Go to full page →

১ - প্রকৃত শিক্ষার উৎস ও লক্ষ্য EdBen 11

“সদাপ্রভুর ভয় জ্ঞানের অরি।”
“বিনয় করি, ঈশ্বরের সহিত পরিচিত হও।”

শিক্ষা সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুবই কম এবং লক্ষ্য খুবই অনুন্নত। এর প্রসার পরিধি এবং উচ্চতর লক্ষ্য স্থাপন করা আবশ্যক। প্রকৃত শিক্ষার অর্থ, সুনির্দিষ্ট একটি পাঠ্যক্রম অনুসরণ করার চেয়ে বেশি কিছু। জীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা অপেক্ষাও শিক্ষার তাৎপর্য অনেক বেশি। এটি সমস্ত সত্ত্বা এবং মানুষের আজীবন কালের একটি আলােচনার বিষয়। এর অর্থ শারীরিক, মানসিক, ও আধ্যাত্মিক শক্তির সমন্বয়পূর্ণ বিকাশ লাভ। শিক্ষা একজন ছাত্রকে ইহ-জগতের সেবার আনন্দ এবং পর-জগতের ব্যাপক সেবা কাজের পরমানন্দ উপভােগের জন্য প্রস্তুত করে । EdBen 11.1

এ ধরনের একটি শিক্ষার উৎসকে পবিত্র বাইবেলের আলােকে দেখানাে হয়েছে, যা অসীমকে নির্দেশ করে “ইহার মধ্যে জ্ঞানের ও বিদ্যার সমস্ত নিধি গুপ্ত রহিয়াছে।” কলসীয় ২:৩। “তাঁহারই নিকটে প্রজ্ঞা ও পরাক্রম আছে।” ইয়ােব ১২:১৩। EdBen 11.2

পৃথিবীর প্রতিভাসম্পন্ন শিক্ষক, উন্নততর বুদ্ধিজীবি গবেষকদের বাচন-ভঙ্গি লােকদের চিন্তাধারাকে উদ্দীপিত করেছে এবং জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রকে প্রসারিত করেছে; এবং এসব লােক তাদের বংশধরদের পথপ্রদর্শক এবং উপকারক হিসেবে শ্রদ্ধা করেছেন; কিন্তু এমন এক ব্যক্তি আছেন, যার স্থান সবার উপরে। আমরা অতীত বিশ্বের মানব ইতিহাসের শিক্ষাগুরুদের পদানুসরণ করতে পারি; কিন্তু জ্যোতি তাদের সামনেই ছিলেন। চাঁদ এবং তারা যেমন সূর্যের রশ্মিকে প্রতিবিম্বিত করে, তেমনিভাবে বিশ্বের মহান চিন্তাবিদগণ ধার্মিকতার সূর্যের কিরণ প্রতিফলিত করেন। প্রতিটি চিন্তার আলােক-রশ্মি, জ্ঞানের প্রতিটি ঝলক, জগতের জ্যোতির কাছ থেকে আসে। EdBen 11.3

এই যুগে “উচ্চ শিক্ষার” প্রকৃতি এবং গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক কিছুই বলা হয়ে থাকে। প্রকৃত “উচ্চ শিক্ষা” তিনিই দান করেন যার “নিকটে প্রজ্ঞা ও পরাক্রম আছে” (ইয়ােব ১২:১৩), যার “মুখ হইতে অজ্ঞান ও বুদ্ধি নির্গত হয়।” হিতােপদেশ ২:৬। EdBen 12.1

ঈশ্বরের জ্ঞানই সমস্ত প্রকৃত জ্ঞান এবং বাস্তব ক্রমবিকাশের উৎস। দৈহিক, কি মানসিক, অথবা আধ্যাত্মিক জ্ঞানের যে দিকেই ফিরি না কেন, এবং যে দিকেই তাকাই না কেন, এক পাপের ক্ষয়রােগ ব্যতিরেকে, সব কিছুতেই এই জ্ঞান প্রকাশিত। অকপট উদ্দেশ্য নিয়ে সত্যের কাছে। উপনীত হবার জন্য আমরা যে কোন প্রকার অনুসন্ধান চালাই না কেন, আমরা অদৃশ্য প্রবল ক্ষমতাবান বুদ্ধিমত্তার সংস্পর্শে উপস্থিত হই যা সবার মধ্যে এবং সবার মাধ্যমে কাজ করছে। মানুষের মন ঈশ্বরের মনের সঙ্গে এবং সসীম মানব অসীমের সঙ্গে যুক্ত হয়। দেহ-মন-আত্মার উপরে এই যােগাযােগের ফল অপরিসীম। EdBen 12.2

