খ্রীষ্টে শ্রীবৃদ্ধি লাভ |(GROWING UP INTO CHIRST)
ত্রাণার্থীর আশাপূরণ ।
- Contents- সূচীপত্র।
-
- মানুষের প্রতি ঈশ্বরের প্রেম । ( GOD’S LOVE FOR MAN )
- দ্বিতীয় অধ্যায়
- পাপীর খ্রীষ্টে প্রয়োজন । (The SINNER’S NEED OF CHRIST)
- তৃতীয় অধ্যায়
- অনুতাপ । (REPENTANCE)
- চতুর্থ অধ্যায়
- পাপ স্বীকার । (CONFESSION)
- পঞ্চম অধ্যায়
- আত্ন-সমর্পণ |(CONSERATION)
- ষষ্ঠ অধ্যায়
- বিশ্বাস ও পরিগ্রহন |(FAITH AND ACCEPTANCE)
- সপ্তম অধ্যায়
- শিষ্যত্বের লক্ষন |(THE TEST OF DISCIPLESHIP)
- অষ্টম অধ্যায়
- খ্রীষ্টে শ্রীবৃদ্ধি লাভ |(GROWING UP INTO CHIRST)
- নবম অধ্যয়
- কার্য্য ও জীবন । (THE WORK AND LIFE)
- দশম অধ্যায়
- ঈশ্বর সন্মন্ধে জ্ঞান|(A KNOWLEDGE OF GOD)
- একাদশ অধ্যায়
- প্রার্থনা করিবার অধিকার। (THE PRIVILIEGE OF PRAYER)
- দ্বাদশ অধ্যায়
- সন্দেহ ভঞ্জন। (WHAT TO DO WITH DOUBT)
- ত্রয়োদশ অধ্যায়
- আনন্দ সাধনা । (REJOICING IN THE LORD)
Search Results
- Results
- Related
- Featured
- Weighted Relevancy
- Content Sequence
- Relevancy
- Earliest First
- Latest First
- Exact Match First, Root Words Second
- Exact word match
- Root word match
- EGW Collections
- All collections
- Lifetime Works (1845-1917)
- Compilations (1918-present)
- Adventist Pioneer Library
- My Bible
- Dictionary
- Reference
- Short
- Long
- Paragraph
No results.
EGW Extras
Directory
অষ্টম অধ্যায়
খ্রীষ্টে শ্রীবৃদ্ধি লাভ |(GROWING UP INTO CHIRST)
যে মনঃপরিবর্ত্তনের ফলে আমরা ঈশ্বরের সন্তান হইতে পারী, বাইবেলে উহাকে নূতন জন্ম বলা হইয়াছে । পুনঃরায় , উহাকে গৃহ-স্বামী কওৃক উপ্ত উত্তম বীজ অঙ্কুরিত হইবার সহিত তুলনা করা হইয়াছে । এইরূপে যাহাদের সবেমাত্র খীষ্টে মনঃপরিবর্ত্তন হয় তাহারা ঠিক “নবজাত শিশুদের ন্যায়” (১ পিতর ২:২) এবং তাহাদিগকে খীষ্ট যীশুতে পূর্ণবয়স্ক নরনারিরুপে “বৃদ্ধি” (ইফি ৪:১৫) পাইতে হইবে। অথবা ক্ষেএে উপ্ত উত্তম বীজের ন্যায় তাহাদের বৃদ্ধি পাইতে এবং ফল বহন করিতে হইবে । ভাববাদী যিশাইয় বলেন যে , “তাহারা ধাম্মিকতা—বৃক্ষ ও সদাপ্রভুর রোপিত তাঁহার ভূষণার্থক উদ্যান বলিয়া আখ্যাত হইবে”(যিশা ৬১:৩)।তাই আত্মিক জীবনের নিগূঢ় তত্ত্ব বুঝিবার সুবিধার জন্য প্রাকৃতিক জগৎ দৃষ্টান্ত প্রদান করা হইয়াছে।SC 68.1
