বিশ্বাস ও পরিগ্রহন |(FAITH AND ACCEPTANCE)
ত্রাণার্থীর আশাপূরণ ।
- Contents- সূচীপত্র।
-
- মানুষের প্রতি ঈশ্বরের প্রেম । ( GOD’S LOVE FOR MAN )
- দ্বিতীয় অধ্যায়
- পাপীর খ্রীষ্টে প্রয়োজন । (The SINNER’S NEED OF CHRIST)
- তৃতীয় অধ্যায়
- অনুতাপ । (REPENTANCE)
- চতুর্থ অধ্যায়
- পাপ স্বীকার । (CONFESSION)
- পঞ্চম অধ্যায়
- আত্ন-সমর্পণ |(CONSERATION)
- ষষ্ঠ অধ্যায়
- বিশ্বাস ও পরিগ্রহন |(FAITH AND ACCEPTANCE)
- সপ্তম অধ্যায়
- শিষ্যত্বের লক্ষন |(THE TEST OF DISCIPLESHIP)
- অষ্টম অধ্যায়
- খ্রীষ্টে শ্রীবৃদ্ধি লাভ |(GROWING UP INTO CHIRST)
- নবম অধ্যয়
- কার্য্য ও জীবন । (THE WORK AND LIFE)
- দশম অধ্যায়
- ঈশ্বর সন্মন্ধে জ্ঞান|(A KNOWLEDGE OF GOD)
- একাদশ অধ্যায়
- প্রার্থনা করিবার অধিকার। (THE PRIVILIEGE OF PRAYER)
- দ্বাদশ অধ্যায়
- সন্দেহ ভঞ্জন। (WHAT TO DO WITH DOUBT)
- ত্রয়োদশ অধ্যায়
- আনন্দ সাধনা । (REJOICING IN THE LORD)
Search Results
- Results
- Related
- Featured
- Weighted Relevancy
- Content Sequence
- Relevancy
- Earliest First
- Latest First
- Exact Match First, Root Words Second
- Exact word match
- Root word match
- EGW Collections
- All collections
- Lifetime Works (1845-1917)
- Compilations (1918-present)
- Adventist Pioneer Library
- My Bible
- Dictionary
- Reference
- Short
- Long
- Paragraph
No results.
EGW Extras
Directory
ষষ্ঠ অধ্যায়
বিশ্বাস ও পরিগ্রহন |(FAITH AND ACCEPTANCE)
পবিত্র আত্মা দ্বারা তোমার বিবেক সঞ্জীবিত হইলে পর, তুমি পাপের কলুষতার এবং উহার শক্তির ও পাপজনিত অপরাধের ও বিষম দুঃখের কিঞ্চিং আভাস পাইয়াছ; তাই তুমি উহাকে অতি ঘৃনার ভাবে দেখিতেছ । পাপ তোমাকে ঈশ্বর হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়াছে এবং তুমি পাপের প্রভূতে বন্দী হইয়া পড়িয়াছ - ইহা তুমি বেশ অনুভব করিতে পারিতেছ । যতই তুমি মুক্ত হইবার জন্য চেষ্টা করিতেছ, ততই তুমি তোমার নিঃসহায় অবস্থা বুঝিতে পারিতেছ । তোমার মানসিক ভাব সমূহ অপবিত্র তোমার হৃদয় অশুচি । তোমার জীবন পাপ ও স্বার্থপরতায় পূর্ণ হইয়াছে, দেখিতে পাইতেছ । তাই তুমি ক্ষমালাভ করিবার জন্য ,শুচিকৃত ও মুক্ত হইবার জন্য ব্যাকুল হইয়াছ । কেমন করিয়া ঈশ্বরের সহিত সম্মিলিত হওয়া ও কেমন করিয়া তাঁহার সাদৃশ্য লাভ করা যায়-এইরূপ চিন্তা তোমাকে পীড়ন করিতেছে ।SC 50.1
