Go to full page →

ঈর্ষ্যাপরায়ণ লোকেরা অন্যের মধ্যে কোন উত্তমতা দেখিতে পায় না CCh 444

আমাদের প্রাণকে খাইয়া ফেলিবার এবং আমাদিগকে খিট্খিটে অধৈর্য্য করিয়া তুলিবার নিমিত্ত আমাদের প্রাণে উদ্বেগ ও নিরাশা আসিতে দেওয়া কর্ত্তব্য নহে। ঈশ্বরকে যেন কুপিত করিতে না হয়, তজজন্য আমাদের মধ্যে কোন বিবাদ, কোন কু-চিন্তা বা কোন কুকথা না থাকুক। হে আমার ভ্রাত ! আপনি যদি ঈর্ষ্যা ও কুসন্দেহে আপনার হৃদয় খুলিয়া দেন, তাহা হইলে পবিত্র-আত্মা আপনার সহিত বাস করিতে পারেন না। খ্রীষ্ট যীশুতে যে পূর্ণতা আছে, তাহার অন্বেষণ করুন। তাঁহার পক্ষে থাকিয়া পরিশ্রম করুন। প্রত্যেক চিন্তা, বাক্য ও কার্য্যে যীশুকে প্রকাশ করুন। প্রেরিতগণের যুগে যে প্রেমের বাপ্তিস্মে তাহারা সকলে এক-চিত্ত ছিলেন, আপনারও প্রতিদিন সেই বাপ্তিস্মের প্রয়োজন। এই প্রেম, - দেহ, মন ও আত্মায় স্বাস্হ্য আনয়ন করিবে। যে আবহাওয়ায় আধ্যাত্মিক জীবন সবলীকৃত হইবে, তদ্দ্বারা আপনার আত্মাকে পরিবেষ্টিত করুন। বিশ্বাস, আশা, সাহস ও প্রেমের উৎকর্ষ সাধন করুন। ঈশ্বরের শান্তি আপনার হৃদয়ে কর্ত্তৃত্ত্ব করুক।48T 191; CCh 444.1

ঈর্ষ্যা, ক্রোধের কেবল অপপ্রয়োগ নহে, কিন্তু এমন এক চিত্ত-বৈলক্ষণ্য বা খারাপ মেজাজ, যাহা সমুদয় মনোবৃত্তিকে বা কার্য্যক্ষমতাকে উচ্ছৃঙ্খল-বিশৃঙ্খল করিয়া দেয়। ইহা শয়তানের মধ্যে প্রথম দেখা দেয়। সে স্বর্গে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ হইতে চাহিয়াছিলেন ; কিন্তু সে যে পরাক্রম ও মহিমার চেষ্টা করিয়াছিল, সে সমুদয় না পাওয়াতে সে ঈশ্বরের সরকারের বা গভর্ণমেন্টের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হইয়াছিল। আমাদের আদি মাতাপিতার প্রতি ঈর্ষ্যান্বিত হইয়া সে তাঁহাদিগকে প্রলুব্ধ করিয়া পাপে ফেলিয়াছিল, আর এইরূপে তাঁহাদিগকে ও সমস্ত মানবজাতির ধ্বংস সাধন করিয়াছিল। CCh 444.2

যে ব্যক্তি ঈর্ষ্যাপরায়ণ সে অন্যের উত্তম গুনরাজি ও মহৎ কার্য্যাবলীর প্রতি চক্ষু মুদ্রিত করিয়া থাকে। যাহা সর্ব্বোৎকৃষ্ট তাহার বিষয় নিন্দা করিতে বা মিথ্যা বর্ণনা দিতে সে সর্ব্বদাই প্রস্তুত। লোকেরা প্রায়ই অন্য দোষগুলি স্বীকার করে ও পরিত্যাগ করে, কিন্তু যে ব্যক্তি ঈর্ষ্যাপরায়ণ তাহা হইতে ইহা অল্পই আশা করা যায়। কাহাকেও ঈর্ষ্যা করিলে ইহাই যখন স্বীকার করা হয় যে, সে তাহা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর, তখন অহঙ্কার কাহাকেও রেহাই দিবে না। ঈর্ষ্যান্বিত ব্যক্তিকে যদি তাহার পাপ দেখাইয়া দিবার চেষ্টা করা হয়, তবে সে তাহার ক্রোধের বিষয়টী সম্বন্ধে এমন কি, অধিকতর তিক্ত হইয়া উঠে, তাহাতে প্রায়ই তাহার কোন প্রতিকার করা চলে না। CCh 445.1

ঈর্ষ্যাপরায়ণ ব্যক্তি যে স্থানে যায়, সেই স্থানেই বন্ধু-বিচ্ছেদ ঘটায় এবং ঈশ্বর ও মনুষ্যের মধ্যে ঈর্ষ্যা ও বিদ্রোহের বিষ বিক্ষিপ্ত করে। নিজেকে শ্রেষ্ঠতার লক্ষ্যে পহুঁছিবার জন্য সাহসিক কার্য্য ও আত্মত্যাগের, চেষ্টা না করিয়া, কিন্তু যে স্থানে আছে সেই স্থানেই দাঁড়াইয়া থাকিয়া ও অন্যের চেষ্টায় যে যোগ্যতা বা মূল্য প্রাপ্য, তাহা হ্রাস করিয়া সে সর্ব্বোত্তম ও সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বলিয়া বিবেচিত হইতে চেষ্টা করে। CCh 445.2

যে জিহ্বা অনিষ্ট করিতে আনন্দ উপভোগ করে, পরিবাদকারী বা জল্পনাকারী যে জিহ্বা বলে — তুমি যদি রটাও, আমিও রটাব ; প্রেরিত যাকোব তাহাকে নরকে আগুন লাগান বলিয়া ঘোষণা করিয়াছেন। ইহা সর্ব্বদিকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বিক্ষিপ্ত করে। নির্দ্দোষ ব্যক্তির দুর্নাম হয়, ইহাতে মিথ্যাগল্প বিক্রেতার বা জল্পনাকারীর কী আসিয়া যায়? ইতঃপূর্ব্বে যাহারা তাহাদের ভারে ডুবিয়া যাইতেছে, যদিও যে তাহাদিগের আশা ও সাহস নষ্ট করে, তথাপি সে তাহার দুষ্কার্য্য বন্ধ করিবে না। সে কেবল ইচ্ছা করে, তাহার কুৎসা-প্রিয় ঝোঁকের প্রশ্রয় দান। যাহারা খ্রীষ্টীয়ান নামে পরিচিত এমন কি তাহারাও যাহা কিছু বিশুদ্ধ, যাহা সৎ, যাহা কিছু প্রীতিজনক তাহার দিকে তাহাদের চক্ষু বন্ধ করিয়া রাখে এবং জাহ কিছু দূষণীয় ও যাহা কিছু বিরক্তিকর তাহা সঞ্চয় করিয়া জগতের সমক্ষে প্রকাশ করে।55T 56, 57; CCh 445.3