মানুষে যাবতীয় জ্ঞান ও বুদ্ধি সমন্বিত হইয়াও কখন প্রকৃতির ক্ষুদ্রতম ব্যস্তুটিতেও জীবন সঞ্চার করিতে পারে না । ঈশ্বর স্বয়ং যে জীবন দান করিয়াছেন শুধু সেই জীবনের বলেই জীবজন্তু ও বৃক্ষদি বাঁচিয়া রহিয়াছে । সেই প্রকার শুধু ঈশ্বরের জীবনের মধ্যে দিয়াই মানবহৃদয়ে আত্মিক জীবন উৎপন্ন হয়। কোন ব্যক্তি (“উদ্ধ হইতে) নূতন জন্ম ” (যোহন ৩:৩)লাভ না করিলে , খ্রীষ্ট যে জীবন দান করিতে আসিয়াছিলেন , কখনও সেই জীবনের অংশী হইতে পারে না ।SC 69.1
জীবন সম্বন্ধে যে কথা, বৃদ্ধি পাওয়া সম্মন্ধেও ঠিক সেই কথা খাটে । ঈশ্বরই ফুলের কুঁড়িকে ফুটাইয়া তোলেন এবং ফুলে ফল দান করেন । তাঁহার শক্তিতেই বীজ “প্রথমে অঙ্কুর , পঃর শীষ , তাহার পর শীষের মধ্যে পূর্ণ শস্য বিকাশ করিয়া থাকে ” (মার্ক ৪:২৮)। ভাববাদী হোশেয় ইস্রায়েল সম্বন্ধে বলিয়াছেন যে, সে “শোশন পুস্পের ন্যায় ফুটিবে ।” “তাহারা .........শস্যবৎ সঞ্জীবিত হইবে, দ্রাক্ষালতার ন্যায় ফুটিবে”(হোশেয় ১৪:৫,৭) “কানুড় পুস্পের বিষয় বিবেচনা কর । সেগুলি কেমন বাড়ে “। (লুক ১২:১৭)যীশু আমাদিগকে এই আদেশ করিয়াছেন । বৃক্ষ, লতা ও পুস্প প্রভৃতি কখনও নিজ নিজ চেষ্টা,যত্ন ও উৎকণ্ঠার ফলে বৃদ্ধি পাইতে থাকে না, কিন্তু ঈশ্বর তাহাদের জীবন ধারন কল্পে যাহা দান করিয়াছেন, তাহাই গ্রহন করিয়া বাঁচিয়া থাকে। শিশু কখন তাঁহার আপন শক্তি বা উৎকণ্ঠা দ্বারা বাড়িতে পারে না । সেইরূপ তুমি শুধু আপন চেষ্টার ফলে কখনও আধ্যাত্মিক জীবনে শ্রীবৃদ্ধি লাভ করিতে পার না। শিশু ও তরুন বৃক্ষ-বায়ু সূর্যকিরণ ও খাদ্য প্রভৃতি চতুদ্দিকস্থ জীবনদায়ক শক্তিসমূহ হইতে শক্তিগ্রহন করিয়া বৃদ্ধি পাইতে থাকে । জীবজন্তু ও চারাগাছের পক্ষে প্রকৃতির এই সমুদয় দান যেরূপ , খীষ্ট বিশ্বাসীদের নিকট খীষ্টও সেইরূপ । তিনি তাহাদের “চিরজ্যোতি’’ (যিশা ৬০:১১)-তিনি তাহাদের সুর্য্য ও ঢাল ( গীত ৮৪:১১)। SC 69.2
তিনি ইস্রায়েলের পক্ষে শিশিরের ন্য্যায়” হইবেন (হোশেয় ১৪:৫)” ছিন্নতৃন মাঠে বৃষ্টির ন্যায় তিনি নামিয়া আসিবেন “(গীত ৭২:৬) তিনিই সেই জীবন্ত জল ও ঈশ্বরীয় খাদ্য ...... যা স্বর্গ হইতে নামিয়া আইসে,ও জগৎ কে জীবন দান করে (যোহন ৬:৩৩) ঈশ্বর তাঁহার পুত্ররূপ অনুপম দান দ্বারা সমস্ত পৃথিবীকে সর্ব্বএ পরিব্যপ্ত বায়ুমন্ডলের ন্যয় করুণার ঘিরিয়া রাখিয়াছেন । যাহারা এই জীবন —দায়ী বায়ুমন্ডলের (ঈশ্বরের করুণা বা অনুগ্রহ) নিশ্বাস গ্রহন করিতে চাহে , তাহারাই জীবন লাভ করিয়া খ্রীষ্ট যীশুতে পূর্ণ নরনারীরূপে বৃদ্ধি পাইতে পারিবে ।SC 70.1
ফুলের সৌন্দর্য ও সামাঞ্জস্য পরিপূর্ণ করিতে , ফুল যেরূপ উজ্জ্বল কিরনের নিমিও সূর্য্যর দিকে উন্মুক্ত হইয়া থাকে, সেরূপ আমারাও ধার্ম্মিকতা-সূর্য্যর দিকে উন্মুক্ত হইয়া থাকিব,-যেন আমরা স্বর্গের দীপ্তিতে আলোকিত হইতে পারি , যিন আমাদের চরিত্র খীষ্টের সাদৃশ্যে বিকশিত হইতে পারে । SC 70.2