এই যােগাযােগের মধ্যেই আমরা সর্বোচ্চ স্তরের শিক্ষা আবিষ্কার করতে পারি। এটি ঈশ্বরের নিজস্ব ক্রমবিকাশের পদ্ধতি। “ঈশ্বরের সহিত পরিচিত হও” (ইয়ােব ২২:২১), এটি মানবজাতির কাছে তাঁর বার্তা। এই শব্দের মধ্যে যে পদ্ধতি চিত্রিত হয়েছে, তা আমাদের বংশের পিতৃগণের শিক্ষাদানের সময় অনুসরণ করা হয়েছিল। যখন নিস্পাপ আদম পবিত্র এদনে বাস করতেন, তখন ঈশ্বরই তাকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। EdBen 12.3

শিক্ষাদান কাজে কি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল, তা বুঝতে হলে আমাদের মানুষের প্রকৃতি এবং তাকে সৃষ্টি করায় ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কি তা বিবেচনা করতে হবে। মন্দ বিষয়ের জ্ঞান এবং মানব জাতিকে শিক্ষাদানে ঈশ্বরের গৌরবময় উদ্দেশ্য পূর্ণ কল্পে ঈশ্বরের পরিকল্পনার মাধ্যমে মানব অবস্থার পরিবর্তনও আমাদের বিবেচনা করতে হবে। EdBen 12.4

আদম যখন তার স্রষ্টার হাত হতে এসেছিলেন, তখন তিনি তার শারীরিক, মানসিক, এবং আধ্যাত্মিক প্রকৃতির মধ্যে তাঁর স্রষ্টার প্রতিমূর্তি বহন করে এনেছিলেন। “ঈশ্বর মনুষ্যকে তাঁর প্রতিমূর্তিতেই নির্মাণ করেছিলেন” (আদিপুস্তক ১:১৭); এবং তার উদ্দেশ্য ছিল যে, মানুষ যত দিন জীবিত থাকবে, যেন সে তত পূর্ণরূপে এই প্রতিমূতি প্রকাশ করে: আরাে পূর্ণরূপে সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রতিবিম্বিত করে। এতে তার সকল কর্মক্ষমতা বাড়বে; তাদের সামর্থ এবং প্রাণশক্তি অবিরতভাবে বাড়বে। অনুশীলনের জন্য তাদের অপরিসীম সুযােগ প্রদান করা হয়েছিল, গবেষণার জন্য বিশাল সুযােগ তাদের সামনে ছিল। দৃশ্যমান বিশ্বের নিগূঢ় রহস্য“পরম জ্ঞানীর আশ্চর্য ক্রিয়া সকল” (ইয়ােব ৩৭:১৬) মানুষের অধ্যয়নের আহ্বান জানায়। স্রষ্টার সঙ্গে সামনা-সামনি এবং অন্তরঙ্গভাবে সকল যােগাযােগের সুযােগ তাদের ছিল। যদি তিনি তার স্রষ্টার আনুগত্য স্বীকার করতেন, তাহলে এ সব চিরকালের জন্য তারই অধিকারে থাকত। অনন্তকাল ব্যাপি তিনি জ্ঞানের নতুন নতুন ভাণ্ডার লাভ করতে পারতেন, সুখের জীবন্ত ফোয়ারা আবিষ্কার করতে পারতেন এবং জ্ঞান, শক্তি, এবং ঈশ্বরের প্রেমের নিখুঁৎ এবং নির্মল ধারণা লাভ করতে পারতেন। আরও সম্পূর্ণরূপে তাঁর সৃষ্টির উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে, আরাে পূর্ণরূপে সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রতিবিম্বিত করতে পারতেন। EdBen 12.5

