Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents

সুষম শিক্ষা

 - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First

    ১৪ - বিজ্ঞান ও বাইবেল

    “এ সকল দেখিয়া কে না জানে যে,
    সদাপ্রভুরই হস্ত ইহা সম্পন্ন করিয়াছে?”

    যেমন প্রকৃতির পুস্তক এবং প্রকাশিত পুস্তক একই দক্ষ মনের ছাপ বহন করে, ঠিক তেমনিভাবে উভয়ই একই কথা বলে। বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে, এবং বিভিন্ন ভাষায় তারা একই মহা সত্যের বিষয় সাক্ষ্য প্রদান করে। বিজ্ঞান সব সময় নতুন বিস্ময়কর বস্তু আবিষ্কার করছে; কিন্তু সে তার গবেষণা থেকে এমন কিছুই উপস্থাপন করে না, যাতে সঠিক ভাবে বােঝা যায় যে তা ঐশ্বরিক প্রকাশ প্রাপ্তির সঙ্গে বিরােধ সৃষ্টি করে। প্রকৃতি এবং লিখিত বাক্য একে অন্যের প্রতি আলােকপাত করে। তারা আমাদের, ব্যবস্থামালার এমন কিছু শিক্ষার মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় যা তিনি কাজে পরিণত করেন।EdBen 116.1

    প্রকৃতিতে বিদ্যমান তথ্য হতে নেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত বিজ্ঞান এবং প্রকাশিত বিষয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে; এবং সমন্বয় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় শাস্ত্রের ব্যাখ্যা অবলম্বন করা হয়েছে, যা ঈশ্বরের বাক্যের শক্তিকে অবহেলা ও ধ্বংস করে। ভূ-তত্ত্ব সৃষ্টি সম্পর্কিত মােশির বিবরণের আক্ষরিক ব্যাখ্যার বিরােধিতা করেছে। এটি এই দাবি রাখে যে, অমূর্ত অবস্থা থেকে পৃথিবীকে ক্রমান্বয়ে প্রকাশ করতে লক্ষ লক্ষ বছর সময় লেগেছে; এবং বাইবেলকে বিজ্ঞানের এই কল্পনাপ্রসূত প্রকাশপ্রাপ্তির সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করার জন্য ধারণা করা হয় যে, সৃষ্টি কাজে অনেক দিন সময় লেগেছে, একটি অনির্দিষ্ট সময়, হাজার বছর, এমন কি লক্ষ লক্ষ বছর লেগেছে।EdBen 116.2

    এ ধরণের একটি উপসংহার সম্পূর্ণ অনাবশ্যক। বাইবেলের বিবরণ এবং প্রকৃতির শিক্ষা পরস্পর সমন্বয় রক্ষা করে। সৃষ্টিকাজে নিয়ােজিত প্রথম দিনের বিবরণীতে বলা হয়েছে, “আর সন্ধ্যা ও প্রাতঃকাল হইলে প্রথম দিবস হইল।” আদিপুস্তক ১:৫। সৃষ্টি-সপ্তাহের প্রথম ছয় দিনের প্রতিটি দিন সম্পর্কে একই কথা বলা হয়েছে। এর প্রতিটি সময়কালের বিষয় অনুপ্রাণিত বাক্য এই কথা বলে যে, সকাল ও সন্ধ্যা নিয়ে একটি দিন, আর ঐ সময় থেকে প্রতিটি দিন ঐ ভাবে হয়ে আসছে। সৃষ্টিকাজ সম্পর্কে শাস্ত্র এই সাক্ষ্য দেয়, “তিনি কথা কহিলেন, আর উৎপত্তি হইল, তিনি আজ্ঞা করিলেন আর স্থিতি হইল।” গীতসংহিতা ৩৩:৯। তাঁর সঙ্গে আর কে অসংখ্য পৃথিবীর উৎপত্তি হবার কথা ঘােষণা করতে পারত, অমূর্ত অবস্থা থেকে পৃথিবীকে ক্রমবিকাশ পদ্ধতির দ্বারা সৃষ্টি করতে কতকাল লাগত? তাঁর কাজের মূল্য হিসাব করার জন্য আমরা কি তাঁর বাক্যের বিরোধিতা করব?EdBen 116.3

