Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents

সুষম শিক্ষা

 - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First
    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents

    ২০ - বাইবেল শিক্ষাদান এবং অধ্যয়ন

    “তােমার কর্ণ জ্ঞানের কথা শুনিবে;”
    তুমি তাহা গুপ্ত ধনের তুল্য সন্ধান করিবে।”

    শৈশব, যৌবন, এবং পূর্ণ বয়সে, যীশু শাস্ত্র অধ্যয়ন করেছেন । ছোটবেলায় প্রতিদিন তিনি তাঁর মায়ের হাঁটুর ওপরে থেকে ভাববাদিদের জড়ানাে বই হতে শিক্ষা লাভ করতেন। তার যৌবনকালে অতি সকালে এবং সন্ধ্যা বেলায় প্রায়ই তাকে একাকী পর্বতের পাশে এবং বনের নির্জনতার মধ্যে থেকে নীরবে প্রার্থনা ও ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করতে দেখা যেত। তাঁর পরিচর্যা কালে শাস্ত্রমালার সঙ্গে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল এবং তিনি সাক্ষ্য বহন করতেন। তিনি গভীর মনােযােগের সঙ্গে ঐ সব অধ্যয়ন। করতেন। তখন থেকেই তিনি জ্ঞান অর্জন করতেন যেমন আমরাও একই জ্ঞান অর্জন করতে পারি, তাঁর আশ্চর্য মানসিক এবং আধ্যাত্মিক শক্তি উভয়ই শিক্ষা লাভের একটি মাধ্যমরূপে বাইবেলের গুরুত্বের প্রতি একটি সাক্ষ্য বহন করে।EdBen 173.1

    আমাদের স্বর্গস্থ পিতা, তাঁর বাক্য প্রদান করায় শিশুদের প্রতি অবহেলা দেখান নি। মানুষের লিখিত, বাইবেলের তুল্য কি আছে- যা মানবের হৃদয়-পটে ধারণ করা যায়, এবং যা ছােটদের আগ্রহকে জাগিয়ে তােলে, যেমন বাইবেলের ঘটনাগুলাে এই সব সরল সহজ কাহিনীগুলাের মধ্যে ঈশ্বরের মহান নীতিমালা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এভাবে দুষ্টান্তের মাধ্যমে শিশুদের উপযুক্তভাবে বুঝিয়া দেয়া সম্ভব, বাবা-মায়েরা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ প্রথম থেকেই, তাঁর নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সদাপ্রভুর জারীকৃত আদেশ পূর্ণ করতে পারেন: “আর তােমরা প্রত্যেকে আপন আপন সন্তানগণকে এ সকল যত্নপূর্বক শিক্ষা দিবে, এবং গৃহে বসিবার কিম্বা পথে চলিবার সময়ে, শয়নে কিম্বা গাত্রোত্থান কালে ঐ সমস্তের কথােপকথন করিবে।” দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৭।EdBen 173.2

    ব্লাকবাের্ড, মানচিত্র, এবং ছবি ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষা দিলে এ। বিষয়গুলাে তাদের ভালােভাবে বুঝিয়ে দেয়া সম্ভব হবে এবং বিষয়টিও তাদের স্মৃতিপটে স্থায়ী হবে। বাবা-মা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ উন্নতর পদ্ধতিতে শিক্ষা দেবার জন্য অবিরাম চেষ্টা করবেন। বাইবেল শিক্ষাদানে আমাদের চিন্তাধারা হবে পরিষ্কার, আমাদের শিক্ষা পদ্ধতিগুলাে হবে সর্বোত্তম এবং আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে খুবই আন্তরিক ।EdBen 174.1

    বাইবেল পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানাের বিষয়টি নির্ভর করে আমরা উপাসনার সময়টি কিভাবে ব্যবহার করি তার ওপরে । সকাল-সন্ধ্যা উপাসনায় সময়টি হবে দিনের অত্যন্ত মধুর এবং সবচেয়ে ভালাে সময়, এটি উপলব্ধি করতে হবে যে, এই সময়ের মধ্যে কোন সমস্যা, কোন নির্দয় চিন্তা প্রবেশ করবে না; বাবা-মা ও সন্তান-সন্ততিরা যীশুর সঙ্গে মিলিত হন এবং ঘরে পবিত্র দূতদের আমন্ত্রণ জানানাের জন্য মিলিত হন। উপাসনার সময়টি হবে সংক্ষিপ্ত এবং প্রাণবন্ত, সময়ােপযােগী, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের। সবাই বাইবেল পাঠ করবে এবং ঈশ্বরের ব্যবস্থা পুনরাবৃত্তি করবে। সন্তান-সন্ততিদের মনােনীত পদ পাঠ করতে দিলে তাদের আগ্রহ বাড়বে। শাস্ত্র পাঠের ওপরে তাদের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন এবং তারাও প্রশ্ন। জিজ্ঞেস করবে। এমন কিছু উল্লেখ করুন যা এর অর্থ বুঝাতে সাহায্য করবে। উপাসনা খুব বেশি সময় নিয়ে না হলে, ছােটরা প্রার্থনায় অংশ গ্রহণ করবে, গানে অংশ গ্রহণ করবে, অন্ততপক্ষে একটি পদ গান করবে।EdBen 174.2

