Go to full page →

অর্থ ব্যবস্থা : আত্ম-অস্বীকার MHBen 189

অনেকে আর্থব্যবস্থা বা অর্থনীতিকে তু‪চ্ছ জ্ঞান করে, এতে কৃপণতা এবং সংকীর্ণতায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। কিন্তু অর্থনীতির মধ্যে প্রসার বদান্যতার বিদ্যমান। প্রকৃতপক্ষে, অর্থনীতি ছাড়া, প্রকৃত উদারতা আসতে পারে না। আমাদের সঞ্চয় করতে হবে যেন আমরা দিতে পারি।‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 189.2

আত্ম-অস্বীকার ছাড়া কোন ব্যক্তি প্রকৃত সদাসয়তা অভ্যাস করতে পারে না। কেবলমাত্র অনাড়ম্বর এবং সাদাসিধে জীবন, আত্মঅস্বীকার, এবং দৃঢ়-অর্থনীতি দ্বারা, খ্রীষ্টের প্রতিনিধিরূপে আমরা নির্দ্ধারিত কাজ সম্পন্ন করতে পারি। আমাদের মধ্য হতে গর্ব এবং জাগতিক উ‪চ্চ আশা দূর করতে হবে। আমাদের সমুদয় কাজে কর্মে, খ্রীষ্টের জীবনে প্রকাশিত, নিঃস্বার্থপরতার নীতি বজায় রাখতে হবে। আমাদের গৃহের দেয়ালে বা বেড়ায়, ছবিতে এবং সাজ-সজ্জায়, আমরা এইরূপ পাঠ করিব, “তাড়িত দুঃখীদিগকে গৃহে আশ্রয় দেওয়া।”(যিশাইয় ৫৮:৭)। আমাদের ডুলি, আলমারির গায়ে আমরা এরূপ কথা লিখে রাখব যেন তা ঈশ্বরের অঙ্গুলি দ্বারাই লিখিতÑ “উলঙ্গকে বস্ত্র দেওয়া।” খাবার ঘরে, সাজানো প্রচুর খাদ্যদ্রব্যের পার্শ্বে আমরা এরূপ লেখা দেখাবার আশা করব, “ক্ষুধিত লোককে আহার বণ্টন করা কি নয়?” (যিশাইয় ৫৮:৭)। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 190.1

আমাদের সম্মুখে উপকারীতার সহস্র দরজা খোলা আছে। আমরা প্রায়ই টায়-টোয় খাবার দেখে বিলাপ করি। কিন্তু যদি খ্রীষ্টানেরা সম্পূর্ণরূপে ঐকান্তিকতা বজায় রাখত, তাহলে তারা ঐ উৎসকে হাজারগুণে বৃদ্ধি করতে পারত। স্বার্থপরতা, ভোগপরাণতা, যা আমাদের উপকারীতার পথ রুদ্ধ করে। MHBen 190.2

যে সব বস্তু প্রতিমা তুল্য, সেগুলোর জন্য কতই না খরচ করা হয়, যেমন যেগুলো সময়, চিন্তা, এবং শক্তি নষ্ট করে, যেগুলোকে আমাদের উ‪চ্চপর্যায়ে ব্যবহারে প্রয়োগ করতে হবে! নামি-দামী ঘরবাড়ী এবং আসবাবপত্রে, স্বার্থপর আমোদপ্রমোদ, বিলাসিতা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্য, ক্ষতিকারক চরিতার্থ করায় কত অধিক অর্থই না অপচয় করা হয়! উপহার বিনিময়ে কতই না অপব্যয় করা হয়, যা কারো কোন উপকারেই আসে না! নিষ্প্রয়োজনীয় বিষয়, যা প্রায়ই ক্ষতিকর, সে সবের পেছনে অদ্য নামধারী খ্রীষ্টানরা অধিক অর্থ, অনেক সময় ব্যয় করে, যা তারা প্রলোভনকারী হাত হতে আত্মাদের রক্ষা করার কাজে ব্যবহার করতে পারে। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 190.3

অনেক নামধারী খ্রীষ্টানরা পোশাক-আশাকে অত্যধিক অর্থ খরচ করে, পরে দেখা যায় যে, অন্যের জন্য কিছু খরচ করবার আর কিছুই থাকে না। বহুদামী অলংকার, ব্যয়বহুল, পোশাক-আশাক, থাকা উচিত বলে তারা মনে করে, কিন্তু বহু কষ্টেও যারা সাদাসিধে কাপড়-চোপড়ও জোগার করতে পারে না, তাদের ব্যাপারে চিন্তানা করে। MHBen 190.4

