Go to full page →

বিশুদ্ধ আমোদ-প্রমোদের প্রতি মনোভাব CCh 415

হেয় কল্পনাপূর্ণ এমন অনেক লোক আছে, ধর্ম্ম যাহাদের নিকট লৌহ-দণ্ড দ্বারা শাসনকারী এক স্ব্বেচ্ছাচারী রাজা সদৃশ। এইরূপ লোকেরা তাহাদের দুশ্চরিত্রতার বিষয়ে অবিরত শোক করিতেছে এবং কল্পিত অমঙ্গলের বিষয়ে প্রবল আর্ত্তনাদ করিতেছে। তাহাদের হৃদয়ে প্রেম বিরাজ করে না, তাহাদের মুখ-মণ্ডলে সর্ব্বদা ভ্রুকুটি বিদ্যমান। যুবক-যুবতীদিগের অথবা যে কোন ব্যক্তির নির্দ্দোষ হাস্যে তাঁহারা হতাশ হইয়া পড়ে। সকল প্রকার নির্দ্দোষ আমোদ-প্রমোদকে তাহারা পাপ বলিয়া মনে করে এবং এই চিন্তা করে যে, মনটাকে সর্ব্বদা কঠিন অ গম্ভীর করিয়া রাখিতে হইবে। ইহারা এক চরমপন্থী। অন্যেরা মনে করে যে, স্বাস্হ্য লাভার্থে মনের সর্ব্বদা নূতন নূতন আমোদ-প্রমোদ ও নূতন নূতন খেলাধূলা আবিস্কার করা আবশ্যক। তাহারা উত্তেজনার উপরে নির্ভর করিতে শিক্ষা পায় এবং ইহা না পাইলে তাহারা নিজেদিগকে অসুখি মনে করে। এইরূপ লোকেরা প্রকৃত খ্রীষ্টীয়ান নহে। তাহারা আর এক চরমপন্থী। খ্রীষ্ট ধর্ম্মের প্রকৃ মুলনীতিগুলি সকলের সম্মুখে আনন্দের এক উৎস খুলিয়া দেয়, যাহার উচ্চতা, গভীরতা, দীর্ঘতা ও প্রশস্ততা অপরিমেয়। 21T 565; CCh 415.3

শারীরিক ও মানসিক শক্তিসমূহ ঈশ্বরের গৌরবার্থে ব্যবহারের নিমিত্ত নির্দ্দোষ আমোদ-প্রমোদের দ্বারা খ্রীষ্টীয়ানের প্রাণ সতেজ ও দেহ সবল করিবার চেষ্টাকে একটী সুযোগ ও কর্ত্তব্য বলা যাইতে পারে। আমাদের আমোদ-প্রমোদ, কাণ্ডজ্ঞানশুন্য অসঙ্গত আমোদ-প্রমোদ হওয়া উচিত নহে। আমরা এরূপ ভাবে আমোদ-প্রমোদ বা খেলাধূলা করিতে পারি, যদ্দ্বারা আমাদের সঙ্গীদিগের উপকার সাধিত হইবে, এবং খ্রীষ্টীয়ান-রূপে আমাদের উপরে যে দায়িত্ব অর্পিত হইয়াছে, তাহা অধিকতর কৃতকার্য্যতার সহিত সুসম্পন্ন করিবার নিমিত্ত উহা আমাদিগকে ও তাহাদিগকে অধিকতর সুযোগ্য করিয়া তুলিবে। 3AH 493; CCh 416.1

আমাকে দেখান হইয়াছিল যে, শাব্বাথপালকারী-দল বিনা পরিবর্ত্তনে ও বিনা বিশ্রামে কঠোর পরিশ্রম করিয়া থাকে। যাহারা শারীরিক পরিশ্রমে রত, তাহাদের আমোদ-প্রমোদের প্রয়োজন এবং যাহারা প্রধানতঃ মানসিক পরিশ্রম করে, তাহাদের পক্ষে ইহা আরও অধিকতর প্রয়োজন। মনকে অবিরত ও অত্যধিক পরিমানে পরিশ্রম এমন কি ধর্ম্ম প্রসঙ্গে রত রাখা, আমাদের পরিত্রানের পক্ষে কিংবা ঈশ্বরের গৌরবের জন্য আবশ্যক নহে। 41T 514; CCh 416.2

শারীরিক ব্যায়ামের জন্য যে সময় ক্ষেপণ করা হয়, তাহা বৃথা নষ্ট হয় না। দেহের প্রত্যেকটী যন্ত্রের ও মনুবৃত্তির কার্য্য যেন ভালরূপে চলে, তজজন্য সমুদয় দেহযন্ত্রের ও মনোবৃত্তিগুলির সামানুপাতিক ব্যায়াম একান্ত আবশ্যক। যখন জীবন্ত যন্ত্রপাতির অন্যান্য যন্ত্রগুলি নিষ্কর্ম্মা থাকে মস্তিষ্কের কার্য্য তখন অবিরত অতিমাত্রায় চলিতে থাকে বলিয়া দেহযন্ত্রের শারীরিক ও মানসিক শক্তি ক্ষয় হইতে থাকে। দেহ স্বাস্হ্য হইতে বঞ্চিত হয়, মন সবলতা ও তেজ হারাইয়া ফেলে, ফলে এক অস্বাভাবিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নিদ্রার ও পরিশ্রমের নির্দ্দিষ্ট সময়ে যেন বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম না ঘটে, তদ্বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি রাখা আবশ্যক। আমাদের বিশ্রামের, আমোদ-প্রমোদ বা খেলাধূলার, এবং ধ্যানের নির্দ্দিষ্ট সময় থাকা আবশ্যক। মিতাচারের মুলনীতিগুলির পাল্লা অনেকে যেমন মনে করে, তাহা অপেক্ষা অনেক বেশী। CCh 416.3

যাহারা অধ্যয়নে রত তাহাদের মানসিক বিশ্রামের প্রয়োজন। মনকে সর্ব্বদা সূক্ষ্ম চিন্তায় মগ্ন রাখা কোনমতেই কর্ত্তব্য নহে; কারণ সুকোমল মানসিক যন্ত্রগুলি ইহাতে ক্ষয় হইয়া যায়। শরীরের যেমন মনেরও তেমনি ব্যায়াম আবশ্যক। 5AH 494, 495; CCh 417.1