ঈশ্বরের ব্যবস্থা নিশ্চিহ্ন করার শয়তানের প্রথম প্রচেষ্টা স্বর্গের ধার্মিক অধিবাসীদের মধ্যে আরম্ভ করে। মনে হচ্ছিল যে কৃতকার্য্যতার মুকুট পরিধান করতে পারবে। দূতগণের এক বৃহৎ দলকে সে বিপথগামী করতে সক্ষম হয় । কিন্তু শয়তানের প্রাথমিক বিজয় পরে পরাজয়, চুড়ান্ত ক্ষতি, ঈশ্বরের নিকট হতে বিচ্ছিন্নতা, ও স্বর্গ হতে নির্বাসন, ইত্যাদিতে পৰ্যবসিত হয়। PPBeng 233.1
যখন পৃথিবীতে আবার বিবাদ নূতন ভাবে শুরু হলো, আবারও শয়তান দৃশ্যতঃ এক সুবিধা লাভ করে নিল। অবাধ্যতার মাধ্যমে মানুষ তার বন্দ্বিত্ব বরণ করল। স্বাধীন রাজ্য স্থাপনের মাধ্যমে ঈশ্বর ও তার পুত্রের কর্তৃত্বকে মোকাবেলা করার এক সুযোগ যে শয়তানের নিকট খুলে গেল । কিন্তু পরিত্রানের পরিকল্পনা মানুষকে ঈশ্বরের সহিত মিলিত হবার পথ খুলে দিল । PPBeng 233.2
আবারও শয়তান পরাজিত হল, এবং আবারও পরাজয়কে বিজয়ে রূপান্তরিত করার জন্য সে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করল। এখন সে ঈশ্বরকে অন্যায়কারীরূপে প্রতীয়মান করতে চাইল কেননা (তার মতে) তিনি মানুষকে তার ব্যবস্থা লঙ্ঘন করার অনুমতি দিয়েছিলেন। প্রলোভনকারী বলল, “যখন তিনি জানতেন যে এর ফল কি হবে, তখন কেন তিনি মানুষকে এই পরীক্ষায় ফেলে তার উপর দুঃখ ও মৃত্যু আনতে দিলেন?” আদম-সন্তানগণ সেই প্রলোভনকারীর কথায় কাণ দিল এবং তারা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করল একমাত্র যিনি শয়তানের ধ্বংসকারী শক্তি হতে তাদের রক্ষা করতে পারেন । PPBeng 233.3
সহস্র সহস্র লোক আজ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে একই বিদ্রোহী ধ্বনি উঠায়ে থাকেন। তারা দেখতে পান না যে যদি মানুষের কাছ থেকে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা হরণ করা হয় তবে সে একটি মেশিনে পরিণত হয় । অন্যান্য পৃথিবীর অধিবাসীদের মত তাকে বাধ্যতার পরীক্ষা দিতে হবে; কিন্তু কখনও তাকে এই অবস্থায় ফেলা হয় না যেখানে মন্দের নিকট আত্মসমর্পণ করা তার প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। এমন কোন প্রলোভন বা এমন কোন পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয় না যা প্রতিহত করতে সে অক্ষম হয়। PPBeng 233.4
মানুষের সংখ্যা যখন বাড়তে লাগল, তখন প্রায় সারা পৃথিবীই বিদ্রোহ করে বসল। আর একবার মনে হল যে শয়তান বুঝি জয়ী হয়ে গেল, কিন্তু প্লাবন দ্বারা পৃথিবীর নৈতিক অবক্ষয় ধূয়ে ফেলা হল । PPBeng 234.1