    এ ধরণের একটি সভার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বিশেষ চিন্তা করতে হবে। আর বাবা-মাদের প্রতিদিন তাদের সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে বাইবেল আলােচনায় বসতে হবে। প্রচেষ্টা, পরিকল্পনা, এবং কিছু ত্যাগস্বীকারে। সন্দেহের কোন অবকাশ থাকবে না; কিন্তু প্রচেষ্টাকে প্রচুররূপে পুরস্কৃত করা হবে।EdBen 174.3

    তার নিয়ম-কানুন শিক্ষা দেয়ার জন্য একটি প্রস্তুতি হিসেবে ঈশ্বরের এই আদেশমালা ঐ পিতা-মাতাদের হৃদয়ে সঞ্চিত থাকে। আর এই যে সকল কথা আমি অদ্য তােমাকে আজ্ঞা করি, তাহা তােমার হৃদয়ে থাকুক। তিনি বলেন “আর তােমরা প্রত্যেকে আপন আপন সন্তানগণকে এ সকল যত্নপূর্বক শিক্ষা দিবে।” দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৬,৭। আমাদের সন্তানদের বাইবেল অধ্যয়নে আগ্রহ বাড়িয়ে তােলার জন্য এর প্রতি আমাদের আগ্রহ দেখাতে হবে। এগুলাে আলােচনায় তাদের আগ্রহ জাগিয়ে তােলার জন্য আমাদের এর প্রতি অনুরক্ত হতে হবে। আমাদের নিজেদের আদর্শ এবং মনােভাবের কারণে আমাদের শিক্ষা তাদের প্রতি প্রভাব বিস্তার করবেEdBen 174.4

    ঈশ্বর আব্রাহামকে তাঁর বাক্যের একজন শিক্ষক হবার জন্য আহ্বান করেছিলেন, এক মহাজাতির পিতা হবার জন্য তাকে মনােনীত করেছিলেন, কেননা তিনি দেখলেন যে, ব্রাহাম ঈশ্বরের ব্যবস্থার নীতিমালা অনুসারেই তার সন্তান এবং পরিজনবর্গকে শিক্ষা দেবেন। আর অব্রাহামের নিজের জীবনের প্রভাবই তার শিক্ষাক্ষেত্রে শক্তির সঞ্চার করেছিল। তার পরিজনবর্গের সহস্রাধিক আত্মা, অনেকে পরিবারের প্রধান, তারা বহু সংখ্যকই প্রতিমা পূজক থেকে নতুন ধর্মান্তরিত ছিল। এভাবে একটি বিশাল পরিজনের জন্য একটি দৃঢ় নেতৃত্ব আবশ্যক ছিল । কোন দুর্বল, অস্থির পদ্ধতি এই কাজের জন্য যথেষ্ট হবে না। ঈশ্বর আব্রাহামের বিষয়ে বলেছেন, “আমি তাহাকে জানিয়াছি, যেন সে আপন ভাবী সন্তানগণকে ও পরিবারদিগকে আদেশ করেন।” আদিপুস্তক ১৮:১৯। তথাপি তিনি এমন জ্ঞান এবং দয়ায় তার ক্ষমতা প্রয়ােগ করেছিলেন যা অনেক হৃদয় জয় করেছিল। ঐশ্বরিক দর্শকের সাক্ষ্য এমন; “তাহারা ধর্মসঙ্গত ও ন্যায্য আচরণ করিতে করিতে সদাপ্রভুর পথে চলে।” আদিপুস্তক ১৮:১৯। আর অব্রাহামের প্রভাব তাঁর নিজ পরিবারগুলাের বাইরেও বিস্তার লাভ করেছিল । তিনি যেখানেই তার তাঁবু ফেলতেন, সেখানেই তিনি বলি এবং আরাধনার বেদী স্থাপন করতেন। তাঁবু গুটিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেও বেদী সেখানে থেকে যেতে; এবং অনেক কনানীয় ভ্রমণকারী, যারা অব্রাহামের জীবন থেকে ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞান লাভ করেছিল, তারা ঐ বেদীতে সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করার উদ্যোগ নিত।EdBen 175.1

