ঈশ্বর সন্মন্ধে জ্ঞান|(A KNOWLEDGE OF GOD)
ত্রাণার্থীর আশাপূরণ ।
- Contents- সূচীপত্র।
-
- মানুষের প্রতি ঈশ্বরের প্রেম । ( GOD’S LOVE FOR MAN )
- দ্বিতীয় অধ্যায়
- পাপীর খ্রীষ্টে প্রয়োজন । (The SINNER’S NEED OF CHRIST)
- তৃতীয় অধ্যায়
- অনুতাপ । (REPENTANCE)
- চতুর্থ অধ্যায়
- পাপ স্বীকার । (CONFESSION)
- পঞ্চম অধ্যায়
- আত্ন-সমর্পণ |(CONSERATION)
- ষষ্ঠ অধ্যায়
- বিশ্বাস ও পরিগ্রহন |(FAITH AND ACCEPTANCE)
- সপ্তম অধ্যায়
- শিষ্যত্বের লক্ষন |(THE TEST OF DISCIPLESHIP)
- অষ্টম অধ্যায়
- খ্রীষ্টে শ্রীবৃদ্ধি লাভ |(GROWING UP INTO CHIRST)
- নবম অধ্যয়
- কার্য্য ও জীবন । (THE WORK AND LIFE)
- দশম অধ্যায়
- ঈশ্বর সন্মন্ধে জ্ঞান|(A KNOWLEDGE OF GOD)
- একাদশ অধ্যায়
- প্রার্থনা করিবার অধিকার। (THE PRIVILIEGE OF PRAYER)
- দ্বাদশ অধ্যায়
- সন্দেহ ভঞ্জন। (WHAT TO DO WITH DOUBT)
- ত্রয়োদশ অধ্যায়
- আনন্দ সাধনা । (REJOICING IN THE LORD)
Search Results
- Results
- Related
- Featured
- Weighted Relevancy
- Content Sequence
- Relevancy
- Earliest First
- Latest First
- Exact Match First, Root Words Second
- Exact word match
- Root word match
- EGW Collections
- All collections
- Lifetime Works (1845-1917)
- Compilations (1918-present)
- Adventist Pioneer Library
- My Bible
- Dictionary
- Reference
- Short
- Long
- Paragraph
No results.
EGW Extras
Directory
দশম অধ্যায়
ঈশ্বর সন্মন্ধে জ্ঞান|(A KNOWLEDGE OF GOD)
ঈশ্বর নানা উপায়ে আমাদের নিকটে স্ব -প্রকাশ করিতে আমাদিগকে তাঁহার সহভাগিতা অনয়ায়ন করিতে চেষ্টা করিতে-ছেন। প্রকৃতি অনবরত আমাদের ইন্দ্রিয়সমুহের কয়হা বলিতেছেন। ঈশ্বর স্বহস্ত নিম্মিত বিষয়সমুহ প্রকাশিত তাঁহার প্রেম ও প্রতাপ দ্বারা মুক্ত হৃদয় ভাবাবিষ্ট হইবে। মনোযোগ প্রদান ,করিলে প্রকৃতির বিভিন্ন বিষয়ের মধ্য দিয়া ঈশ্বর যে কথা বাওা বলিতেছেন তাহা শুনিতে ও বুঝিতে পারা যায় । সবুজ ক্ষেএ উচ্চ বৃক্ষ মুকুল ও ফুল ভাসমান মেঘ ধারাবাহী বরষা কলনাদিনী তটিনী , আকাশের মহিমা প্রভিতি আমাদের হৃদয়ে সাড়া দিতাছে এবং যিনি এই সমুদয় সৃষ্টি করিয়াছেন তাঁহার সহিত পরিচিত হইবের নিমিও আমাদিকে আহবান করিতেছে ।SC 88.1
