যে কেহ অনম্য সততা প্রদর্শন করিবে, খ্রীষ্টের পরিমাণ অনুযায়ী সেই ব্যক্তিই প্রকৃত সৎ । ছলনার তৌলদণ্ড ও মিথ্যা বাটখারা— যদ্দ্বারা জগতের অনেকেই তাহাদের ঐশ্বর্য বৃদ্ধি করিতে চাহে, সে সকলই সদাপ্রভুর ঘৃণাস্পদ । তথাপি তাহারা ঈশ্বরের আজ্ঞাপালনকারী বলিয়া আপনাদের পরিচয় দেয়, তাহাদের মধ্যে অনেকেই ছলনার তৌলদণ্ড ও মিথ্যা বাটখারা ব্যবহার করে । কোন ব্যক্তি যখন প্রকৃত ঈশ্বরের সহিত সংযুক্ত হয়, এবং সত্য সত্যই তাঁহার ব্যবস্থা পালন করে, তখন তাহা, তাহার জীবনে প্রকাশ পায় ; কারণ তাহার সমস্ত কার্য্যই খ্রীষ্টের শিক্ষার অনুরূপ হয় । লাভের প্রত্যাশায় সে তাহার সম্মান বিক্রয় করে না । দৃঢ়-ভিত্তির উপরে তাহার মূলনীতিগুলি সুগঠিত, আর জাগতিক ব্যাপারে সে তাহার মূলনীতি অনুযায়ী কার্য্য করিয়া থাকে । তাহাতে জগতের ময়লা ও আবজর্জনারাশির মধ্যে তাহার অটল সততা স্বর্ণের ন্যায় উজজ্বল ভাবে কিরণ দেয় । CCh 294.2
প্রবঞ্চনা, মিথ্যা বাক্য এবং অবিশ্বস্ততা চক্ চক্ করিতে ও মানবের চক্ষু হইতে লুক্কায়িত থাকিতে পারে, কিন্ত ঈশ্বরের চক্ষু হইতে লুক্কায়িত থাকিতে পারে না । ঈশ্বরের দূতগণ — যাঁহারা চরিত্রের উৎকর্ষতা লক্ষ্য করেন এবং নৈতিক মূল্য অবধারণ করেন, তাঁহারা চরিত্র প্রকাশক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলি স্বর্গীয় বিবরণ পুস্তকে লিপিবদ্ধ করিয়া রাখেন । যে শ্রমিক দৈনিক জীবনের কার্য্যকলাপে অবিশ্বস্ত ও অমনোযোগীর তাহার কাজকারবারে মানদণ্ড অনুযায়ী, তাহার ধর্ম্মের স্থিরীকৃত হইলে, জগতের বিচার ভুল হইবে না । CCh 294.3
মনুষ্যপুত্র-যীশু সত্বরই আকাশীয় মেঘরথে আসিবেন, এই বিশ্বাস প্রকৃত খ্রীষ্টীয়ানকে তাহার জীবনের সাধারণ কাজ-কারবারে কখনই অবহেলা করিতে বা অমনোযোগী হইতে দিবে না ; খ্রীষ্টের সত্ত্বর আগমনের অপেক্ষার্থিগণ কখনও অলস হইবে না, কিন্ত সর্ব্বাদাই কার্যে তৎপর থাকিবে । তাহাদের কোন কার্য্যই তাহারা অসতর্কভাবে কিংবা প্রবঞ্চনা সহকারে করিবে না, কিন্ত বিশ্বস্তভাবে, ক্ষিপ্রতা-সহকারে ও সম্পূর্ণরূপে সকল কার্য্য সাধন করিবে । এই জীবনের কার্য্যাদিতে অমনোযোগিতা প্রদর্শন করা যাহারা আধ্যাত্মিকতার ও জগৎ হইতে পৃথককৃত হওয়ার প্রমাণ বলিয়া মনে করে, তাহারা মহা প্রতারণার মধ্যে রহিয়াছে । তাহাদের সত্যনিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা ও সাধুতা জাগতিক বিষয়ে পরীক্ষিত ও প্রমাণিত হয় । তাহারা যদি অপ্ল বিষয়ে বিশ্বস্ত হয়, তবে বহু বিষয়েও বিশ্বস্ত হইবে । CCh 295.1
আমি দেখিলাম অনেকে এই বিষয়েই পরীক্ষায় অকৃতকার্য্য হইবে । পার্থিব কার্য্যাদি নির্ব্বাহে তাহারা তাহাদের প্রকৃত স্বভাবের পরিচয় দিয়া থাকে । সহমানবের সহিত ব্যবহারে তাহারা তাহাদের অবিশ্বস্ততা, ধূর্ত্তামি, অসাধুতা প্রকাশ করিয়া থাকে । এই জীবনের বিষয়-ব্যাপারে যেরূপ আচরণ করে, তাহারই উপর তাহাদের ভবিষ্যৎ অনন্তজীবন নির্ভর করে ; এবং ধর্ম্ম-স্বভাব গঠনের নিমিত্ত কঠোর সততার প্রয়োজন অপরিহার্য্য, ইহা তাহারা বিবেচনা করিয়া দেখে না । যাহারা সত্যে বিশ্বাস করে বলিয়া মুখে স্বীকার করে, তাহাদের কদুষ্ণতাই অসাধুতার মূল কারণ । তাহারা খ্রীষ্টের সহিত সংযুক্ত নহে বলিয়াই আত্ম-প্রবঞ্চনা হইতেছে । আমি দুঃখের সহিত বলিতে বাধ্য হই যে ; এমন কি শাব্বাথপালনকারীদিগের মধেও সততার বড়ই অভাব ।64T 309-311; CCh 295.2