    শিক্ষকের জীবনে যদি এটি বিশ্বস্ত প্রভাব থাকে তবে ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষাদানের ফল আজও কোন অংশে কম হবে না ।EdBen 175.2

    বাইবেলের বিষয়ে অন্যেরা কি চিন্তা করেছে, অথবা শিক্ষা লাভ করেছে তা জানাই যথেষ্ট নয়। বিচারে প্রত্যেককেই ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি করতে হবে; এবং প্রত্যেককেই, সত্য কি- তা এখনই শিক্ষা করতে হবে। কিন্তু ফলপ্রস অধ্যয়নে, ছাত্র-ছাত্রীর আগ্রহও কিন্তু তালিকাভুক্ত রাখতে হবে। বিশেষ করে যিনি ছােট ছােট ছেলে-মেয়ে এবং যুবক-যুবতিদের সঙ্গে কাজ করবেন, তাকে, বিভিন্ন জনের স্বভাব, প্রশিক্ষণ এবং চিন্তারাশি সম্পর্কে শিথিলতা দেখালে চলবে না। শিশুদের বাইবেল শিক্ষাদানে, আমরা তাদের মনের গতি, তাদের আগ্রহের বস্তু খেয়াল করে অনেক কিছু জানতে পারি; এবং এই সব বিষয়ে বাইবেল কি বলে তার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতে পারি । যিনি আমাদেরকে আমাদের বিভিন্ন প্রবণতা ও তৎপরতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাঁর বাক্যে প্রত্যেকের জন্য কিছু না কিছু প্রদান করেছেন। ছাত্র-ছাত্রীগণ যখন দেখে যে, বাইবেলের শিক্ষা তাদের নিজেদের জীবনে প্রয়ােগযােগ্য তখন পরামর্শদাতা হিসেবে সেদিকে মনােযােগ দিতে তাদের শিক্ষা দিন।EdBen 175.3

    এর অত্যাশ্চর্য সৌন্দর্যের প্রশংসা করতে তাদের শিক্ষা দিন। অনেক অনেক বই আছে যেগুলাের বাস্তবিক পক্ষে কোন মূল্য নেই, যে বইগুলাে চিন্তাকর্ষক বলে মনে হয় অথচ সেগুলাে অস্বাস্থ্যকর, সেগুলাে অনুমােদন করা হয় অথবা সেগুলাের তথাকথিত সাহিত্যানুগ মূল্যের কারণে পাঠ্যসূচী হিসাবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়। যখন ঈশ্বরের বাক্যের পবিত্র স্রোতধারা থেকে পান করার অবাধ সুযোগ রয়েছে, তখন আমরা কেন আমাদের সন্তান-সন্ততিদের দূষিত স্রোতধারা হতে পান করার অনুমতি দেব? বাইবেলের একটি পূর্ণতা, একটি শক্তি রয়েছে, একটি গভীর অর্থ রয়েছে যা নিঃশেষ হয়ে যাবে না। শিশু এবং যুবক-যুবতিদের চিন্তাধারা প্রকাশ করার উৎসের খোঁজ করতে উৎসাহ দিন।EdBen 176.1

    যেমন এ সব বহুমূল্য বিষয়গুলাের সৌন্দর্য তাদের আকর্ষণ করে, একটি কোমল, সিক্তকারী শক্তি তাদের হৃদয় স্পর্শ করবে। তারা তাঁর কাছে আকর্ষিত হবে যিনি তাদের কাছে আপনাকে প্রকাশ করেছেন। আর অতি অল্প সংখ্যক লােক রয়েছে যারা তাঁর কার্যাবলির পথ সমূহ জানতে ইচ্ছা করবে না। EdBen 176.2

    বাইবেলের ছাত্র-ছাত্রীরা একজন শিক্ষার্থীর মনােভাব নিয়ে শাস্ত্রের দিকে এগিয়ে আসার শিক্ষা করবে। আমাদের বাইবেলের পৃষ্ঠাগুলাে খুঁজে খুঁজে দেখতে হবে, আমাদের মতবাদ টিকিয়ে রাখার প্রমাণ হিসেবে নয়, কি ঈশ্বর কি বলেন তা জানবার জন্য।EdBen 176.3