আমাদের ত্রাণকওা ,তাঁহার অমূল্য উপদেশ প্রকৃতির বস্তুনিচয়ের সহিত জড়িত করিয়া রাখিতেন ।লতাপাতা, ফুল ,ফল পক্ষী, পর্ব্বত ,জলাশয়, সুন্দর গগণমন্ডল এবং দৈনিক জীবনের ঘটনা ও অবস্তাসমুহ ঈশ্বরের সত্য বানীর সহিত এরুপভাবে গ্রথিত রহিয়াছে যে এমন কি মানবজীবনের কথর পরিশ্রমের মধ্যেও যেন তাঁহার শিক্ষাসমূহ স্মৃতিপথে জাগ্রত হয় ।SC 88.2
ঈশ্বরের ইচ্ছা এই যে তাঁহার সন্তানগণ যেন তাঁহার কার্য্য সমুহের যথাযথ গুন গ্রহন করে এবং যাহা দ্বারা আমাদের এই পৃথীবির গৃহ সাজাইয়া রাখিয়াছেন সেই সান্ত ও সরল সৌন্দর্য্য উপভোগ করে ।তিনি অতিশয় সৌন্দর্য প্রিয় এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য অপেক্ষা তিনি সর্ব্বপরি চরিত্রের সৌন্দর্য্য অধিক পছন্দ করেন;তাঁহার ইচ্ছা এই যে আমাদের মধ্যে যেন ফুলের শান্ত মাধুরী,-পবিত্রতা ও সরলতা ফুটিয়া উঠে।SC 88.3
মনোযোগ দিয়া শুনিতে পারিলে ঈশ্বরের সৃষ্ট বিষয়সমূহ আমাদিগকে বিশ্বাস ও আজ্ঞাবহতার পাঠ শিক্ষা দিবে। যৃগ যুগ ধরিয়া পথহীন বিরাট ব্যোমে, অথচ পথে যাহারা ভ্রমণ করিতেছে সেই তারকারাজী হইতে আরম্ভ করিয়া অতি ক্ষুদ্র পরমাণু পর্যন্ত প্রকৃতির বিষয়গুলি সৃষ্টিকর্ত্তার বিধান মানিয়া চলিতেছে। ঈশ্বর প্রত্যেকের জন্য ভাবিয়া থাকেন এবং তাঁহার সৃষ্ট প্রত্যেক বস্তু পোষণ করেন। যিনি বিরাট বিশ্ব-ব্যাপী অসংখ্য জগৎ ধারণ করিয়া রহিয়াছেন, তিনিই আবার, নির্ভয়ে সঈীতকারী ক্ষুদ্র চড়াই পাখিটীরও অভাবের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়াছেন। মানুষ যখন তাহার দৈনিক কাজে বাহির হয়, অথবা প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাকে, তখন তাহারা রাত্রিতে শযন, অথবা সকালে শয্যাত্যাগ করে, ধনী যখন নিজ প্রাসাদে প্রমদ-ভোজে মত্ত, অথবা দরিদ্র যখন নিজ পর্নকুটীরে সামান্য আহার লইয়া সন্তানগণ সহ ক্ষুধা-ক্লিষ্ট- তখন এই প্রত্যেক জনের প্রতিই স্বর্গস্হ পিতা সস্নেহে দৃষ্টিপাত করিতেছেন। এমন এক বিন্দু চক্ষুজল পতিত হয় না যাহা ঈশ্বর লক্ষ্য না করেন, এমন হাসিটা নাই যাহা তিনি না দেখিয়া থাকেন। এই বিষয়টি সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিতে পারিলে, আমাদের সকল প্রকার অকারন চিন্তা ও উদ্বেগ দূরীভূত হইত। তাহা হইলে বর্তমানের ন্যায় আমাদের জীবন এরুপ হতাশপূর্ণ থাকিত না; কারণ ক্ষুদ্র বা বৃহৎ হৌক্, প্রত্যেক বিষয়ই ঈশ্বরের হস্তে অপিত হইত, যিনি কখনও চিন্তা-ভারে প্রপীড়িত নহেন, তখন আমারা আত্নার এরুপ বিশ্বাম উপভোগ করিতে পারিব, যাহা বহুকাল ধরিয়া অনেকের নিকটেই অজ্ঞাত।SC 90.1
