Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents

মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

 - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First

    ২য় অধ্যায়

    শেষকাল

    আমরা শেষকালে বসবাস করিতেছি। শেষকালের যে সকল চিহ্ন দ্রুতগতিতে সফল হইয়া যাইতেছে, সেগুলি অতি সুস্পষ্টরূপে ঘোষণা করিয়া জানাইয়া দিতেছে যে, খ্রীষ্টের আগমন সন্নিকট। আমরা যে যুগে বাস করিতেছি, উহা অতীব ভয়াবহ ও গুরুগম্ভীর! ঈশ্বরের আত্মা ক্রমে ক্রমে, কিন্তু অতি সুনিশ্চিতরূপে জগৎ হইতে প্রত্যাহার করা হইতেছে। ঈশ্বরের অনুগ্রহ উপেক্ষাকারিগনের উপরে ইতঃপূর্ব্বেই আঘাত সকল এবং দণ্ডাজ্ঞানসমূহ পতিত হইতেছে। স্থলে ও সমুদ্রে বিষয় বিপদরশি, সমাজে চাঞ্চল্যকর অবস্থা ও যুদ্ধের সঙ্কেত ধ্বনি সমূহ, ভাবী অমঙ্গল-রাশির পূর্ব্বাভাস। ইহারা অতীব গুরুত্বপূর্ণ সমীপবর্ত্তী- ঘটনাগুলির বিষয় পূর্ব্ব হইতেই জানাইয়া দিতেছে।CCh 73.1

    মন্দাত্মার প্রতিনিধিগণ তাহাদের সৈন্যগণকে একত্রিত করিয়া সুপ্রতিষ্ঠত করিতেছে। শেষ মহাসঙ্কটের জন্য তাহারা শক্তি সঞ্চয় করিতেছে। আমাদের পৃথিবীতে শীঘ্রই মহা পরিবর্ত্তনরাশি সাধিত হইবে এবং শেষ ঘটনাগুলি অতি দ্রুত সংঘটিত হইবে।CCh 73.2

    জগতের অবস্থা দেখিয়া বুঝা যাইতেছে যে, সঙ্কটকাল ঠিক্ আমদের উপরেই আসিয়া পড়িয়াছে। অদূর ভবিষ্যতে এক ভয়াবহ সংগ্রাম উপস্থিত হইবে দৈনিক সংবাদপত্র গুলিতে তাহার পূর্ণ ইঙ্গিত দেখা যাইতেছে। বারংবার দুঃসাহসিক ডাকাইতি চলিতেছে। ধর্ম্মঘট একটী সাধারন ব্যাপার হইয়া পড়িয়াছে। সর্ব্বত্র চৌর্য্য ও নরহত্যা সাধিত হইতেছে। পৈশাচিক আত্মাবিষ্ট লোকেরা, নর নারী ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সন্তান সন্ততির প্রাণ নাশ করিতেছে। লোকেরা অধর্ম্মে জ্ঞানহীন হইয়া পড়িয়াছে এবং প্রত্যেক প্রকার অধর্ম্মের প্রাবল্য দেখা যাইতেছে। মহান্ শ্ত্রু ন্যায়বিচার ভ্রষ্ট করিতে এবং স্বার্থপর লাভের আকাঙ্ক্ষায় মানব মন পূর্ণ করিতে কৃতকার্য্য হইয়েছে। “বিচার পশ্চাতে হাটিয়া পড়িয়াছে এবং ধার্ম্মিকতা দূরে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে; বস্তুতঃ চকে সত্য উছোট খাইয়া পড়িয়াছে, ও সরলতা প্রবেশ করিতে পায় না।” যিশাইয় ৫৯:১৪। মহা নগরী গুলিতে সহস্র সহস্র লোক দারিদ্রে ও দুরবস্থায়, খাদ্যাভাবে, গৃহাভাবে ও বস্ত্রভাবে কাল কাটাইতেছে; আবার ঐ একই নগরী গুলিতে এমন লোকও আছে, যাহারা হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষিত বস্তু অপেক্ষাও অধিক কিছু উপোভোগ করিতেছে, বিলাসিতায় কাল যাপন করিতেছে, সুসজিজত গৃহের জন্য, নিজেকে সুসজিজত করিবার জন্য, কিংবা ইহা অপেক্ষা অধিকতর মন্দ,- ইন্দ্রিয়লালসা চরিতার্থ করিবার জন্য, মদ্য, তাম্রকূট ও অন্যান্য যে সকল দ্রব্যে মস্তিষ্কে শক্তি নষ্ট হয়, মন কে পাগল করিয়া তুলে, এবং আত্মাকে হীন করিয়া ফেলে, সেই সকলের জন্য অর্থ ব্যয় করিতেছে। একদিকে ক্ষুধাতুর মানব জাতির করুন ক্রন্দন ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হইতেছে, অন্যদিকে অত্যাচার ও অন্যায়পুর্ব্বক ধনাপহরণের দ্বারা লোকেরা রাশি রাশি ধন সঞ্চয় করিতেছে।CCh 73.3

