সৃষ্টিকর্ত্তা ঈশ্বরের কার্য্য সুচারুরূপে সম্পন্ন করনার্থে মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রগুলিকে সর্ব্বত্তম অবস্থায় রক্ষা করিবার জন্য ঈশ্বরের প্রতি তাহাদের কর্ত্তব্য কী, আহা ! তাহা যদি আমি তাহাদিগকে বুঝাইতে পারিতাম ! খ্রীষ্টীয়ান স্ত্রী তাহার স্বামীর পাশবিক প্রবৃত্তির বা কামরিপুর উত্তেজনা হইতে বাক্যে বা কার্য্যে নিবৃত্ত থাকুক । এই বিষয়ে শক্তি ক্ষয়ের নিমিত্ত অনেকেরই আদৌ কোন শক্তি নাই । কারন নবযৌবনের আরম্ভ হইতে এপর্যন্ত তাহারা তাহাদের মস্তিষ্ক দুর্ব্বল করিয়া রাখিয়াছে এবং পাশবিক কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করিয়া শরীরের স্বাভাবিক অবস্থা দুর্ব্বল করিয়া ফেলিয়াছে । আত্মত্যাগ ও মিতাচার তাহাদের বিবাহিত জীবনের নীতিবাক্য হওয়া বিধেয় । CCh 367.1
আমরা যেন সুচারুরূপে ঈশ্বরের কার্য্য সম্পাদন করিতা ও মানবজাতির উপকারে আসিতে পারে, তজ্জন্য আমাদের আত্মা বিশুদ্ধ ও আমাদের দেহ সুস্থ রাখিবার নিমিত্ত আমাদের ঈশ্বরের পবিত্র দাবী দাওয়া পালনে বাধ্য । প্রেরিত পৌলের চেতনাবানী এই ঃ- “পাপ তোমাদের মর্ত্ত্যদেহে রাজত্ব না করুক — করিলে তোমরা তাহার অভিলাষসমুহের আজ্ঞাবহ হইয়া পড়িবে ।” তিনি আমাদিগকে আরও কহেন, “যে কেহ মল্লযুদ্ধ করে, সে সর্ব্ববিষয়ে ইন্দ্রিয় দমন করে ।” যাহারা খ্রীষ্টীয়ান বলিয়া পরিচয় দেয়, তিনি তাহাদের সকলকে বলেন — “তোমরা আপন আপন দেহকে জীবিত, পবিত্র, ঈশ্বরের প্রীতিজনক বলিরুপে উৎসর্গ কর ।” তিনি আর বলেন — “আমার নিজ দেহকে প্রহার করিয়া দাসত্বে রাখিতেছি, পাছে অন্য লোকদের কাছে প্রচার করিবার পর আমি আপনি কোন ক্রমে অগ্রাহ্য হইয়া পড়ি ।” CCh 367.2
নিজের কামাভিলাষ পূরনার্থে স্ত্রীকে যন্ত্ররূপে ব্যবহার করা বিশুদ্ধ প্রেমের কার্য্য নহে । পাশবিক কামেন্দ্রিয়গুলিই কামাভিলাষ চরিতার্থের জন্য চিৎকার করে । প্রেরিত পৌল যেরূপ বর্ণনা দান করিয়াছেন, অতি অল্প পুরুষেই সেইরূপ প্রেম দেখাই থাকে । তিনিও বলেন — ” যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীকে প্রেম করিলেন, আর তাহার নিমিত্ত আপনাকে প্রদান করিলেন, যেন তাহাকে শুচি করিয়া পবিত্র করেন, যেন তাহার কলঙ্ক বা সঙ্কোচ... না থাকে ।” বৈবাহিক সম্বন্ধে এইরূপ প্রেমকেই ঈশ্বর পবিত্র প্রেম বলিয়া স্বীকার করেন । প্রেম একটি বিশুদ্ধ ও পবিত্র মূলনীতি, কিন্তু কামলিপ্সা অসঙ্গত, এবং অবিবেকের দ্বারা চালিত হইতে অসঙ্গত । ইহার প্রভাবের বিষয় সে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ; ইহার ফলাফলের বিষয় সে বিচার করিয়া দেখে না । CCh 367.3