এই পৃথিবীর মনোরম শোভা দেখিয়া যখন তুমি আনন্দ বোধ কর, তখন কল্পনায় একবার সেই ভবিষ্যৎ জগতের বিষয়ে ভাবিয়া দেখিয়ও- যে জগতে পাপ ও মৃত্যুর আঘাত লাগিবে না, যে স্থানে প্রকৃতির শান্ত শোভায় আভিশাপের কাল ছায়া পতিত হইবে না। কল্পনা-চিত্রে তুমি সেই পরিত্রাণ প্রাপ্তগণের আলয় অঙ্কিত কর এবং মনে রাখিও যে উহা উজ্জলতম কল্পনা-চিত্র অপেক্ষাও অধিকতর গৌরবময় হইবে। প্রকৃতিতে ঈশ্বরের বিচিত্র বিষয়ে আমতা তাঁহার গৌরবের শুধূ ক্ষীণ আভাস পাইয়া থাকি। শাস্ত্রে লিহকিত হইয়াছে, “চক্ষু যাহা দেখে নাই, কর্ণ যাহা শুনে নাইএবং মনুষ্যের হৃদয়কাশে যাহা উঠে নাই,যাহা ঈশ্বর, যাহারা তাঁহাকে প্রেম করে, তাহাদের জন্য প্রস্তুত করিয়াছেন” (১ করি ২ ৯ )।SC 90.2
কবি ও উদ্ভিদতত্ত্বজ্ঞ পন্ডিত প্রকিতি সম্মন্ধে অনেক কথা বলিয়া থাকেন, কিন্তু একমাত্র খ্রীষ্টীয়ানই পূথিবীর সৌন্দয্য প্রাণ ভরিয়া উপভোগ করিতে পারেন, কারণ তিনি উহা তাঁহার পিতার স্বহস্ত-কৃত বলিয়া চিনিতে পারেন এবং প্রত্যেক বৃক্ষ, পুষ্প ও তৃণগুল্মে তাহাঁরই প্রেম অনুভব করেন। কেহই পূর্ণ ভাবে পাহাড় ও উপত্যকার, নদী ও সাগরের নিগূঢ় রহস্য বুঝিতে পারিবে না, যদি সে উহাদিগকে মানুষের প্রতি ঈশ্বরের প্রেমের অভিব্যক্তি বলিয়া গ্রহণ না করেন। SC 91.1
ঈশ্বরের স্বীয় কার্জসমূহে্র মধ্য দিয়া এবং হ্রিদয়র তাঁহার আত্নার প্রভাব দ্বারা আমাদের সহিত কথা বলিয়া থাকেন। যদি আমাদের হৃদয়-দুয়ার মুক্ত করিয়া দেই, তবে সকল রকম অবস্থা ও আবেস্টনের মধ্যে, আমাদের চারিদিকে প্রতিদিন যে সমস্ত পরিবত্তন সংঘটিত হইতেছে সেই সকলের মধ্য হইতে, আমারা অমূল্য শিক্ষাসমূহ পাইতে পারি। গীতসংহিতাকার ঈশ্বরের ন্যায় বিধান সম্মন্ধে বলিয়াছেন, “পূথিবী সদাপ্রভুর দয়াতে পরিপূর্ণ ” (গীত ৩৩ঃ৫)। “জ্ঞানবান কে ? সে এই সমস্ত বিবেচনা করিবে, তাহারা সদাপ্রভুর বিবিধ দয়া আলোচনা করিবে” (গীত ১০৭ঃ৪৩)।SC 91.2
