বাইবেলের কোথাও উত্তেজক সুরা ব্যবহারের সমর্থন নাই। কান্না নগরের বিবাহ বাটীতে খ্রীষ্ট জল হইতে যে দ্রাক্ষারস প্রস্তুত করিয়াছিলেন, তাহা ছিল, আঙ্গুরের বিশুদ্ধ রস। “দ্রাক্ষাগুচ্ছের ফলের রস” যাহার সম্বন্ধে শাস্ত্র বলে, “ইহা বিনষ্ট করিও না, কেননা ইহাতে আশীর্ব্বাদ আছে।” যিশা ৬৫ : ৮ । CCh 570.3
উত্তেজক পানীয়ের দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির হীনতা ও দাসত্বের যে চিত্র এই স্থানে প্রদর্শিত হইয়াছে, এতদপেক্ষা সুস্পষ্ট চিত্র মানব হস্তের দ্বারা কখনও অঙ্কিত করা হয় নাই। দাসত্বাধীন, ও হীন পদস্থ হইয়া, এমন কি তাহার দুর্দ্দশার বিষয় জ্ঞান লাভ করিয়াও সে ঐ জাল ছিন্ন করিতে পারে না। সে বলে “আমি আবার তাহার অন্বেষণ করিব।” হিতোপদেশ ২৩ : ৩৫। CCh 570.4
“দ্রাক্ষারস নিন্দক, সুরা কলহকারিণী,
যে তাহাতে ভ্রান্ত হয়, সে জ্ঞানবান নয়।”
“কে হায় হায় বলে ? কে হাহাকার করে?
কে বিবাদ করে ?
কে বিলাপ করে? কে অকারণে আঘাত পায়?
কাহার চক্ষু লাল হয় ?
যাহারা দ্রাক্ষারসের নিকটে বহুকাল থাকে,
যাহারা সুরার সন্ধানে যায়।
দ্রাক্ষারসের প্রতি দৃষ্টি করিও না, যদিও উহা রক্তবর্ণ,
যদিও উহা পাত্রে চক্মক্ করে,
যদিও উহা সহজে গলায় নামিয়া যায়,
অবশেষে উহা সর্পের ন্যায় কামড়ায়,
বিষধরের ন্যায় দংশন করে।” --- হিতোপদেশ ২০ : ১ ; ২৩ : ২৯-৩২। CCh 571.1
উগ্র পানীয়ে যেমন, মদ্য, বীয়ার ও সাইডারেও (আপেল-রসোদ্ভব সুরা বিশেষ) ঠিক্ তেমনি মত্ততা রহিয়াছে। এই সকল পানীয়ের ব্যবহার উগ্রতর বা মত্তকারী পানীয়ের জন্য আকাঙক্ষার উদ্রেক করে, আর এইরূপে মদ্যপানের অভ্যাস গঠিত হয়। পরিমিত মদ্য পান এমন একটী স্কুলের মত যে স্থানে লোকেরা মাতাল হইতে অভ্যস্ত হয়। তথাপি এই সকল মৃদু উত্তেজক পানীয়ের কার্য্য এত ছলনাপূর্ণ যে প্রতারিত ব্যক্তি স্বীয় বিপদের বিষয় সন্ধিহান হইবার পূর্ব্বেই সে মত্ততার চরমসীমায় উঠিয়া যায়। CCh 571.2
মাতালের উপরে উত্তেজক পানীয়ের কুফলতা দেখাইবার জন্য কোন যুক্তিতর্কের প্রয়োজন নাই। মানবজাতির ক্ষীণ ও মত্ত ধবংসাবশেষ — যাহাদের জন্য খ্রীষ্ট মরিয়াছিলেন তাহারা, এবং দূতগণ যাহাদের জন্য বিলাপ করেন তাহারা, সর্ব্বত্র বিদ্যমান আছে। তাহারা আমাদের দাম্ভিক সভ্যতার কলঙ্ক-জনক। তাহারা প্রত্যেক দেশের লজ্জা, অভিশাপ ও বিপদ-স্বরূপ। 7MH 330-333; CCh 571.3