    রাত্রিকালে, স্বর্গের দিকে সমুন্নত তলার উপরে তলা বিশিষ্ট গৃহগুলির প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হইল। গৃহকর্ত্তৃগণের ও নির্ম্মাণ কর্ত্তৃগণের গৌরবার্থে এই গৃহগুলি অদাহ্যরুপে নির্ম্মিত হইয়াছিল। উর্দ্ধে এবং আরও উর্দ্ধে এই গৃহ গুলি সমুল্থিত হইয়াছিল, এবং এইগুলি নির্ম্মাণার্থে সর্ব্বাপেক্ষা মুল্যবান উপকরণাদি ব্যবহৃত হইয়াছিল। যাঁহারা এই সকল গৃহের অধিকারী ছিলেন, তাঁহারা নিজেরা নিজেদিগকে কখনও জিজ্ঞাসা করেন নাই যে, “কী সর্ব্বত্তম উপায়ে আমরা ঈশ্বরের গৌরব করিতে পারি?” কারণ তাঁহাদের চিন্তার মধ্যে প্রভু ছিলেন না।CCh 74.1

    উচ্চ গৃহগুলিকে উর্দ্ধ দিকে উঠিতে দেখিয়া গৃহের মালিকেরা উচ্চাভিলাষের অহঙ্কারে স্ফীত হইয়া এই বলিয়া আনন্দ করিতে লাগিলেন যে, আত্মতৃপ্তির জন্য এবং প্রতিবাসীগণের ঈর্ষ্যা উৎপত্তি করিবার জন্য ব্যয়ার্থ তাহাদের ধনসম্পত্তি ছিল। যে সকল অর্থ এইরূপে ব্যয়িত হইয়াছে, তাহার অধিকাংশই দারিদ্রদিগকে নিষ্পেষণ করিয়া অন্যায় পূর্ব্বক লাভ করা হইয়াছে। স্বর্গে প্রত্যেকটী কাজ-কারবারের, প্রত্যেকটী অসদ ব্যবহারের, প্রত্যেকটী প্রবঞ্চনার নিখুত হিসাব রাখা হইয়াছে, ইহা তাঁহারা ভুলিয়া গিয়াছিলেন।CCh 74.2

    পরে যে দৃশ্যটী আমার সম্মুখ দিয়া অতিবাহিত হইয়াছিল, তাহা ছিল অগ্নিকাণ্ডের বিপত-সূচক ঘন্তা-ধ্বনি। লোকেরা উচ্চ এবং অনুমেয় অদাহ্য গৃহগুলির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া কহিল, “এগুলি সম্পূর্ণ নিরাপদ।” কিন্তু ক্ষনকালের মধ্যেই গৃহগুলি পিচ্‌ নির্ম্মত গৃহের ন্যায় ভস্মীভূত হইল। অগ্নিনির্ব্বাপক ইঞ্জিনগুলি ঐ গৃহগুলিকে ধ্বংস হইতে রক্ষা করিবার জন্য কিছুই করিতে পারিল না। অগ্নি-নির্ব্বাপকদল তাহাদের ইঞ্জিন কাজে লাগাইতে পারিল না।CCh 75.1

    আমাকে জ্ঞাত করা হইয়াছে যে, যখন প্রভুর দিন আসিবে, তখন অহঙ্কারী ও উচ্চাভিলাষী মানব জাতির হৃদয়ের কোন পরিবর্ত্তন ঘটিবেনা, লোকেরা দেখিতে পাইবে যে, এক কালে যে হস্ত প্রাণরক্ষা কার্য্যে বলবান ছিল, তাহা এক্ষণে ধ্বংস-কার্য্যে বলবান হইবে। কোন পার্থিব শক্তি ঈশ্বরের হস্তের প্রতিরোধ করিতে পারিবে না। ঈশ্বরের ব্যবস্থা অমান্য করার জন্য এবং স্বার্থসম্বলিত উচ্চাভিলাষের জন্য, ঈশ্বর-নির্দ্দিষ্ট-সময়ে মানবের উপর যখন দণ্ড আসিবে, তখন গৃহগুলিকে ধ্বংসের হস্ত হইতে রক্ষা করিতে পারিবে, এমন কোন উপাদানই গৃহ-নির্ম্মাণ কার্য্যে ব্যবহার করিতে পারা যাইবে না।CCh 75.2