ঈশ্বর তাঁহার বাক্য দ্বারাও (শাস্ত্রের সাহায্যে) আমাদের সহিত কথা কহিয়া থাকেন। উহাতে তাঁহার স্বভাব মানুষের সহিত তাঁহার ব্যবহার এবং মহাপরিত্রাণ কার্জ্য স্পস্টরুপে প্রকাশিত হইয়াছে। আমাদের সম্মুখে পিতৃকূলপতি ও ভাববাদিগণের এবং অন্যান্য প্রাচিনকালীন পবিত্র ব্যক্তিগনের ইতিহাস উন্মুত্ত রহিয়াছে। তাঁহারও “আমাদের ন্যায় সুখদুঃখভোগী মনুষ্য ছিলেন(যাকোর ৫ঃ১৭)। আমরা দেখিতে পাই, কিরুপে তাঁহারা আমাদেরই ন্যায় নিরুৎসাহে সহিত সংগ্রাম করিয়াছিলেন, আমাদেরই ন্যায় কিরুপে তাঁহারা প্রলোভনে পতিত হিয়াছিলেনেবং পুনরায় হৃদয়ে বল করিয়া ঈশ্বরের অনুগ্রহ জয়ী হইয়াছেন; এই সমুদয় দৃষ্টান্ত দ্বারা আমরা ধার্মিকতার নিমিত্ত সংগ্রামে উৎসাহিত হই। যে সকল অমূল্য অভিজ্ঞতা তাঁহাদিগকে দেওয়া হইয়াছিল, তারাহা যে জ্যোতিঃ, প্রেম ও আশীর্বাদ লাভ করিয়াছিলেন, ঈশ্বরের করুণা বলে তাঁহারা যে কার্জ্য করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, এই সমূদয় বিষয় পাঠ করিলে, যে আত্না দ্বারা তাঁহারা অনুপ্রাণিত হইয়াছিলেন, তাহাই আমাদের হৃদয়ে পবিত্র প্রতিযোগিতার বহ্নি প্রজ্জলিত করিবে এবং তাঁহাদের ন্যায় চরিত্রবান হইবার ও তাহদের ন্যায় ঈশ্বরের সঙ্গে ভ্রমণ করিবার বাসনা জাগাইয়া দিবে।SC 91.3
যীশু পুরাত্ন নিয়মের শাস্ত্রকলাপ সমন্ধে বলিয়াছেন এবং নতুন নিয়ম সম্পর্কে উহা আরও অধিক সত্য যে-“তাহাই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়”(মোহন ৫ঃ৩৯), তিনি ত্রানকর্তা এবং যাঁহাতে আমাদের অনন্ত জিবনের আশা নিহিত রহিয়াছে। সত্য সত্যই, সমূদয় বাইবেলের খ্রীষ্ট সম্মন্ধে বলা হইয়াছে। “যাহা হইয়াছে, তাঁহার কিছুই তাঁহা ব্যতিরেকে হ্য় নাই” (মোহন ১ঃ৩),-জগৎ সৃস্টির এই প্রথম বিবরণ হইতে আরম্ভ করিয়া, “দেখ, আমি শীঘ্র আসিতেছি” (প্রকা ২২ঃ১২), এই শেষ অঈীকার পর্যন্ত, আমারা তাহাঁরই কার্জ্য সম্মন্ধে পাঠ করিতেছি, এবং তাহারই বাক্য শ্রবন করিতেছি। পরিত্রাণ কর্ত্তার বিষয়ে জানিতে চাহিলে, পবিত্র শাস্ত্র কলাপ পাঠ কর।SC 92.1
ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা সমস্ত হৃদয় পূর্ণ কর। তাহার বাক্যকলাপ জীবন্ত জলের ন্যায় এবং উহারা তমার তীব্র পিপাসা প্রশমিত করিবে। উয়াহি স্বর্গের জীবন্ত খাদ্য। যীশু ঘোষণা করিয়াছেন, “তোমরা যদি মনুষ্যপুত্রের মাংস ভোজন ও তাঁহার রক্ত পান না কর, তোমাদিগেতে জিবন নাই” (যোহন ৬ঃ৫৩)। তারপর তিনিই পুনরায় বুঝাইয়া বলিয়াছেন, “আমি তোমাদিগকে যে সকল কথা বলিয়াছি, তাহা আত্না ও জীবন” (যোহন ৬ঃ৬৩)। আমাদের খাদ্য ও পানীয় হইতে দেহ গড়িয়া উঠে; প্রাকৃতিক জগতের ন্যায় আধ্যাত্নিক জগতেও নিয়মিত সুব্যবস্হা রহিয়াছে; আমরা আধ্যাত্নিক স্বভাবের ধারা ও শক্তি লাভ করিব। SC 92.2
