Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents

ত্রাণার্থীর আশাপূরণ ।

 - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First
    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents

    একাদশ অধ্যায়

    প্রার্থনা করিবার অধিকার। (THE PRIVILIEGE OF PRAYER)

    ঈশ্বর প্রকৃতি প্রতাদেশ,আপন বিচিত্র বিধান এবং তাঁহার আত্তার প্রভাব দ্বারা আমাদের সঙ্গে কথা কহিয়া থাকেন। কিন্ত এই সমদয়ও যথেষ্ট নহে; আমাদের নিকট তাহাদের প্রান চালিয়া দেওয়া অবশ্যক। আত্মিক জীবন ও শক্তি লাভ করিবার জন্য স্বর্গস্ত পিতার সহিত আমাদের প্রকৃত যোগাযোগ রাখিতে হইবে ।আমাদের মন হয়তো তাঁহার পানে চালিত হইতে পারে; হইতে পারে;হয়তো তাঁহার কায্য, করুনা ও আশীর্বাদ সমুহের বিষয়ে আমরা চিন্তা করিতে পারি ; কিন্ত ইহা দ্বারা সম্পূর্ণ ভাবে ঈশ্বরের প্রানের আলাপন সম্ভব নহে ।ঈশ্বরের সহিত আলাপ করিতে হইলে, আমাদের প্রকত জীবন সমন্ধ তাঁহাকে কিছু বলতে হইবে ।SC 98.1

    অন্তরঙ্গ বন্ধুর নিকট আমরা যেরুপ প্রান খুলিয়া দেই, ঈশ্বরের নিকট সেইরুপ প্রান খুলিয়া দেওয়াকেই প্রাথনা বলে । আমরা কিরুপ তাঁহাকে তাহা জানাইবার জন্য নহে, কিন্ত তাঁহাকে গ্রহন করিতে আমাদিগকে সমর্থ করিবার জন্য প্রাথনা প্রয়োজন।প্রাথনার বলে ঈশ্বর আমাদের কাছে নামিয়া আসেন না, কিন্ত আমরা ঈশ্বরের পানে উথিত হই।SC 98.2

    যীশু পৃথিবী বাসের সময়ে কেমন করিয়া প্রাথনা করিতে হয়, শিষ্যদিগকে তাহা শিক্ষা দিয়াছিলেন । তাহাদের প্রতি-দিনের অভাব ঈশ্বরের সম্মখে উপসিত করিবার ও যাবতীয় ভাবনার ভার তাঁহার উপর অর্পণ করিবার জন্য তিনি তাহদিগকে চালিত করিতেন। তাহাদের আবেদন ঈশ্বর সমীপে গ্রাহ্য হইবে তাহাদের প্রতি তাঁহার এই আশ্বাস-বানী আমাদের পক্ষেও বটে।SC 98.3

    মনুষ্য সমাজে বাস করিবার কালে যীশু প্রায়শঃই প্রার্থনায় রত থাকিতেন। আমাদের অভাব ও দুর্বলতা সমূহ, তিনি আপনার করিয়া নিলেন এবং তাঁহার পিতার নিকট হইতে আরও শক্তি লাভ করিবার জন্য মিনতি ও আবেদনকারী সাজিলেন, যেন বিপদ ও কর্ত্তব্যের সম্মুখীন হইবার জন্য আরও হইতে পারেন। তিনি সকল বিষয়ে আমাদের দৃস্টান্ত স্বরূপ। আমাদের দুর্ব্বলতায় তিনি আমাদের সমব্যথী ভ্রাতা, “তিনি সর্ব্ব বিষয়ে আমাদের ন্যায় পরীক্ষিত হইয়াছেন।” কিন্তু নিস্পাপ ছিলেন বলিয়া তাঁহার প্রকৃতি পাপ হইতে পরাবৃত্ত হইত। তিনি পাপের জগতে আত্নার বেদনা ও সংগ্রাম সহ্য করিয়াছেন। তাঁর মানব প্রকৃতি প্রার্থনাকে প্রয়োজনীয় বিষয় ও অধিকার করিয়া তুলিয়াছে। তিনি তাঁহার পিতার সহিত আলাপ করিয়া আনন্দ ও সান্ত্বনা পাইতেন। যদি মানব জাতির ত্রান-কর্তা ঈশ্বর-পুত্রই প্রার্থনার আব্যশকতা বোধ করিলেন, তবে দুর্ব্বল ও পাপপূর্ণ মানবসকলের অবিরত ব্যাকুল প্রার্থনার ক্ত প্রয়োজন।SC 99.1