যীশুও ঠিক এই কথা শিক্ষা দিতেছেন ; “আমাতে থাক, আর আমি তোমাদিগেতে থাকি; শাখা যেমন আপনা হইতে ফল ধরিতে পারে না দ্রাক্ষালতায় না থাকিলে পারে না তদ্রূপ আমাতে না পারিলে না থাকিলে তোমরাও পার না । ..............আমা ভিন্ন তোমরা কিছুই করিতে পার না” (যোহন ১৫:৪,৫)। শাখা যেমন বৃদ্ধি পাইবার ও ফলসম্পন্ন হইবার নিমিও সম্পূর্ণরূপে মূলের উপরে নির্ভর করে, সেইরূপ তোমাদের পবিত্র জীবন যাপন করিতে হইলে খ্রীষ্টের উপর নির্ভর করিতে হইবে । তাহাকে বাদ দিলে তুমি একেবারে জীবনহীন হইয়া পড় । পরীক্ষা প্রতিরোধ করিতে অথবা করুনায় ও পবিত্রতায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইতে তোমার কোনই ক্ষমতা নাই। তাঁহাতে থাকিলে তুমি শ্রীবৃদ্ধি লাভ করিতে পারিবে । তাঁহার নিকট হইতে জীবন শক্তি গ্রহন করিলে তুমি শুস্ক বা ফলহীন হইবে না। তাহা হইলে তুমি জলস্রোতের তীরে রো পত বৃক্ষের সদৃশ হইবে।SC 70.3
অনেকের এইরূপ এক ধারনা আছে যে কার্য্যের কিয়দংশ তাহদের নিজের চেষ্টায় করিতে হইবে । পাপক্ষমার নিমিও ।তাঁহারা খ্রীষ্টে বিশ্বাস করিয়াছে কিন্ত এইক্ষনে তাঁহারা নিজেদের চেষ্টায় সাধুভাবে জীবন যাপন করিতে চাহে । কিন্তু এই প্রকার সমুদয় চেষ্টা বার্থ হইবে যীশু বলিয়াছেন, “আমা ভিন্ন তোমরা কিছুই করিতে পার না। ” আমদের করুণায় বৃদ্ধি পাওয়া আমাদের আনন্দ , এই পৃথিবীতে আমাদের প্রয়োজনীয়তা-এই সকলই আমাদের খ্রীষ্টের সহিত নৈকট্য সন্মন্ধের উপরে নির্ভর করে । প্রতিদিন ,প্রতিমুহুর্ত্তে , তাঁহার সহিত সহভাগিতা করিলে তাঁহার সঙ্গে থাকিলে আমরা করুণায় বৃদ্ধি পাইতে পারি । তিনিই আমাদিগকে বিশ্বাস দিয়াছেন এবং তাহাতেই উহা শেষ হইবে । খ্রীষ্টই প্রথম , খ্রীষ্টেই শেষ এবং খ্রীষ্টেই চিরসময়ের । আমদের জীবনে প্রথমে ও শেষেই যে শুধু তিনি থাকিবেন , তাহা নহে কিন্তু জীবন পথের প্রত্যেক পদবিক্ষেপে তিনিই রহিইয়াছেন । রাজর্ষি দায়ুদ গাহিয়াছেন, “আমি সাদাপ্রভুকে নিয়ত সম্মুখে রাখিয়াছি ; তিনি ত আমার দক্ষিণে, আমি বিচলিত হইব না “(গীত ১৬:৮)। SC 71.1
” তবে আমি কি রূপে আমি খ্রীষ্টের সহিত থাকিব ? ” এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতেছ ? প্রথমে তুমি তাহাকে যেরূপ গ্রহন করিয়াছ , ঠিক সেই ভাবে তাঁহার সহিত থাকিতে হইবে । “অতএব খ্রীষ্ট যীশুকে ,প্রভুকে যেমন গ্রহন করিয়াছ তেমনি তাঁহাতেই চল “(কল২:৬)। ধার্ম্মিক বাক্তি “বিশ্বাস হেতুই বাঁচিবে ” (ইব্রীয় ১০:৩৮) । সম্পূর্ণ রূপে ঈশ্বরের হইবার জন্য এবং তাহাকে সেবা ও মান্য করিবার জন্য তুমি ঈশ্বরে আত্ন-সমর্পণ করিয়াছ এবং খ্রীষ্টকে ত্রাণকর্ত্তা রূপে গ্রহন করিয়াছ। তুমি তোমার আপন পাপের জন্য প্রায়শ্চিও করিতে অথবা হৃদয় পরিবর্ত্তন