দূতগণেরও পরিত্রাণ বিষয়ে জানিবার বাসনা রহিয়াছে; অনন্ত যুগ ধরিয়া পরিত্রান-প্রাপ্তগণের জ্ঞান ও সঙ্গীতের বিষয় হইবে। তবে ইহা কি মনোযোগ শকারে পড়িবার ও ভাবিবার বিষয় নহে ? যীশুর অপার করুণা ও প্রেম, আমাদের আলচনা করা কর্ত্তব্য। পাপরাশি হইতে তাঁহার সন্তানগণকে মুক্ত করিবার জন্য যিনি এই পৃথিবীতে আসিয়াছিলেন, পবিত্র কার্জ্য সম্মন্ধে ধ্যান করিব। এই প্রকারে স্বর্গীয় বিসয়ের ধ্যান করিলে আমাদের প্রেমেও বিশ্বাস দৃঢ়তর হইবে এবং আমাদের প্রার্থনা ঈশ্বেরর নিক্তে আরও অধিকরুপে গ্রাহ্য হইবে, কারণ তখন প্রার্থনাসমূহ প্রেম ও বিশ্বাসের সহিত বিশেষ ভাবে মিশ্রিত থাকিবে। উহারা তখন সারবা্ন ও আকুলতা পূর্ণ হইবে। তখন যীশুতে দৃঢ় নির্ভরতা জন্মিবে এবং যাহারা তাঁহার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরকে লাভ ক্রিতে চায় তাহাদিগকে পূর্ণ পরিত্রাণ দান করিতে তাঁহার শক্তি রহিয়াছে, এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা জন্মিবে।SC 93.1
ত্রানকত্তার পূর্ণ ও সিদ্ধ স্বভাবের বিষয়ে ধ্যান করিলে , আমরা তাঁহার পবিত্রতার প্রতিমুর্ত্তিতে সম্পুরনভাবে রূপান্তরীতকৃত ও নবীনীভূত হইতে চেষ্টা করিব। যাঁহাকে আমরা শ্রদ্ধা ও ভক্তি করি তাঁহার ন্যায় হইবার জন্য প্রাণে আকুল বাসনা হইবে। খ্রীষ্টের বিষয়ে আমরা যত অধিক চিন্তা করিব তত অধিক আমরা তাঁহার বিষয়ে অপর সকলকে বলিব এবং জগতের সম্মুখে তাঁহাকে প্রদর্শন করিব।SC 93.2
শুধু বিদ্বানের নিমিত্ত বাইবেল লিখিত হয় নাই; বরং উহা সাধারণ লোকদের নিমিত্তই সঙ্কল্পিত হইয়াছিল। পরিত্রানের জন্য যে সমূদয় মহা সত্যের প্রয়োজন, তাহা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট কারা হইয়াছে; এবং যাহারা সরলভাবে প্রকাশিত ঈশ্বরের ইচ্ছা ত্যাগ করিয়া আপনাদের বুদ্ধি অনুযায়ী চলে, তাহারা ব্যতীত অপর কেহই কোন ভুল করিবে না বা পথ হারাইবে না।SC 94.1