তোমার শান্তিলাভের প্রয়োজন; তোমার আত্মার স্বর্গের ক্ষমা, প্রেমও শান্তি আনিতে হইবে । পৃথিবীর অর্থ তাহা ক্রয় করিতে পারে না, বুদ্ধি তাহা আহরন করিতে পারে না, জ্ঞান তাহা লাভ করিতে পারে না। তুমি শুধু নিজের চেষ্টায় তাহা লাভ করিবার আশাও করিতে পার না। কিন্তু ঈশ্বর “বিনারৌপ্যে ও বিনা মূল্যে” (যিশা ৫৫ ১), তোমাকে এই উপহার দান করিতেছেন । যদি তুমি একবার হাত বাড়াইয়া উহা গ্রহন কর , তবে উহা তোমারই । সদা প্রভু বলেন ” তোমার পাপসকল সিন্দুর বর্ণ হইলেও হিমের ন্যায় শুক্লবর্ণ হইবে ; লাক্ষার ন্যায় রাঙ্গা হইলেও মেঘলোমের ন্যায় হইবে (যিশা ১:১৮), “আর আমি তোমাদিগকে নূতন হৃদয় দিব, ও তোমাদের অন্তরে নূতন আত্মা স্থাপন করিব”(যিহি ৩৬ ২৬)SC 50.2
তুমি তোমার পাপরাশি স্বীকার করিয়াছ এবং মনে মনে উহাদিগকে দূর করিয়া ফেলিয়াছ ।তুমি ঈশ্বরের নিকটে আত্ম-সমর্পনের সঙ্কল্প করিয়াছ।এইক্ষনে তাঁহার নিকটে যাইয়া তোমার পাপরাশি ধৌত করিয়া তোমাকে নূতন হৃদয় দান করি-বার জন্য প্রার্থনা কর ।তারপর বিশ্বাস কর যে, তিনি অঙ্গীকার করিয়াছেন বলিয়াই এইরূপ করিয়া থাকেন।পৃথিবীতে বাস করিবার কালে যীশু এই শিক্ষাটি প্রদান করিতে চাহিয়াছিলেন যে ঈশ্বর আমাদিগকে যে দানের বিষয় অঙ্গীকার করেন তাহা আমরা অবশ্যই পাইব বলিয়া বিশ্বাস করিব এবং এইরূপ বিশ্বাস করিলেই আমরা পাইতে পারিব । যে সকল ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তি যীশুর শক্তিতে বিশ্বাস করিয়াছিল যীশু তাহাদেরই ব্যাধি দূর করিয়াছেলেন;যে সকল বিষয় তাঁহারা বুঝিতে পারিত, সে সকল বিষয়ে তাঁহাদিগকে সাহায্য করিয়া, তিনি তাহাঁদের অদৃশ্য বিষয়েও তাঁহার সাহায্য করিবার শক্তিতে বিশ্বাস জম্মাইয়া দিতেন এবং এই ভাবে তাঁহারা তাঁহার পাপ ক্ষমা করিবার শক্তিতে বিশ্বাস করিতে চালিত হইত ।পক্ষাঘাতীকে সুস্থ করিবার সময়ে এই কথা তিনি স্পষ্ট করিয়া বলিয়াছিলেনঃ “পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করিতে মানুষ্যপুত্রের ক্ষমতা আছে ইহা যেন তোমরা জানিতে পার, এই জন্য-তিনি সেই পক্ষাঘাতিকে বলিলেন,-উঠ তোমার শয্যা তুলিয়া লও, এবং তোমার ঘরে চলিয়া যাও ” (মথি ৯:৬) ।এইরূপে খ্রীষ্টের অলৌকিক কার্য্য প্রসঙ্গে প্রেরিত যোহনও বলিয়াছেনঃ “এই সকল লেখা হইয়াছে, যেন তোমরা বিশ্বাস কর যে, যীশুই খ্রীষ্ট ঈশ্বরের পুত্র ,আর বিশ্বাস করিয়া যেন তাঁহার নামে জীবন প্রাপ্ত হও”(যোহনও ২০:৩১)।SC 51.1