কিন্তু অবাধ্যতার কারণে তিনি এই সুযােগ খােয়ালেন। পাপের মাধ্যমে ঐশ্বরিক মূর্তি বিকৃত হয়ে গেল, এবং ঈশ্বরের কাছে থাকার সুযোেগ হারালেন। মানুষের দৈহিক শক্তি নিস্তেজ হল, মানসিক শক্তি অপেক্ষাকৃত হীনতর হল, তার আধ্যাত্মিক দর্শন নিষ্প্রভ হল। তিনি মৃত্যুর অধীন হয়ে পড়লেন। তথাপি মানব জাতিকে অসহায় ফেলে রাখা হয় নি। অসীম প্রেম এবং অনুগ্রহে পরিত্রাণ পরিকল্পনা স্থাপন করা হল, এবং একটি পরীক্ষাকাল নির্ধারণ করা হল। মানুষের মধ্যে তার নির্মাতার প্রতিমূর্তি, যে পবিত্রতায় তাকে সৃষ্টি করা হয়েছিল তা পুনরুদ্ধার, তার দেহ, মন ও আত্মার বিকাশ সাধন করতে হবে, যেন তাঁর সৃষ্টির প্রকৃতি বাস্তবায়িত হতে পারে—এটি হবে মুক্তির কাজ। এটিই শিক্ষার উদ্দেশ্য, জীবনের প্রধান লক্ষ্য EdBen 13.1

সৃষ্টি এবং মুক্তিকাজের মূল ভিত্তি প্রেম, এবং প্রকৃত শিক্ষার ভিত্তিও তাই। এটি জীবনের পরিচালকরূপে ঈশ্বর দত্ত ব্যবস্থার মধ্যে পরিষ্কাররভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সর্ব প্রথম ও শ্রেষ্ঠ আজ্ঞা, “তুমি তােমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তােমার সমস্ত প্রাণ, তােমার সমস্ত শক্তি ও তােমার সমস্ত চিত্ত দিয়া তােমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে।” লূক ১০:২৭। যিনি অসীম, যিনি সর্বজ্ঞানী, তাঁকে সমস্ত শক্তি, সমস্ত অন্তঃকরণ এবং সমস্ত মন দিয়ে প্রেম করার অর্থ পুরােশক্তির সর্বোচ্চ বিকাশ লাভ। অর্থাৎ সমস্ত সত্তা—দেহ, মন ও আত্মার মধ্যে ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি পুনরুদ্ধার করা। EdBen 13.2

দ্বিতীয় আজ্ঞাটি প্রথমটির তুল্য- “তােমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।” মথি ২২:৩৯। প্রেমের ব্যবস্থা ঈশ্বর এবং আমাদের সহমানবের সেবায় দেহ, মন এবং আত্মর উৎসর্গের আহ্বান জানায়। এই সেবা অন্যের প্রতি যেমন আশীর্বাদ স্বরূপ, তেমনি এটি আমাদের প্রতিও আশীর্বাদ স্বরূপ। সকল প্রকৃত বিকাশ লাভের মূলেই রয়েছে নিঃস্বার্থপরতা। নিঃস্বার্থ সেবার মধ্যে আমরা প্রতিটি কর্মশক্তির সর্বোচ্চ কৃষ্টি লাভ করি । আমরা আরও পূর্ণরূপে ঐশ্বরিক প্রকৃতির অংশিদাররূপে গণ্য হই। আমরা স্বর্গের যােগ্য বলে গণ্য হই, কেননা আমরা আমাদের অন্তঃকরণে স্বৰ্গকে লাভ করি। EdBen 14.1