শাস্ত্রকলাপের শিক্ষা সম্মন্ধে কাহারও সাক্ষ্য গ্রহণ না করিয়া, আমরা নিজেরাই ঈশ্বরের বাক্য পাঠ করিব। আমরা যদি অপরকে আমাদের চিন্তা করিবার ভার দয়েয় তবে আমাদের শক্তি ও সামর্থ্য পঙ্গু ও সঙ্কুচিত হইয়া যাইবে। যে সকল বিষয়ে মনঃসংযোগের প্রয়োজন সেই সকল বিষয়ে আলোচনা না করিলে উচ্চ মানসিক শক্তিসমূহ খর্ব্ব হইয়া যাইবে এবং ঈশ্বর-বাক্যের গূঢ় অর্থ ধারণা করিবার ক্ষমতা নস্ত করিয়া দিবে। শাস্ত্রপদের সহিত শাস্ত্রপদ এবং আত্নিক বিষয়ের সহিত আত্নিক বিষয়ের তুলনা করিয়া যদি মারা বাইবেলের বিষয়গুলির পরস্পর সম্মন্ধ নির্ণয় করি তবে আমাদের মন প্রসারিত হইবে।SC 94.2
ধর্মশাস্ত্র পাঠ ব্যতীত অপর কিছতে অধিক পরিমানে বুদ্ধি্র পরিচালনা হইতে পারে না। বাইবেলের উদার ও মহান্ সত্য ব্যতীত এরুপ আর কোন সারগর্ভ পুস্তক নাই, যাহা দ্বারা চিন্তা —রাশি উন্নত এবং মানসিক শক্তিসমূহ সতেজ হইতে পারে। যে ভাবে পাঠ করা উচিত, সেই ভাবে ঈশ্বরের বাক্য পঠিত হইলে হইলে সকল ম্নের উদারতা, চরিত্রের মহত্ত এবং উদ্দেশ্যের স্হিরতা প্রভৃতি যে সকল গুণ বর্তমানে অতিশয় বিরল, তাহাই লাভ করিতে পারিবে।SC 94.3
কিন্তু ধর্মশাস্ত্র তাড়াতাড়ি পড়িয়া গেলে কোনই লাভ হয় না। একজন হয়তো সমস্ত বাইবেল খানি পড়িয়া শেষ করিতে পারে, অথচ উহার সৌন্দর্য অথবা উহার নিগুঢ় ও গভীর অর্থ গ্রহন করিতে পারিবে না। কোন প্রকার প্রকৃত উপদেশ লাভ না করিয়া লক্ষ্যহীন ভাবে বহু অধ্যায় পাঠ করা অপেক্ষা বরং একটি মাত্র পদ উত্তমরূপে পাঠ করা ভাল, যদি প্রানে উহার গূঢ় অর্থ প্রকাশিত এবং পরিত্রাণ কল্পনার সহিত উহার স্পষ্ট প্রতিভাত হয়। সর্বদা বাইবেলখানি তোমার সঙ্গে সঙ্গে রাখেবে। সুযোগ পাইলেই উহা খুলিয়া পড়িবে এবং পদগুলি মনের উপর অঙ্কিত করিয়া রাখিবে। এমন কি রাস্তায় ভ্রমন করিবার সময়েও একটি পদ পাঠ করিতে এবং হৃদয়ে অঙ্কিত রাখিয়া ঐ বিষয়ে ধ্যান করিতে পার।SC 95.1
ঐকান্তিক মনোযোগ ও প্রাথনা-রত পাঠ ব্যতীত আমরা জ্ঞান লাভ করতে পারি না।শাস্ত্র বিভিন্ন কতিপয় অংশ এত সরল যে তাহা ভুল বুঝিবার কোনই কারন নাই, কিন্তু এরূপ অনেক অংশ যাহার অর্থ নিগূঢ় এবং শুধু পাঠ করিলেই অর্থ প্রকাশ হয় না ।শাস্ত্রের বিভিন্ন পুস্তকের পরস্পর তুলানা করা অবশ্যক ।যত্নপূর্বক অনুসন্ধান এবং প্রার্থনা সহকারে পাঠ করিতে হইবে । এইভাবে পাঠ করলে সুফল লাভ করা যাইবে। খনি কর যেরূপ ভাবে ভূগর্ভে লুক্কায়িত মূল্যবান ধাতুর সন্ধান পায় সাএ রূপ যে ব্যক্তি অসাবধান অনুসন্ধানকারীর দৃষ্টি পথ হইতে লুক্কায়িত নিগূঢ় সম্পদ নিমিও ঈশ্বরের ব্যাক্য সন্ধান করে সাই ব্যক্তি মহামূল্যবান সত্য লাভ করিতে পারে ।হৃদয় অনুপ্রানিত ব্যাক্যের ধ্যান করিলে উহা জীবন স্রোত হইতে প্রবাহিত তটিনীর ন্যায় হইবে।SC 95.2
