“আকাশমন্ডল নিৰ্ম্মিত হইল সদাপ্রভুর বাক্যে, তাঁহার সমস্ত বাহিনী তাঁহার মুখের শ্বাসে ।...তিনি কথা কহিলেন, আর উৎপত্তি হইল, তিনি আজ্ঞা করিলেন, আর স্থিতি হইল।” গীতসংহিতা ৩৩:৬, ৯ পদ । PPBeng 18.1
স্রষ্টার হাতে সৃষ্ট পৃথিবী অত্যন্ত সুন্দর ছিল। ফলদায়ী ভূমি প্রত্যেক স্থানে সবুজের সমারোহ সৃষ্টি করল। সেখানে কোন নিকৃষ্ট জলাভূমি অথবা বৃক্ষরাজ বিহীন মরুভূমি ছিল না। প্রত্যেক বাকেই মনোরম কুঞ্জ ও ততোধিক মনোরম ফুলরাজী দৃষ্টিকে মোহিত করত। বাতাস ছিল নির্মল ও স্বাস্থ্যকর। সমস্ত দৃশ্যপট সৌন্দর্যের প্রতিযোগীতায় গর্বিত রাজ প্রাসাদের কাননকেও হার মানাতো। PPBeng 18.2
যখন পৃথিবীর তার প্রাণী সকল ও উদ্ভিদ সকল সৃষ্টি হলো, তখন স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষকে রঙ্গমঞ্চে আনা হলো। “পরে ঈশ্বর কহিলেন, আমরা আমাদের প্রতিমূর্তিতে, আমাদের সাদৃশ্যে মনুষ্য নির্মাণ করি, আর তাহারা... সমস্ত পৃথিবীর উপরে,...কর্তৃত্ব করুক।” “পরে ঈশ্বর আপনার প্রতিমূৰ্ত্তিতে মনুষ্যকে সৃষ্টি করিলেন;... পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন।” আদি পুস্তক ১:২৬, ২৭। PPBeng 18.3
মানব জাতির উৎপত্তি এখানে পরিষ্কাররূপে বর্ণিত হয়েছে। মানুষ কোন নিম্নমানের প্রাণী অথবা উদ্ভিদ জীবন হতে ধীরে ধীরে বিবর্ধিত হয়েছে বলে ধারণা করার মত কোন উপযুক্ত কারণ নাই। ঐশী বাক্য আমাদের জাতির উৎপত্তি কোন ক্রমবর্ধমান বীজাণু ও চতুষ্পদের সহিত সম্পর্কিত না করে প্রত্যক্ষ ভাবে মহান স্রষ্টার সহিত সম্পর্কিত করেছে। যদিও ধূলি হতে সৃষ্ট তথাপি আদম হলেন “ঈশ্বরের পুত্র” । লূক ৩:৩৮ পদ । PPBeng 18.4
নিম্ন-স্তরের প্রাণী ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব অনুধাবন করতে অক্ষম, তথাপি তাদের মানুষকে ভালবাসতে ও তার উপকার করতে সক্ষম করে সৃষ্টি করা হয়েছে। “তোমার হস্তকৃত বস্তু সকলের উপরে তাহাকে কর্তৃত্ব দিয়াছ, তুমি সকলই তাহার পদতলস্থ করিয়াছ ... বন্য পশুগণ, শূন্যের পক্ষিগণ ... গীতসংহিতা ৮:৬-৮। PPBeng 18.5
খ্রীষ্টই শুধু মাত্র পিতার “তত্ত্বের মুদ্রাঙ্ক” (ইব্রীয় ১:৩), কিন্তু মানুষকে ঈশ্বর তার প্রতিমূর্ত্তিতে সৃষ্টি করেছিলেন। তার প্রকৃতি ঈশ্বরের ইচ্ছার সহিত সঙ্গতিপূর্ণ ছিল, তার মন স্বর্গীয় তথ্য অনুধাবনে সক্ষম ছিল। তার প্রেম ছিল, নির্ভেজাল; তার ক্ষুধা ও আবেগ ছিল যুক্তির নিয়ন্ত্রণে। সে ছিল পবিত্র ও ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তির বাহকরূপে ছিল আনন্দিত, এবং তাঁর ইচ্ছার বাধ্য থাকার মধ্যে ছিল তার পরিপূর্ণতা। PPBeng 19.1
যখন মানুষ তার স্রষ্টার হাত হতে বেরিয়ে এল তখন তার চেহারা জীবনের ও আনন্দের আলোতে ছিল আলোকিত। আদমের উচ্চতা বৰ্ত্তমান কালের মানুষের থেকে অনেক দীর্ঘ ছিল । হবা উচ্চতায় আদমের থেকে একটু খাটো ছিলেন, কিন্তু তার অবয়ব ছিল মহান ও মনোরমা। নিষ্পাপ দম্পতি কোন শিল্পজাত বস্ত্র পরিধান করতেন না; তারা দূতগণ যেমন জ্যোতি দ্বারা আচ্ছাদিত, তেমনি জ্যোতি দ্বারা আচ্ছাদিত ছিলেন PPBeng 19.2