পীড়িত ব্যক্তিকে সুস্থ করিবার বাইবেলোক্ত সরল বিবরন হইতে আমরা পাপ ক্ষমার নিমিও যীশু তে কিরূপে বিশ্বাস করিতে হয়, তাহাই শিক্ষা পাই। আমরা বৈথেস্ দার পক্ষাঘাতি রোগীর বিবরন পাঠ করিয়া দেখিতেছি-দুর্ভাগ্য ব্যক্তি একেবারে নিরূপায় ছিল; আটএিশ বৎসর ধরিয়া সে তাঁহার অঙ্গ প্রতঙ্গ চালাইতে পারে নাই; তথাপি যীশু তাহাকে আদেশ দিলেন,“উঠ তোমার খাট তুলিয়া লইয়া চরিয়া বেড়াও। ” রোগী হয়তো বলিতে পারিত , “প্রভু , আপনি যদি আমাকে সুস্থ করিয়া দেন, তবে আমি আপনার আদেশ পালন করিব।’’ কিন্তু সেরূপ না বলিয়া সে খ্রীষ্টের বাক্যে বিশ্বাস করিল এবং সে যেন সুস্থ হইতে পারিয়াছে এরূপ তাঁহার বিশ্বাস হইল ও তৎক্ষণাৎ সে উঠিবার চেষ্টা করিল। সে চালিয়া বেড়াইবার ইচ্ছা করিল এবং চলিয়া বেড়াইল ।সে খ্রীষ্টের বাক্য অনুযায়ী কার্য্য করিল এবং ঈশ্বর তাহাকে শক্তি দেলেন তাই সে সম্পূর্ণ সুস্থ হইল।SC 51.2
এইরূপে তুমিও একজন পাপী । তুমি তোমার অতিত পাপের নিমিও প্রায়শ্চিও করিতে পার না, তুমি হৃদয় পরিবর্ত্তন এবং নিজকে শুচি করিতে পার না। কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্টের দ্বারা তোমার জন্য এই সকল করিতে অঙ্গীকার করিয়াছেন ।তুমি সেই অঙ্গীকারে বিশ্বাস কর। তুমি তোমার আপন পাপ স্বীকার করিয়া ঈশ্বরের নিকট আত্ন-সমরর্পন কর। তুমি তাহাকে সেবা করিবার ইচ্ছা কর। তুমি এইরূপ করিলে পরই, ঈশ্বর তোমার প্রতি তাঁহার বাক্য আবশ্য সফল করিবেন ।যদি তুমি অঙ্গীকারে বিশ্বাস কর তবে ইহাও করিও যে,তুমি ক্ষমা লাভ করিয়াছ ও শুচি হইয়াছ,-ঈশ্বর বাকি অংশ পূরন করিবেন। পক্ষাঘাতী যখন সুস্থ হইয়াছে বলিয়া বিশ্বাস করিল,তখন যেরূপ খ্রীষ্ট তাহাকে চলিবার শক্তি দিয়াছিলেন সেইরূপ তুমিও সুস্থ বলিয়া মনে কর ।তুমি দৃঢ় বিশ্বাস করিলে বাস্তবিক এইরূপ হইবেSC 52.1
তুমি সম্পূর্ণ সুস্থ হইয়াছ কিনা, তাহা পূর্ণরূপে বুঝিবার জন্য অপেক্ষা না করিয়া বলিতে থাকঃ ” আমি বিশ্বাস করি;আমি তাহা অনুভব করিতেছি বলিয়া নহে, কিন্তু ঈশ্বর অঙ্গীকার করিয়া-ছেন, তাই বিশ্বাস করি।”SC 52.2