করিতে পার না ; কিন্তু খ্রীষ্টে আত্ন সমর্পণ করিয়া তুমি এই বিশ্বাস করিয়াছ যে তিনি খ্রীষ্টের কারনে তোমার নিমিও এই সকল করিয়াছেন । বিশ্বাস দ্বারা তুমি খ্রীষ্টের হইয়াছ এবং বিশ্বাস দ্বারা আদানপ্রদানে তুমি তাহতে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইবে তোমার হৃদয়ে, বাসনা ও পরিচর্য্যা সমুদয় তাহাকে দান করিতে হইবে তাঁহার প্রয়োজনীয় আজ্ঞা সমূহ পালন করিবার জন্য তুমি আত্ন দান আর; এইরূপ দান করিবার পর, যিনি সমুদয় আশীর্ব্বাদের পূর্ণ সামপ্তি সেই খ্রীষ্টকে তোমার গ্রহন করিতে হইবে; তিনি তোমার হৃদয়ে থাকিবেন , তোমার শক্তি, ধার্ম্মিকতা ও চিরসহায় হইবেন, তোমাকে আজ্ঞা পালন করিবার শক্তি দান করিবেন ।SC 71.2
প্রতিদিন প্রভাতে ঈশ্বরের কাছে আত্ন-সমর্পণ কর; ইহাই যেন তোমার সর্ব্বপ্রথম কার্য্য হয়। তুমি এরূপে প্রার্থনা করিও ; “প্রভু ,আপনি আমাকে সম্পূর্ণরূপে আপনার করিয়া লউন্ । আমি আমার সমুদয় সঙ্কল্প আপানার চরনে রাখিয়া দিতেছি ।আপনার কার্য্যে অদ্য আমাকে ব্যবহার করুন ।আপনি আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকুন এবং আমার সমুদয় যেন আপনাতেই সম্পন্ন হয় । ” ইহা প্রতিদিনেরই কাজ । প্রতিদিন প্রভাতে ঐ দিবসের জন্য ঈশ্বরে আত্ন উৎসর্গ কর । তুমি তোমার সমুদয় সঙ্কল্প তাঁহার নিকটে সমর্পণ কর তিনি তাঁহার বিধান অনুযায়ী উহাদিগকে সফল অথবা পরিহার করিবেন । এইরূপে দিনের পর দিন তুমি ঈশ্বরের হস্তে তোমার জীবন অর্পণ করিতে থাকিবে এবং এইরূপে তোমার জীবন খ্রীষ্টের জীবনের অনুরূপ গঠিত হইতে থাকিবে। SC 72.1
যে জীবন খ্রীষ্টে আছে তাহা চিরশান্তিময় । সেখানে ভাবের আধিক্য না থাকিতে পারে কিন্তু চিরস্থায়ী ও শান্তিময় বিশ্বাস রহিয়াছে ।তোমার আশা তোমাতে নহে ,কিন্তু উহা খ্রীষ্টে রহিয়াছে তাঁহার শক্তির সহিত তোমার দুর্ব্বলতা জ্ঞানের সহিত অজ্ঞাতা,চিরস্থির প্রতাপের সহিত ত্রুটি একীভূত হইয়া গিয়াছে । সুতরাং তোমার আর নিজের দিকে চাহিতে হইবে না , অথবা নিজের কথা ভাবিতে হইবে না । শুধু খ্রীষ্টের দিকে চাহিলেই চলিবে । তাঁহার প্রেমের বিষয়ে এবং তাঁহার চরিত্রের মাধুর্য্য ও সিদ্ধতা বিষয়ে তোমার মন চিন্তা করিতে থাকুক । আত্নদানে খ্রীষ্ট, দীনতায় খ্রীষ্ট,শুচিতায় ও পবিত্রতায় খ্রীষ্ট, অনুপ্রম প্রেমে খ্রীষ্ট —ইহাই প্রকৃষ্ঠ ধ্যানের বিষয়। তাহাকে প্রেম করিয়া , তাঁহার অনুকরন করিয়া এবং সম্পূর্ণ রূপে তাঁহার উপর নির্ভর করিয়া তুমি তাঁহার সাদৃশ্যে রুপান্তরিত হইতে থাক ।SC 73.1
