Go to full page →

অতিরিক্ত ঐশ্বর্য্য অথবা অতিরিক্ত দারিদ্রের প্রতিরোধ ব্যবস্থা PPBeng 383

“সাত গুণ সাত বসর” পর আসত মুক্তির বসর জুবিলী (তূরীধ্বনীর মহোসব)। “তখন... তুমি জয়ধ্বনীর তূরী বাজাইবে;...তোমাদের সমস্ত দেশে তূরী বাজাইবে। আর তোমরা পঞ্চাশত্তম বসরকে পবিত্র করিবে, এবং সমস্ত দেশে তথাকার সমস্ত নিবাসীর কাছে মুক্তি ঘোষণা করিবে; ...ও প্রতিজন আপন আপন গোষ্ঠীর নিকটে ফিরিয়া যাইবে।” লেবীয় ২৫:৯, ১০। PPBeng 383.2

“সপ্তম চান্দের দশম তারিখে... প্রায়শ্চিত্ত দিবসে” যাকোব সন্তানদের মুক্তির বৎসরকে স্বাগতম জানানোর জন্য তূরী বাজানো হত। ছিল PPBeng 383.3

যে ভাবে সপ্তম বসর করা হত ঠিক একই ভাবে জুবিলী বা জয়ন্তীর সময় জমিতে বীজ বপন বা শস্য সংগ্রহ করা হত না, আর যা কিছু জমিতে স্বাভাবিক ভাবে জন্মাত তা দরিদ্রদের অধিকারভুক্ত ছিল। যে সকল যিহুদী দাস সপ্তম বসরে মুক্তি পেত না, তাদের ঐ সময় মুক্তি দেয়া হত । কিন্তু যে বিষয়টি জুবিলী বসরকে এক অনন্য বৈশিষ্ট্য দান করত তা হল সমস্ত জমি সেই সকল পরিবারের কাছে প্রত্যার্পিত হত যারা এর আদি মালিক ছিল। কাউকে জমি বেচা কেনার অধিকার দেয়া হয় নি। আর নিতান্ত দারিদ্রের কারণ ছাড়া কেউই জমি বিক্রি করতে পারত না। আর যখনই সে অথবা তার কোন আত্মীয় ঐ বিক্রিত জমি পুনরায় কিনে নিতে চাইত, তখন ক্রেতা তা অস্বীকার করতে পারত না। আর যদি জমি পুনরায় কিনে নেয়া না হত, হবে জুবিলী বা জয়ন্তীর বসর তা মূল মালিকের নিকট ফের হয়ে যেত । PPBeng 383.4

ইস্রায়েলকে সদাপ্রভু বলেছিলেন “আর ভূমি চিরকালের নিমিত্তে বিক্রীত হইবে না, কেননা ভূমি আমারই; তোমরা ত আমার সহিত বিদেশী ও প্রবাসী।” লেবীয় ২৫:২৩। ঈশ্বর হলেন আইনগত অধিকারী; মূল মালিক । আর এটা সকলের মনেই গেথে রাখা উচিত যে ঈশ্বরের পৃথিবীতে জমির উপর ধনী ও দরিদ্রের সমান অধিকার রয়েছে। PPBeng 383.5

আমাদের প্রেমময় স্রষ্টা এই ধরণের নিয়ম কানুন স্থাপন করেছিলেন যেন হতভাগা ও দুঃখার্তদের কষ্টের লাঘব হয়, যেন তাদের জীবনে একটু আলোর আভাস থাকে, যেন তাদের জীবনের দিনগুলিও রৌদ্রোজ্জল হয়ে উঠে । PPBeng 384.1

একদলের অনবরত দারিদ্র ও অন্য আর এক দল ক্রমাগত ধন সঞ্চয় মারাত্মক ক্ষতির কারণ। অত্যাচারের কারণে দরিদ্রদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হবে। তাদের মধ্যে নৈরাশ্য ও হতাশার কারণে সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি হবে এবং সব ধরণের অপরাধের দরজা উন্মুক্ত হবে। ঈশ্বর যে নিয়ম স্থাপন করেছিলেন তা ছিল সামাজিক সাম্যের ভিত্তি। জাতির সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে যা কিছুই অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হওয়ার মুখামুখী হত সপ্তম বসর ও জুবিলী বসর সে সবই সংশোধন করত। PPBeng 384.2

ধনী ও দরিদ্র উভয়ের জন্য প্রেমপূর্ণ এই নিয়মাবলি লোভ প্রতিরোধ করত এবং উদার মনোভাব ও বদান্যতা সৃষ্টি করত। বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে সদ্‌ভাব সৃষ্টির মাধ্যমে এগুলি জাতীয় সরকারকে স্থিতিশীলতা দান করত। PPBeng 384.3

আমরা সকলেই মানবিকতার বৃহৎ জালে একত্রে গ্রোথিত। অন্যের উন্নতির জন্য আমরা যা কিছুই করি না কেন তা আমাদের নিকট আশীর্বাদ বয়ে নিয়ে আসবে। পরস্পর নির্ভরশীলতার নিয়ম সমাজের সকল শ্রেণীর জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। দরিদ্ররা ধনীদের উপর ও ধনীরা দরিদ্রের উপর সমভাবে নির্ভরশীল। যখন একদল তাদের ধনী প্রতিবেশীদের উপর ঈশ্বর প্রদত্ত আশীর্বাদের কিছু অংশের আকাঙ্খী হয় তখন অন্য দল ঐ প্রতিবেশীদের বিশ্বস্ত কাজ, তাদের মস্তিষ্ক ও দেহের শক্তির আকাঙ্খা করে। দরিদ্রদের মূলধনই হচ্ছে তাদের মস্তিষ্ক ও দেহের শক্তি। PPBeng 384.4