যীশু বলিয়াছেন “যাহা কিছু তোমরা প্রার্থনা ও যাচ্ঞা কর, বিশ্বাস করিও যে, তাহা পাইয়াছ, তাঁহাতে তোমাদের জন্য তাহাই হইবে”(মার্ক ১১ ২৪)। এই অঙ্গীকারের একটি সর্ত্ত রহিয়াছে —তাহা এই যে , আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী প্রাথনা করি। আমাদিগকে পাপ হইতে শুচি করা, তাঁহার উপযুক্ত সন্তানরূপে গড়িয়া তোলা এবং পবিত্র জীবন যাপনে সমর্থ করিয়া দেওয়া, ইহাই ঈশ্বরের ইচ্ছা ।সুতরাং আমারা এই সকল আশীর্ব্বাদ যাচ্ঞা করিতে,উহা পাইয়াছি বলিয়া বিশ্বাস করিতে এবং উহা পাওয়ার নিমিও ধন্যবাদ প্রদান করিতে পারি ।আমারা শুচি হইবার নিমিও যীশুর নিকটে গমন করিবার এবং লজ্জা ও অনুতাপ ছাড়িয়া তাঁহার ব্যবস্থার সম্মুখে দাঁড়াইবার মহা সুযোগ লাভ করিয়াছি। “কেননা খ্রীষ্ট যীশুতে জীবনের আত্নার যে ব্যবস্থা ,তাহা আমাকে পাপের ও মৃত্যুর ব্যবস্থা হইতে মুক্ত করিয়াছে” (রোমীয় ৮:১)।SC 53.1
এখন অবধি তুমি আর তোমার নিজের নহ ; তোমাকে মূল্য দ্বারা ক্রয় করা হইয়াছে ।“তোমার ক্ষয়নীয় বস্তু দ্বারা, রৌপ্য বা স্বর্ন দ্বারা মুক্ত হও নাই ,কিন্তু নির্দ্দোষ ও নিষ্কলঙ্ক মেষশাবকস্বরূপ খ্রীষ্টের বহুমূল্য রক্ত দ্বারা মুক্ত হইয়াছSC 53.2
“(১ পিতর ১:১৮,১৯)।ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের সহজ এই কার্য্যটি দ্বারা পবিত্র আত্না তোমার হৃদয়ে একনূতন জীবন সৃষ্টি করিয়াছে ।তুমি ঈশ্বরের পরিবারভুক্ত সন্তানরূপে জন্মগ্রহণ করিয়াছ এবং তিনি তোমাকে তাঁহর আপন পুত্রের ন্যায় ভালবাসেন ।SC 53.3
এইক্ষনে যীশুতে তোমার আত্ন-সমর্পণ সম্পুর্ন হইয়াছে, আর উহা কারিয়া নিওনা,আপনাকে তাহা হইতে বিচ্ছিন্ন করিও না ,কিন্তু দিনের পর দিন বলিতে থাক, “আমি খ্রীষ্টেরই ; আমি তাঁহাতে আত্ন সমর্পণ করিয়াছি ;” এবং তাঁহার আত্না তোমাকে দান করিবার জন্য ও তাঁহার করুনা দ্বারা তোমাকে রক্ষা করিবার জন্য তাঁহার নিকটে প্রার্থনা কর । ঈশ্বরে আত্মসমর্পণ ও বিশ্বাস করিয়া তুমি তাঁহার সন্তান হইয়াছ, এখন তাঁহাতেই জীবন ধারন কর। প্রেরিত পৌল বলিয়াছেন, “অতএব খীষ্ট যীশুকে, প্রভুকে যেমন গ্রহন করিয়াছ, তেমনি তাঁহাতেই চল” (কল ২:৬)।SC 53.4
