মন্দিরের প্রাঙ্গণে সে কালে বালকবালিকাগণ যেমন গাহিয়াছিলেন, - “হোসান্না ; ধন্য, যিনি প্রভুর নামে আসিতেছেন” (মার্ক ১১:৯), শেষকালে তেমনি ধ্বংসম্মুখ পৃথিবীকে শেষ চেতনাবাণী দিবার নিমিত্ত বালকবালিকাগণের রব উত্থিত হইবে। স্বর্গীয় সত্ত্বাগণ যখন দেখিবেন যে, সত্য প্রচার করিতে বয়স্কদিগকে আর অনুমতি দেওয়া হইতেছে না, তখন ঈশ্বরের আত্মা বালিকবালিকাগণের উপরে বর্ষিত হইবেন, তাহাতে তাঁহারা এমন ভাবে সত্য প্রচার করিবে, যাহা কার্য্যকারিগণ বা বয়স্ক লোকেরা করিতে পারিবেন না, কারণ তাঁহাদের পথ রুদ্ধ হইবে। CCh 516.3
বালকবালিকাগণকে এই মহান্ কার্য্যের নিমিত্ত প্রস্তুত করণার্থে আমাদের মণ্ডলীর স্কুলগুলি ঈশ্বর নিয়োজিত উপায়। বর্ত্তমান কালের বিশেষ সত্যগুলি সম্বন্ধে ও কি ভাবে বাস্তব মিশনারী কার্য্য করা যাইতে পারে, তৎসম্বন্ধে এই সকল স্কুলে বালকবালিকাগণকে শিক্ষা দান করিতে হইবে। পীড়িত ও ক্লিষ্টদিগের সাহায্যার্থে তাঁহাদের নাম কার্য্যকারিগণের তালিকাভুক্ত করিতে হইবে। বালকবালিকা চিকিৎসা বিভাগীয় মিশনারী কার্য্যে যোগদান করিতে পারে ; তাহারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কার্য্য দ্বারা মিশনারী কার্য্য বিস্তৃতিতে সাহায্য করিতে পারে। তাহাদের অর্থের বিনিয়োগ কিংবা তাহাদের সাহায্যাদি ক্ষুদ্র হইতে পারে, কিন্তু প্রতিটী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাহায্য দ্বারা এবং তাহাদের চেষ্টা ও যত্ন দ্বারা বহু আত্মা সত্য গ্রহণ করিবে। তাহাদের দ্বারা ঈশ্বরের সত্যের বার্ত্তা ও তাঁহার রক্ষাকারী স্বাস্থ্যর বার্ত্তা সমুদয় জাতির নিকটে প্রচারিত হইবে। অতএব মণ্ডলী যেন ঈশ্বরের পালের মেষশাবকগণের উপযুক্ত তত্ত্বাবধান করে। সন্তানগণ ঈশ্বর-দত্ত অধিকার, এজন্য তাঁহারই সেবাকার্য্যার্থে তাহাদিগকে সুশিক্ষা দিয়া মানুষ করিতে হইবে। CCh 517.1
মণ্ডলীর স্কুলগুলি যে যে স্থানে স্থাপিত হয়, সুপরিচালিত হইলে সেই সেই স্থানে ইহাদের দ্বারা সত্যের ধ্বজা উড্ডীয়মান হইতে পারে। কারণ যে সকল বালকবালিকা ঐ সকল স্কুলে অধ্যয়ন করিতেছে, তাহারা খ্রীষ্টের সাক্ষী হইবে। যাজক ও অধ্যাপকগণ সত্যের নিগূঢ়তত্ত্ব বুঝিতে অসমর্থ হইলে যীশু যেমন মন্দিরে বসিয়া তাঁহাদিগকে উহা বুঝাইয়া দিয়াছিলেন, তেমনি পৃথিবীর এই শেষ কার্য্য প্রকৃত শিক্ষাপ্রাপ্ত বালকবালিকাগণ সরলমনে ও সরলভাবে এরূপ কথা বলিবে যে, “উচ্চ শিক্ষা-প্রাপ্ত” ব্যক্তিগণ তাহা শুনিয়া বিস্ময়াবিষ্ট হইবেন। 416T 202, 203; CCh 517.2
আমাকে দেখান হইয়াছিল যে, আত্মা-লাভের মহান্ কার্য্যে আমাদের কলেজগুলি ঈশ্বর নির্দ্দিষ্ট উপায়। কাহারও ধীশক্তি পূর্ণরূপে হিতকর হয় কেবল তখন, যখন ইহা ঈশ্বরের আত্মার পূর্ণ প্রভাবের মধ্য আইসে। ধর্ম্মের বিধি ও নীতিগুলিই জ্ঞানাজর্জনের প্রথম স্তর, আর প্রকৃত শিক্ষার একেবারে পত্তনেই ইহাদের অবস্থান। মহৎ উদ্দেশ্য সাধনার্থে জ্ঞান ও বিজ্ঞান ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা সঞ্জীবিত হওয়া আবশ্যক। একমাত্র খ্রীষ্টীয়ানই জ্ঞানের সঠিক ব্যবহার করিতে পারে। বিজ্ঞানের যথোচিত মুল্যাবধারন করিতে হইলে ধর্ম্মের দিক্ দিয়া উহার বিচার করিতে হইবে। যে হৃদয় অনুগ্রহে উন্নত, সেই হৃদয়ই শিক্ষার প্রকৃত মুল্যাবধারন করিতে পারে। সৃষ্টিকর্ত্তা সম্বন্ধে পূর্ণ জ্ঞান থাকিলেই সৃষ্টিকার্য্যে প্রকাশিত ঈশ্বরের গুলাবলীর যথোচিত মর্ম্ম উপলদ্ধি করা সম্ভব হয়। যুবকযুবতিগণকে সত্যের উনুইয়ের নিকটে, এবং ঈশ্বরের মেষশাবক যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান, তাঁহার নিকটে আনিবার উদ্দেশ্য শিক্ষকশিক্ষয়িত্রিগণের সত্যের মতবাদ সম্বন্ধে কেবল জ্ঞান থাকিলেই চলিবে না, কিন্তু তাহাদের পবিত্রতার পথ সম্বন্ধেও পরীক্ষালব্ধ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। জ্ঞানই শক্তি, যখন ইহা ধর্ম্মপরায়ণতার সহিত মিলিত হয়। 424T 427; CCh 518.1