    সমাজের বর্ত্তমান অবস্থার পশ্চাতে যে সকল কারণ রহিয়াছে, সে সকল অনেকেই, এমন কি শিক্ষা-বিস্তারক ও রাজনীতি-বিশারদগণও ধারণায় আনিতে অসমর্থ। যাঁহাদের হস্তে গভর্ণমেন্টের শাসনভার রহিয়াছে, তাঁহারাও নৈতিক অধঃপতনের, দারিদ্রের, অভাব-অনটনের এবং অধর্ম্মের উত্তরোত্তর বৃদ্ধির যে গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়াছে, তাহার সমাধান করিতে অপারক। কাজ-কারবার বা ব্যবসায়-সক্রান্ত কার্য্যাদি নিরাপদ করিবার জন্যে তাঁহারা বৃথাই চেষ্টা করিতেছেন। লোকেরা যদি ঈশ্বরের বাক্যের শিক্ষামালায় আরও অধিক মননিবেশ করিত, তবে তাহারা এই দুর্ব্বোধ্য সমস্যার সমাধান করিতে পারিত।CCh 75.3

    খ্রীষ্টের আগমনের অব্যবহিত পূর্ব্বে জগতের অবস্থা যেরূপ হইবে, শাস্ত্রে তাহা সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত আছে। চুরি, ডাকাইতি ও অন্যায়-অত্যাচারের দ্বারা মন্দভাবে যাহারা অগাধ ধন সঞ্চয় করিয়াছে, তাহাদের সম্বন্ধে শাস্ত্রে লিখিত আছে ঃ- “তোমরা শেষকালে ধন সঞ্চয় করিয়াছ। দেখ, যে মজুরেরা তোমাদের ক্ষেত্রের শস্য কাটিয়াছে, তাহারা তোমাদের দ্বারা যে বেতনে বঞ্চিত হইয়াছে, তাহাই চীৎকার করিতেছে, এবং সেই শস্যচ্ছেদক দের আর্ত্তনাদ বাহিনীগণের প্রভুর কর্ণে প্রবিষ্ট হইয়াছে। তোমরা পৃথিবীতে সুখভোগ ও বিলাস করিয়াছ, তোমরা হত্যার দিনে আপন আপন হৃদয় তৃপ্ত করিয়াছ। তোমরা ধার্ম্মিককে দোষী করিয়াছ, বধ করিয়াছ; তিনি তোমাদের প্রতিরোধ করিবেন না।” যাকোব ৫:৩-৬।CCh 76.1

    দ্রুত সফলোদ্যত যুগলক্ষণগুলির দ্বারা যে চেতনাবাণী দত্ত হইয়াছে তাহা কে পাঠ করে? ঘোর সাংসারিক লোকদের মনে কি ছাব অঙ্কিত হয়? তাহাদের মনোভাবে কী পরিবর্ত্তন দেখা যায়? নোহের সময়ের লোকদের মনে যে ভাব ছিল, এখনকার লোকদের মনেও ঠিক্ সেই ভাব। বৈষ্যিক-ব্যাপারে এবং আমোদ- স্ফূর্ত্তিতে মগ্ন থাকায় জলপ্লাবনের পূর্ব্বর্ত্তী লোকেরা “বুঝতে পারিল না, যাবৎ না বন্যা আসিয়া সকলকে ভাসাইয়া লইয়া গেল।” মথি ২৪:৩৯। তাহারা সরগ-প্রেরিত চেতনা বাণী প্রাপ্ত হইয়াছিল, কিন্তু তাহারা শুনিতে চাহিল না। অধুনা জগৎ, ঈশ্বরের চেতনা বাণী সম্পূর্ণরূপে অগ্রাহ্য করিয়া অনন্ত বিনাশের দিকে দ্রুত অগ্রসর হইতেছে।CCh 76.2

    জগৎ, যুদ্ধের উত্তেজনায় উত্তেজিত। দানিয়েল একাদশ অধ্যায়ের ভবিষ্যদ্বাণী প্রায় সম্পূর্ণরুপে সফল হইতে গেল। ভবিষ্যদ্বাণীগুলিতে সঙ্কটের যে, দৃশ্যগুলির বিষয় বর্ণিত হইয়াছে, সেগুলি সত্বর ঘটিয়া যাইবে।CCh 76.3