কেহ কেহ এইরূপ মনে করিয়া থাকে যে, ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ দাবী করিবার পূর্ব্বে তাহাদের কিছুকাল পরীক্ষাধীন ভাবে থাকিয়া সদাপ্রভুর নিকটে প্রমান করিতে হইবে যে তাঁহারা সংশোধিত হইয়াছে। কিন্তু যে কোন সময়েই ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ দাবী করিতে পারে। তাহাদের দুর্ব্বলতার সাহায্য করিবার জন্য তাহাঁদের খ্রীষ্টের আত্মার ও তাহার করুনার প্রয়োজন; ইহা না হইলে তাঁহারা মন্দের প্রতিরোধ করিতে পারে না ।পাপপুণ্য, নিঃসহায় আশ্রিত হইবার আকাঙ্খা সহ- আমরা যেরূপ ভাবে আছি, ঠিক সেইরূপেই যেন তাঁহার নিকটে উপস্থিত হই, ইহাই যীশু আমাদের কাছে চাহেন। আমরা আমাদের সমুদয় দুর্ব্বলতা, মূর্খতা ও পাপাশয়তা লইয়া অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁহার পায়ের কাছে পতিত হইব ।তাঁহার প্রেমের বাহু দ্বারা আমাদিগকে বেষ্টিত রাখা, আমাদের ক্ষতগুলি বাধিয়া দেওয়া এবং সমুদয় অপবিত্রতা হইতে আমাদিগকে শুচি করা- এই সকল কার্য্যেই তাহার মহিমা নিহিত রহিয়াছে। SC 54.1
যীশু সকলকেই ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা করিয়া থাকেন , হাজার হাজার লোক রহিয়াছে যাহারা সহজে এই কথাটা বিশ্বাস করিতে পারে না। তাঁহারা ঈশ্বরের বাক্যানুযায়ি ঈশ্বরকে গ্রহন করিতে পারে না ।যাহারা সকল সর্ত্ত পুরন করে তাঁহারা স্বয়ং এই বিষয়ে জানিবার অধিকারি যে ,প্রত্যেক পাপের নিমিও খ্রীষ্ট মুক্তভাবে ক্ষমা প্রদান করিয়া থাকেন । ঈশ্বরের অঙ্গীকার সমূহ তোমার জন্য নহে- মন হইতে এরূপ সন্দেহ দূর করিয়া দেও। উহারা প্রত্যেক অনুতপ্ত অপরাধীর নিমিত্ত । পরিচর্যাকারী দূতগণ প্রত্যেক বিশ্বাসী আত্মার নিমিও খ্রীষ্টের দ্বারা শক্তি ও অনুগ্রহ আনয়ন করিয়া থাকেন । যাহাদের জন্য যীশু মরিলেন,তাহাদের মধ্যে এমন পাপী থাকিতে পারেন না যাহারা যীশুতে শক্তি,শুচিতা ও ধার্ম্মিকতা দেখিতে পায় না ।তাহাদের পাপ কলুষিত বস্ত্রগুলি খুলিয়া ফেলিয়া তাহাদিগকে ধার্ম্মিকতার শুক্ল বসন পরাইয়া দিবার জন্য তিনি অপেক্ষা করিতেছেন; তিনি তাহাদিগকে বাঁচিয়া থাকিতে বলিতেছেন ,মরিতে নহে।SC 54.2
সাধারন মানুষ যেমন মানুষের সহিত ব্যবহার করে, ঈশ্বর আমাদের সহিত সেরূপ ব্যবহার করেন না। তাঁহার চিন্তা-রাশি প্রেম,দয়া,ও অতি কমল করুনা পরিপূর্ণ ।তিনি বলিয়া-ছেন “দুষ্ট আপন পথ ,আধার্ম্মিক আপন সঙ্কল্প ত্যাগ করুক; এবং সে সদাপ্রভুর প্রতি ফিরিয়া আইসুক, তাহাতে তিনি তাহার প্রতি করুণা করিবেন ;আমাদের ঈশ্বরের প্রতি ফিরিয়া আইসুক কেননা তিনি প্রচুররূপে ক্ষমা করিবেন।” “আমি তোমার অধর্ম্ম সকল কুজ্ঝটিকার ন্যায়,তোমার পাপ সকল মেঘের ন্যায় ঘুচাইয়া ফেলিয়াছি” ( যিশা ৫৫:৭; ৪৪:২ )।SC 55.1
