তাঁহার লোকেরা যেন প্রতিবন্ধকতা ও ক্রোধরূপ ঝটিকার বিপক্ষে দণ্ডায়মান হইবার নিমিত্ত প্রস্তুত হইতে পারে, তজজন্য শেষকালে কি ঘটিবে, ঈশ্বর তাহা পুর্ব্বেই প্রকাশ করিয়াছেন । পুরোবর্ত্তি ঘটনারাজির বিষয় যাহাদিগকে অগ্রেই সতর্ক করিয়া দেওয়া হইয়াছে, ভাবী ঝটিকার আশায় তাহাদের শান্ত হইয়া বসিয়া থাকা, অথবা সঙ্কটকালে সদাপ্রভু স্বীয় বিশ্বস্তগণকে রক্ষা করিবেন এই আশ্বাসে আশ্বস্ত থাকা বিধেয় নহে । যাহারা অলসতা সহকারে আপন প্রভুর অপেক্ষায় থাকে, তাহাদের ন্যায় নহে, কিন্তু অবিচালিত বিশ্বাস সহকারে কার্য্য ততপর দাসের ন্যায় আমাদের তাঁহার অপেক্ষায় থাকিতে হইবে । অনাবশ্যক বিষয়ের দিকে মনোনিবেশের এক্ষণে আর সময় নাই । মানবগণ যতক্ষণ নিদ্রাভিভূত, শয়তান ততক্ষণ বিষয়সমূহ এরূপ তৎপরতা সহকারে বিন্যাস করিতেছে, যেন, সদাপ্রভুর লোকেরা অনুগ্রহ কিংবা ন্যায় বিচার প্রাপ্ত না হইতে পারে । রবিবার আন্দোলন এক্ষণে ইহার পথ অন্ধকারে প্রস্তুত করিতেছে । নায়কগণ প্রকৃত বিচার্য্য বিষয় লুক্কায়িত রাখিতেছেন এবং যাহারা ঐ আন্দোলনে জড়িত, তাহাদের মধ্যে অনেকেই দেখিতে পায় না যে, অন্তঃপ্রবাহটি কোন্ দিকে চলিতেছে । ইহার কর্ম্মাদি শান্ত ও বাহ্যতঃ খ্রীষ্টীয়, কিন্তু যখন ইহা কথা বলিবে, তখন নাগের স্বভাব প্রকাশ করিবে । CCh 649.1
গীতরচক বলেন, “মনুষ্যের ক্রোধ তোমার স্তব করিবে, তুমি ক্রোধের অবশেষ দ্বারা কটিবন্ধন করিবে ।” গীত ৭৬:১০ । পরীক্ষামূলক সত্য অবজ্ঞার বিষয় হইয়া দাঁড়াইলেও ঈশ্বর চাহেন, যেন ইহা সর্ব্ব সমক্ষে আনীত হয় এবং পরীক্ষার ও আলোচনার একটী বিষয় হইয়া দাড়ায় । মানব-মন আলোড়িত হওয়া আবশ্যক । মানব-মন যেন নিদ্রাভিভূত না থাকে, তজজন্য ইহাকে জাগ্রৎ ও কোপাবেগে অনুসন্ধিৎসু করণার্থে প্রত্যেকটী তর্কবিতর্ক, প্রত্যেকটী ভর্ৎসনা ও প্রত্যেকটী কুৎসা হইবে ঈশ্বর-নির্দ্দিষ্ট উপায় । 45T 452, 453; CCh 650.1
মণ্ডলী হিসাবে ঈশ্বর আমাদের হস্তে যে কার্য্য-ভার ন্যস্ত করিয়াছেন, আমরা তাহা সম্পাদন করি নাই । রবিবার আইন প্রবর্ত্তন আমাদিগকে যে অবস্থায় আনয়ন করিবে, আমরা তাহার জন্য প্রস্তুত নহি । আসন্ন বিপদের চিহ্ন দেখিয়া আমাদের কর্ত্তব্য, কার্য্যে তৎপর হওয়া । ভবিষ্যৎবাণীতে উক্ত অমঙ্গলের বিষয় পূর্ব্বেই ব্যক্ত হইয়াছে বলিয়া উহা অবশ্যই ঘটিবে, এবং প্রভু তাঁহার প্রজাবৃন্দকে রক্ষা করিবেন, এই বিশ্বাসে আশ্বস্ত হইয়া কেহ যেন শান্ত মনে বসিয়া না থকে । আমরা যদি নীরবে বসিয়া থাকি, বিবেকের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য কিছুই না করি, তাহা হইলে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করিতেছি না । এ যাবৎ যে কার্য্য অবহেলা করা হইয়াছে, তাহা যে পর্য্যন্ত না আমরা সমাপ্ত করিতে পারি, তাবৎ যেন এই বিষম বিপদ স্থগিত রাখা হয়, তজজন্য ঈশ্বরের নিকট ব্যগ্র ও ইষ্টফল-প্রদ প্রার্থনা উৎসর্গ করিতে হইবে । প্রথমে সর্ব্বাপেক্ষা ব্যাকুল চিত্তে প্রার্থনা করিতে হইবে, পরে প্রার্থনার সহিত কার্য্যও করিতে হইবে । মনে হইতে পারে, যেন শয়তানই বিজয়ী হইয়া গেল, এবং মিথ্যা ও ভ্রান্তির সহিত সত্য জড়ীভূত হইয়া পড়িল । কিন্তু শত্রুর হস্ত হইতে রক্ষা করিবার জন্য ঈশ্বর অতীত কালে স্বীয় প্রজাবৃন্দের সহিত যে সকল ব্যবহার করিয়াছেন, তিনি চাহেন, যেন আমরা সে সকল স্মরণ করি । শয়তানের কার্য্য হইতে রক্ষার যখন আর কোন সম্ভাব্য উপায় না দেখা যায়, তখন স্বীয় শক্তি প্রকাশার্থে ঈশ্বর সর্ব্বদাই নিদারুণ সঙ্কট উপযুক্ত বিবেচনা করিয়াছেন । মানবের ভবিতব্যতা ঈশ্বরের সুযোগ । CCh 650.2
হে আমার ভ্রাতৃগণ, আপনারা কি হৃদয়ে উপলব্ধি করেন যে, আপনাদের নিজেদের পবিত্রাণ যেমন, তেমনি অন্য লোকদিগের নিয়তি, আসন্ন পরীক্ষার জন্য আপনারা যেরূপ ভাবে প্রস্তুত, তাহারই উপরে নির্ভর করে ? আপনাদের বিপক্ষে যখন প্রতিবাদ আনীত হইবে, তখন যেন তাহার সম্মুখে দাঁড়াইতে সমর্থ হন, তজজন্য প্রবল উদ্যোগ, ধর্ম্মপরায়ণতা ও ঈশ্বর ভক্তি কি আপনাদের আছে ? ঈশ্বর যদি কখনও আমা দ্বারা কথা বলিয়া থাকেন, তবে ইহা সুনিশ্চিত যে, সময় আসিবে, যখন আপনারা মন্ত্রণা সভার সম্মুখে নীত হইবেন, এবং আপনারা যে সত্য ধরিয়া রহিয়াছেন, তাহার প্রত্যেকটী বিষয় গুরতর ভাবে সমালোচিত হইবে । আসন্ন সঙ্কটকালের জন্য প্রস্তুত হওনার্থে ঈশ্বর আমাদিগকে যে সময় দিয়াছেন, অনেকে ইহার অপব্যবহার করায় অভিযুক্ত হইবে । 55T 713-717; CCh 651.1