মোশি অনেক কিছু শিক্ষা করেছিলেন যা তার ভুলে যাওয়া প্রয়োজন ছিল। মিসরে যে প্রভাব তার চতুর্দিকে ছিল তা তার বর্ধনশীল মনের উপরে গভীর দাগ কেটেছিল এবং অনেকাংশে তার অভ্যাস ও তার চরিত্র গড়ে তুলেছিল । সময় এই দাগগুলো মুছে ফেলতে পারে। মোশির পক্ষে জীবন পণ সংগ্রাম প্রয়োজন ছিল যেন তিনি মিথ্যা ত্যাগ করে সত্য গ্রহণ করতে পারেন, কিন্তু যখন এই সংগ্রাম মানুষের সহ্যশক্তির বাইরে চলে যাবে তখন অবশ্যই ঈশ্বর তার সহায় হবেন। PPBeng 175.3
“যদি তোমাদের কাহারও জ্ঞানের অভাব হয়, তবে সে ঈশ্বরের কাছে যাচঞা করুক; তিনি সকলকে অকাতরে দিয়া থাকেন, তিরস্কার করে না; তাহাকে দত্ত হইবে ।” যাকোব ১:৫। কিন্তু ঈশ্বর মানুষকে ততক্ষণ কোন স্বৰ্গীয় আলো দেবেন না যতক্ষণ তারা অন্ধকারে থাকতে চায়। ঈশ্বরের সাহায্য পাওয়ার জন্য মানুষকে তার দুর্বলতা ও অপর্যাপ্ততা অনুধাবন করতে হবে; যে মহা পরিবর্তন তার মধ্যে সাধিত হবে, তাতে তাকে মনোনিবেশ করতে হবে; একনিষ্ট ভাবে প্রার্থনা করতে হবে ও প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পাহাড়ের প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত হয়ে, মোশি একাকী ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন। চিরন্তন পাহাড়ের গুরু- গম্ভীর মহনীয়তায় তিনি সর্বশক্তিমানের মহিমা অবলোকন করতেন, আর এর বৈপরিত্যে অনুধাবন করতে পারতেন যে মিস্ত্রীয়দের দেব-দেবতা কতই তুচ্ছ ছিল। এখানে এসে তার গৌরব ও আত্ম-নির্ভরশীলতা বিলীন হয়ে গিয়েছিল । মিসরের বিলাসিতার ফল তিরোহিত হয়েছিল। মোশি ধৈর্য্যশীল, সম্মানীত, ও বিনম্র, ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। “ভূমন্ডলস্থ মনুষ্যদের মধ্যে সকল অপেক্ষা মোশি লোকটী অতিশয় মৃদুশীল ছিলেন” (গণনা ১২:৩), তথাপি বিশ্বাসে ছিলেন অত্যন্ত শক্ত । PPBeng 175.4
বৎসরের পর বৎসর গত হতে থাকল আর ইস্রায়েল জাতির জন্য তার প্রার্থনা দিবা-রাত্র ঈশ্বরের নিকট উপস্থিত হতে লাগল। এইখানেই পবিত্র আত্মার উদ্দীপনায় তিনি আদিপুস্তকের বইখানি লিখেন। যে দীর্ঘ বৎসর সমূহ তিনি মরুভূমির মধ্যে একাকীত্বে কাটিয়েছিলেন সেগুলি পৃথিবীর জন্য চিরকালীন আশীর্বাদে পরিণত হল। PPBeng 176.1