    আমাদের স্বর্গস্হ পিতা তাঁহার পূর্ণ আশীর্বাদ আমাদিগকে দান করিবার নিমিত্তে অপেক্ষা করিতেছেন। আমরা অপার প্রেমের নির্ঝর হইতে প্রান ভরিয়া পান করিবার মহাসুযোগ প্রাপ্ত হইয়াছি। কি আশ্চর্জ্য যে আমারা এত অল্প প্রার্থনা করিতে চাহি ঈশ্বর তাঁহার দীনতম সন্তানগণেরও অকপট প্রার্থনা শুনিবার জন্য প্রস্তুত ও ইছুক আছেন, কিন্তু তথাপি আমরা তাঁহাকে আমাদের অভাব জানাইতেক্ত অনিচ্ছা প্রকাশ করি। যখন ঈশ্বরের অনন্ত প্রেমের হৃদয়, তাঁহার নিরুপায় ও পরীক্ষা-প্রবণ মানবসন্তানগণের নিমিত্ত ব্যাকুল এবং তাঁহাদের প্রার্থনা বা ভাবনাতীত রুপে তাহাদিগকে দান করিবার জন্য প্রস্তুত, অথচ আমারা অতি সামান্য প্রার্থণা করে ও অতিশয় কিমি. বিশ্বাসে রাখে তখন স্বর্গীয় দূতগণ তাহাদের সম্মন্ধে কি ভাবিতে পারেন? দূতগণ ঈশ্বরের সম্মুখে প্রণিপাত করিতে, তাঁহার নিকটে থাকিতে ভালবাসেন। ঈশ্বরের সহিত আলাপ করাতেই তাঁহাদের শ্রেষ্ঠ আনন্দ; অথচ পৃথিবীর সন্তানগণ, যাহাদের শুধু ঈশ্বর দানই করিতে পারেন এইরুপ সাহায্যের যথেষ্ট প্রয়োজন-তাঁহার আত্নার জ্যোতি; ও তাঁহার চিরসঙ্গ ব্যতীত ভ্রমণ করিতে একটুও যেন কুন্ঠিত নহে।SC 99.2

    যাহারা প্রার্থণা করিতে অবহেলা করে, শয়তানের প্রভাব তাহাদিগকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলে। ঈশ্বর তাহাদিগকে প্রার্থনা করিবার যে মহাসুযোগ দান করিয়াছেন, তাহারা তাহার সদ্ব্যবহার করে না বলিয়াই শত্রুর গুপ্ত পাপ- প্রলোভন দ্বারা প্রলুব্ধ হয়। যে স্থানে সর্ব্বশক্তিমানের অনন্ত ঐশ্বর্জরাশি রহিয়াছে, স্বর্গের সেই ভাণ্ডার গৃহ খুলিবার জন্য যখন প্রার্থণাই বিশ্বাসীর হস্তের চাবি, তখন ঈশ্বর সন্তানগণ প্রার্থণা করিতে অবহেলা করিবে কেন? অবিরত প্রার্থনা ও উৎসুক প্রতীক্ষা না করিলে আমাদের সৎপথ হইতে বিচলিত ও অসাবধান হওয়ার বিশেষ আশঙ্কা আছে। শত্রু সর্ব্বদা অনুগ্রহ-সিংহাসনের পথ রোধ করিয়া রাখিয়াছে, যেন আমরা ব্যাকুল প্রার্থণা ও বিশ্বাসের বলে প্রলোভনে বাধা দিবার নিমিত্ত শক্তি ও অনুগ্রহ লাভ করিতে না পারে।SC 100.1

    ঈশ্বর যে আমাদের প্রার্থণা শুনিবেন ও উহার উত্তর দিবেন, তাহা কতিশয় অবস্হার উপরে নির্ভর করে। তন্মধ্যে সর্ব্ব প্রথম অবস্হাটি এই যে আমরা যেন তাঁহার সাহায্যের আবশ্যকতা বুঝিতে পারি। তিনি অঈীকার করিয়াছেন, “আমি তৃষিত ভূমির উপরে জল এবং শুষ্ক এস্থানের উপরে জলপ্রবাহ ঢালিয়া দিব” (যিশ ৪৪ঃ৩)। যাহারা ধার্মিকতার জন্য ক্ষুধিত ও তৃষিত, যাহারা ঈশ্বরের নিমিত্তে ব্যাকুল, তাহাঁরা নিশ্চয়ই পরিতৃপ্ত হইবে। আত্নার শক্তি গ্রহণ করিবার নিমিত্ত হৃদয় খুলিয়া দিতে হইবে, তাহা না হইলে ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ লাভ করা যাইবে না।SC 100.2

    আমাদের আবশ্যকতাই অর্থাৎ তাঁহার নিমিত্ত আমাদের অভাবই তাঁহাকে লাভ করিবার যথেষ্ট কারণ এবং আমাদের মুখপাত্র স্বরূপ হইবে। কিন্তু আমাদের নিমিত্ত এই সকল বিষয় সম্পন্ন করিবার জন্য সদাপ্রভুর সাহায্য ভিক্ষা করিতে হইবে। তিনি বলিয়াছেন, “যাচ্ঞা কর, তোমাদিগকে দয়া যাইবে” (মথি ৭ঃ৭)। আবার লিখিত আছে, “যিনি নিজপুত্রের প্রতি মমতা করিলেন না, কিন্তু আমাদের সকলের নিমিত্ত তাঁহাকে সমপর্ন করিলেন, রিনি কি তাঁহার সহিত সমস্তই আমাদিগকে অনুগ্রহ পূর্বক দান করিবেন না (রোমীয় ৮ঃ১৩)?”SC 101.1

