আর যখন গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের গুরুত্ব দেখানাে হয়েছে তখন তার চর্চাও করতে হবে। ব্যয়ামে উৎসাহ দিতে হবে; এবং লক্ষ রাখতে হবে যেন এটি অভ্যাসে পরিণত হয়। EdBen 185.2

শরীর চর্চার মধ্যে স্বরের প্রশিক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে, কারণ এটি ফুসফুসকে প্রসারিত ও শক্তিশালী করে, এবং এতে অনেক রােগ-ব্যাধিও দূরে রাখে। সঠিক গঠন এবং কথা বলার ভঙ্গি নিশ্চিৎ করণে লক্ষ রাখতে হবে, পেটের মাংসপেশী যেন পূর্ণ ভাবে উঠা নামা করে, এবং যেন শ্বাস-প্রশ্বাসে কোন বাধা সৃষ্টি না হয়। গলায় চাপ সৃষ্টি হওয়ার চেয়ে পেটের মাংশপেশীতে টান পড়ক তাও ভালাে। ভীষণ ক্লান্তি এবং গলা, জিহ্বা, এবং ফুসফুসের মারাত্মক সব রােগ এ ভাবে প্রতিরােধ করা যায়। পরিষ্কার উচ্চারণ, কোমল স্বর, এবং দ্রুত কথা-বার্তা, এ সবের দিকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এটি কেবল স্বাস্থ্য লাভে সহায়ক নয়, কিন্তু ছাত্রের কাজ-কর্মে মনােযােগ এবং দক্ষতা বাড়িয়ে দেবে। EdBen 185.3

এ সব বিষয়ে শিক্ষা দেয়ার সময় আঁটোসাটো ভাবে জুতাের ফিতা। বাঁধার বােকামি এবং অন্যান্য সব অভ্যাস দেখিয়ে দেবার সুবর্ণ সুযােগ রয়েছে যা জীবনের অত্যাবশ্যক কাজে বাধা সৃষ্টি করে। অস্বাস্থ্যকর উপায়ে। পােশাক-আশাক পরিধানও অনেক রােগের কারণ, এবং এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন শিক্ষা দিতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের, তাদের উরুদেশ এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের উপর, পােশাক পরিধান ভারী চাপ সৃষ্টির মারাত্মক বিপদ সম্পর্কে সাবধান করে দিতে হবে। পােশাক-আশাক এমন হতে হবে যাতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের কোন প্রকার বাধা সৃষ্টি না হয়, এবং যেন বিনা বাধায় তারা মাথার ওপরে দু হাত উচু করে তুলতে পারে। ফুসফুসের সংকোচন কেবল তা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে না, কিন্তু হজম ক্রিয়া এবং রক্ত সঞ্চালনেও বাধা সৃষ্টি করে, এবং এ ভাবে পুরাে শরীরকে দুর্বল করে ফেলে। এ ধরণের অনুশীলন দৈহিক ও মানসিক শক্তি কমিয়ে ফেলে, ফলে ছাত্র-ছাত্রীর উন্নতি এবং সাফল্যের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে । EdBen 186.1

স্বাস্থ্য-পাঠ এবং আলােচনার ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং অভ্যাসে তার নিজের এবং অন্যের কাছেও আদর্শ স্থাপন করবেন। স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং মানসিক কাজের শক্তিকে চালু রাখার জন্য প্রতিদিন স্নানকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। শােয়ার ঘরে এবং রান্নাঘরে সূর্যের আলাে এবং বাতাস প্রবেশ স্বাস্থ্যকর, এ দিকে বিশেষ মনােযােগ দিতে হবে। ছাত্রিদের শিক্ষা দিন যে, একটি স্বাস্থ্যকর শােয়ার ঘর, একটি পরিষ্কার রান্নাঘর, এবং রুচি সম্মত ভাবে সাজানাে খাবার টেবিল, পারিবারিক সুখ বাড়িয়ে তুলবে এবং অতিথিদের আনন্দ দিবে যা ব্যয় বহুল বৈঠকখানা থেকেও মূল্যবান। “কেননা ভক্ষ্য হইতে প্রাণ ও বস্ত্র হইতে শরীর বড় বিষয়” (লুক ১২:২৩), এ নিয়মগুলাে দু’ হাজার বৎসর আগে যেমন আবশ্যক ছিল, তার চেয়ে এখন কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। EdBen 186.2