    এ কথা সত্য যে, পৃথিবীর মধ্যে ধ্বংসাবশেষ রয়েছে যা মানুষ, জীবজন্তু, এবং গাছপালার অস্তিত্বের সাক্ষ্য দান করে। এই সব প্রমাণ করে যে, মােশির লিখিত ইতিহাসের আগেও গাছপালা এবং জীবজন্তু ছিল। কিন্তু এ সব বিষয়ে বাইবেলের ইতিহাস পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা প্রদান করে। জল প্লাবনের আগে গাছ-পালা ও জীবজন্তু ছিল। জল প্লাবনে ভূ-পৃষ্ঠ ফেটে গিয়ে, লক্ষণীয় পরিবর্তন হয়েছে, এবং ভূ-ত্বক পুনঃসংস্কারের সময়ে অনেক প্রমাণ সংরক্ষিত করা হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে, আগেও জীবনের অস্তিত্ব ছিল। জলপ্লাবনের সময়ে যে বিশাল বনরাজি মাটির নিচে চাপা পড়েছে এবং তা কয়লায় রূপান্তরিত হয়েছে, ফলে বিশাল এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাবে কয়লার খনি তৈরি হয়েছে, এবং আমরা তা থেকে তেলের সরবরাহ পাই এবং বর্তমানে তা আমাদের সুখ-সুবিধায় ব্যবহৃত হচ্ছে। এই সব বিষয় যখন আমাদের কাছে তুলে ধরা হয়, তখন আমরা এমন অনেক সাক্ষ্য প্রমাণ পাই যা সাক্ষ্য দেয় যে, ঈশ্বরের বাক্য সত্য।EdBen 117.1

    পৃথিবীর ক্রমবিকাশ সম্পর্কিত মতবাদের পারিপার্শ্বিক একটি মতবাদ এই যে, জীবাণু শম্বুক এবং চতুষ্পদ প্রাণীর ক্রমােন্নতির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে যে, মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ গৌরব।EdBen 117.2

    যখন গবেষণার জন্য মানুষের সুযােগের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়; তখন দেখা যায় জীবন কত সংক্ষিপ্ত; কাজের সুযোেগ কত সীমিত, তার দর্শন কত সীমাবদ্ধ, এবং তার কাজের পরিসমাপ্তিতে কত বার কত বড় বড় ভুলই না রয়ে গেছে, বিশেষ করে বাইবেলের ইতিহাসের ঘটনার আগে তারিখ নির্ধারিত হয়েছে; কত বারই না স্বীকৃত অনুমান সংশােধনার্থে পুনরীক্ষণ করা হয়েছে, অথবা এক পাশে ফেলে রাখা হয়েছে; কখনো কখনাে পৃথিবীর ক্রমােন্নতির গৃহীত সময় কত দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে অথবা লক্ষ লক্ষ বছরের ব্যবধানে হ্রাস পাচ্ছে; এবং কিভাবে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর দ্বারা মতবাদের অগ্রগতি সাধিত হয়েছে যা একে অন্যের সঙ্গে বিবাদের সৃষ্টি করে এই সব বিবেচনা করে আমারা কি জীবাণু, শামুক, এবং বানর হতে আমাদের উপযুক্ততা রচনা করার সুযােগ নিয়ে পবিত্র শাস্ত্রের উক্তি দূরে সরিয়ে দেবার জন্য একমত হব, যার সারল্য এত মহৎ, “ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতেই তাকে সৃষ্টি করিলেন?” আদিপুস্তক ১:২৭। আমরা কি ঐ বংশবৃত্তান্ত বাতিল করে দেব- যা রাজ দরবারে সঞ্চিত যে কোন ধন। অপেক্ষা বেশি মর্যাদা সম্পন্ন ও গৌরবজনক, “ইনি আদমের পুত্র, ইনি ঈশ্বরের পুত্র”? লুক ৩:৩৮।EdBen 117.3