    যদি আমাদের হৃদয়ে অধর্ম্ম পোষণ করি, যদি আমরা জ্ঞাতসারে কোন পাপকে ধরিয়া রাখি, তবে সদাপ্রভু আমাদের কথায় কর্নপাত করিবেন না; কিন্তু ভগ্ন ও অনুতপ্ত হৃদয়ের প্রার্থনা সর্ব্বদা গ্রাহ্য হিয়া থাকে। জ্ঞাত দোষগুলি শুধরাইয়া ফেলিলে, আমরা বিশ্বাসক্রতে পারি যে ঈশ্বর আমাদের আবেদন শ্রবন করিবেন। আমরা কখনও নিজগুনে ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভের উপযুক্ত হইতে পারি না; যীশুর যোগ্যতা আমাদের পরিত্রাণ দিবে; তাঁহারই রক্ত আমাদিগকে শুচিত করিবে; তথাপি গ্রাহ্য হইবার নিমিত্ত কতিপয় সর্ত্ত অনুযায়ী কার্জ্য করিতে হইবে।SC 101.2

    বিশ্বাস, বলবৎ প্রার্থনার একটি মৌলিক অংশ। “যে ব্যক্তি ঈশ্বরের নিকট উপস্হিত হয়, তাহার উহা বিশ্বাস করা আবশ্যক যে ঈশ্বর আছেন, এবং যাহারা তাঁহার অন্বেষণ করে, তিনি তাহাদের পুরুস্কার-দাতা” (ইব্রীয় ১১ঃ৬)। যীশু তাঁহার শিষ্যদিগকে বলিয়াছিলেন, “এই জন্য আমি তোমাদিগকে বলি, যাহা কিছু তোমরা প্রার্থনা ও যাজ্ঞা কর, বিশ্বাস করিও যে, তাহাঁ পাইয়াছ, তাহাতে তোমাদের জন্য তাহাই হইবে” (মার্ক ১১ঃ২৪)। আমরা কি তাঁহার বাক্য অনুযায়ী কার্জ্য করিতেছি?SC 101.3

    এই আশ্বাস-বাণী উদার ও অসীম এবং যিনি অঈীকার করিয়াছেন তিনি চির ও বিশ্বস্ত। আমরা কোন বিষয়ে প্রার্থনা করিয়া যদি সেই সময়ে উহা না পাই, তথাপি আমাদের বিশ্বাস করিতে হইবে যে সদাপ্রভু আমাদের কথায় কর্নপাত করিয়াছেন এবং তিনি প্রার্থনার উত্তর দিবেন। আমরা এতদূর ভ্রান্ত ও অদূরদর্শী যে আমরা যাহা আমাদের পক্ষে আশীর্ব্বাদ স্বরূপ হইবে না সেই রুপ বিষয়ে প্রার্থনা করি এবং আমাদের স্বর্গস্হ পিতা স্নেহপরবশ হইয়া প্রার্থনার উত্তর স্বরূপ আমাদিগকে এরুপ আশীর্ব্বাদ দান করেন, যাঁহাতে আমাদের শ্রেষ্ঠ মঙ্গল হইবে-যাহা, আমাদের দর্শন শক্তি ঐশ্বরিকভাবে আলোকিত হইলে পর সকল বস্তুর প্রকৃত অবস্হা দেখিতে পাইয়া আমারাও তাহাই পাইবাত বাসনা করিতাম। আমাদের প্রার্থনার উত্তর না আসিলে আমরা প্রতিজ্ঞাবানীর উপর নির্ভর করিব; কারণ উত্তর দানের সময় নিশ্চয় আসিবে এবং আমাদের স্বেরূপ আশীর্বাদ লাভ করবার প্রয়োজন, আমরা তাহাঁ অবশ্যই লাভ করিব। কিন্তু সর্ব্বদাই আমাদের ইচ্ছামত এবং আমাদের আশানরুপ বিষয়ের মত প্রার্থনার উত্তর আসিবে এরুপ দাবি করা প্রগলভতা। জ্ঞানময় পরমেশ্বরের কখন ভ্রম হইতে পারে না এবং যাহারা সৎপথে চলে তাহাদিগকে কখনও তিনি কোন সৎ বিষয় হইতে বঙ্কিত করেন না। অতএব তোমরা প্রার্থনার উত্তর হাতে হাতে না পাইলেও, তাঁহাকে বিশ্বাস করিতে শঙ্কা করিও না। “যাজ্ঞা কর, তোমাদিগকে দেয়া যাইবে” (মথি ৭ঃ৭),- তাঁহার এই নিশ্চিত প্রতিজ্ঞার উপরে বিশ্বাস স্হাপন কর।SC 102.1

    যদি আমরা মনে দ্বিধা ও ভয় পোষণ করি এবং বিশ্বাস করিবার পুর্ব্বে, যাহা মারা স্পস্ট বুঝিতে পারি না তাহারও সমাধান করিতে চেষ্টা করি, তবে সন্দেহের মাত্রা ক্রমশঃ বাড়িতে থাকিবে। কিন্তু যদি আমরা আমাদের প্রকৃত নিঃসহায় ও নির্ভরশীল অবস্হা লইয়া ঈশ্বরের সম্মুখে উপস্হিত হই, তবে যাঁহার জ্ঞান অসীম, যিনি সৃষ্টির প্রত্যেক বস্তুটি দেখিতে পান এবমগ যিনি তাঁহার ইচ্ছা ও বাক্য দ্বারা সকলের উপর কর্ত্তৃত করেন, তাঁহার নিকটে পূর্ণ বিশ্বাস দীন ভাবে আমাদের অভাব জ্ঞাপন করিলে, তিনি অবশ্যই আমাদের ক্রন্দন ধ্বনি শুনিবেন এবং আমাদের অন্তরে আলোকরাশি দান করিবেন। অকপট প্রার্থনা দ্বারা আমরা অনন্ত, ঐশ্বরিক মনের সহিত সম্মন্ধ স্হাপন করিতে পারি। প্রেম ও করুনায় পরিপূর্ন হইয়া ত্রানকর্ত্তা যে আমাদের উপরে ঝুঁকিয়া রহিইয়াছেন, এই বিষয়ে বিশেষ প্রমান না থাকিলেও, বাস্তবিক ইহা সত্য। আমরা হয়ত তাঁহার স্হর্শ প্রত্যক্ষ অনুভব করিতে পারি না, কিন্তু তাঁহার প্রেম ও কোমল করুণার হস্তখানি সত্য সত্যই আমাদের উপরে রহিয়াছে।SC 102.2