যীশু বলিয়াছেন আমাতে থাক । এই বাক্যটী দ্বারা বিশ্রাম স্থিতি ও নির্ভরতার ভাব প্রকাশ পাইয়া থাকে । আবার তিনি আহবান করিয়াছেন “আমার নিকটে আইস আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব “(মথি ১১:২৮)। গীত-সংহিতকারও এইরূপ ভাব প্রকাশ করিয়াছেন , “সদাপ্রভুর নিকটে নিরব হও তাঁহার অপেক্ষায় থাক “(গীত ৩৭:৭)। (বাইবেলের বাঙ্গালা অনুবাদে “নীরব” শব্দটীর ঠিক অর্থ প্রকাশক হয় নাই; সদাপ্রভুতে নির্ভর কর এবং তাঁহার অপেক্ষাইয় থাক —এইরূপ ভাবটি ইংরেজি বাইবেলে আছে )। ভাববাদী যিশাইয় এই আশ্বাস বানী দিয়াছেনঃ “শান্ত হইলে......, সুস্থির থাকিয়া বিশ্বাস করিলে তোমাদের পরাক্রম হইবে ” (যিশা ৩০:১৫)। অকর্ম্মন্য ভাবে বসিয়া থাকিলে ককন এই জাতীয় বিশ্বাস লাভ ঘটে না; কারন ত্রাণ কর্ত্তার আহ্বানে বিস্রামের অঙ্গীকার ,পরিশ্রমের অবশ্যকতার সহিত জড়িত রহিয়াছে ।“আমার যোঁয়ালি আপনাদের উপরে তুলিয়া লও ......... তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রানের জন্য বিস্রাম পাইবে” (মথি ১১:২৯)।যে হৃদয় সম্পুর্ন ভাবে খ্রীষ্টের উপরে অর্পিত তাহাই তাঁহার নিমিও পরিশ্রম করিবার জন্য অধিক ব্যাকুল ও ততপর হইবে।SC 73.2
মনঃ যখন নিজের চিন্তায় বিভোর থাকে, তখন উহা জীবন ও শক্তির মূল কারন , খ্রীষ্ট হইতে দুরে সরিয়া যায় ।এই নিমিও ত্রানকর্ত্তার নিকট হইতে মনকে দূরে সরাইয়া নিবার জন্য শয়তান সর্ব্বদা চেষ্টা করিতেছে এবং এই প্রকারে সেই খ্রীষ্টের সহিত আত্নার মিলনে ও সহভাগিতার বাঁধা জন্মাইতেছে । জাগতের সুখ ভোগ জীবনের বেদনা , কিংকওব্যবিমুঢ়তা ও দুশ্চিন্তা অপরের অপরাধ অথবা নিজের ত্রুটী ও অসম্পূর্ণতা প্রভৃতি ব্যাপারে যে কোন একটি বিষয়ে অথবা সকল গুলির প্র্তি শয়তান তোমার মনকে চালিত করতে চেষ্টা পাইতেছে। তাঁহার কু-অভিসন্ধিতে ভ্রান্ত হইও না । যাহারা বাস্তবিক বিবেক মত চলিয়া থাকে এবং ঈশ্বরের নিমিও বাঁচিয়া থাকিতে চায় শয়তান অনেক সময় তাহাদিগকে ও নিজ নিজ ত্রুটি ও দুর্ব্বলতা সমুহের প্রতি নিবিষ্ট থাকিবার প্রবৃওি জন্মাইয়া দেয় এবং এইরূপে তাথাদিগকে খ্রীষ্ট হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া জয় লাভের আশা করে । আমরা কখনই সার্থকে (অহংবুদ্ধিকে) কেন্দ্র করিয়া আমাদের পারিত্রান বিষয়ে কোন উদবেগ ও ভীতি পোষন করিব না । এই সমুদয় আত্নাকে আমাদের পরাক্রমের উৎস হইতে বিপথে নিয়া যাইবে । ঈশ্বরে আত্ন-সমর্পণ কর এবং তাহতেই বিশ্বাস স্থাপন কর । যীশুর বিষয় চিন্তা ও আলোচনা কর তাঁহাতে আত্ন বোধ হাইয়া ফেল । সকল সন্দেহ ত্যাগ কর ভীতিসমুহ দূর করিয়া দেও । প্রেরিত পৌলের সহিত এক বাক্যে বল ; ” আমি আর জীবিত নই কিন্তু খ্রীষ্ট আমাতে জীবিত আছেন ; আর এখন মাংসে থাকিতে আমার যে জীবন আছে , তাহা আমি বিশ্বাসে, ঈশ্বরের পুত্রে বিশ্বাসেই, যাপন করিতেছি ; তিনিই আমকে প্রেম করিলেন ,এবং আমার নিমিত্তে আপনাকে প্রদান করিলেন” (গালা ২:২০)। ঈশ্বরে নির্ভর কর । তুমি তাহাকে যাহা সমর্পন করিয়াছ , তাহা রক্ষা করিতে তিনি সম্পূন সমর্থ । যদি তুমি তোমাকে তাঁহার হস্তে অর্পণ কর , তবে তোমাকে প্রেম করিয়াছেন , তাহার মধ্য দিয়া তোমাকে অপেক্ষাও অধিক গৌরবে চালাইয়া নিবেন । SC 74.1