    “দেখ সদাপ্রভু পৃথিবীকে শূন্য করিতেছেন, উৎসন্ন করিতেছেন, উলটাইয়া ফেলিতেছেন, ও তাহার নিবাসীদিগকে ছড়াইয়া দেলিতেছেন। ......... কারণ তাহারা ব্যবস্থা লঙ্ঘণ করিয়াছে, বিধি অন্যথা করিয়াছে, চিরস্থায়ী নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছে। এই কারণ অভিশাপ পৃথিবীকে গ্রাস করিল, ও তন্নিবাসিগন দোষী সাব্যস্ত হইল......... ডন্ফের আমোদ নিবৃত্ত হইল, উল্লাসকারীদের কোলাহল শেষ হইল, বীণার আমোদ নিবৃত্ত হইল।” যিশাইয় ২৪:১-৮।CCh 77.1

    “হায় হায়, কেমন দিন! সদাপ্রভুর দিন ত সন্নিকট, উহা সর্ব্বশক্তিমানের নিকট হইতে প্রলয়ের ন্যায় আসিতেছে।” যোয়েল ১:১৫। “আমি পৃথিবীতে দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ তাহা ঘোর ও শুন্য ছিল; আমি আকাশমণ্ডলে দৃষ্টিপাত করিলাম, তাহার দীপ্তি ছিল না। আমি পর্ব্বতগণের উপরে দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ সে সকল কাঁপিতেছে, ও উপপর্ব্বত সকল টলটলায়মান হইতেছে। আমি দৃষ্টপাত করিলাম, আর দেখ, মনুষ্যমাত্র নাই, এবং আকাশের সমস্ত পক্ষি পলাইয়া গিয়াছে। আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, সদাপ্রভুর সম্মুখে ও তাহার সমস্ত নগর ভগ্ন হইয়াছে।” যিরমিয় ৪:২৩-২৬।CCh 77.2

    “হায়! সেই দিন মহৎ, তাহার তুল্য দিন আর নাই; এ যাকোবের সঙ্কটকাল, কিন্তু ইহা হইতে সে নিস্তার পাইবে।” যিরমিয় ৩০:৭।CCh 77.3

    ঈশ্বরের শ্ত্রুর পক্ষে, এজগতের সকলেই যোগদান করে নাই। সকলেই অবিশ্বস্ত হয় নাই বটে, কিন্তু অতি অল্প সংখ্যক লোকই ইশরে বিশ্বস্ত রহিয়াছে। যোহন লিখিয়াছেনঃ- “এস্থলে সেই পবিত্রগণের ধৈর্য্য দেখা যায়, যাহারা ঈশ্বরের আজ্ঞা ও যীশুর বিশ্বাস পালন করে।” প্রকাশিত ১৪:১২। যাহারা ঈশ্বরের সেবা করে এবং যাহারা ঈশ্বরের সেবা করে না, তাহাদের মধ্যে শীঘ্রই এক ভীষণ যুদ্ধ সংঘটিত হইবে। যাহা কম্পন যোগ্য, তাহার প্রত্যকটী দ্রব্য শীঘ্রই এক ভীষণ যুদ্ধ সংঘটিত হইবে। যাহা কম্পন যোগ্য নহে, তাহা থাকিয়া যাইবে।CCh 77.4