    যখন আমরা ঈশ্বরের নিকটে করুণা ও আশীর্ব্বাদ প্রার্থনা করি তখন আমাদের অন্তরেও প্রেম ও করুণার আত্না পোষণ করিতে হইবে। অন্তরে ক্ষমাবিমুখ আত্না লইয়া আমরা কিরুপে প্রার্থনা করিব- “আমাদের অপরাধ সকল ক্ষমা কর, যেমন আমারাও আপন আপন অপরাধীদিগকে ক্ষমা করিয়াছি” (মথি ৬ঃ১২)? যদি আমাদের প্রার্থনা শ্রুত হইবার বাসনা করি, তবে যে পরিমাণ আমরা ক্ষমা পাইতে ইচ্ছা করি, ঠিক সেও পরিমান ক্ষমা অপর কে করিতে হইবে।SC 103.1

    প্রার্থনায় অধ্যবসায়, আশীর্ব্বাদ লাভের আর একটি কারণ। বিশ্বাসে ও অভিজ্ঞতায় বৃদ্ধি পাইবার ইচ্ছা করিলে আমাদের আবিরত প্রার্থনা করিতে হইবে। আমাদের “নিরবচ্ছিন্ন প্রার্থনা করিতে” (রোমীয় ১২ঃ১২-বম্ওয়েচ্) হইবে, “প্রার্থনায় নিবিস্ত...............ধন্যবাদ সহকারে এ বিষয়ে জাগিয়া (কল ৪ঃ২)” থাকিতে হইবে। পিতর বিশ্বাসীদিগকে বারবার বলিয়াছেন, “সংযমশীল হও,এবং প্রার্থানায় নিমিত্ত প্রবৃ্দ্ধ থাক” (১ পিতর ৪ঃ৭) পৌল উপদেশ দিয়াছেন, “সর্ব্ব বিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাজ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর” (ফিলি ৪ঃ৬)। যিহুদা বলিয়াছেন, “কন্তু প্রিয়তমেরা............পবিত্র আত্নাতে প্রার্থনা করিতে করিতে ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর” (যিহুদা ২০,২১)। আবিরত প্রার্থনা দ্বারা ঈশ্বরের আত্নার সহিত আমাদের আত্নার মিলন অচ্ছেদ্য থাকে, তাই আমাদের জীবনে ঈশ্বরের জীবন প্রবাহিত হয়; এবং আমাদের জীবন হইতে শুচিতা ও পবিত্রতা ঈশ্বরের নিকট বহিয়া যায়।SC 103.2

    প্রার্থানায় যত্নশীলতার প্রয়োজন, কিছুতেই যেন এ বিষয়ে তোমাকে বাধা দেয় না। যীশু ও তোমার আপন আত্নার মধ্যে সহভাগিতা বজায় রাখিওবার জন্য সর্ব্ব প্রকারে যত্ন কর। প্রার্থানা করিবার স্হানে উপস্হিত হইবার জন্য সকল প্রকার সুযোগ গ্রহণ কর। যাহারা সত্য সত্যই ঈশ্বরের সহিত সহভাগিতার চেষ্টা করিতেছে, তাহাদিগকে সর্ব্বদাই কর্ত্ত্যবসাধনে বিশ্বাসী এবং যত প্রকার সম্ভব উপকার লাভ করিবার জন্য উৎসুক ব্যাকুলভাবে প্রত্যেক প্রার্থান-সভায় দেখিতে পাইবে। স্বর্গ হইতে আলো লাভ করিবার যে কোন সুযোগের সম্মুখীন হইয়া তাহার উন্নতি সাধন করিবে।SC 104.1