খ্রীষ্ট মানুষের প্রকৃতি গ্রহন করিয়া মানব জাতির সহিত আপনাকে এরূপ গভীর প্রেমের বন্ধনে বাধিয়া ফেলিলেন যে মানুষ ইচ্ছা করিয়া ছিন্ন না করিলে আর কোন শক্তি তাহা শিথিল করিতে পারিবে না । এই বন্ধন ছিন্ন করিবার জন্য, খ্রীষ্ট হইতে আমাদিগকে বিচ্ছিন্ন করিবার জন্য শয়তান সর্ব্বদা নানা প্রকার প্রলোভন দেখাইয়া আমাদিগকে লওয়াইতে চেষ্টা করিবে । কোন প্রকার প্রলোভনেও আমরা যেন অন্য প্রভু মনোনীত না করি , এজন্য সর্ব্বদা আমাদের সর্তক থাকিতে চেষ্টা ও প্রর্থনা করিতে হইবে ; কারন এই বিষয়ে আমরা একেবারে স্বাধীন । কিন্তু আমরা খ্রীষ্টের প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধ রাখিলে, তিনি আমাদিরগকে রক্ষা করিবেন খ্রীষ্টের প্রতীক্ষায় ছাহিয়া থাকিলে আমরা সর্ব্বদা নিরপদ । কিছুতেই আমাদিগকে তাঁহার হস্ত হইতে ঝাড়িয়া লইতে পড়ে না প্রতিনিয়ত তাহাকে দেখিতে দেখিতে আমরা “তেজ হইতে তেজ পর্যন্ত যেমন প্রভু হইতে, আত্না হইতে হইয়া থাকে , তেমনি সেই মূর্ত্তিতে স্বরুপান্তরীকৃত হইতেছি “(২ করি ৩:১৮)।SC 76.1
এইরূপে আদি শিষ্যগণ, তাহাদের প্রিয়তম ত্রাণকর্ত্তার সাদৃস্য লাভ করিয়াছিলেন ।সেই শিষ্যগণ যীশুর বাক্য শুনিবা মাত্র তাঁহার নিমিও তাহাদের অভাব বুঝিতে পারিলেন । তাহারা তাহাকে খুজিয়া বাহির করিয়া তাহাঁর অনুসরন করিলেন । গৃহে ভোজন কালে , নিজ্জন কক্ষে, ক্ষেএে তাঁহারা সর্ব্বদা তাঁহার সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন শিষ্যভাবে থাকিয়া তাঁহারা গুরুর মুখ হইতে প্রতিদিন পবিত্র সত্য সম্বন্ধিও শিক্ষা গ্রহন করিয়াছেন । তাঁহারা ভৃত্যভাবে থাকিয়া প্রভুর নিকট হইতে কর্ত্তব্য শিক্ষা করিয়াছেন । সেই সকল শিষ্যও “আমাদের ন্যায় সুখ দুঃখ ভোগী মানুষ ছিলেন “(যাকব ৫:১৭) । পাপের সহিত তাহাদের একিই যুদ্ধ করিতে হইআছে পবিত্র জীবন যাপন করিবার জন্য তাহাদের আমাদের ন্যায় একই করুণা লাভের প্রয়োজন ছিল ।SC 76.2