প্রার্থনা না করিয়া কখন বাইবেল পাঠ করা উচিত নহে । উহার পৃষ্ঠাগুলি খুলিবার পূর্ব্বে আমাদের পবিত্র আত্মার নিকটে জ্ঞান প্রকাশের নিমিও প্রাথনা করা উচিত এবং হইলে আমাদিগকে উহা দান করা হইবে। নথনেল যীশুর নিকটে উপস্থিত হইলে যীশু বলিয়াছিলেন ” ঐ দেখ একজন প্রকৃত ইস্রায়েলীয় তাঁহার অন্তরে ছল নাই। নথনেল তাহাকে কহিলেন,আপনি কিসে আমাকে চিনিলেন? যীশু উত্তর করিয়া তাহাকে কহিলেন ফিলিপ তোমাকে ডাকিবার পুর্ব্বে যখন তুমি সেই ডুমুর গাছের তলে ছিলে তখন তোমাকে দেখিইয়াছিলাম” (যোহন ১ ৪৭ ৪৮ ) সত্য কি তা জানিবার জন্য আমারা যীশুর নিকতে আলো চাহিলে তিনি আমাদিগকে বিজন প্রার্থনার স্থানেও দেখিতে পাইবেন যাহারা আত্মার দীন্তার ঐশ্বরিক চালনার নিমিও প্রার্থনা করে। আলোর জগতে দূতগন তাহাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকিবেন।SC 95.3
প্রবিএ আত্মা ত্রাণকর্তাকে উন্নত ও মহিমান্বিত করিয়া থাকেন। খ্রীষ্ট, তাঁহার ধার্মিকতার পবিত্রতা এবং যাহার সাহায্যে আমরা যে মহা পরিত্রাণ পাই ।সেই খ্রীষ্টের পরিচয় প্রদান করাই পবিত্র আত্মার কার্য্য। যীশু কহিয়াছেন “যাহা আমার ,তাঁহাই লইয়া তোমাদিগকে জানাইবেন”(যোহন ১৬ ১৪)। সত্যের আত্নই ঐশ্বরিকSC 96.1
সত্যের একমাএ অভীষ্ট ফলদায়ক শিক্ষক ঈশ্বর যখন তাঁহার পুত্রকে মানজাতির জন্ম মরিতে দিয়াছেন এবং মানুষের উপদেষ্টা অ প্রতি মুহুওের চালোকরুপে তাঁহার আত্মাকে নিযুক্ত করিয়াছিলেন , তাহাকে তিনি সেই মানবজাতির না জানি কতই বহু-মূল্য জ্ঞান করেন।SC 96.2
“তোমার বাক্য আমার চরনের প্রদীপ”
বিপথে যে দেয় পথটী চিনায়ে
চরণ-প্রদীপ মোদের সেই ;
ঈশ করুণার স্রোতের ধারাটি;
পথিকের পথে তটিনী এই। জীবন-খাদ্য, এই নিয়ে বাঁচি;
মধুর মান্না জগতী তলে
গগনের পরে যে দেশ বিরাজে
চালক মদের দেয় যে বলে।
আধার রাতের অনল-স্তম্ভ,
দিবসের মেঘ রক্তময়;
জীবন-তরনি ডুব ডুব যবে
শরণ মোদের চিরাশ্রয় ।
জগৎ পিতার শাশ্বত বাণী ;
ইচছা মহান পুত্রের তাঁর-
তোমা বিনে হেথা কেমনে যাপিব, লভিব কেমনে স্বরগ আর ?SC 96.3