“কারন যে মরে ,তাঁহার মরনে আমার কিছু সন্তোষ নাই, ইহা প্রভু সদাপ্রভু বলেন; আতএব তোমারা মনঃ ফিরাইয়া বাঁচ ” (যিহি১৮:৩২)।শয়তান সর্ব্বদা ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদপূর্ণ আশ্বাসসমুহ অপহরণ করিয়া লইবার জন্য প্রস্তুত রহিয়াছে ।সে মানবের আত্না হইতে আশার প্রত্যেক ক্ষীন আলোক এবং জ্ঞানের কিরন রেখা হরন করিতে চাহে ;কিন্তু তুমি তাহাকে কখনও উহা করিতে দিবে না । পরীক্ষাকারীর কথায় কান না দিয়া তুমি বলিতে থাক; “আমি যেন বাঁচিয়া থাকিতে পারি ,এই জন্য যীশু মরিয়াছেন। তিনি আমাকে ভালবাসেন, তাই আমি বিনাশ প্রাপ্ত হই, হই, এরূপ তাঁহার ইচ্ছা নহে ।করুনায় পরিপূর্ণ আমার একজন স্বর্গস্থ পিতা আছেন ; আর যদিও আমি তাঁহার প্রেমের মর্যাদা রক্ষা করি নাই ,তাঁহার প্রদও আশীর্ব্বাদসমূহের অপব্যয় করিয়াছি ,তথাপি আমি উঠিয়া আমার পিতার নিকটে যাইব এবং তাহাকে বলিব ‘পিতঃ, স্বর্গের বিরুদ্ধে এবং তোমার সাক্ষাতে আমি পাপ করিয়াছি, আমি আর তোমার পুত্র নামের যোগ্য নই ,তোমার একজন মজুরের মত আমাকে রাখ ।’ তারপর ভবঘুরে ব্যক্তি কিরূপ সমাদরে গৃহীত হইবে, দৃষ্টান্তে তাহা বলা হইয়াছে; ‘সে দূরে থাকিতেই তাঁহার পিতা তাহাকে দেখিতে পাইলেন ও করুনাবিষ্ট হইলেন, আর দৌড়িয়া গিয়া তাঁহার গলা ধরিয়া তাহাকে চুম্বন করিতে থাকিলেন’ ” (লুক ১৫ :১৮-২০)।SC 55.2
কিন্তু এই দৃষ্টান্তটি করুন ও মর্ম্মস্পর্শী হইলেও, ইহা স্বর্গস্থ পিতার অসীম করুনা পূর্ণরূপে ব্যক্ত করে নাই। সদাপ্রভু, তাঁহার ভাববাদীর মুখে ঘোষণা করিতেছেন “আমি ত চিরপ্রেমে তোমাকে প্রেম করিয়া আসিতেছি ,এই জন্য আমি তোমার প্রতি চিরস্থায়ী দয়া করিলাম” (যির ৩১:৩)। যখন পাপী ব্যক্তি পিতার গৃহ হইতে দূরে গিয়া তাঁহার পিতার অর্থ উড়াইতেছিল ,গৃহ হইতে দূরে থাকিলেও পিতার হৃদয় তাঁহার জন্য ব্যাকুল হইয়াছিল; এবং ঈশ্বরের নিকটে ফিরিয়া আসিবার নিমিও অন্তরে জাগ্রৎ প্রত্যেক বাসনা-বিপথগামী পুত্রকে পিতার স্নেহ পূর্ণ বক্ষে ফিরাইয়া আনিবার নিমিও পবিত্র আত্মার করুন মিনতি, অনুরোধ ব্যতীত আর কিছুই নহে ।(অর্থাৎ ,পবিত্র আত্মার করুন মিনতি ও অনুরোধের ফলেই বিপথগামী পুত্রের মনঃপরিবর্ত্তন হইয়াছিল -অনুবাদক )SC 56.1