যিনি ত্রানকর্ত্তার সাদৃশ্য সর্ব্বাপেক্ষা অধিক প্রতিফলিত করিয়াছিলেন এমন কি সেই প্রিয়তম শিষ্য যোহনেরও প্রথমে চরিএে স্বাভাবিক মধুরতার অভাব ছিল । তিনি শুধু যে আত্ন-দাবী প্রতিষ্ঠায় ও সন্মানের নিমিও উচ্চাভিলাষী ছিলেন তাহাই নাহে , কিন্তু হঠকারী ছিলেন ও প্রতিশোধ লইবার নিমিও ক্রোধাবিষ্ট হইতেন । কিন্তু ঐস্বরিক শক্তি বিশিষ্ট পুরুষ-প্রবরের সহিত সাক্ষাত হইবা মাত্র তিনি আপন ত্রুটি দেখিতে পাইলেন এবং নিজের বিষয় সম্যক্ বুঝিতে পারিয়া বিনীত হইলেন । ঈশ্বর পুত্রের প্রতিদিনের জীবনে পরাক্রম ও ধৈয্য , শক্তি ও কোমলতা প্রতাপ ও মৃদুশীলতা দেখিতে পাইয়া তাঁহার আত্না প্রেম ও শ্রদ্ধায় পূর্ণ হইয়া গেল । দিনের পর দিন তাঁহার হৃদয় খ্রীষ্টের পানে আকৃষ্ট হইতে লাগিল, অবশেষে তিনি তাঁহার প্রভুর প্রেমে পূর্ণ হইয়া আত্মবোধ একেবারে হারাইয়া ফেলিলেন । তাঁহার উদ্ধত ও গর্বিত স্বভাব, খীষ্টের সংগঠন শক্তির নিকটে সমর্পণ করা হইল । পবিত্র আত্মার সঞ্জীবনী প্রভাবে তাঁহার অন্তর পুনরায় নবীভুত হইল খ্রীষ্টের প্রেমের শক্তি বলে তাঁহার চরিত্র রুপান্তরীকৃত হইল । যীশুর সহিত সম্মিলনের ইহাই সুনিশ্চিত ফল খ্রীষ্ট যখন হৃদয়ে বাস করেন, তখন সমুদয় প্রকৃতি রুপান্তরীকৃত হয় । খ্রীষ্টের আত্মা ও প্রেম হৃদয় কোমল ও আত্না পরাভূত করে এবং চিন্তা ও কামনারাশি স্বর্গ ও ঈশ্বরের পানে উত্তোলিত হয় খ্রীষ্টের স্বর্গের আহরন করিবার পরেও তাঁহার শিষ্যগন তাহার উপস্থিতি অনুভব করিতে লাগিলেন । এই উপস্থিতি প্রেম ও আলোকের পূর্ণ এবং উহা প্রত্যক্ষ অনুভহব করিতে পারা যায় । যিনি তাহাদের সহিত একসঙ্গে ভ্রমন, আলাপন ও প্রার্থনা করিয়াছিলেন, যিনি তাহাদের হৃদয়ে আশা ও সান্তনার কথা বলিয়াছিলেন । সে ত্রাণকর্ত্তা যীশুর মুখনিঃসৃত শান্তির বার্তা শেষ হইতে না হইতেই তাহাদের নিকট হইতে তিনি উর্দ্ধে নীত হইলেন এবং দূতগনের মেঘ তাহাকে গ্রহন করিতেই শিষ্যগন তাঁহার সুমধুর কণ্ঠরব শুনিতে পাইলেন; “আর দেখ আমিই যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি “(মথি ২৮:২০)। মানুষের আকার ধারন করিয়া তিনি স্বর্গে আরোহণ করিয়াছিলেন । তাহারা জানিতেন যে তিনি ঈশ্বরের সিংহাসনের সম্মুখে আছেন এবন তিনি তখনও তাহদের বন্ধু ও ত্রাণকরত্তা; তাঁহারা জানিতেন যে তাঁহার সহানুভূতির কোন পরিবর্ত্তন হইতে পারে না এবং তিনি তখনও দুঃখ কাতর মানব জাতির সহিত এক হইয়া রহিয়াছেন। তিনি তাহার মুক্তি প্রাপ্ত গনের ক্রয় মূল্যে স্মরনে, তাঁহার ক্ষতবিক্ষত হস্ত পদ দেখাইয়া ঈশ্বরের সম্মুখে তাঁহার আপন আমূল্য রক্তের গুনরাশি উপস্থিত করিতেছেন । তাঁহারা জানিতেন যে তাহাদের জন্য স্থান প্রস্তুত করিতে তিনি স্বর্গে গমন করিয়াছেন এবং পুনরায় তিনি পৃথিবীতে আসিয়া তাহাদিগকে আপনার নিকটে লইয়া যাইবেন ।SC 76.3
স্বর্গারোহনের পড়ে তাঁহারা একত্রিত হইয়া পিতার নিকটে যীশুর নামে তাহাদের অনুরোধ জানাইলেন ভয় মিশ্রিত ভক্তির সহিত প্রার্থনায় অবনত থাকিয়া তাঁহারা প্রভুর অঙ্গীকারবানী বলিতে লাগিলেন ,” পিতার নিকট যদি তোমরা কিছু যাচ্ঞা কর তিনি আমার নামে তোমাদিগকে তাহা দিবেন। এ পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু যাচ্ঞা কর নাই; যাচ্ঞা কর, তাঁহাতে পাইবে , যেন তোমাদের আনন্দ সম্পূর্ণ হয়” (যোহন ১৬:২৩,২৪)। তাঁহারা বিশ্বাসের হস্ত ক্রমশঃ উর্দ্ধে বিস্তিত করিয়া, নির্ভয়ে বলিলেন ” খীষ্ট যীশু ত মরিলেন, বরং উত্থাপিত হইলেন; আর তিনিই ঈশ্বরের দক্ষিনে আছেন আবার আমাদের পক্ষে আনুরোধ করি-তেছেন”(রোমীয় ৮:৩৪)। তারপর খীষ্ট যাহার সমন্ধে বলিয়াছিলেন,যে তিনি ” তোমাদের অন্তরে থাকিবেন ” (যোহন ১৪:১৭) পঞ্চাশওমী তাহাদিগকে সেই সহায়ের সম্মুখীন করিলেন । তিনি আর বলিয়াছিলেন “আমার যাওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল কারন আমি না গেলে, সে সহায় তোমাদের নিকট আসিবেন না; কিন্তু আমি যদি যাই ,তবে তোমাদের নিকট তাহাকে পাঠাইয়া দিব”(যোহন১৬:৭)। সেই অবধি আত্নার সাহায্যে খ্রীষ্ট চিরদিন । তাঁহার সন্তানগনের হৃদয়ে বাস করিতে থাকিবেন । স্বশরীরে তিনি তাঁহাদের সহিত যেরূপ ভাবে ছিলেন, তাহা অপেক্ষা আরও ঘনিষ্ঠভাবে তাঁহার সহিত সম্পর্ক থাকিবে ।অন্তর নিবাসী খ্রীষ্টের প্রভা, প্রেম ও শক্তি তাহাদের মধ্যে দিয়া প্রকাশিত হইতে লাগিল ; অন্যান্য সকলে তাহা দেখিয়া,“আশ্চর্য জ্ঞান করিলেন এবং চিনিতে পারিলেন যে, ইহারা যীশুর সঙ্গে ছিলেন ” (প্রেরিত ৪:১৩)। SC 78.1
খ্রীষ্ট তাঁহার আদি শিষ্যগনের নিকটে যেরূপ ছিলেন, তাঁহার অন্যান্য সন্তানগণের নিকটেও বর্তমানে সেইরূপ থাকিতে ইচ্ছা করেন; কারন তাঁহার অল্প সংখ্যক শীষ্যের সহিত শেষ প্রার্থনা কালে বলিয়া ছিলেন , ” আর আমি কেবল ইহাদেরি নিমিও নিবেদন করিতেছি , তাহা নয় , কিন্তু ইহাদের ব্যাক্য দ্বারা যাহারা আমাতে বিশ্বাস করে তাহাদের নিমিও করিতেছি “(যোহন ১৭:২০)SC 79.1
যীশু আমদের জন্য প্রার্থনা করিয়াছিলেন এবং তিনি যেরূপ পিতার সহিত এক ছিলেন সেইরূপ আমরাও যেন তাঁহার সহিত এক হইয়া থাকি, এই অনুরোধ করিয়াছেন । কি অপূর্ব্ব এই মিলন! ত্রাণকর্ত্তা নিজের সমন্ধে বলিয়াছেন , “পুত্র আপনা হইতে কিছুই করিতে পারেন না”(যোহন ৫:১৯),“পিতা আমাতে থাকিয়া আপনার কার্য্য সকল সাধন করেন ” (যোহন১৪:১০)।খ্রীষ্ট যদি আমাদের অন্তরে বাস করেন , তবে নিশ্চয়ই তিনি আমদের মধ্যে “আপন হিত সঙ্কল্পের নিমিও......ইচ্ছা ও কার্য্য উভয়ের সাধনকারী ” (ফিলি ২:১৩) কার্য্য সম্পর্ন্ন করিবেন । তিনি যেরূপ কার্য্য করিয়াছেন আমরাও , সেইরূপ কার্য্য করিব আমরাও সেইরূপ আত্না প্রদর্শন করিব । এই প্রকারে তাহাকে প্রেম করিয়া এবং তাহাতে থকিয়া আমরা যেন “তাহা পর্যন্ত সমুদয় বিষয় বাড়িয়া উঠি যিনি শরীরটির মস্তক অর্থাৎ খ্রীষ্ট পর্যন্ত “(ইফি ৪:১৫- বম্ওয়েচ্ কৃত অনুবাদ )SC 79.2