    আমাদের পারিবারিক প্রার্থানা করা উচিত; সর্ব্বোপরি আমরা কখনও বিজন প্রার্থানা অবহেলা করিব না, কারন উহাই আত্নার জীবন। প্রার্থানা অবহেলা করিয়া কখনও আত্নোন্নতি সম্ভব নহে। শুধু পারিবারিক বা সমবেত প্রার্থানাই যথেষ্ট নহে। নির্জনে আত্নাকে ঈশ্বরের সর্ব্বস্হানব্যাপী দৃষ্টির সম্মুখে বিকশিত কর। শুধু প্রার্থনা শ্রবনকারি ঈশ্বর দারাই গুপ্ত প্রার্থনা শ্রুত হইবে। আর কোন কৌতূহলী কর্নে তোমার গোপন আবেদনের সুর পৌছিবে না। নীরব প্রার্থনা কালে আত্না চতুর্দ্দিকের প্রভাব ও উত্তেজনা হইতে মুক্ত। উহা আত ধীরে, অথচ পূর্ণ আবেগে ঈশ্বরের নিকটে পৌছিবে। যিনি গোপন সকল ব্যাপার দেখিয়া থাকেন, যিনি হৃদয় হতে উথিত প্রার্থনা কর্নপাত করেন, তাহা হইতে নির্গত সমূদয় প্রভাব অতিশয় মধুর ও চিরস্হায়ী হইবে। ধীর ও সরল বিশ্বাস দ্বারা, আত্না ঈশ্বরের সহিত সহভাগিতা স্হাপন করে এবং শয়তানের সহিত সংগামে শক্তিশালী হইবার জন্য ঐশ্বরিক আলোকমালা সঞ্চিত করিয়া রাখে। ঈশ্বর আমাদের শক্তিস্তম্ব।SC 104.2

    তুমি আপন নির্জন কক্ষে বসিয়া প্রার্থনা করিও; দৈনিক কার্জ্যে রত প্রতিক্ষণই তোমার হৃদয় ঈশ্বরের নামে ধাবিত হউক্। হনোক্ এই প্রকারে ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন ক্রিতেন। এই প্রকার নীরব প্রার্থনা ধূপের সৌরভের ন্যায় করুণার সিংহাসন পানে উথিত হয়। ঈশ্বরে যাহার হৃদয় সমপিত শয়তান কখন তাহাকে পরাভূত করিতে পারে না।SC 105.1

    যে কোন সময়ে বা যে কোন স্হানেই ঈশ্বরের নিকটে প্রানের আবেদন উৎ্সর্গ করা যাইতে পারে । কিছুতেই ব্যাকুল প্রার্থনার আত্নার আমাদের অন্তরের উত্তোলনকে বাধা দিতে পারে না। রাস্তায় জন্তার ভিড়ে অথবা কোন বৈষয়িক ব্যাপারের মধ্যেও,SC 105.2

    নহিমিয় যেরুপ অর্তক্ষস্ত রাজার সম্মুখে তাঁহার অনুরোধ জানাইয়া ছিলেন, সেইরূপ আমারু ঈশ্বরের নিকটে আবেদন পৌছাইতে এবং ঐশ্বরিক চালনার নিমিত্ত প্রার্থনা করিতে পারি। আমরা যে কোন স্হানেই থাকি না কেন সেই স্হানেই সহভাগিতারSC 105.3

    জন্য নির্জ্জন কক্ষ খুজিয়া পাইতে পারি। আমরা সর্ব্বদা আমাদের হ্রদয়-দুয়ার উন্মুক্ত রাখিব এবং যীশু যেন স্বর্গীয় অতিথির মত আমাদের প্রানে আসিয়া বাস করিতে পারেন, এই জন্য সর্ব্বদা আমাদের আহবান উথিত হইবে।SC 105.4

    আমাদের চারিদিকে হয়তো দূষিত ও কলুষিত ভাব বর্ত্তমান থাকিতে পারে, কিন্তু আমরা সেই দুর্গন্ধময় বাষ্প ত্যাগ করিয়া স্বর্গের পবিত্র বায়ু গ্রহণ করিতে পারি। আকপট প্রার্থনার বলে ঈশ্বরের পানে আত্নাকে চালিত করিয়া যাবতীয় অপবিত্র কল্পনা ও অশুচি চিন্তার দ্বারা একেবারে রুদ্ধ করিতে পারি। যাহাদের হৃদয় ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ ও সাহায্য গ্রহণ করিবার নিমিত্ত উন্মুক্ত তাহারা এই পৃথিবী অপেক্ষা পবিত্রতর জগতে ভ্রমণ করিবে এবং স্বর্গের সহিত চির সহভাগিতা করিতে পারিবে।SC 106.1

    যীশুর বিষয়ে আমাদের আরও পরিষ্কার ধারনা এবং অনন্ত সত্যগুলির মূল্য সম্পর্কে আরও সুস্পস্ট জ্ঞানের আবশ্যক। ঈশ্বরের সন্তা গনের হৃদয় পূর্ণ ক্রিবার জন্যই শুচিতার সৌন্দর্জ্য রহিয়াছে; উহা যেন সার্থক হইতে পারে এই নিমিত্ত আমরা স্বর্গীয় বিষয় সমূহের পরমার্থ জ্ঞান লাভ করিতে চেষ্টা করিব।SC 106.2

    ঈশ্বরের পানে উদ্ধে আমাদের হৃদয় ধাবিত হউক্, যেন ঈশ্বর আমাদিগকে স্বর্গীয় পবিত্র বায়ু দান করেন। আমরা আপনাদিগকে ঈশ্বরের এত নিকটে স্হাপন করিতে পারি যে সকল প্রকার অপ্রত্যাশিত বিপদে আমাদের চিন্তারাশি, ফুল যেরূপ সু্র্য্যের পানে ফিরিয়া থাকে সেইরুপ ভাবে ঈশ্বরের পানে ধাবিত হইবে।SC 106.3