    একমাত্র আত্মার সাহায্যের মাধ্যমে বাইবেলের প্রকৃত জ্ঞান লাভ হতে পারে, যার মাধ্যমে পবিত্র বাক্য দেয়া হয়েছিল। আর এই জ্ঞান লাভ করতে হলে আমাদের এতে বেঁচে থাকতে হবে। ঈশ্বর আমাদের যা কিছু আদেশ করেন, তার আজ্ঞাবহ হতে হবে। বাইবেলে থাকা সব প্রতিজ্ঞা আমরা দাবী করতে পারি। যে জীবন অনুশাসন দেয়, তা সেই জীবন যার শক্তির মাধ্যমে আমরা বেঁচে থাকি। কেবল যদি এভাবে বাইবেল আঁকড়ে ধরা যায় তবে তা ফলপ্রসূভাবে আলােচনা করা যেতে পারে।EdBen 176.4

    আমাদিগকে খুব মনােযােগ এবং ধৈর্যের সঙ্গে বাইবেল পড়তে হবে। খনি আবিষ্কারক সােনা পাবার জন্য যেমন পৃথিবীর গভীরে খনন কাজ চালায়, ঠিক তেমনি একান্ত এবং নাছােড়বাধা ভাবে আমাদের ঈশ্বরের বাক্যের ধনাগারের খোঁজ করতে হবে।EdBen 177.1

    প্রতিদিন বাইবেল পড়ার সময় পদের পর পদ আলােচনা করে যাওয়া পদ্ধতি প্রায়ই খুব সাহায্যকারী বলে মনে হয়। একজন ছাত্র বাইবেলের একটি পদ নিয়ে, ঈশ্বর তার কাছে কি বলছেন, তা গভীরভাবে ধ্যান করবে এবং যে পর্যন্ত না তা তার নিজস্ব বলে প্রমাণিত হবে, সে পর্যন্ত ঐ চিন্তাধারার ওপরেই তাকে মনােনিবেশ করতে হবে। অনেকগুলাে অধ্যায় পাঠ করলাম অথচ এর নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অথবা নির্দেশের কিছুই বুঝতে পারলাম না, এর চেয়ে বরং একটি অংশ বা পদ পাঠ করে তার পরিষ্কার ধারণা উপলব্ধি করা অধিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণEdBen 177.2

    মানসিক অদক্ষতা এবং নৈতিক দুর্বলতার একটি কারণ, মূল্যবান পরিসমাপ্তির জন্য ধ্যানের অভাব। আমরা ব্যাপক ভাবে পত্রিকা বিলিয়ে গর্ব বােধ করি; কিন্তু বইয়ের সংখ্যাবৃদ্ধি, এমন কি যে বইগুলাে ক্ষতিকর নয়, সেগুলাের মাধ্যমেও সমরূপ মন্দ পরিণাম আনয়ন করতে পারে। ছাপাখানা থেকে অবিরত বিপুল পরিমাণে কাগজ-পত্র ছাপা হয়ে বের হয়ে আসছে, বয়স্ক এবং তরুণ-তরুণীরা অত্যন্ত ব্যস্ততা সহকারে আধাে-আধাে ভাবে পাঠ করে যাচ্ছে এর ফলে মন একাগ্রতার এবং জীবনদায়ী চিন্তা শক্তি হারিয়ে ফেলছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বহু সংখ্যক দৈনিক, সাপ্তাহিক, এবং মাসিক পত্রিকা এবং বিভিন্ন বই, মিশরের ব্যাঙের মত; যা শ্রমবিমুখ এবং লক্ষ্যহীন, তা পভার কারণে খুব সহজেই মন্দের শিকার হয়ে পড়ি। এটি অসুস্থ প্রাণহীন অবয়ব যা ছত্রাকের শিকড়ের মত। অলস মন শয়তানের কারখানা। মনকে উচ্চ পবিত্র আদর্শের দিকে পরিচালিত করতে হবে, জীবনের একটি আদর্শ এবং মহৎ লক্ষ্য থাকবে, একটি আত্মানুভূতির উদ্দেশ্য থাকবে, এবং তাতে মন্দতা প্রবেশের ছিদ্র খুঁজে পাবে না।EdBen 177.3