তোমার সম্মুখে বাইবেলের অমূল্য অঙ্গীকারসমূহ প্রকাশিত থাকা সও্বেও, তুমি কেন হৃদয়ে সন্দেহকে স্থান দিবে ? দুভার্গ্য পাপী ব্যক্তি যখন তাঁহার পাপরাশি ঝাড়িয়া ফেলিয়া সুপথে ফিরিবার জন্য আকুল বাসনা করে, তখন সদাপ্রভু কি সেই অনুতপ্ত ব্যক্তিকে তাঁহার পাপের কাছে আসিতে কখনও কঠোর ভাবে বাঁধা দিতে পারেন ?এরূপ চিন্তা দূর করিয়া দেও ! আমাদের স্বর্গস্থ পিতার সমন্ধে এরূপ ধারণা পোষণ করা অপেক্ষা আর কোন চিন্তা তোমার আত্নাকে অধিক পীড়া দিতে পারে না। তিনি পাপকে ঘৃনা করেন, কিন্তু পাপীকে ভালবাসেন এবং তিনি খ্রীষ্টের দ্বারা আপনাকে এই জন্য দান করিলেন যেন যাহারা ইচ্ছা করে, তাহারাই মুক্তি লাভ করিতে ও গৌরবময় রাজ্যের অনন্ত আশীর্ব্বাদ ভোগ করিতে পারে । আমাদের প্রতি তাহার প্রেম বাক্ত করিবার জন্য তিনি যেরূপ ভাষা ব্যবহার করিয়াছেন ,তাহা অপেক্ষা দৃঢ়তর ও অধিকতর কোমল বাক্য আর কি হইতে পারে ?তিনি বলিয়াছেন ,” স্ত্রীলোক কি আপন স্তনপায়ী শিশুকে ভুলিয়া যাইতে পারে ? আপন গর্ব্ভজাত বালকের প্রতি কি স্নেহ করিবে না? বরং তাঁহারা ভুলিয়া যাইতে পারে, তথাপি আমি তোমাকে ভুলিয়া যাইব না” (যিশা ৪৯:১৫)SC 56.2
যাহারা সন্দেহ করিতেছে, ও কম্পিত হইতেছে ,তাঁহারা একবার দৃষ্টিপাত কর; কারন যীশু আমাদের পক্ষে অনুরোধ করিবার জন্য রহিয়াছেন । নিজ প্রিয় পুত্রকে দান করিয়াছেন বলিয়া ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দাও এবং এই প্রার্থনা কর যেন তাঁহার মৃত্যু তোমার পক্ষে বিফল না হয় । আত্মা তোমাকে আজি আহবান করিতেছেন । সমস্ত হৃদয় লইয়া যিশুর নিকটে আইস তাহা হইলে তুমি তাঁহার আশীর্বাদ দাবি করিতে পারিবে।SC 57.1
অঙ্গীকার সমূহ পাঠ করিবার সময় মনে রাখিও যে উহারা অব্যক্ত প্রেম ও করুনার বানী। অনন্ত প্রেমের মহান হৃদয়, অসীম করুণায় পাপীর প্রতি ধাবিত হইয়াছে । “আমারা তাহার রক্ত দ্বারা মুক্তি, অর্থাৎ অপরাধ সকলের মোচন পাইয়াছি “(ইফি ১:৭) । ঈশ্বর আমাদের সহায় এই কথাটি বিশ্বাস কর। তিনি মানুষে তাহার নৈতিক প্রতি মূর্ত্তি ফিরাইয়া আনিতে চাহেন । পাপস্বীকার ও অনুতাপ করিয়া তুমি তাঁহার নিকটে অগ্রসর হইতে থাকিলে তিনি করুনা ও ক্ষমা সহকারে তোমার নিকট আসিতে থাকিবেন ।SC 57.2