    শয়তান একটী অভিনিবিষ্ট বাইবেল-ছাত্র। সে জানে যে, তাহার কাল সংক্ষিপ্ত। এই পৃথিবীতে প্রভুর কার্য্যের বিরুদ্ধে কার্য্য করিতে সে বিন্দুমাত্র ত্রুটী করে না। যখন স্বর্গীয় গৌরব প্রকাশিত হইবে এবং অতীতের তাড়নার ন্যায় তাড়না সংঘটিত হইবে, তখন ঈশ্বরের যে সকল লোক এই পৃথিবীতে বাঁচিয়া থাকিবে, তাহদের অভিজ্ঞতার বিষয় কোন ধারণা দেওয়া অসম্ভব। ঈশ্বরের সিংহাসন হইতে যে দীপ্তি নির্গত হইবে, তাহারা তাহাতেই চলিবে। স্বর্গীয় দূতগণের সাহায্যে স্বর্গের ও পৃথিবীর মধ্যে অবিরত কথাবার্ত্তা চলিতে থাকিবে। আর শয়তান মন্দ দূতগণে পরিবেষ্টত হইয়া নিজেকে ঈশ্বর বলিয়া দাবী করিবে এবং যদি সম্ভব হয়, তবে এমন কি, মনোনীতদিগকেও ভুলাইবার জন্য নানা প্রকার আশ্চর্য্য কার্য্য করিবে। ঈশ্বরের লোকেরা আশ্চর্য্য কার্য্য করিবে। ঈশ্বরের লোকেরা আশ্চর্য্য কার্য্য করিয়াও নিরাপদ থাকিতে পারিবে না, কারণ যে কোন আশ্চর্য্য কার্য্য করিয়াও নিরাপদ তাহার নকল করেবে। যাত্রাপুস্তক ৩১:১২-১৮ পদে যে চিহ্নের কথা উল্লিখিত আছে, ঈশ্বরের পরীক্ষাসিদ্ধ লোকেরা তাহাতেই তাহাদের শক্তি প্রাপ্ত হইবে। “লেখা আছে,” — এই জীবন্ত বাক্যের উপরে তাহাদের দণ্ডয়মান থাকিতে হইবে। কারণ দণ্ডায়মান থাকিবার ইহাই একমাত্র নিরাপদ ভিত্তি। যাহারা ঈশ্বরের সহিত তাহাদের নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছে, ঐ দিনে তাহারা ঈশ্বর বিহীন ও আশা বিহীন হইয়া পড়িয়া থাকিবে।CCh 78.1

    চতুর্থ আজ্ঞাপালনের নিমিত্ত ঈশ্বরের উপাসকগণ বিশেষভাবে খ্যাতাপন্ন হইবে, কারণ ইহাই ঈশ্বরের স্বষ্টিকারিণী শক্তির চিহ্ন এবং (ঈশ্বরের প্রতি) মানবের ভক্তি ও সম্মানের উপরে তাঁহার দাবীর সাক্ষী। সৃষ্টিকর্ত্তার স্মৃতিচিহ্নের বিলুপ্তি সাধনের চেষ্টা করিয়া এবং রোমের নিয়মপ্র ণালীকে শ্রেষ্ঠ বলিয়া মানিয়া লইয়া দুষ্টলকেরা প্রসিদ্ধি লাভ করেবে। সংরামের ফলে সমগ্র খ্রীষ্টীয় জগৎ দুই প্রধান দলে বিভক্ত হইবে; যাহারা ঈশ্বরের আজ্ঞা ও যীশুর বিশ্বাস পালন করে, তাহারা একদলে থাকিবে এবং যাহারা পশুর ও তাহার প্রতিমার ভজনা করে ও তাহার ছাব ধারণ করে, তাহারা অন্য দলে থাকিবে। “ক্ষুদ্র ও মহান, ধনী ও দরিদ্র, স্বাধীন ও দাস” সকলকে পশুর ছাব ধারণ করাইবার জন্য মণ্ডলী ও রাষ্ট্র উভয়ে একত্রে যদিও তাহাদের সর্ব্বশক্তি নিয়োগ করে, তথাপি ঈশ্বরের লোকেরা ইহা ধারন করিবে না। প্রকাশিত ১৩:১৬। পাট্ম দ্বীপের ভাববাদী দেখিলেন, “যাহারা সেই পশু ও তাহার প্রতিমা ও তাহার নামের সংখ্যার উপরে বিজয়ী হইয়াছে, তাহারা ঐ কাচময় সমুদ্রের তীরে দাঁড়াইয়া আছে, তাহাদের হস্তে ঈশ্বরের বীণা। আর তাহারা ইশ্বরের দাস মোশির গীত ও মেষশাবকের গীত গায়।” প্রকাশিত ১৫:২।CCh 78.2

    ঈশ্বরের লোকদের সম্মুখে ভয়াবহ পরীক্ষা ও দুঃখকষ্ট রহিয়াছে। যুদ্ধের আত্মা পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্তের জাতিগণকে উত্তেজিত করিয়া তুলিতেছে। কিন্তু যে সঙ্কটকাল আসিতেছে — এমন সঙ্কটের কাল, যাহা মনুষ্য জাতির স্থিতিকাল অবধি এপর্য্যন্ত হয় নাই- তাহার মধ্যে ঈশ্বরের মনোনীত লোকেরা অবিচলিত থাকিবে। শয়তান ও তাহার বাহিনী তাহাদিগকে বিনষ্ট করিতে পারে না, কারণ যে দূতগণ বলে বীর, তাঁহারা তাহদিগকে রক্ষা করিবেন।19T 11-17.CCh 79.1