ঈশ্বর সকল প্রকৃত জ্ঞানের উৎস, এ কারণে, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, শিক্ষার সর্ব প্রথম উদ্দেশ্য হবে, তার নিজস্ব প্রকাশের প্রতি আমাদের মনকে পরিচালিত করা। আদম ও হবা ঈশ্বরের সঙ্গে সরাসরি যােগাযােগ রক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান লাভ করেছিলেন, এবং তাঁর কাজের মাধ্যমে তারা শিক্ষা লাভ করেছিলেন। সমস্ত সৃষ্ট বস্তু, তাদের প্রারম্ভিক সম্পূর্ণতায় ছিল ঈশ্বরের চিন্তার একটি প্রকাশ। আদম ও হবার কাছে প্রকৃতি ছিল ঐশ্বরিক জ্ঞানে পরিপূর্ণ। কিন্তু ব্যবস্থা অমান্য করে মানুষ সরাসরি ঈশ্বরের কাছ থেকে এবং বহুলাংশে ঈশ্বরের কাজের মাধ্যমে শিক্ষা লাভের সুযােগ হতে বঞ্চিত হল। পাপে নষ্ট ও কলঙ্কিত পৃথিবী হতে সৃষ্টিকর্তার মহিমা যেন নিষ্প্রভ হয়ে গেল। এ কথা সত্য যে, তাঁর শিক্ষার বিষয়বস্তু একেবারে নিশ্চিহ্ন বা বিলুপ্ত হয়ে যায় নি। তাঁর সৃষ্ট বস্তুর বিশাল বইয়ের প্রতিটি পাতায় এখনও তার হাতের লেখার প্রমাণ রয়েছে। প্রকৃতি এখনাে তার স্রষ্টার কথা বলে। তথাপি এই বিস্ময়কর তথ্যের প্রকাশ আংশিক এবং অসম্পূর্ণ ও আমাদের এই পতিত অবস্থায়, আমাদের দুর্বল শক্তি এবং সীমিত দৃষ্টিতে, সঠিক ব্যাখ্যা প্রদানে আমরা অপারগ। ঈশ্বর তাঁর লিখিত বাক্যের মাধ্যমে যেভাবে তুলে ধরেছেন ঠিক সেভাবে আমাদের তাঁকে তুলে ধরা উচিৎ। EdBen 14.2

পবিত্র শাস্ত্র-লিপি সত্যের নিখুঁৎ মান, তাই একে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ স্থান দিতে হবে। নামের যােগ্য একটি শিক্ষা অর্জন করতে হলে আমাদের, পবিত্র বাক্যে প্রকাশিত, সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর এবং মুক্তিকর্তা খ্রীষ্টের জ্ঞান আহরণ করতে হবে। EdBen 14.3

ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্ট প্রতিটি মানুষকে, স্বতন্ত্রভাবে চিন্তা এবং কাজ করার শক্তি প্রদান করা হয়েছে। যাদের ওপরে কর্মদায়িত্ব ন্যাস্ত ও যারা দুঃসাহসি কর্মনেতা এবং যারা চরিত্রকে প্রভাবিত করে, তাদের এই শক্তির বিকাশ লাভ হয়ে থাকে। প্রকৃত শিক্ষার কাজ এই শক্তির ক্রমঃবিকাশ সাধন, যুবক-যুবতিদের চিন্তাশীল হবার জন্য প্রশিক্ষণ দান, কিন্তু কেবল মানুষের চিন্তার পুনঃব্যক্ত করবে এমন নয়। মানুষ কি বলেছে এবং কি লিখেছে তাতেই যে তাদের পাঠভ্যাস সীমিত থাকবে এমন নয়; কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের সত্যের উৎস, প্রকৃতি, এবং প্রকাশের মধ্যে গবেষণার জন্য বিশাল উন্মুক্ত ক্ষেত্রের দিকে পরিচালিত করতে হবে। তারা কাজের দায়িত্ব এবং লক্ষ্যস্থলের মহান তথ্যগুলো ধ্যান করবে, তাতে মন প্রশস্ত এবং শক্তিশালী হবে। দুর্বল শিক্ষিতদের পরিবর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলাে, যারা চিন্তা ও কাজ করতে সক্ষম, যারা অবস্থার দাস হবে না বরং প্রভু হবে, যারা সুস্থ ও সাবলীল, যাদের চিন্তারাশি পরিষ্কার, যারা ন্যায় অন্যায়ের পক্ষে ও বিপক্ষে রায় দিতে সাহসি- এমন লােকদের গড়ে তুলবে। EdBen 15.1