    বিজ্ঞানের উপস্থিতি এবং জীবনের অভিজ্ঞতা সমূহ, উভয়ই প্রকৃতির মাঝে ঈশ্বরের বিরামহীন কাজের শাস্ত্রের সাক্ষ্যের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে; তা সঠিকভাবে বুঝতে হবে ।EdBen 118.1

    নহিমিয়ের সংগৃহিত গানগুলাের মধ্যে লেবীয়রা এভাবে গান করেছিল, “তুমি স্বর্গ ও স্বর্গের স্বর্গ এবং তাহার সমস্ত বাহিনী, পৃথিবী ও তথাকার সমস্ত এবং তন্মধ্যস্থ সমস্ত নির্মাণ করিয়াছ, আর তুমি তাহাদের সকলের স্থিতি করিতেছ।” নহিমিয় ৯:৬ ।EdBen 118.2

    এই পৃথিবী সম্পর্কে, শাস্ত্র ঘােষণা করে যে, সৃষ্টির কাজ সমাপ্ত হয়েছে। “যদিও তার কর্ম জগতের পত্তনাবধি সমাপ্ত ছিল।” ইব্রীয় ৪:৩। কিন্তু ঈশ্বরের শক্তি এখনও তাঁর সৃষ্টিকাজের উদ্দেশ্য তুলে ধরায় কার্যরত । এটা এমন যন্ত্র নয় যে একবার গতিশীল অবস্থায় চালু করা হয়েছিল যেন সে তার নিজস্ব উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া শক্তি দিয়ে কাজ করতে পারে, যার মাধ্যমে হৃদস্পন্দন, এবং শ্বাসপ্রশ্বাস কাজ চলতে পারে। প্রতিটি নিঃশ্বাস, প্রতিটি হৃদস্পন্দন তাঁর সতর্ক দৃষ্টি এবং তত্ত্বাবধানের একটি প্রমাণ, যাতে আমরা বাঁচি, চলাফেরা করি এবং যাতে আমাদের সত্তা রয়েছে। খুব ছােট পােকা-মাকড় হতে আরম্ভ করে মানুষ পর্যন্ত প্রত্যেক সৃষ্ট জীব প্রতিদিন তার দূরদর্শিতার ওপরে নির্ভরশীল।EdBen 118.3

    “ইহারা সকলেই তােমার অপেক্ষায় থাকে
    যেন তুমি যথাসময়ে তাহাদের ভক্ষ্য দেও।
    তুমি তাহাদিগকে দিলে তাহারা কুড়ায়;
    তুমি হস্ত মুক্ত করিলে তাহারা মঙ্গলে তপ্ত হয়। তুমি নিজ মুখ আচ্ছাদন করিলে তাহারা বিহ্বল হয়;
    তুমি তাহাদের নিঃশ্বাস হরণ করিলে তাহারা মরিয়া যায়,
    তাহাদের ধূলিতে প্রতিগমন করে।
    তুমি নিজ আত্মা পাঠাইলে তাহাদের সৃষ্টি হয়,
    আর তুমি ভূমিতল নবীন করিয়া থাক।”
    EdBen 118.4

    গীতসংহিতা ১০৪:২৭-৩০।

    “তিনি শূন্যের উপরে উত্তর কেন্দ্র বিস্তার করিয়াছেন,
    অবস্তুর উপরে পৃথিবীকে ঝুলাইয়াছেন,
    তিনি স্বীয় নিবিড় মেঘে জল বদ্ধ করেন,
    তথাপি জলধর তাহার ভারে বিদীর্ণ হয় না ।...
    আপন মেঘ দ্বারা তাহা আবৃত কবেন ।
    তিনি জলরাশির উপর চক্ররেখা লিখিয়াছেন,
    অন্ধকার ও দীপ্তির মধ্যবর্তী সীমা পর্যন্ত।
    গগনমণ্ডলের স্তম্ভ সকল কম্পিত হয়,
    তাঁহার ভৎসনায় চমকিয়া উঠে ।
    তিনি আপন পরাক্রমে সমুদ্রকে উত্তেজিত করেন,
    আপন বুদ্ধিতে গব্বীকে আঘাত করেন।
    তাহার শ্বাসে আকাশ পরিষ্কার হয়; ।
    তাহারই হস্ত পলায়মান নাগকে বিদ্ধ করিয়াছে।
    দেখ, এই সকল তাহার মার্গের প্রান্ত;
    তাঁহার বিষয়ে কাকলীমাত্র শুনা যায়;
    কিন্তু তাহার পরাক্রমের গর্জন কে বুঝিতে পারে?”
    EdBen 119.1

    ইয়ােব ২৬:৭-১০; ২৬:১১-১৪।

    “ঘূর্ণবায়ু ও ঝড় সদাপ্রভুর পথ,
    মেঘ তাঁহার পদধূলি।”
    EdBen 119.2

    নহুম ১:৩ ।

    বিস্ময়কর ক্ষমতা যা সমস্ত প্রকৃতির মধ্য দিয়ে কাজ করে এবং সব কিছু ধরে রাখে, তা, কোন কোন বিজ্ঞানীরা যেভাবে চিন্তা করে সেভাবে নয়, তা কেবল সব জায়গায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া নীতি, কাজে প্রেরণাদানকারী একটি শক্তি। ঈশ্বর একটি আত্ম; তথাপি তিনি একজন ব্যক্তিগত সত্তা, কেননা মানুষ তারই প্রতিমূৰ্ত্তিতে সৃষ্টি হয়েছিল। একজন ব্যক্তিগত সত্তা হিসেবে ঈশ্বর তাঁর পুত্রের মাধ্যমে আপনাকে প্রকাশ করেছেন। যীশু, পিতার প্রতাপের প্রভা “ও তত্ত্বের মুদ্রাঙ্ক” (ইব্রীয় ১:৩), পৃথিবীতে ছিলেন। একজন মানুষের বেশে তাঁকে পাওয়া গেল। একজন ব্যক্তিগত ত্রাণকর্তা হিসেবে তিনি পৃথিবীতে এলেন। একজন ব্যক্তিগত ত্রাণকর্তা হিসেবে তিনি ঊর্ধ্বে নীত হলেন। একজন ব্যক্তিগত ত্রাণকর্তারূপে তিনি স্বর্গীয় বিচারালয়ে ওকালতি করছেন। ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে “মনুষ্য-পুত্রের ন্যায় আমাদের পক্ষে পরিচর্যায় রত আছেন। দানিয়েল ৭:১৩ ।EdBen 119.3

    প্রেরিত পৌল, পবিত্র আত্মার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে লিখেছেন, “স্বর্গে ও পৃথিবীতে....সকলই তাঁহার দ্বারা ও তাঁহার নিমিত্ত সৃষ্ট হইয়াছে; আর তিনিই সকলের অগ্রে আছেন, ও তাহাতেই সকলের স্থিতি হইতেছে।” কলসীয় ১:১৬,১৭। যে হাত পৃথিবীকে শূন্যে ধরে রেখেছে, যে হাত সুশৃঙ্খলভাবে ও ক্লান্তিহীন ভাবে ঈশ্বরের সমগ্র বিশ্বে কর্মরত, তা আমাদের জন্য ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলEdBen 120.1

    ঈশ্বরের মহত্ত্ব আমাদের বােধের অগম্য। “সদাপ্রভু, তাঁহার সিংহাসন স্বর্গে” (গীতসংহিতা ১১:৪); তথাপি তাহার আত্মা দ্বারা তিনি সব জায়গায় বিদ্যমান। একজন ব্যক্তির বিষয়ে তার গভীর জ্ঞান রয়েছে, কারণ সে তার নিজ হাতে সৃষ্ট।EdBen 120.2

    “কে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর তুল্য?
    তিনি উর্ধ্বে সমাসীন;
    তিনি অবনত হইয়া দৃষ্টিপাত করেন
    আকাশে ও পৃথিবীতে!”
    “আমি তােমার আত্মা হইতে কোথায় যাইব?
    তােমার সাক্ষাৎ হইতে কোথায় পলাইব?
    যদি স্বর্গে গিয়া উঠি, সেখানে তুমি;
    যদি পাতালে শয্যা পাতি, সেখানে তুমি,
    “যদি অরুণের পক্ষ অবলম্বন করি,
    যদি সমুদ্রের পরপ্রান্তে বাস করি, সেখানেও তােমার হস্ত আমাকে চালাইবে,
    তােমার দক্ষিণ হস্ত আমাকে ধরিবে।”
    EdBen 120.3

    গীতসংহিতা ১১৩:৫,৬; ১৩৯:৭-১০।
    (দেখুন গীতসংহিতা ১৩৯: ৮; ইয়ােব ২৬:৬)

    “তুমিই আমার উপবেশন ও আমার উত্থান জানিতেছ,
    তুমি দূর হইতে আমার সঙ্কল্প বুঝিতেছ ।
    তুমি আমার পথ ও আমার শয়ন তদন্ত করিতেছ,
    আমার সমস্ত পথ ভালরূপে জান।...
    তুমি আমার অগ্রপশ্চাৎ ঘেরিয়াছ,
    আমার উপরে তোমার করতল রাখিয়াছ।
    এই জ্ঞান আমার নিকটে অতি আশ্চৰ্য্য, তাহা উচ্চ,
    আমার বােধের অগম্য।”
    EdBen 121.1

    গীতসংহিতা ১৩৯:২-৬।

    সমস্ত কিছুরই নির্মাতা, যিনি শেষ পর্যন্ত প্রয়োজন মত চমষ্কার ভাবে সব কিছু উপযুক্তভাবে বিন্যস্ত করেছেন। তিনি, যিনি বৈষয়িক বিশ্বে যা তৈরি করে রেখেছেন তা তার প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ করবে। তিনিই মানব আত্মা সৃষ্টি করেছেন, এবং তাকে জ্ঞান লাভ করার এবং প্রেম করার ক্ষমতা দিয়েছেন। তিনি আপনাতে সীমবদ্ধ নন যে তিনি আত্মার অভাবগুলাে অতৃপ্ত রেখে দেবেন। কোন অবাস্তব নীতি, অব্যক্তিগত সত্তা অথবা কেবল আনমনা ভাব ইহ জীবনে পাপ এবং দুঃখ এবং বেদনার সঙ্গে সংগ্রামের জীবনে মানব সত্তার অভাব সমূহ এবং বাসনা পূর্ণ করতে পারে না। কেবল নিয়ম এবং কোন বস্তুর শক্তিতে বিশ্বাস করাই যথেষ্ট নয় যাতে কোন সমবেদনা নেই, এবং যা কখনাে কোন সাহায্যের আকুতি শুনতে পারে না। আমাদের একটি সর্বশক্তিসম্পন্ন হাতের বিষয়ে জানতে হবে যা আমাদেরকে উঁচুতে তুলে ধরতে সক্ষম; একজন অনন্ত, অসীম বন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হতে হবে যিনি আমাদের জন্য সমব্যথা অনুভব করেন। আমাদের এমন একটি হাত আঁকড়ে ধরতে হবে, যা উষ্ণ, একটি অন্তঃকরণে আস্থা স্থাপন করতে হবে যা সহানুভূতিপূর্ণ। আর এমন কি ঈশ্বর তাঁর বাক্যে নিজেকে প্রকাশ করেছেন।EdBen 121.2