    তোমাদের যাবতীয় অভাব, আনন্দ, দুঃখ, চিন্তা ও ভয় ঈশ্বরের সম্মুখ রখিয়া দাও। কখনও তুমি তাঁহাকে ভার-পীড়িত বা পরিশ্রান্ত করিতে পারিবে না। যিনি তোমার মাথার চুলগুলি পর্যন্ত গণনা করিতে পারেন, তিনি কখনও তাঁহার সন্তানগনের অভাবের প্রতি উদাসীন থাকিতে পারেন না। “ফলতঃ প্রভু স্নেহপূর্ন ও দয়াময়” (যাকোর ৫ঃ১১)। আমাদের দুঃখে, এমন কি, বেদনার বাক্যে তাঁহার প্রানে আঘাত লাগে।SC 106.4

    যাহা দ্বারা তোমাদের মন আকুলিত হয়, তাহা সমুদয় তাঁহার নিকটে লইয়া যাও। তাঁহার পক্ষে কিছুই গুরুতর হইবে না, কারন তিনি সমস্ত জগৎ ধারণ করিয়া রহিয়াছেন এবং বিশ্বের যাবতীয় বিষয়ের উপরে কর্ত্তৃত্ব করিতেছেন। আমাদের শান্তি সম্পর্কীয় কোন বিষয়ই তিনি ক্ষুদ্র বলিয়া গন্য করেন না। আকাদের জীবনে এমন কোন অধ্যায় নাই যাহা উদঘাটন তাঁহার পক্ষে দুরুহ। আমাদের স্বর্গস্হ পিতার অগোচরে অথবা তাঁহার সত্বর প্রতিবিধানের বাহিরে, তাঁহার সন্তানগণের কোন একটি উপরেও কোন বিপদ পতিত হইতে পারে না, কাহারও আত্নার উদ্বেগ আসিতে পারে না, কাহারও কোন আনন্দ বা অকপট প্রার্থনা চলিতে পারে না। “তিনি ভগ্ন-চিত্তদিগকে সুস্হ করেন, তাহাদের ক্ষত সকল বাঁধিয়া দেন” (গীত১৪৭ঃ৩)। প্রত্যেক আত্নার সহিত ঈশ্বরের সম্পর্ক এত নিবিড় ও সুস্পস্ট যে ঈশ্বর যেন তাঁহার প্রিয়তম পুত্রকে সেই আত্না ব্যতীত অপর কোন আত্নার নিমিত্ত প্রদান করেন নাই, এরুপ মনে হইয়া থাকে। SC 107.1

    যীশু কহিয়াছেন, “সেই দিন তোমরা আমার নামেই যাজ্ঞা করিবে, আর আমি তোমাদিগকে বলেতেছি না যে, আমিই তোমাদের নিমিত্তে পিতাকে নিবেদন করিব; কারণ পিতা আপনি তোমাদিগকে ভালোবাসেন” (যোহন ১৬ঃ২৬,২৭)। “আমিই তোমাদিগকে মনোনীত করিয়াছি;..................জেন তোমরা আমার নামে পিতার নিকটে যে কিছু যাজ্ঞা করিবে, তাহা তিনি তোমাদিগকে দেন” (যোহন ১৫ঃ১৬)। কিন্তু প্রার্থনার প্রথমে ও শেষে শুধু যীশুর নাম উল্লেখ করিলেই যীশুর নামে প্রার্থনা করা হয় না। তাঁহার অঈীকার সমূহ বিশ্বাস করিয়া এবং তাঁহার মত কার্য্য সম্পন্ন করিয়া যীশুর মনে আত্নার প্রার্থনা করাই যীশুর নামে প্রার্থনা।SC 107.2

    ঈশ্বর কখনও এরুপ বলেন নাই যে আমরা এই পৃথিবী ত্যাগ করিয়া তাঁহার সেবা-কার্য্যে আত্ন-নিয়োগ করিবার জন্য মুনি বা সন্ন্যাসী হইয়া যাইব। আমাদের জীবনের ন্যায় পর্ব্বতেরও জন সমাজের মধ্যে আপন করিতে হইবে। যে ব্যক্তি অন্য কোন কাজ না করিয়া শুধু প্রার্থনা করে সে শীঘ্রই প্রার্থনা হইতে বিরত হইবে। খ্রিষ্টীয় কর্ত্তব্য ও ক্রুশ বহনের কর্ম্মক্ষেত্র হইতে সামাজিক জীবনের বহুদূরে মানুষ যখন চলিয়া যায়, যিনি তাহাদের জন্য প্রাণপণে কার্য্য করিয়াছিলেন সেই প্রভুর নিমিত্ত কার্য্য করিতে যখন তাহারা বিমুখ হয়, তখন তাহারা প্রার্থনার বিষয় হারাইয়া ফেলে এবং আরাধনায় নিমিত্ত প্রাণের কোন আকুলতা থাকে না। তাঁহাদের প্রার্থনা ব্যক্তিগত ও স্বার্থপূর্ণ হইয়া পড়ে। তাহারা কখনও মানবজাতির অভাবের নিমিত্ত, অথবা কার্য্যোপযোগী শক্তি কামনা করিয়া খ্রীষ্টের রাজ্য সংগঠনের নিমিত্ত প্রার্থনা করিতে পারে না।SC 108.1

