Go to full page →

যাদুবিদ্যা ও কুসংস্কার CCh 641

যাদুবিদ্যার পুস্তক সমূহ ভস্মীভূত করিয়া ইফিষের খ্রীষ্টীয়ানগণ দেখাইয়াছিলেন যে, যে সকল বিষয়ে তাঁহারা পূর্ব্বে আনন্দ বোধ করিতেন, এক্ষণে তাঁহারা তাহা ঘৃনা করেন। কুহকের দ্বারা তাঁহারা বিশেষ ভাবে ঈশ্বরকে কুপিত করিয়াছিলেন এবং তাঁহাদের আত্মা বিপন্ন করিয়াছিলেন; আর এই কুহকের বিরুদ্ধেই তাঁহারা তাঁহাদের রোষ প্রদর্শন করিয়াছিলেন। এইরূপে তাঁহারা তাঁহাদের প্রকৃত পরিবত্তন সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিয়াছিলেন। CCh 641.3

নিঃসন্দিগ্ধ চিত্তে অনুমান করা হয় যে, বিংশ শতাব্দীর সভ্যতার সম্মুখে কুসংস্কার লুপ্ত হইয়া গিয়াছে। কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য এবং সত্যতার কঠোর সাক্ষ্য সুস্পষ্টরুপে ঘোষণা করিতেছে যে, প্রাচীন কালে ঐন্দ্রজালিকাগণ যে ভাবে যাদুবিদ্যা ব্যবহার করিত, এখনও ঠিক্ সেই ভাবে উহা ব্যবহৃত হইতেছে। এক্ষণে যাহা আধুনিক প্রেতবাদ বলিয়া বিদিত, প্রাচীন কালের যাদুবিদ্যা বাস্তবিক পক্ষে ছিল তাহাই। মৃত বন্ধুবান্ধবগণের ছদ্মবেশে নিজেকে উপস্থিত করিয়া শয়তান সহস্র লোকের মনের মধ্যে প্রবেশ করিতেছে। শাস্ত্র বলে—“মৃতেরা কিছুই জানে না।” উপদেশক ৯ : ৫। তাহাদের চিন্তা, তাহাদের প্রেম, তাহাদের হিংসা বিনষ্ট হইয়া গিয়াছে। মৃতেরা জীবিতদিগের সহিত কথাবার্ত্তা বলে না। কিন্তু আদিম ধূর্ত্ততা অনুযায়ী, মন বশীকরণের নিমিত্ত শয়তান ঐ কৌশল অবলম্বন করে। CCh 642.1

প্রেতবাদের মাধ্যমে বহু রুগ্ন, শোকার্ত্ত ও কৌতূহলাক্রান্ত লোক মন্দ আত্মার সহিত যোগাযোগ রক্ষা করিতেছে বা কথাবার্ত্তা বলিতেছে। যাহারা এইরূপ করিতে দুঃসাহস করে, তাহারা সকলেই ভীষণ বিপদের মধ্যে আছে। ঈশ্বর তাহাদিগকে কিরূপ চক্ষে দেখেন, সত্যের বাক্যে তাহা সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত আছে। বিজাতীয় গুণী বা মন্ত্রবেত্তার নিকট হইতে পরামর্শ গ্রহন করিবার জন্য কোন এক রাজা যখন লোক পাঠাইয়াছিলেন, তখন ঈশ্বর তাঁহার উপরে এই কঠোর দণ্ডাজ্ঞা ঘোষণা করিয়াছিলেন :-- “ইস্রায়েলের মধ্যে কি ঈশ্বর নাই যে, তোমরা ইক্রোণের দেবতা বালসবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করিতে যাইতেছ? অতএব সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি যে খাটে উঠিয়া শুইয়াছ, তাহা হইতে আর নামিবে না, মরিবেই মরিবে।” ২ রাজা ১ : ৩, ৪। CCh 642.2

পৌত্তলিক যুগের যাদুকরগণ ছিল, বর্ত্তমানযুগের প্রেতাত্মবাদী, অতীন্দ্রয় বিষয় দর্শক, এবং দৈবজ্ঞদিগেরই অনরূপ। ঐনদোরে ও ইফিষে যে দুর্ব্বোধ্য রব কথা বলিয়াছিল, তাহা এখনও মিথ্যা বাক্য দ্বারা মানব সন্তানকে বিপথে লইয়া যাইতেছে। আমাদের চক্ষু হইতে পর্দ্দা খুলিয়া গেলে আমরা দেখিতে পাইব যে প্রতারণা ও বিনষ্ট করণার্থে, মন্দ দূতগণ তাহাদের সর্ব্ব প্রকার কৌশল ব্যাবহার করিতেছে। মানব যেন ঈশ্বরকে ভুলিয়া যায়, তজ্জন্য যে স্থানেই কোন প্রভাব খাটান হয়, সেই স্থানেই শয়তান তাহার মোহিনী শক্তি ব্যবহার করিয়া থাকে। মানবগণ তাহার প্রভাবে পতিত হইবার সঙ্গে সঙ্গেই জানিতে পারে যে, তাহাদের মন প্রতারিত ও আত্মা কলুষিত হইয়া গিয়াছে। ইফিযীয় মন্ডলীকে প্রেরিত পৌল যে চেতনাবানী দান করিয়াছিলেন, অধুনা ঈশ্বরের লোকদেরও তাহাতে মনোনিবেশ করা কর্ত্তব্য। যথা--- “অন্ধকারের ফলহীন কর্ম্ম সকলের সহভাগী হইও না, বরং সেগুলির দোষ দেখাইয়া দেও।” ইফিষীয় ৫ : ১১। 5AA 288-290; CCh 642.3