    যে ব্যক্তি গভীর ভাবে প্রকৃতির ঢ়-রহস্য অধ্যয়ন করবে সে তত ভালােভাবে তার মুগ্ধতা এবং দুর্বলতা উপলব্ধি করতে পারবে। সে উপলব্ধি করতে পারবে যে, এমন গভীরতা এবং উচ্চতা রয়েছে যেখানে সে পৌছতে পারে না, এমন গুপ্ত বিষয় রয়েছে যা সে ভেদ করতে পারে না, তার সামনে সত্যের বিশাল ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে সে যেতে পারে নি। নিউটনের সূত্রে এই কথা বলতে প্রস্তুত থাকবে “আমি একজন শিশুর মত সাগরের তীরে নুড়ি এবং শামুক খুঁজছি, এখনও আমার সামনে সত্যের মহা সাগর অনাবিষ্কৃত রয়েছে।”EdBen 121.3

    বিখ্যাত বিজ্ঞানরাও প্রকৃতিতে অসীম ক্ষমতার কার্মকাণ্ড উপলব্ধি করতে গিয়ে থমকে গিয়েছেন। কি মানুষের অসহযোগিতার কারণে প্রকৃতির শিক্ষা অস্বীকৃতিমূলক এবং নিরুৎসাহজনক। একমাত্র গুপ্ত শক্তি প্রকাশের আলােকে এটি ঠিক ভাবে পাঠ করা যেতে পারে। “বিশ্বাসে আমরা বুঝিতে পারি।” ইব্রীয় ১১:৩।EdBen 122.1

    “আদিতে ঈশ্বর।” আদিপুস্তক ১:১। কেবল এই স্থানে মন, তার আকুল প্রশ্নে, জাহাজের কাছে উড়ে আসা কবুতরের মত বিশ্রাম লাভ করতে পারে। উপরে, নীচে, দূরে, অসীম প্রেম অবস্থান করে, “আর মঙ্গলভাবের সমস্ত বাসনা ও বিশ্বাসের কর্ম সপরাক্রম সম্পূর্ণ করিয়া দেয়।” ২ থিষলনীকিয় ১:১১।EdBen 122.2

    “ফলতঃ তাহার অদৃশ্যগুণ, অর্থাৎ তাহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্যে বােধগম্য হইয়া দুষ্ট হইতেছে।” রােমীয় ১:২০। কিন্তু তাদের সাক্ষ্য কেবল স্বর্গীয় শিক্ষকের সাহায্যের মাধ্যমে বুঝতে পারা যেতে পারে। কারণ মনুষ্যের বিষয়গুলি মনুষ্যদের মধ্যে কে জানে? কেবল মনুষ্যের অন্তরস্থ আত্মা জানে; তেমনি ঈশ্বরের বিষয়গুলি কেহ জানেন না, কেবল ঈশ্বরের আত্মা জানেন।” ১ করিন্থীয় ২:১১।EdBen 122.3

    “পরন্তু তিনি, সত্যের আত্মা, যখন আসিবেন, তখন পথ দেখাইয়া তােমাদিগকে সমস্ত সত্যে লইয়া যাইবেন।” যােহন ১৬:১৩। কেবল সেই আত্ম দ্বারা যিনি আদিত, সেই বাক্য দ্বারা “জলের উপরে অবস্থিতি করিতেছিলেন” “সমস্ত কিছু নির্মিত হইয়াছিল” ঐ “প্রকৃত জ্যোতি যাহা জগতে আগমনকারী প্রত্যেককে আলােকিত করে,” তা দ্বারা বিজ্ঞানের সাক্ষ্য যথার্থরূপে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কেবল তাদের পরিচালনা দ্বারা তার গভীরতম সত্য সমূহ বুঝতে পারা যাবে।EdBen 122.4

    কেবল সর্বজ্ঞানী ঈশ্বরের পরিচালনায় আমরা, তার কাজ আলােচনায় তাঁর মত চিন্তা করতে সমর্থ হব ।EdBen 122.5