    তাহলে তরুণ-তরুণীদের ঘনিষ্টভাবে ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করতে শিক্ষা লাভ করতে হবে। একবার জীবনে গ্রহণ করলে প্রলােভনের বিরুদ্ধে। শক্তিশালী প্রতিবন্ধক স্বরূপ প্রমাণিত হবে। “তােমার বচন আমি হৃদয়মধ্যে সঞ্চয় করিয়াছি, যেন তােমার বিরুদ্ধে পাপ না করি।” “তােমার ওষ্ঠাধরের বাক্যে, আমি দুর্জনদের পথ হইতে সাবধান হইয়াছি।” গীতসংহিতা ১১৯:১১; ১৭:৪ ।EdBen 177.4

    বাইবেলই বাইবেলের ব্যাখ্যা দেয়। শাস্ত্রের সঙ্গে শাস্ত্রের তুলনা করতে হবে। বাইবেলের ছাত্র-ছাত্রীকে সামগ্রীক ভাবে এর প্রতি দৃষ্টিপাত করতে হবে, তাকে এর অংশগুলাে সম্পর্কে লক্ষ করতে হবে। তাকে এর সর্বশ্রেষ্ঠ কেন্দ্রিয় চিন্তার জ্ঞান, পৃথিবীর জন্য ঈশ্বরের মূল উদ্দেশ্যের, মহান সংঘর্ষের উৎপত্তি, এবং পরিত্রাণ কাজের জ্ঞান লাভ করতে হবে। তাকে দুটো নীতির প্রকৃতি বুঝতে হবে, যা মহাবিষ্কারের জন্য প্রতিযােগিতা করছে, এবং তাকে ইতিহাস এবং ভবিষ্যদ্বাণীর তালিকা বা নথিপত্র, পরমােৎকর্ষের মাধ্যমে ঐ সকলের কাজ আবিষ্কার করতে শিক্ষা করতে হবে। তাকে দেখতে হবে কিভাবে এই সংগ্রাম মানব অভিজ্ঞতায় প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবেশ করে; কিভাবে জীবনের প্রতিটি কাজে সে স্বয়ং দুটো বিরােধ উদ্দেশ্যের একটি প্রকাশ করে এবং কিভাবে, সে ইচ্ছা করুক বা না করুক, এমন কি সে এখন নিজেই সিদ্ধান্ত নিবে সংগ্রামের কোন দিকে সে থাকবে ।EdBen 178.1

    বাইবেলের প্রতিটি অংশই ঈশ্বর অনুপ্রাণিত এবং উপকার সাধক। পুরাতন ও নূতন নিয়ম, উভয়ের প্রতি আমাদের মনােনিবেশ করতে হবে । পুরাতন নিয়ম পাঠ করে আমরা জীবন্ত প্রস্রবণ খুঁজে পাব, কিন্তু অসতর্ক পাঠকের দৃষ্টিতে এটি কেবল একটি মরুভূমি মত মনে হবে EdBen 178.2

    প্রকাশিত বাক্য, দানিয়েল ভাববাদীর পুস্তকের সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হবে। প্রত্যেক ঈশ্বর ভয়শীল শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বিবেচনা করতে হবে, কত বেশি পরিষ্কার ভাবে বুঝতে এবং সুসমাচার প্রচার করতে হবে যে আমাদের ত্রাণকর্তা তাঁর দাস যােহনের সঙ্গে নিজের পরিচয় দিতে সশরীরে এসেছেন- “যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য, ঈশ্বর যাহা তাঁহাকে দান করিলেন, যেন তিনি, যাহা যাহা শীঘ্ন ঘটিবে, সেই সকল আপন দাসগণকে দেখাইয়া দেন।” প্রকাশিত বাক্য ১:১। কেউ যেন প্রকাশিত বাক্য অধ্যয়নে নিরুৎসাহিত না হন কারণ এতে নিগূঢ় রহস্য এবং প্রতীক সমূহ আছে। “যদি তােমাদের কাহারও জ্ঞানের অভাব হয়, তবে সে ঈশ্বরের কাছে যাচা করুক, তিনি সকলকে অকাতরে দিয়া থাকেন, তিরস্কার করেন না; তাহাকে দত্ত হইবে।” যাকোব ১:৫ ।EdBen 178.3

    “ধন্য, যে এই ভাববাণীর বাক্য সকল পাঠ করে, ও যাহারা শ্রবণ করে, এবং ইহাতে লিখিত কথা সকল পালন করে; কেননা কাল সন্নিকট।” প্রকাশিত বাক্য ১:৩ ।EdBen 179.1

