অদ্য যদি গুপ্ত-প্রার্থনা ও শাস্ত্র-পাঠ অবহেলিত হয়, কল্য তবে বিবেকের বাধায় অল্পই মনোনিবেশ করিয়া উহা একেবারেই পরিত্যাগ করা হইবে । হৃদয়-ক্ষেত্রে একটী মাত্র শস্য বপনের দরুণ অনেক কিছুই বাদ দেওয়া হইবে । অন্যপক্ষে হৃদয়ে পোষিত জ্যোতির প্রত্যেকটী রশ্মি, জ্যোতির ফল উৎপন্ন করিবে । পরীক্ষায় একবার জয়ী হইলে, দ্বিতীয় বার জয়ী হইবার জন্য অধিকতর শক্তি সঞ্চিত হইবে ; নিজের উপরে নূতন নূতন বিজয়, মহত্তর ও উন্নততর বিজয়ের জন্য পথ খুলিয়া দিবে । প্রত্যেকটী বিজয়, অনন্ত জীবনের পক্ষে বপিত বীজের সদৃশ । 95T 120; CCh 666.2
প্রত্যেকটী সাধু— যিনি সরলান্তঃকরণে ঈশ্বরের কাছে আইসেন, এবং বিশ্বাস সহকারে তাঁহার অকপট বিনতি তাঁহার নিকট উপস্থিত করেন, তিনি তাঁহার প্রার্থনার উত্তর তৎক্ষণাৎই পাইয়াছেন বলিয়া দেখিতে কিংবা অনুভব করিতে না পারিলেও ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞায় আপনার বিশ্বাস হারান কর্ত্তব্য নহে । ঈশ্বরে নির্ভর করিতে ভীত হইবেন না । “যাচ্ঞা কর, তাহাতে পাইবে” (যোহন ১৬:২৪) তাঁহার এই নিশ্চিত প্রতিজ্ঞায় নির্ভর করুন । CCh 666.3
ঈশ্বর এত বিজ্ঞ যে তিনি ভুল করিতে পারেন না, এবং এত দয়ালু যে, তাঁহার যে সকল সাধু সিদ্ধতায় চলে, তিনি তাহাদিগকে কোন উত্তম কিছু হইতে বঞ্চিত করিতে পারেন না । মানব ভ্রান্ত, এবং যদিও সরলান্তঃকরণ হইতে তাহার বিনতি সমূহ উর্দ্ধে উত্থিত হয়, তথাপি যাহাতে তাহার নিজের মঙ্গল হইবে, অথবা ঈশ্বরের গৌরব হইবে, সে সর্ব্বদা সেই বিষয় সমূহের জন্য প্রার্থনা করে না । এই জন্যই আমাদের পরম জ্ঞানী, পরম মঙ্গলময় পিতা আমাদের প্রার্থনা শ্রবণ করিয়া কখন-কখন তৎক্ষণাৎ প্রার্থনার উত্তর দিয়া থাকেন ; কিন্তু যাহা আমাদের পক্ষে সর্ব্বাপেক্ষা মঙ্গল জনক ও যাহাতে তাঁহার নিজের গৌরব হয়, তিনি তাহাই আমাদিগকে দিয়া থাকেন । ঈশ্বর আমাদিগকে আশীর্ব্বাদ দান করিয়া থাকেন ; আমরা যদি তাঁহার পরিকল্পনা জানিতে পারিতাম, তাহা হইলে আমরা সুস্পষ্টরূপে দেখিতে পাইতাম যে, আমাদের পক্ষে সর্ব্বাপেক্ষা মঙ্গলজনক কি তাহা তিনি জানেন এবং তদনুযায়ী তিনি আমাদের প্রার্থনার উত্তর দিয়া থাকেন । যাহা আমাদের পক্ষে মঙ্গল-জনক নহে, কিন্তু হানিকর, এমন অনেক কিছু চাহিলে, তিনি সেই হানিকর কিছু না দিয়া আমাদিগকে আবশ্যকানুযায়ী আশীর্ব্বাদ করিয়া থাকেন । CCh 666.4
আমি দেখিলাম যে, আমাদের প্রার্থনার তৎক্ষণাৎ উত্তর না পাইলেও অবিশ্বাস আসিতে না দিয়া দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস ধরিয়া রাখা আমাদের একান্ত কর্ত্তব্য, নতুবা অবিশ্বাস আমাদিগকে ঈশ্বর হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া ফেলিবে । আমাদের বিশ্বাস বিচলিত হইলে আমরা ঈশ্বর হইতে কিছুই পাইব না । ঈশ্বরের প্রতি আমাদের বিশ্বাস অটল হওয়া উচিত ; যখন আমাদের বিশ্বাসের প্রয়োজন সর্ব্বাধিক, তখন ঐ আশীর্ব্বাদ মূসলধারে আমাদের উপরে পতিত হইতে থাকিবে । 101T 120, 120; CCh 667.1