দর্শনে আমি দুইটী সৈন্যদলের মধ্যে এক ভীষণ সংগ্রামে দেখিতে পাইলাম । এক দল এই জগতের চিহ্নিত এক পতাকার অনুসরণ করিতেছিল, অন্য দল রাজকুমার ইস্মানূয়েলের শোণীতরঞ্জিত পতাকার অনুসরণ করিতেছিল । প্রভুর দল হইতে দলে দলে লোকেরা যখন শত্রুপক্ষে যোগদান করিতেছিল, এবং বিপক্ষের সৈন্য শ্রেণী হইতে দলে দলে লোকেরা আসিয়া যখন ঈশ্বরের আজ্ঞাপালনকারী লোকদের সহিত সংযুক্ত হইতেছিল, তখন ঐ পতাকা নামাইয়া লইয়া মাটি দিয়া টানিয়া বেড়ান হইল । পরে আকাশের মধ্যপথে উড্ডীয়মান এক দূত আমার হস্তে ইস্মানূয়েলের পতাকা প্রদান করিলেন । আর তৎক্ষণাৎ এক মহান্ সেনাপতি উচ্চরবে এই কথা ঘোষণা করিলেন, “সৈন্য শ্রেনীর মধ্যে আসিয়া পড় । যাহারা ঈশ্বরের আজ্ঞা ও যীশুর সাক্ষ্য পালন করে, তাহারা এই সময়ে স্ব স্ব স্থানে আসিয়া পড়ুক । তোমরা উহা হইতে বাহির হও, তাহাদের হইতে পৃথক হও, এবং কোন অশুচি বস্তু স্পর্শ করিও না, তাহা হইলে আমি তোমাদিগকে গ্রহণ করিব, আমি তোমাদের পিতা হইব এবং তোমরা আমার পূত্র ও কন্যা হইবে । যাহারা ইচ্ছা করে, তাহারা সদাপ্রভুর সাহায্য করিতে আইসুক, প্রবল পরাক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রভুর সাহায্য করুক ।” CCh 658.3
অধুনা মণ্ডলী সংগ্রাম রত । বর্ত্তমানে আমরা এই জগতে যেন মধ্যরাতের গাঢ় অন্ধকারে বসবাস করিতেছি ; প্রায় সমুদয় লোকই প্রতিমা পূজায় লিপ্ত রহিয়াছে । কিন্তু এমন দিন আসিতেছে, যখন এই যুদ্ধের অবসান হইয়া ধর্ম্মের জয় হইবে । ঈশ্বরের ইচ্ছা স্বর্গে যেমন এই পৃথিবীতেও তেমনি পালিত হইবে । তখন জাতিগণ স্বর্গীয় ব্যবস্থা ব্যতীত অন্য কোন ব্যবস্থা পালন করিবে না । সকলেই প্রশংসা ও ধন্যবাদের বস্ত্র অর্থাৎ খ্রীষ্টের ধার্ম্মিকতা-বস্ত্র পরিধানপূর্ব্বক একত্রে সুখে বসবাস করিবে । সমুদয় প্রকৃতি অতুলনীয় সৌন্দর্য্যে বিভূষিত হইয়া প্রতিনিয়ত ঈশ্বরকে প্রশংসা ও আরাধনার ভক্তি-উপহার অর্পণ করিবে । সমগ্র পৃথিবী স্বর্গীয় আলোকে স্নাত হইবে । সুখেই বৎসরের পর বৎসর অতিবাহিত হইতে থাকিবে । চন্দ্রের আলো সূর্য্যের আলোর সদৃশ হইবে এবং বর্ত্তমান কাল অপেক্ষা তখন সূর্য্যের আলো সাতগুণ অধিক হইবে । উক্ত দৃশ্য অবলোকন করিয়া প্রভাতীয় নক্ষত্রগণ একসঙ্গে সুমধুর গীত গান করিবেন এবং ঈশ্বর ও খ্রীষ্ট যখন “পাপ এবং মৃত্যু আর থাকিবে না” —এই বাক্য ঘোষণা করিবেন, ঈশ্বরের সন্তানগণ তখন আনন্দে উচ্চধ্বনি করিয়া উঠিবে । CCh 659.1
উল্লিখিত দৃশ্য আমাকে দেখান হইল । কিন্তু মণ্ডলীকে অবশ্যই দৃশ্য ও অদৃশ্য শত্রুর সহিত সংগ্রাম করিতে হইবে । মনুষ্যদের মধ্যেই শয়তানের প্রতিনিধি রহিয়াছে । বাহিনীগণের সদাপ্রভুর বিপক্ষে বিরুদ্ধাচরণ করিবার নিমিত্ত মনুষ্য তাহার সহিত সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হইয়াছে । অনুগ্রহ-সিংহাসনের সম্মুখে খ্রীষ্ট যে মধ্যস্ততার কার্য্য করিতেছেন, তাহা পরিত্যাগ করিয়া যে পর্য্যন্ত না তিনি প্রতিশোধ-বস্ত্র পরিধান করিবেন, তাবৎ এইরূপ কার্য্য চলিতে থাকিবে । শয়তানের সপক্ষলোক প্রত্যেক নগরে থাকিয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দল গঠন করিবার জন্য শশব্যস্ত । নামধারী সাধু ও প্রকাশ্য অবিশ্বাসীগণ এই সকল দলে যোগদান করিতেছে । ঈশ্বরের লোকদের এই সময়ে দুর্ব্বল হইলে চলিবে না । আমাদিগকে প্রতিমুহুর্ত্তই জাগ্রৎ থাকিতে হইবে । 28T 41, 42. CCh 659.2