শারীরবৃত্ত অধ্যয়নকারী ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা করতে হবে যে, এটি অধ্যয়নের উদ্দেশ্যে কেবল কিছু তথ্য ও নীতিমালা সম্পর্কিত জ্ঞানই যথেষ্ট নয়। এই জ্ঞান অল্পমাত্র উপকারী। ঘরের মধ্যে বায়ু চলাচলের উপকারীতা, ঘরে বিশুদ্ধ বায়ু প্রবেশের গুরুত্বই সে বুঝবে; কিন্তু যদি সে তার ফুসফুস সঠিক ভাবে পূর্ণ না করে, তবে দূষিত বায়ু সেবনে তাকে কষ্ট পেতে হবে। সুতরাং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার আবশ্যকতা হয়ত উপলব্ধি করবে এবং প্রয়ােজনীয় সুযােগ সুবিধাও করে দেয়া যাবে; কিন্তু এর সবই বিফলে যাবে, যদি ঐ সব ব্যবহার না করা হয়। এই নীতিমালা শিক্ষাদানে বড় আবশ্যকীয় বিষয় ছাত্রদের গুরুত্ব দ্বারা তাদের নিজেদের মনে ছাপ অঙ্কন করা যেন সে বিবেকসম্মত ভাবে ওগুলাের অনুশীলন করতে পারে । EdBen 186.3

একটি খুব সুন্দর এবং আকর্ষণীয় বাক্যে, ঈশ্বর দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, এবং এই সব সংরক্ষণে আমাদের উপরে ন্যস্ত দায়িত্ব তুলে। ধরেছেন- “অতএব তােমরা কি জান না যে, তােমাদের দেহ পবিত্র আত্মার মন্দির, যিনি তােমাদের অন্তরে থাকেন, যাঁহাকে তােমরা ঈশ্বর। হইতে প্রাপ্ত হইয়াছ? আর তােমরা নিজের নও।” “যদি কেহ ঈশ্বরের মন্দির নষ্ট করে, তবে ঈশ্বর তাহাকে নষ্ট করিবেন, কেননা ঈশ্বরের মন্দির পবিত্র, আর সেই মন্দির তােমরাই।” ১ করিন্থীয় ৬:১৯; ৩:১৭। EdBen 187.1

ছাত্র-ছাত্রীরা এই চিন্তায় উদ্বুদ্ধ হােক যে, দেহ একটি মন্দির যেখানে ঈশ্বর বাস করতে চান, এটি পবিত্র রাখতে হবে, কারণ এটি উচচ ও। উন্নত চিন্তাধারা বিরাজ করার স্থান। শারীরবৃত্তি অধ্যয়নে যেমন তারা লক্ষ করে যে, বাস্তবিকই তারা “ভয়াবহ ও আশ্চর্যরূপে নির্মিত” (গীতসংহিতা ১৩৯:১৪), তখন তারা শ্রদ্ধাভরে অনুপ্রাণিত হবে। ঈশ্বরের হাতে করা কাজগুলাে নষ্ট না করে, তাদের নিজেদের প্রতি নিজেদের দায়িত্ব পালনে তারা একটি উচ্চ আশা পােষণ করবে, যেন তারা স্রষ্টার গৌরবময়। পরিকল্পনা পূর্ণ করতে পারে। এভাবে তারা স্বাস্থ্য-নীতিমালার প্রতি আজ্ঞাবহ হবে, ত্যাগস্বীকার অথবা আত্ম-অস্বীকারের বিষয় বলে নয়, কিন্তু এই জ্ঞানে যে, এটি প্রকৃতপক্ষে, একটি অপরিমেয় সুযােগ এবং আশীর্বাদ EdBen 187.2