আমার ভগ্নিগণ, যদি আপনারা বাইবেলে প্রদত্ত নিয়মাবলির অনুরূপ পোশাক-পরি‪ছদ ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন, অতিশয় দরিদ্র ভগ্নিদের কিছু দেবার জন্যও আপনাদের কিছু আছে। আপনাদের কেবল অর্থই নয়, কিন্তু সময়ও রয়েছে। এটা প্রায়ই অত্যাবশ্যক। অনেকে রয়েছে যাদের আপনি পরামর্শ এবং কলা-কে․শল এবং দক্ষতা দিয়ে সাহায্য করতে সক্ষম হবেন। তাদের দেখিয়ে দিন কিভাবে সাদাসিধে অথচ রুচিসম্মত ভাবে পোশাক পরিধান করতে হয়। অনেক স্ত্রীলোক ঈশ্বরের গৃহ থেকে দূরে থাকেন, যেহেতু বেমানান পোশাক, যা অন্যদের আকর্ষণীয় পোশাকের সঙ্গে খাপ খা‪চ্ছে না। অনেক সচেতন আত্মা একটি তিক্ত মানহানিকর, এবং অন্যায় বিচার অনুভব করেন এই বৈপরিত্ব হেতু। আর একারণ অনেকের মধ্যে ধর্মের বাস্তবতা সম্পর্কে সন্দেহ দানা বাঁধে এবং সুসমাচারের বিরুদ্ধে তাদের হৃদয় কঠিন করে। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 191.1

খ্রীষ্ট আমাদের বলেন, “তোমরা অবশিষ্ট গুড়াগাড়া সংগ্রহ কর যেন কিছুই অপচয় না হয়।” যখন সহস্র সহস্র লোক প্রতিদিন দুর্ভিক্ষ, রক্তপাত, অগ্নিকান্ড, এবং মহামারী দ্বারা বিনষ্ট হ‪চ্ছে, তখন প্রত্যেককে দেখতে হবে যেন কিছুরই অপচয় না হয়, নিষ্প্রয়োজনে কিছুই ব্যয় না করা হয়, যদ্বারা সে একজন মানব সন্তানকে একটু উপকার হয়ত করতে পারত। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 191.2

আমাদের সময় নষ্ট করা অন্যায়, আমাদের চিন্তারাশিও নষ্ট করা অন্যায়। আমাদের আত্ম-স্বার্থোন্বেষণে ব্যয় করা প্রতিটি মুহূর্তেই আমরা হারাই। যদি প্রতিটা মুহূর্তের যথার্থ মুল্য প্রদান করা হত, যথার্থরূপে কাজে লাগানো যেত, তাহলে আমাদের নিজেদের এবং জগতের সবকিছু করার জন্য আমাদের সময় হত। অর্থ, সময়, শক্তি ব্যয়ে এবং সুযোগ ব্যবহারে, আইসুন আমরা প্রত্যেক খ্রীষ্টান ঈশ্বরের পরিচালনার অপেক্ষায় থাকি। “যদি তোমাদের কাহারও জ্ঞানের অভাব হয়, তবে সে ঈশ্বরের কাছে যা‪ঞা করুক; তিনি সকলকে অকাতরে দিয়া থাকেন, তিরস্কার করেন না, তাহাকে দত্ত হইবে। (যাকোব ১:৫)। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 191.3

“দেও, তাতে তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে।” MHBen 192.1

“তাহাদের ভাল করিও, এবং কখনও নিরাশ না হইয়া ধার দিও, তাহা করিলে তোমাদের মহা পুরস্কার হইবে, এবং তোমরা পরাৎপরের সন্তান হইবে, কেননা তিনি অকৃতজ্ঞদের ও দুষ্টদের প্রতিও কৃপাবান্।”(লূক ৬:৩৫)। MHBen 192.2

“যে চক্ষু মুদে, সে অনেক অভিশাপ পাইবে;” কিন্তু “যে দরিদ্রকে দান করে, তাহার অভাব হইবে না,” হিতোপদেশ ২৮:২৭)। MHBen 192.3

“দেও, তাহাতে তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে; লোকে বিলক্ষণ পরিমাণে চাপিয়া ঝাঁকরিয়া উপচিয়া তোমাদের কোলে দিবে।”(লূক ৬:৩৮)। MHBen 192.4

*****