একইরূপ অবস্থা বর্তমানেও বিরাজমান। নির্দ্বিধায় সকলে ক্ষুধা ও কামোচ্ছাসে প্রবৃত্ত হয়। খ্রীষ্টের অনুগামী বলে দাবীকারীরাও মাতালদের সহিত ভোজন-পান করে থাকেন। অমিতাচার, নৈতিক ও জাগতিক ক্ষমতাকে ভোতা, করে ফেলে এবং নগ্নমানের আবেগে অসংযত ভাবে জড়িয়ে পড়ার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। বহু সংখ্যক লোকেরা কামোচ্ছাসের ক্রীতদাসে পরিণত হন এবং ইন্দ্রিয়ের ইচ্ছা পূরণে জীবন ব্যয় করেন। অসংযম সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে । বিলাস ও বাহ্যিক প্রদর্শনের জন্য সততাকে বলি দেয়া হচ্ছে। প্রতারণা, উৎকোচ, চুরি, ধিক্কারহীন ভাবে বেড়ে চলেছে। খবরের কাগজে অপরিমিত ঠান্ডা মাথায় সংঘটিত এই ধরণের অপরাধ কাহিনী নিয়ত ছাপা হচ্ছে যে মনে হয় মানবতার শেষ রেশটুকুও মুছে গেছে। আর এই নৃশংসতা এত সাধারণ ঘটনা হয়ে গেছে যে এগুলি কারো মনে কোন বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি করে না। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার পর, আইন অমান্যকারীতার আবদ্ধ আগুন পৃথিবীকে দুঃখ ও নিঃসঙ্গতায় ভরে তুলবে। প্রাক-বন্যা জগৎ যে অবস্থার প্রকাশক আধুনিক জগত দ্রুত সেই দিকে ধাবিত হচ্ছে । PPBeng 60.3
ঈশ্বর পৃথিবীকে সতর্ক করার জন্য নোহকে পাঠিয়েছিলেন যেন লোকেরা অনুতাপ করে এবং আশু ভয়ঙ্কর ধ্বংস হতে রক্ষা পায়। যখন খ্রীষ্টের দ্বিতীয় আগমন সন্নিকট হতে থাকে, ঈশ্বর তার সন্তানকে এক সতর্কবাণী সহকারী প্রেরণ করলেন যেন লোকেরা মহা-ঘটনার জন্য প্রস্তুত হয়। অনেকেই জীবন যাপনে ঈশ্বরের আজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে, আর এখন তিনি তার মহা অনুগ্রহের জন্যই তাদের আহবান জানাচ্ছেন যেন তারা তার শিক্ষা মানে। যারাই তাদের পাপ অনুতাপ ও মশীহে বিশ্বাস আনার মাধ্যমে পাপ পরিত্যাগ করে তাদেরই ক্ষমা করে দেয়া হয়। কিন্তু অনেকেই সতর্কবাণী অস্বীকার করে এবং তার ব্যবস্থার কর্তৃত্বকে অবহেলা করে । PPBeng 61.1
বন্যার আগের সমস্ত লোকদের মধ্যে মাত্র আট জন নোহের মাধ্যমে প্রেরিত ঈশ্বরের বাণী গ্রহণ করেছিল । সেইরূপ অবাধ্যদের শাস্তি প্রদানের জন্য আইন লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হচ্ছে যেন তারা অনুতাপ করে; কিন্তু অধিকাংশের কাছেই এই সতর্কবাণী বৃথা হবে। “প্রথমে ইহা জ্ঞাত হও যে, শেষকালে উপহাসের সহিত উপহাসকেরা উপস্থিত হইবে; তাহারা আপন আপন অভিলাষ অনুসারে চলিবে, এবং বলিবে, তাঁহার আগমনের প্রতিজ্ঞা কোথায়? কেননা যে অবধি পিতৃলোকেরা নিদ্রাগত হইয়াছেন, সেই অবধি সমস্তই সৃষ্টির আরম্ভ অবধি যেমন, তেমনই রহিয়াছে । ” ২ পিতর ৩:৩, ৪। PPBeng 61.2
যীশু এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছিলেন, “কিন্তু মনুষ্যপুত্র যখন আসিবেন, তখন কি পৃথিবীতে বিশ্বাস পাইবেন?” লূক ১৮৪৮। “কিন্তু আত্মা স্পষ্টই বলিতেছেন, উত্তর কালে কতক লোক ভ্রান্তিজনক আত্মাদিগেতে ও ভূতগণের শিক্ষামালায় মন দিয়া বিশ্বাস হইতে সরিয়া পড়িবে।” ১ তীমথিয় ৪:১। “কিন্তু ইহা জানিও, শেষকালে বিষম সময় উপস্থিত হইবে।” ২ তীমথিয় ৩:১ । PPBeng 61.3