    ঈশ্বরের কার্য্যে পরস্পর শক্তি ও উৎসাহলাভের নিমিত্ত সমবেত হঈবার সুযোগ ত্যাগ করিয়া আমরা ক্ষতিগ্রস্হ হই। তাঁহার বাক্যের সত্যসমূহ আমাদের নিকটে প্রাণহীন ও গুরুত্ব বিহীন হইয়া পড়ে। উহাদের পবিত্র প্রভাব দ্বারা আমাদের হৃদয় আলোকিত ও জাগত হইতে বিরত হয়। খ্রীস্টিয়ান সমাজে বাস করিয়া, পরস্পরের প্রতি সহানুভুতি না দেখাইলে আমাদের বিশেষ অপকার হয়। যে ব্যক্তি আপনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হইয়াছে সে কখনও ঈশ্বরের নিদিষ্ট উদ্দেশ্য সফল করিতে পারে না । সামাজিক মূলনীতিগুলির অনুশীলন করিলে আমরা পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিতে আকৃষ্ট হই এবং উহার ঈশ্বরের কার্য্যে আমাদের শক্তি ও উন্নতি বিধানের উপায় স্বরূপ হইয়া থাকে।SC 108.2

    খ্রীস্টিয়ানগণ যদি সমবেত হইয়া পরস্পর ঈশ্বরের প্রেমে এবং পরিত্রানের আমুল্য স ত্য সমন্ধে আলোচনা করে, তবে তাহাদের আপন প্রান আমোদিত হইবে এবং অপরকেও তাহারা নবজীবন দান করিতে পারিবে। আমরা আমদের স্বর্গীয় পিতার করুণা সম্মন্ধে নতুন নতুন জ্ঞান লাভ করিয়া দিনের পর দিন তাঁহার বিষয়ে আরও অনেক নতুন তত্ত্ব লাভ করিতে পারি; তারপর তাঁহার প্রেম সম্মন্ধে বলিবার জন্য আমাদের বাসনা হইবে এবং এই করিতে পারিলে আমাদের হৃদয় প্রেমপুর্ন ও উৎসাহিত হইবে। নিজের বিষয়ে অল্পমাত্রা চিন্তা করিয়া, যীশু সম্মন্ধে যদি অধিক মাত্রা চিন্তা করি, তাহা হইলে তাহা আরও অধিক অনুভব করিতে পারব।SC 109.1

    যতবার আমরা তাঁহার স্নেহশীল যত্নের পরিচয় পাই, ততবার যদি আমরা তাঁহার বিষয়ে চিন্তা করি, তবে সর্ব্বদা তিনি আমাদের স্মরণে জাগ্রৎ থাকিবেন এবং আমরা তাঁহার বিষয়ে আলোচনাও তাঁহার স্ত্ততি করিতে আনন্দ লাভ করিব। আমরা পখির বিষয় ভালবাসি বলিয়া ঐ সম্মন্ধে আলাপাদি করিব। বন্ধুগনকে ভালবাসি বলিয়া এবং সুখ দুঃখ তাহাদের সহিত জড়িত বলিয়া, আমরা তাহাদের বিষয়ে আলোচনা করি। তথাপি আমাদের পাখির বন্ধুগণ অপেক্ষা ঈশ্বর কে অধিক ভালবাসিবার অসংখ্য কারণ রহিয়াছে; আমাদের সমূদয় চিন্তার বিষয়ে তাহাকেই সর্ব্বপ্রথম করা এবং তারাহ মহত্ত্ব ও শিক্তি সমন্ধে আলাপ আলোচনা করাই জগতের সর্ব্বাপেক্ষা স্বাভাবিক বিষয়। আমাদিগকে প্রদত্ত তাঁহার অমুল্য দানসমূহ আমাদের সমূদয় প্রেম ও চিন্তারাশি এরুপভাবে কারিয়া নিবে যেন ঈশ্বরকে দিবার নিমিত্ত কিছুই অবশিষ্ট থাকে না, এই উদ্দেশ্যে তিনি কখনও ঐ সকল দান করেন নাই; উহারা সকল সময় আমাদিগকে তাঁহার বিষয়ে স্মরণ করাইয়া দিবে এবং আমাদের মহান স্বর্গস্হ মাহান্ স্হিতকারী সহিত আমাদিগকে প্রেম ও কৃতজ্ঞতার বন্ধনে গ্রথিত করিবে। আমরা যেন একেবারে পৃথিবীর নিম্নভুমিতে বাসস্হান করিয়াছি। আইসুন একবার আমরা উর্দ্ধে ধর্ম্মধামের উন্মুত দ্বারের পানে চক্ষু উত্তোলন করি; সেই স্হানে ঈশ্বরের মহিমাগুলোকে খ্রীস্টের মুখমন্ডল দীপ্ত হইয়া রহিয়াছে; এই খ্রীস্ট,- “যাহারা তাঁরা দিয়া ঈশ্বরের নিকটে উপস্হিত হয়, তাহাদিগকে তিনি সম্পুর্নরুপে পরিত্রান করিতে পাড়েন” (ইব্রীয় ৭ঃ২৫)।SC 109.2

    “তাঁহার দয়া প্রযুক্ত, মনুষ্য-সন্তানদের জন্য তাঁহার আশ্চার্য্য কর্ম্ম প্রযুক্ত” (গীত ১০৭ঃ৮), আমাদের ঈশ্বরের আরও অধিক স্ত্ততি করা প্রয়োজন। আমাদের উপাসনা কার্য্য যেন শুধু যাজ্ঞা ও গ্রহণ করাতেই শেষ হয় না। আমরা যে সকল উপকার পাইয়াছি, তাহা বাদ দিয়া যেন সর্ব্বদাই আমরা শুধু আমাদের অভাবের বিষয়ে চিন্তা না করি। আমরা যে প্রার্থনা খুব বেশী করি তাহা নহে, তবে ধন্যবাদ প্রদান তাহা অপেক্ষাও কম করিয়া থাকি। আমরা সর্ব্বদা ঈশ্বরের করুণা লাভ করিতেছি, অথচ আমরা কত অল্প কৃতজ্ঞতা দেখাইতেছি এবং তিনি আমাদের জন্য যাহা করিয়াছেন তাজ্জন্য তাঁহার কত সামান্য স্ত্ততি করিতেছি।SC 110.1

    প্রাচিনকালে উপবাসনার নিমিত্ত সমবেত ইস্রায়েলগণকে সদাপ্রভু বলিয়াছেন, “আর স্হানে সেই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে ভোজন করিবে , তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু হইতে প্রাপ্ত আশীর্ব্বাদানুসারে যে কিছুতে হস্তপর্ন করিবে, তাহাতেই সপরিবারে আনন্দ করিবে” (দ্বিঃবিঃ ১২ঃ৭)। ঈশ্বরের গৌরবার্থে যাহা করনীয় তাহা প্রফুল্লতার সহিত করিতে হইবে, কখনও দুঃখ ও বিষণ্ণতার সহিত নহে।SC 110.2

    ঈশ্বর আমাদের স্নেহপুর্ন করুণাময় পিতা। তাঁহার নিমিত্ত কার্য্যকে কখমও ক্লেশকর বা মর্ম্মপীড়িদায়ক গণ্য করা উচিত নহে। সদাপ্রভুর আরাধনায় এবং তাঁহার কার্য্যসাধনকে আনন্দের বিষয় করিয়া তুলিতে হইবে। ঈশ্বর চাহেন না যে যাহাদের জন্য তিনি এরূপ মহা পরিত্রাণের ব্যবস্থা করিয়াছেন, তাহারা কখনও তাঁহাকে কঠোর ও পীড়নকারী কার্য্যশাসক বলিয়া ভুল ধারণা করে। তিনই তাহাদের সর্বোত্তম বন্ধু ; এবং যখন তাহারা তাঁহার আরাধনা করে, তখন তিনি তাহাদের সঙ্গে থাকিয়া তাহাদিগকে আশীর্ব্বাদ ও সান্ত্বনা দিতে, প্রেম অ আনন্দ দ্বারা তাহাদের হৃদয় পূর্ণ করিতে আশা করেন। সদা প্রভু ইচ্ছা করেন যেন তাঁহারা সন্তানগণ তাঁহার পরিচর্য্যায় সান্ত্বনা পায় এবং তাঁহারা সেবা কার্য্যে কঠোরতা অপেক্ষা অধিক আনন্দ লাভ করে। তিনি চাহেন যে যাহারা তাঁহার আরাধনা করিতে আসে, তাহারা যেন তাঁহার প্রেম ও যত্নের অমূল্য চিন্তারাশি বহন করিয়া নিয়া যায়, যেন তাহারা দৈনিক জীবনের প্রত্যেক কার্য্যে আনন্দ লাভ করে, যেন তাহারা বিশ্বস্ত ভাবে ও সাধুতার সহিত সকল ব্যাপার সম্পন্ন করিয়া করুণা পাইতে পারে।SC 110.3

    আমরা ক্রুশের সম্মুখে সমবেত হইব। খ্রীষ্ট ও তাঁহার ক্রুশ ব্যাপার আমাদের ধ্যান, আলাপন ও অতিশয় আনন্দপূর্ণ ভাবের বিষয় হইবে। ঈশ্বরের নিকট হইতে আমরা যে যে আশীর্ব্বাদ পাইয়াছি তাহা স্মরণে রাখিব এবং তাঁহার মহান্ প্রেম সম্পূর্ণরূপে হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিলে, যে হস্ত আমাদের নিমিত্ত ক্রুশে প্রেকবিদ্ধ হইয়াছিল সেই হস্তে আমাদের যাহা কিছু সকলই বিশ্বাসের সহিত সমর্পণ করিতে পারিব।SC 111.1

    ঈশ্বরের গুণকীর্তন দ্বারা, আত্মা স্বর্গের নিকটতর হইতে পারে। স্বর্গের দরবারের সঙ্গীত ও তানলহরী দ্বারা ঈশ্বরের উপাসনা হয় এবং আমাদের হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন ও স্বর্গীয় বাহিনীর উপাসনার ন্যায় হইয়া থাকে। “যে ব্যক্তি স্তবের বলি উৎসর্গ করে, সেই আমার (ঈশ্বরের) গৌরব করে,” (গীত ৫০ ২৩)। এস আমরা “স্তব গান ও সঙ্গীতের ধ্বনি” সহকারে, শ্রদ্ধাপূর্ণ আনন্দের সহিত আমাদের সৃষ্টিকর্তার সম্মুখীন হই।SC 111.2

    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents