একটি বিস্তৃত ভিত্তি
আত্মা লাভের বিজ্ঞানই সর্বোচ বিজ্ঞান। মানব জাতিকে পাপ থেকে পবিত্রতায় অর্জন করাই হবে মানব সত্ত্বার সর্বশ্রেষ্ঠ আগ্রহের কার্য। এই কাজ সম্পাদনের জন্য একটা প্রসারিত ভিত্তি স্থাপন করতে হবে। একটা বোধগম্য শিক্ষার আবশ্যক- একটা শিক্ষা যা পিতা মাতা এবং শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীদের কাছ থেকে দাবি করা হবে, এরূপ চিন্তাএবং প্রচেষ্টা যা কেবলমাত্র বিজ্ঞানের শিক্ষায় প্রয়োজন পড়ে না। বুদ্ধি এবং বিচারশক্তি অনুশীলন করা অপেক্ষা অধিক কিছুর জন্য আহ্বান করা হয়েছে। শরীর, মন, এবং অন্তৎকরণের সমভাবে শিক্ষা লাভ না হলে শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না। চরিত্রের সম্পূর্ণ এবং সর্বোচ উন্নয়নের জন্য উপযুক্ত শাসন পেতে হবে। মন এবং শরীরের সব কর্মশক্তির উন্নতি লাভ করতে হবে এবং যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণ লাভ করতে হবে। প্রতিটা শক্তির কর্ষণ এবং কসরত করা একটা কর্তব্য যা আমাদেরকে ঈশ্বরের পক্ষে আরো দক্ষ কার্যকরী করে তুলবে। MHBen 374.4
প্রকৃত শিক্ষা সর্ব-সত্ত্বাকে অন্তর্ভূক্ত করে। এটা এক জন ব্যক্তির উপযুক্ত ব্যবহার শিক্ষা দেয়। এটা আমাদের মস্তিষ্ক, মাংসপেশী, শরীর, মন এবং অন্তৎকরণের সর্বোত্তম ব্যবহারে সামর্থ্য দান করে। মনের মনোবৃত্তিসমূহ, উচতর শক্তিসমূহের ন্যায়, দেহরাজ্যকে নিয়ন্ত্রণ করবে। স্বাভাবিক ক্ষুধা এবং ভাবাবেগ বিবেক এবং আত্মিক অনুরাগের বশে আনয়ন করতে হবে। খ্রীষ্ট মানবত্বের শীর্ষে দন্ডায়মান এবং তাঁর কার্যে, বিশুদ্ধতায় উচ্চ এবং পবিত্র পথসমূহে আমাদের পরিচালনা দান করাই তার উদ্দেশ্য। তাঁর অনুগ্রহের আশ্চর্য কাজ দ্বারা, আমরা তাঁতে পূর্ণতা লাভ করব। MHBen 375.1
যীশু গৃহেই শিক্ষা লাভ করেছিলেন। তাঁর মাতা ছিলেন তাঁর সর্বপ্রথম মানব শিক্ষিকা। তার ওষ্ঠ থেকে, এবং ভাববাদিদের জড়ানো পুস্তক থেকে, তিনি স্বর্গীয় বিষয় শিক্ষা লাভ করেছিলেন। তিনি একজন গ্রামবাসীর গৃহে থাকতেন, এবং বিশ্বস্ততার এবং আনন্দের সাথে গৃহের কর্মভার বহন করতেন। যিনি স্বর্গের সেনাপতি ছিলেন, তিনি ছিলেন একজন স্বেছা ভৃত্য, একজন প্রেমপূর্ণ বাধ্য সন্তান। তিনি একটা পেশা শিক্ষা লাভ করেছিলেন, এবং তিনি নিজ হস্তে তাঁর পিতা যোষেফের ছূতার গৃহে (কাঠ মিস্ত্রির) কাজ করেছেন। তিনি সাধারণ কাজের পোশাকে ছোট টাউনের রাস্তা ধরে হেঁটে তাঁর বিনম্র কাজে যেতেন এবং গৃহে ফিরে আসতেন। MHBen 375.2
ঐ যুগের লোকদের মূল্য বাহ্যিক দৃশ্য দ্বারাই নিরূপণ করা হত। ধর্মীয় ক্ষমতা লয় পেয়ে গেলে, জাঁকজমকও বৃদ্ধি পেল। ঐ কালের শিক্ষকগণ বাহ্যিক বেশভূষণ এবং বাহ্যাড়ম্বড় দ্বারা জনসাধারণের শ্রদ্ধা অর্জন করত। এর সঙ্গে তুলনা করে দেখা যাবে যে, যীশুর জীবন একটা লক্ষণীয় ব্যবধান দৃষ্ট হত। লোকে যে সব বিষয় জীবনের শ্রেষ্ঠ আবশ্যকীয় বলে মনে করত, সে তুলনায় যীশুর জীবন মূল্যবান এবং নির্গূঢ়রূপে প্রমাণ করেছেন। তাঁর সময়ের বিদ্যালয়গুলো, সুউচ্চ অট্টালিকার তুলনায় ছিল ক্ষুদ্র। তিনি কোন বাহ্যাড়ম্বরের অন্বেষণ করেন নি। তাঁর শিক্ষা লাভ হয়েছিল স্বর্গীয় উৎসাহ থেকে, ব্যবহারিক কাজ থেকে, শাস্ত্র অধ্যয়ন থেকে, প্রকৃতি এবং জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে, ঈশ্বরের পাঠ্য পুস্তক, যারা ইচ্ছুক হস্ত, দর্শন লাভের চক্ষু এবং জ্ঞান অন্বেষণের অন্তঃকরণ নিয়ে আসত, তাদের কাছে এসব ছিল শিক্ষার পরিপূর্ণ উপাদান। MHBen 375.3
“পরে বালকটি বাড়িয়া উঠিতে ও বলবান হইতে লাগিল, জ্ঞানে পূর্ণ হইতে থাাকল; আর ঈশ্বরের অনুগ্রহ তাঁহার উপরে ছিল।”(লূক ২:৪০)।MHBen 376.1
এরূপে তিনি প্রস্তুতি গ্রহণ করে তাঁর কাজে অগ্রসর হলেন, প্রতি মূহূর্তে মনুষ্যদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ তাদেরকে আশীর্বাদের একটা প্রভাব, পরিবর্তনের একটা প্রভাব বিস্তার করত, যা জগৎ কখনো দেখেনি।MHBen 376.2