Go to full page →

আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলিতে নৈতিক সাহায্য CCh 503

সন্তানসন্ততিগণের মন পরিবর্ত্তনের জন্য পিতাদের ও মাতাদের কর্ত্তব্য শিক্ষকের সহিত সহমিলিত হইয়া ব্যগ্রতা সহকারে পরিশ্রম করা। সন্তানসন্ততিগণকে প্রভুর শিক্ষায় ও উপদেশে মানুষ করিবার ও গৃহে আধ্যাত্মিক অনুরাগ সতেজ ও প্রীতিকর রাখিবার নিমিত্ত মাতাপিতার অশেষ উদ্যম প্রদর্শন করা কর্ত্তব্য। যেহেতু এতদ্দ্বারা তাঁহারা তাঁহাদের সন্তানগণের শিক্ষার সময়টা আনন্দের ও লাভের সময় করিয়া তুলিতে পারিবেন, আর তাঁহাদের সন্তানগণের পরিত্রাণের চেষ্টায় এই যে পদ্ধতির অনুসরণ করা হইবে, তাহাতে তাঁহাদের নিজেদেরও বিশ্বাস বৃদ্ধি পাইবে। 126T 199; CCh 503.2

কোন কোন ছাত্রছাত্রী স্কুলের সম্বন্ধে নানা বচসা ও অভিযোগ করিয় গৃহে প্রত্যাবর্ত্তন করে, আর মাতাপিতাগণ ও মণ্ডলীর সভ্যগণ তাহাদের অতিরঞ্জিত এক তরফা বর্ণনায় মনোযোগ সহকারে কর্ণপাত করিয়া থাকেন। কাহিনীটীর দুইটীদিক্ আছে, ইহা বিবেচনা করিয়া বিচার করিলে ভাল হইত, কিন্তু তাঁহারা তাহা না করিয়া এই অকল বিকৃত বর্ণনায় সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিয়া কলেজের ও তাহাদের মধ্যে বিচ্ছেদের এক ভিত্তি নির্ম্মান করেন। পড়ে কি ভাবে কলেজটী পরিচালিত হইতেছে হইতেছে তদ্বষয়ে নানা সমালোচনা ও তর্কবিতর্ক করিয়া কলেজ সম্বন্ধে ভয় ও সন্দেহের বাক্য সমূহ প্রকাশ করিতে আরম্ভ করেন। কিন্তু এইরূপ প্রভাব বড়ই ভয়াবহ। অসন্তোষ-বাক্য সমূহ সংক্রামক রোগের ন্যায় বিস্তার লভ করে, এমং ইহাতে লোকের মনে উপরে যে ছাপ অঙ্কিত হয়, তাহা মুছিয়া ফেলা দুষ্কর। প্রত্যেক পুনরুক্তির সঙ্গে সঙ্গে কাহিনীটীর অবয়ব বৃদ্ধি পায়, এইরূপে তিল তাল হইয়া মস্ত বড় এক সমস্যা হইয়া দাঁড়ায় ; কিন্তু যখন অনুসন্ধান করিয়া দেখা যায়, তখন প্রমাণিত হয় যে, শিক্ষকগণের কিংবা অধ্যাপকগণের এই বিষয়ে কোনই দোষ ছিল না। স্কুলটী যেন নীতিভ্রষ্ট হইয়া না যায়, তজজন্য স্কুলের যে সকল নিয়ম কানুন পালন করা অবশ্য কর্ত্তব্য, তাঁহারা কেবল কর্ত্তব্যের অনুরোধে সেই সকল নিয়ম পালন করিতে বাধ্য করিয়াছেন। CCh 503.3

বিভিন্ন মনের ও বিভিন্ন শ্রেণীর শত শত ছাত্রছাত্রিকে শিক্ষা দেওয়া ও সুশাসনে রাখা যথার্থই যে কত কস্তকর, মাতাপিতাগণ একবার যদি নিজেদিগকে শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীর স্থানে দাড় করাইয়া তাহা দেখিতেন, তাহা হইলে বিষয়গুলি তাঁহাদের নিকটে অন্যরূপ মনে হইত। তাহাদের বিবেচনা করিয়া দেখা কর্ত্তব্য যে, কোন কোন সন্তানসন্ততি আছে, যাহারা গৃহেও কখনও মাতাপিতার আজ্ঞাধীনে চলে নাই। এই যে সকল বালক বালিকারা উপযুক্ত যত্ন লইতে অবিশ্বস্ত মাতাপিতাগণ এত ভীষণ অবহেলা করিয়াছেন, তাহাদের সম্বন্ধে কিছুই করা না হইলে, যীশু ইহাদিগকে কখনও গ্রাহ্য করিবেন না ; এবং কোন এক শক্তি দ্বারা বশীকৃত না হইলে, এই জীবনে তাহারা অকেজো হইয়া পরিবে ও পর জীবনে তাহাদের কোন অংশ বা অধিকার থাকিবে না। 134T 428, 429; CCh 504.1

বিশ্বস্ত শিক্ষকের চেষ্টায় সম্মতি দান না করিয়া বহু মাতা-পিতা ভুল করিয়া থাকেন। যুবকযুবতি ও বালকবালিকাগণের ধারণা অসম্পূর্ণ ও বিচার শক্তি অনুন্নত বলিয়া তাহারা কোন কোন সময়ে শিক্ষক শিক্ষয়িত্রিরগণের পরিকল্পনা ও শিক্ষা পদ্ধতির বিষয় বুঝিতে পারে না। তথাপি স্কুলে যাহা বলা কিংবা করা হয়, তাহার সংবাদ যখন তাহারা গৃহে আনিয়া দেয়, তখন মাতাপিতাগণ পরিবারের বেষ্টনীর মধ্যে সেই সকল বিষয়ের অবতারনা করিয়া শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীর আচরণ সম্বন্ধে নিঃসঙ্কোচে সমালোচনা করিতে থাকেন। এইরূপে তাহারা যে পাঠ শিক্ষা করে, তাহা সহজে ভুলিবার নহে। যখন তাহাদিগকে অনভ্যস্ত পরাধীনতার বশীভূত করা হয়, কিংবা যখন তাহাদিগকে কঠোর অধ্যয়নে রত থাকিতে বলা হয়, তখন তাহারা তাহাদের অবিবেচক মাতাপিতাগণের সহানুভূতির প্রশ্রয় প্রার্থী হয়। এইরূপে স্কুলের মধ্যে অশান্তি ও বিবাদের সৃষ্টি হইয়া স্কুলটী নীতিভ্রষ্টতার প্রভাবে পড়িয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শিক্ষকশিক্ষয়িত্রীর বোঝাও বহুল পরিমাণে ভারী হইয়া পড়ে। কিন্তু মাতাপিতার কুপরিচালনায়ই সর্ব্বাপেক্ষা অধিক ক্ষতি হইয়া থাকে। ঠিক্ভাবে শিক্ষা দিলে চরিত্রের যে দোষক্রুটীগুলি সংশোধিত হইয়া যাইত, ক্রটীশীল লোকদিগের কার্য্যোপযোগিতা বিকৃত এবং হয়তো একেবারে বিনষ্ট করিয়া সেগুলি বহুবৎসর পর্য্যন্ত ক্রমাগত বাড়িতেই থাকে। 15FE 64, 65; CCh 505.1