এমন একটি শিক্ষা মানসিক নিয়মানুবর্তিতার চেয়ে আরও বেশি কিছুর যােগান দেয়; এটি দৈহিক প্রশিক্ষণ ছাড়া আরও বেশি কিছুর যােগান দেয়। চরিত্রকে শক্তিশালী করে, যেন সত্য ও ন্যায়পরায়ণতাকে স্বার্থপরতা এবং জাগতিক উচ্চাভিলাষের কাছে জলাঞ্জলি দিতে না হয়। এটি মন্দতার বিরুদ্ধে মনকে শক্তিশালী করে। কোন পরম-ভাবাবেগ এক ধ্বংসাত্মক শক্তিতে পরিণত না হয়ে বরং প্রতিটি ইচ্ছা ও বাসনা ন্যায়ের মহান নীতির বশীভূত হয়। যখন তার চরিত্রে সিদ্ধতা বিরাজ করে, তখন মন নবীনিকৃত হয়, এবং আত্মা ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে পুনঃসৃষ্টি হয়। এর চেয়ে ভালাে সুশিক্ষা আর কি হতে পারে? এর সমান মূল্য আর কি হতে পারে? “তাহা উত্তম সুবর্ণ দ্বারাও প্রাপ্ত হওয়া যায় না, তাহার মূল্য বলিয়া রৌপ্যও তৌল করা যায় না। ওফীরের সুবর্ণ তাহার সমতুল্য নয়, বহুমূল্য গােমেদ ও নীলকান্ত মণিও নয়। স্বর্ণ ও কাঁচ তাহার সমান হইতে পারে EdBen 15.2

, তাহার পরিবর্তে কাঞ্চনের পাত্র দত্ত হইবে না। তাহার কাছে প্রবাল ও স্ফটিকের নাম করা যায় না, পদ্মরাগমণির মূল্য অপেক্ষাও প্রজ্ঞার মূল্য অধিক।” ইয়ােব ২৮:১৫-১৮। EdBen 15.3

মানুষের ধারণায় সবচেয়ে উচ্চ যতটা চিন্তা-ভাবনা করা সম্ভব, ঈশ্বর তাঁর সন্তানদের জন্য তার চেয়ে অনেক বেশি পরিকল্পনা করেছেন। ধার্মিকতায় ঈশ্বরতুল্য হওনই হবে আমাদের লক্ষ্য। ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে এক বিরামহীন উন্নতির পথ খােলা রয়েছে। তাকে একটি লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে, তাকে একটি মান অর্জন করতে হবে, যা আদর্শ, খাঁটি, এবং শ্রেষ্ঠ। সে প্রকৃত জ্ঞানের প্রতিটি শাখায় দ্রুত উন্নতি লাভ করবে। কিন্তু পৃথিবী হতে আকাশমণ্ডল যেমন উঁচু, স্বার্থপরতা এবং ক্ষণস্থায়ী লক্ষ্য অপেক্ষা তার লক্ষ্য তেমনি উঁচু হবে। EdBen 16.1

যিনি যুবক-যুবতিদের ঐশ্বরিক জ্ঞান প্রদান করতে, এবং তাঁর তুল্য চরিত্র গঠন করতে ঐশ্বরিক উদ্দেশ্যের সঙ্গে সহযােগিতা রক্ষা করেন, তিনি একটি উচ্চ এবং মহৎ কাজ করে যাচ্ছেন। যেমন তিনি ঈশ্বরের লক্ষ্যে পৌছাবার একটি বাসনা পােষণ করছেন, তেমনি তিনি এমন একটি শিক্ষা উপস্থাপন করছেন যা আকাশমণ্ডলের ন্যায় উঁচু এবং সমগ্র বিশ্বের ন্যায় প্রসারিত একটি শিক্ষা যা ইহজীবনে শেষ হয় না, যা পরজীবনেও চলবে; একটি শিক্ষা যা কৃতকার্য ছাত্র-ছাত্রীকে পৃথিবীর প্রস্তুতিমূলক বিদ্যালয় হতে স্বর্গের বিদ্যালয়ের উচ্চ শ্রেণীতে অধ্যয়নের অনুমতি দেয়। EdBen 16.2