Go to full page →

সুসমাচারের প্রয়োজনীয়তা MHBen 119

যীশু যখন তাঁর শিষ্যদের সুসমাচারের বাক্য নিয়ে পাঠালেন, তার বহু আগেই পৃথিবী থেকে ঈশ্বরের ও তাঁর বাক্যের ওপর থেকে বিশ্বাস বিদায় নিয়েছিল। যিহূদীদের মধ্যে যাদের প্রভু ও তাঁর বাক্য বিষয়ক জ্ঞান আছে বলে প্রকাশ্যে স্বীকার করতো তাদেরকে কুসংস্কার ও মানবিক কল্পনা প্রসূত দূরে সরিয়ে রাখা হত। স্বার্থপর উ‪চাভিলাষ, অন্যের বাহ্বা বা প্রশংসা লাভের অনুরাগ, লাভের লালসা মানুষের চিন্তা ধারাকে গ্রাস করে ফেলল। যেমন ঈশ্বরের ওপর থেকে ভক্তি শ্রদ্ধা বিদায় নিল, তদ্রূপ মানুষের প্রতিও দয়া মায়া শেষ হয়ে গেল। স্বার্থপরতাই আধিপত্য বিস্তারকারী মূল নীতিতে পরিণত হলো। আর শয়তান মানবকুলকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এবং দুঃখ-দুর্দশা ও ক্লেশের মাধ্যমে তাদের ওপরে তার ই‪ছা প্রয়োগ করতে লাগল। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 119.1

শয়তানের প্রতিনিধিরা মানুষের ওপর দখল বিস্তার করল। ঈশ্বরের বাসস্থানরূপে নির্মিত মানব দেহ, ভূতদের আবাসে পরিণত হলো। মানুষের ইন্দ্রিয়, স্নায়ু ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নীচ জঘন্যতম অভিলাষের সাধ পূরণের উদ্দেশে মন্দ আত্মার প্রতিনিধিরা ব্যবহার করতে লাগল। ভূতদের আসল চেহারা মানুষের ওপরে মুদ্রাঙ্কিত করা হল। মানুষের চেহারায় শয়তানের বাহিনীর অভিব্যক্তি প্রতিফলিত হ‪চ্ছিল কেননা শয়তানই তাদেরকে দখলে রেখেছিল। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 120.1

বর্তমান পৃথিবীর অবস্থা কি প্রকার? যেমন যীশুর সময়ে ছিল পুরুষানুক্রমিক ধর্মীয় কুসংস্কার ও পান্ডিত্য, তেমনই আজ অমূলক অনুমান ও অত্যাধিক সমালোচনা কি বাইবেলের ওপরে বিশ্বাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধ্বংস করে দেয়নি? তৎকালে যেমন মানুষের অন্তর লোভলালসা, উ‪চাকা‫ক্ষা ও বিলাসপ্রিয়তায় দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরেছিল আজও কি তেমনই আক্রান্ত করেনি? স্বীকৃত যীশু পৃথিবীতে, এমনকি তাঁর অনুসারী কতই না কম সংখ্যক লোক যীশু আদর্শ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ব্যবসাবাণিজ্যে, সামাজিক, পারিবারিক এমনকি ধর্মীয় গন্ডির মধ্যেও কত কম সংখ্যকই না দৈনন্দিন জীবনে যীশুর শিক্ষাকে তাদের অনুশাসনে পরিণত করে। এটা কি সত্য নয় যে, “আর বিচার পশ্চাতে লুটিয়া পড়িয়াছে, এবং ধার্মিকতা দূরে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে... সত্য হারাইয়া গিয়াছে, দুষ্কর্মত্যাগী লোক লুটিত হইতেছে।”(যিশা ৫৯:১৪, ১৫)।‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 120.2

আমরা “অপরাধের এক মহামারীর”মধ্যে বসবাস করছি, যে দুর্ভাবনায় ঈশ্বর ভয়শীল ব্যক্তিরা সব জায়গায় আতঙ্কের মাঝে বাস করছে। বিরাজমান পাপ ও কলুষতা এমন প্রবল যা কোন মানবিক জ্ঞানে বর্ণনা করা অসাধ্য। প্রতিদিন রাজ‣নতিক বিবাদ, প্রতিহিংসা, ঘুষ ও প্রতারণার তাজা তাজা সংবাদ খবরে প্রকাশ পায়। অনন্তর পীড়াদায়ক হিংস্রতা ও অরাজকতার বর্ণনা, মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় উদাসীনতা, পাশবিকতা, নিষ্ঠুর-নৃশংস মানুষ ধ্বংসের কাহিনীতে প্রতিদিনের খবর পরিপূর্ণ। কান্ডজ্ঞানহীনতা, খুন, ও আত্মহত্যা বৃদ্ধি নিত্যদিনের সাক্ষী। মনকে বিকৃত করে অন্য দিকে পরিচলিত করতে, এবং কলঙ্কিত করে দেহকে ধ্বংস করতে শয়তানের বন্ধুরা মানুষের মাঝে বর্দ্ধিতহারে কাজে লিপ্ত রয়েছে এ বিষয়ে কি কোন সন্দেহ আছে? MHBen 120.3

আর পৃথিবী যখন এধরনের মন্দতায় পরিপূর্ণ এবং অধিকাংশ সময় সুসংবাদ একঘেঁয়ে নিরস অবস্থায় মানুষের মাঝে উপস্থাপন করলে তাতে তাদের বিবেকের ওপরে আদৌ কোন প্রভাব ফেলে না। প্রত্যেক জায়গায় আত্মারা কাঁদছে এমন কিছু পেতে, যা তাদের নেই। তারা এমন এক শক্তি আকা‫ক্ষা করছে যে শক্তি পাপের ওপরে কর্তৃত্ব করতে ক্ষমতা যোগাবে, এমন এক শক্তি যা মন্দতার বন্ধন থেকে তাদেরকে মুক্ত করে দেবে, এমন এক শক্তি যা তাদের স্বাস্থ্য সুখও প্রাণশক্তি দান করবে। অনেকে যারা ঈশ্বরের বাক্যের ক্ষমতার সাথে পরিচিত ছিল কিন্তু দীর্ঘ দিন এমন জায়গায় বসবাস করছে যেখানে লোকদের মাঝে ঈশ্বর সম্পর্কে কোন ধারণা নেই, আর এখন সেখানে তারা ঈশ্বরের উপস্থিতি কামনা করে। MHBen 121.1

বিংশ শতাব্দী পূর্বের পৃথিবীতে যীশুর প্রকাশপ্রাপ্তি আজও তা প্রয়োজন। সংস্কার সাধনের এবং মহান কাজের প্রয়োজন, আর কেবল যীশুর আশীর্বাদের মাধ্যমে দৈহিক, মানসিক ও আত্মীক সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব। MHBen 121.2