    বাইবেলের জন্য যখন একটি প্রকৃত প্রেম জেগে ওঠে, এবং শিক্ষার্থী যখন উপলব্ধি করতে পারে ক্ষেত্র কত বিশাল এবং ধনাগার কত মূল্যবান, তখন সে ঈশ্বরের বাক্যের সঙ্গে নিজেই আগ্রহের সঙ্গে পরিচিত হবার জন্য প্রতিটি সুযােগ গ্রহণ করবে। এটি পড়ার জন্য কোন বিশেষ সময় অথবা স্থানের আবশ্যক হবে না। আর এই অবিরাম অধ্যয়ন শাস্ত্রের জন্য একটি অনুরাগ সৃষ্টি হবার সবচেয়ে ভালাে একটি মাধ্যম। একজন শিক্ষার্থী সব সময় তার সাথে বাইবেল রাখবে। সুযােগ পেলেই, তুমি একটি পদ পাঠ কর এবং ঐ বিষয়ে ধ্যান কর। পথ চলার সময়ে, রেল স্টেশনে অপেক্ষাকালে, কারাে সাথে দেখা করতে গিয়ে অপেক্ষা করা কালিন সময়ে সত্যের ধনাগার থেকে কিছু মূল্যবান চিন্তাধারা লাভ করার সুযােগ গ্রহণ করতে হবে।EdBen 179.2

    জীবনের মহান ইচ্ছা শক্তিগুলাে হল—বিশ্বাস, প্রত্যাশা, এবং প্রেম; আর প্রকৃত বাইবেল অধ্যয়ন এগুলােরই আবেদন জানায়। বাইবেলের বাহ্যিক সৌন্দর্য, কল্পনা এবং প্রকাশভঙ্গীর সৌন্দর্য, এ সব কিছুই কেবল বিন্যাস মাত্র, কেননা এর প্রকৃত ধন-পবিত্রতার সৌন্দর্য। যারা ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করেছেন, সেসব লােকের তালিকায় আমরা তার গৌরবের রশ্মিমালা ধারণ করতে পারি। যিনি “সর্বতােভাবে মনােহর আমরা তাকে দেখি, যার তুলনায় পৃথিবী এবং স্বর্গের সকল সৌন্দর্য একটি অনুজ্জ্বল প্রতিবিম্ব মাত্র। “আর আমি ভূতল হইতে উচ্চীকৃত হইলে সকলকে আমার নিকটে আকর্ষণ করিব।” যােহন ১২:৩২। বাইবেলের শিক্ষার্থী যখন মুক্তিকর্তাকে দেখে, তখন আত্মার মধ্যে বিশ্বাস, আরাধন, এবং প্রেমের গুপ্ত রহস্যপূর্ণ শক্তি জেগে ওঠে। খ্রীষ্টের দর্শনে দৃষ্টি নিবন্ধ থাকে, এবং দর্শনকারী যার আরাধনা করে, তারই মত বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। প্রেরিত পৌলের বাক্য আত্মার ভাষা হয়ে ওঠে: “আর বাস্তবিক আমার প্রভু খ্রীষ্ট যীশুর জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতা প্রযুক্ত আমি সকলই ক্ষতি বলিয়া গণ্য করিতেছি ... যেন আমি তাঁহাকে তাঁহার পুনরুত্থানের পরাক্রম ও তাহার দুঃখ ভােগের সহভাগিতা জানিতে পারি।” ফিলিপীয় ৩:৮-১০।EdBen 179.3

    স্বর্গীয় শান্তি এবং আনন্দের প্রস্রবণ, অনুপ্রাণিত বাণী আত্মার মধ্যে ব্যক্ত হয়, যা, যারা এর কাছে আসে তাদের কাছে প্রভাবের একটি শক্তিশালী নদী হিসেবে তাদের সবাইকে আশীর্বাদ করার জন্য আসে। যে সব যুবক-যুবতি তাদের হাতে বাইবেল নিয়ে বেড়ে উঠছে তারা এর জীবনদায়ী শক্তির গ্রাহক ও প্রণালী স্বরূপ হােক, এবং তাতে জগতের কাছে আশীর্বাদের কত চমৎকারই না প্রস্রবণ প্রবাহিত হবে! যাদের শক্তির প্রভাব জগৎকে সুস্থ করবে এবং সান্তনা দিবে যা আমাদের ধারণার অতীত জীবন জলের নদী, স্রোত ধারা “অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলিয়া উঠিবে।”EdBen 180.1

    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents