Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents

খ্রীষ্টের দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা

 - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First
    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents

    বর্তমানের মণ্ডলী

    দ্রাক্ষাক্ষেত্রের দৃষ্টান্তটি কেবল যিহুদী জাতির উদ্দেশ্যেই বলা হয় নি। এই শিক্ষা আমাদের জন্যও। বর্তমান সময়ে মণ্ডলীকে ঈশ্বর মহা সুযোগ এবং আশীর্বাদ দিয়ে দায়িত্ব অর্পন করেছেন। আর ঈশ্বর চান যেন তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী মণ্ডলী দায়িত্ব পালন করে। COLBen 280.3

    অত্যন্ত মূল্য দ্বারা আমাদের বন্দিত্ব থেকে মুক্ত করা হয়েছে। কেবল মাত্র এই উদ্ধার কাজের মহত্বের দ্বারা আমরা এর ফল প্রকাশ করতে পারি। এই পৃথিবীর উপরে, পৃথিবী যে, যার মাটি ঈশ্বরের পুত্রের চোখের জল এবং, রক্ত দ্বারা সিক্ত হয়েছে, যাতে পরমদেশের মহামূল্যবান ফল আনা হয়েছে। ঈশ্বরের লোকদের জীবনে তাঁর বাক্যের সত্য তাদের গৌরব ও গুণকে প্রকাশ করে। তার লোকদের মধ্য দিয়ে খ্রীষ্ট তাঁর চরিত্র এবং তাঁর রাজ্যের নীতি প্রকাশ করেছেন। COLBen 280.4

    শয়তান ঈশ্বরের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট থাকে এবং সে অব্যাহতভাবে লোকদের প্ররোচিত করে যাতে তারা তার নীতি গ্রহণ করে। সে হল ভাইদের দোষারোপকারী এবং তার দোষারোপের ক্ষমতা যারা ধার্মিকতার পক্ষে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে। ঈশ্বর চান যেন তাঁর লোকেরা প্রকৃত নীতির প্রতি বাধ্যতার ফল দেখানোর মধ্য দিয়ে শয়তানের অভিযোগের উত্তর দেয়। COLBen 281.1

    একজন খ্রীষ্টানের জীবনে, মণ্ডলীসমূহের মধ্যে এবং প্রভুর কাজের জন্য স্থাপিত প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই নীতি প্রকাশ করতে হবে ব্যক্তিগত ভাবে। পৃথিবীর জন্য যা করা যায় সব কিছুই হবে এর প্রতীক। তারা হবে সুসমাচারের সত্যের রক্ষাকারী আদর্শ। তারা সবাই হবে মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের মহান উদ্দেশ্যের পরিপূর্ণতার মাধ্যমে। COLBen 281.2

    যিহুদী নেতারা তাদের জাঁকজমকপূর্ণ উপাসনাগৃহের জন্য অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে এবং তাদের ধর্মীয় কার্যকলাপের জমকাল অনুষ্ঠানের জন্য গর্ব বোধ করত। কিন্তু তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার, দয়া, এবং ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসার তীব্র অভাব ছিল। উপাসনাগৃহের গৌরব তাদের অনুষ্ঠানের জাঁকজমকত্ব ইত্যাদি তাদের ঈশ্বরের কাছে বিশ্বাসযোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে নি। এই জন্য ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা গ্রহণযোগ্য, তা তারা উৎসর্গ করে নি। তারা নম্রতা এবং অনুতাপের হৃদয় উৎসর্গ করার জন্য তাঁর কাছে আসে নি। ঈশ্বরের রাজ্যের অপরিহার্য নীতিকে বর্জন করার ফলে তাদের অনুষ্ঠানগুলো কেবল বাহুল্য এবং অযৌক্তিক ক্রিয়াকা-হিসাবেই গণ্য হয়েছিল। বর্তমান সময়ের মণ্ডলীসমূহকে ঈশ্বর মহা সুযোগ এবং আশীর্বাদ দিয়ে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। আর ঈশ্বর চান যেন তার প্রত্যাশা অনুযায়ী মণ্ডলী দায়িত্ব পালন করে।COLBen 281.3

    যখন চরিত্র গঠনের কাজকে অবহেলা করা হয়, যখন আত্মার সৌন্দর্যের অভাব ঘটে, যখন ঈশ্বর ভক্তির সরলতা আর দেখতে পাওয়া যায় না তখন তা হয়ে যায় মণ্ডলীর উপাসনা গৃহের চমৎকারীত্বের দাবী করার মত কাজ। সমস্ত গর্ব এবং ভালবাসা তখন উপাসনাগৃহকে কেন্দ্র করেই ঘটে, তাদের উপাসনাগুলো হয়ে ওঠে জমকালো এবং অনুষ্ঠানগুলো পরিণত হয় অন্তঃসারশূণ্য অনুষ্ঠানে। ঈশ্বর এতে সম্মানিত হন না। ফ্যাশন সমৃদ্ধ ধর্ম যার অনুষ্ঠানগুলো ছিল ভনিতা এবং কেবল প্রদর্শনীস্বরূপ, যা ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। এই সব অনুষ্ঠানে স্বর্গ থেকে আশীর্বাদের কোন সাড়া আসত না। COLBen 282.1

    মণ্ডলী ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অত্যন্ত মূল্যবান। তিনি এর বাহ্যিক মূল্যায়ন করে না। কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি ভক্তির জন্য মূল্যায়ন করেন যা জগত থেকে মণ্ডলীকে আলাদা করে। মণ্ডলীর সদস্যদের খ্রীষ্ট সম্পর্কে জ্ঞানের বৃদ্ধি এবং তাদের আত্মিক অগ্রগতি অনুযায়ী তিনি এর মান বিচার করেন। COLBen 282.2

    খ্রীষ্ট তাঁর দ্রাক্ষাক্ষেত্র থেকে পবিত্রতা এবং নিঃস্বার্থ কাজের ফল গ্রহণ করার জন্য ক্ষুধার্ত থাকেন। তিনি ভালবাসার এবং সততার নীতি প্রত্যাশা করেন। যারা খ্রীষ্টকে উপস্থাপন করে তাদের চরিত্র এবং মানসিকতার মধ্যে যে সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, তার সঙ্গে অন্য যে কোন কলাকৌশলের সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলনা হতে পারে না। এটি হল অনুগ্রহের প্রভাব যা বিশ্বাসীদের হৃদয়কে বেষ্টন করে রাখে। মন এবং অন্তরের উপর পবিত্র আত্মা কাজ করে থাকেন, তার জীবন হয়ে ওঠে সুগন্ধযুক্ত জীবন এবং তার কাজের মধ্যে ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করতে সমর্থ হয়। COLBen 282.3

    যারা মণ্ডলীর সদস্য দেশের মধ্যে তারা খুব দরিদ্র হতে পারে। এমনও হতে পারে, আকর্ষণ করতে পারে, বাহ্যিকভাবে দেখানোর মত এমন কোন কিছুই তাদের মধ্যে নেই। কিন্তু যদি মণ্ডলীর সদস্যরা খ্রীষ্টের চরিত্রের নীতিতে জীবন যাপন করে তাহলে তার আনন্দ তারা লাভ করতে পারবে। তারা যখন উপাসনা করবে তখন স্বর্গদূতরা তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। কৃতজ্ঞতাপূর্ণ হৃদয় থেকে প্রশংসা এবং ধন্যবাদ সুগন্ধি ধূপের মত ঈশ্বরের কাছে উঠে যায়।COLBen 282.4

    প্রভু চান যেন আমরা তার দয়ার কথা প্রকাশ করি এবং তার ক্ষমতার কথা লোকদের বলি। প্রশংসা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে তিনি সম্মানিত হন। তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি স্তরের বলি উৎসর্গ করে, সেই আমার গৌরব করে”, গীতসংহিতা ৫০:২৩। ইস্রায়েল জাতি যখন মরুভূমির মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেছিল তখন তারা ঈশ্বরের আজ্ঞাসমূহ এবং প্রতিজ্ঞাগুলো বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত করে কনান দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রাকারী তীর্য যাত্রীদল সারাপথ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গান গেয়েছিল। আর কনান দেশে গিয়ে তারা নীরব থাকে নি। মরুভূমির মধ্য দিয়ে যাত্রা করার সময় তারা ঈশ্বরের যে মহা মহা আশ্চর্য কাজ দেখেছিল কনান দেশে এসে সেই সমস্ত বিষয় স্মরণ করে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ধন্যবাদের বলি উৎসর্গ করেছিল এবং মরুভূমিতে থাকাকালীন সময় যে সমস্ত পর্ব পালন করেছিল সেই সব পর্ব তারা কনান দেশে এসেও অব্যাহতভাবে পালন করেছিল। ঈশ্বরের ইচ্ছা এই যেন তাঁর লোকদের সমগ্র জীবন প্রশংসার জীবন হয়। “এভাবে পৃথিবীতে তাঁর পথ এবং সমস্ত জাতির মধ্যে তাঁর পরিত্রাণ বিদিত হয়।” গীতসংহিতা ৬৭:২। COLBen 282.5

    বর্তমানেও এই রকম হওয়া আবশ্যক। পৃথিবীর লোকেরা মিথ্যা দেবতার আরাধনা করছে। তারা তাদের ভ্রান্ত উপাসনার পথ ছেড়ে ফিরে আসবে তবে তা তাদের প্রতিমার নামে প্রকাশ্যে নিন্দার কথা শুনে নয় কিন্তু উত্তম কিছু দেখে। “তোমরাই আমার সাক্ষী, ইহা সদাপ্রভু কহেন, আর আমিই ঈশ্বর।” যিশাইয় ৪৩:১২। COLBen 283.1

    আমাদের কাছে ঈশ্বর এই প্রত্যাশা করেছেন যেন আমরা পাপের মুক্তির মহা পরিকল্পনার জন্য কৃতজ্ঞ থাকি, যেন ঈশ্বরের সন্তান হিসেবে আমাদের যে বিশেষ অধিকার রয়েছে তা উপলব্ধি করতে পারি এবং বাধ্যতা এবং কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদের হৃদয় নিয়ে তার সঙ্গে পথ চলি। তার ইচ্ছা এই যেন আমরা জীবনের নতুনতায় প্রতিদিন আনন্দের সঙ্গে তাঁর সেবা করি। তিনি চান আমাদের হৃদয় কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ থাকে, কারণ আমাদের নাম মেষশাবকের জীবনপুস্তকে লিখিত আছে, কারণ আমাদের সমস্তভার তাঁর উপর অর্পন করতে পারি, যিনি আমাদের দেখাশুনা করতে সক্ষম। তিনি আমাদের আদেশ দিয়েছেন যেন আমরা আনন্দ করি, কারণ আমরা প্রভুর উত্তরাধিকার, কারণ খ্রীষ্টের ধার্মিকতা হল তার ধার্মিক ব্যাক্তির শুক্ল বস্ত্র কারণ আমাদের ত্রাণকর্তা শীঘ্র আগমনের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য আমরা প্রত্যাশা করেছি।COLBen 283.2

    সম্পূর্ণভাবে এবং হৃদয়ের আন্তরিকতায় ঈশ্বরের প্রশংসা প্রার্থনার মতই একটি বড় কাজ। সমস্ত পতিত মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের আশ্চর্য ভালোবাসা যা আমরা গ্রহণ করেছি তা জগতকে এবং স্বর্গের সমস্ত বুদ্ধিমান প্রাণীদের আমাদের দেখাতে হবে যে, সেই স্বর্গীয় সংবাদ জানাতে হবে, এবং তার অনন্ত পরিপূর্ণতা থেকে যে অফুরন্ত আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য আমরা প্রত্যাশা করছি তা তাদের কাছে বলতে হবে। আমাদের জীবনের মহা মূল্যবান অভিজ্ঞতা যা আমরা লাভ করেছি, সে বিষয়ে আমরা যা করতে পারি তার চেয়ে অনেক বেশি আমাদের সাক্ষ্য বহন করতে হবে। পবিত্র আত্মার বিশেষ বর্ষণের পর প্রভুতে আমাদের আনন্দ, প্রভুর ক্ষেত্রে পরিচর্যায় আমাদের দক্ষতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে তাঁর দয়া, এবং তাঁর সন্তানদের পক্ষে আশ্চর্যকাজের কথা অন্যদের কাছে বলার মাধ্যমে। COLBen 284.1

    এই সব অনুশীলনের ফলে শয়তানের ক্ষমতা নিক্রিয় হয়ে পড়ে। তারা বিরক্ত, অসন্তোষ তার অভিযোগের মনোভাবকে দূরে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয় এবং তাদের মেজাজ মাটিতে মিশে যায়। তারা সেই চরিত্রের গুণগুলো অনুশীলন করবে যা এই পৃথিবীতে বাসকারীরা স্বর্গের প্রাসাদের জন্য উপযুক্ত হতে পারে।COLBen 284.2

    এই রকম সাক্ষ্য অন্যদের উপর প্রভাব বিস্তার করবে। খ্রীষ্টের পক্ষে আত্মা জয় করার জন্য এর চেয়ে বেশি কার্যকর আর কিছুই নেই। COLBen 284.3

    সুস্পষ্টভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে আমাদের ঈশ্বরের প্রশংসা করতে হবে আমাদের সমস্ত ক্ষমতার দ্বারা তাঁর নামের গৌরবকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর যে দানের অংশী করেছেন, তা অন্যদের দিতে হবে। আর এভাবেই তাঁর চরিত্র সম্পর্কে জগতের লোকদের কাছে জানানো সম্ভব হবে। যিহুদীদের আর্থিক সংগতি অনুসারে দান এবং উপহার দেয়ার নিয়ম ঈশ্বরের উপাসনার অত্যাবশ্যকীয় অংশ। ইস্রায়েলীয়রা এই শিক্ষা পেয়েছিল যে উপাসনা গৃহের সেবা কাজের জন্য তাদের সমস্ত আয়ের দশমাংশ দেয়া অবশ্য কর্তব্য। এছাড়াও তারা পাপার্থক বলির জন্য দান, সেচ্ছাকৃত দান, এবং ধন্যবাদের উপহার নিয়ে আসত। এর উদ্দেশ্য ছিল যেন ঐ সময়ে ঈশ্বরের বাক্য প্রচারের জন্য এই সব সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। প্রাচীনকালে ঈশ্বর তাঁর লোকদের কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করতেন বর্তমানে আমাদের কাছ থেকে তার চেয়ে কম প্রত্যাশা করেন না। আত্মার পরিত্রাণের জন্য যে মহৎ কাজ তা অবশ্যই সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দশমাংশ এবং এর সঙ্গে দান ও উপহার, তিনি এই কাজে ব্যবহারের জন্য বন্দোবস্ত করেছেন। তিনি চান যেন এভাবেই সুসমাচার প্রচারের ব্যয়ভার বহন করা হয়। দশমাংশ তার নিজের বলে তা তিনি দাবি করেন এবং এটি ধর্মীয় কাজে পবিত্র উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য, এটি তার কোষাগারে জমা করতে হবে। তিনি আমাদের কাছ থেকে স্বেচ্ছাকৃত দান এবং কৃতজ্ঞতার উপহার চান। এর সবকিছুই পৃথিবীর শেষ সীমা পর্যন্ত সুসমাচার পৌঁছে দেবার কাজের জন্য উৎসর্গীত হবে।COLBen 284.4

    ঈশ্বরকে সেবা ব্যক্তিগত প্রচার কাজের সঙ্গে যুক্ত। আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরা জগতকে রক্ষা করার জন্য কাজ করব। খ্রীষ্টের আদেশ, “তোমরা সমুদয় জগতে যাও, সমস্ত সৃষ্টির নিকট সুসমাচার প্রচার কর,” মার্ক ১৬:১৫। এটি তাঁর সমস্ত অনুসারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন। যারা খ্রীষ্টের জীবনকে ধারণ করেছেন তাদের প্রত্যেকের উচিত অন্য লোকদের পরিত্রাণের জন্য কাজ করা। তাদের হৃদয়ের স্পন্দন খ্রীষ্টের হৃদয়ের স্পন্দনের সঙ্গে মিল থাকতে হবে। যাদের কাছে সুসমাচার দেয়া হবে সেই সব মানুষের জন্য তার একই আকাঙ্খা রয়েছে। সবার পক্ষে একই জায়গায় কাজ করা সম্ভব নয়। কিন্তু সকলের জন্য একটি জায়গা এবং একটি কাজ রয়েছে। COLBen 285.1

    প্রাচীনকালে অব্রাহাম, ইসহাক, যাকোব, তাদের নম্রতা ও প্রজ্ঞা দিয়ে, যিহোশূয় তার বিভিন্নভাবে দক্ষতা দেখিয়ে ঈশ্বরের কাজে ব্যাপৃত ছিলেন। মরিয়মের সঙ্গীত, দবোরার সাহস ও ঈশ্বর ভক্তি, রূতের শাশুড়ির প্রতি শ্রদ্ধা, শমূয়েলের বাধ্যতা ও বিশ্বস্ততা, এলিয়ের দৃঢ় আনুগত্য, ইলিশায়ের কোমলতা, জয় করার প্রভাব—সব কিছুর প্রয়োজন ছিল। এভাবে ঈশ্বর যাদের উপর তার আশীর্বাদ দান করেছেন তাদের যথাযথ কাজের মাধ্যমে সাড়া দিতে হবে। প্রতিটি দান তাঁর রাজ্য বৃদ্ধি এবং তাঁর নামের গৌরবের জন্য ব্যবহার করতে হবে। COLBen 285.2

    যারা খ্রীষ্টকে তাদের ব্যাক্তিগত ত্রাণকর্তা হিসেবে গ্রহণ করেছেন তাদের সুসমাচারের সাক্ষ্য এবং জীবনের উপর এর রক্ষাকারী ক্ষমতা প্রকাশ করতে হবে। এটি পূর্ণ করার জন্য ঈশ্বর যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এছাড়া অন্য কোন কিছুর আবশ্যকতা ঈশ্বর রাখেন নি। ঈশ্বর যা চান আমরা তার সবকিছুই খ্রীষ্টের অনুগ্রহের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে পারি। ঈশ্বরের লোকদের মধ্য দিয়ে স্বর্গের সমস্ত ধন প্রকাশ পাবে। “ইহাতেই আমার পিতা মহিমান্বিত হন”, খ্রীষ্ট বলেছেন, “তোমরা প্রচুর ফলে ফলবান হও, আর তোমরা আমার শিষ্য হইবে”, যোহন ১৫:৮। COLBen 285.3

    ঈশ্বর সমস্ত পৃথিবীকে তাঁর দ্রাক্ষাক্ষেত্র হিসেবে দাবি করেন। এটি এখন অন্যায়কারীদের হাতে থাকলেও এর মালিক এবং এর অধিকারী হলেন ঈশ্বর। তিনি যে সৃষ্টিকার্য করেছেন পাপের মুক্তির কাজের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। জগতের জন্য খ্রীষ্ট নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। “কারণ ঈশ্বর জগতকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্রকে দান করিলেন।” যোহন ৩:১৬। এটি এমনই যে দানের মধ্য দিয়ে অন্য সকল মানুষ এর অংশী হতে পারবে। প্রতিদিন সমস্ত জগত ঈশ্বরের কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করছে। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা, প্রতিটি আলোর রশ্মি আমাদের অকৃতজ্ঞ মানব জাতির উপর বর্ষিত হচ্ছে। প্রতিটি পাতা, এবং ফুল, এবং ফল ঈশ্বরের দীর্ঘসহিষ্ণুতা, এবং তাঁর মহান ভালোবাসার সাক্ষ্য বহন করে। COLBen 286.1

    মহান দাতাকে কি প্রতিদান দেয়া হচ্ছে? ঈশ্বরের দাবী পূর্ণ করার জন্য মানুষ কি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে? কাদের কাছে তাদের জীবন ধারন করার জন্য মানব জাতির বার্তা দেয়া হয়েছিল? তারা ধন দৌলতের সেবা করছে। এই জগতে ধন সম্পদ লাভ করা, সমাজের উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হওয়া, এবং আমোদ আর সুখ ভোগ করাই তাদের লক্ষ্য। লুণ্ঠন করার মাধ্যমে তারা সম্পদ লাভ করে, কেবল মানুষের নয়, কিন্তু একইভাবে ঈশ্বরের কাছ থেকেও তারা লুণ্ঠন করার চেষ্টা করে। স্বার্থপরভাবে নিজেদের সন্তুষ্ট করার জন্য তারা তার দান ব্যবহার করে। তাদের লোভ এবং তাদের স্বার্থপর সুখভোগের প্রতি তাদের ভালোবাসাকে চরিতার্থ করার জন্য সবকিছুই তারা আঁকড়ে ধরে। COLBen 286.2

    বর্তমান জগতের পাপ হলো সেই পাপ যা, ইস্রায়েল জাতির উপর ধ্বংস এসেছিল। বর্তমানে তারা জগতের ধ্বংস ডেকে আনছে। ঈশ্বরের প্রতি অকৃতজ্ঞতা, সুযোগ ও আশীবাদের প্রতি অবহেলা, ঈশ্বরের উপহারের আত্মসাৎ, এই সব দ্বারা কৃত পাপই ইস্রায়েলের কাছে ঈশ্বরের কোপ ডেকে এনেছিল। আর এগুলোই বর্তমান জগতে ধ্বংস ডেকে আনছে। খ্রীষ্ট যিরুশালেমের মন্দ অবস্থার দিকে তাকিয়ে তাঁর চোখের জল ফেলেছিলেন। কিন্তু কেবল তাঁর মনোনীত যিরুশালেম শহরের জন্যই কাঁদেন নি। COLBen 286.3

    যিরুশালেমের পরিণতির মধ্যে তিনি জগতের ধ্বংসকে দেখতে পেয়েছিলেন। COLBen 287.1

    “তুমি, তুমিই যদি আজিকার দিনে, যাহা যাহা শান্তিজনক, তাহা বুঝিতের। কিন্তু এখন সে সকল তোমার দৃষ্টি হইতে গুপ্ত রইল। লূক ১৯:৪২। COLBen 287.2

    “তুমি আজিকার দিনে।” তার খুব কাছাকাছি দিন চলে এসেছে। দয়া এবং সুযোগের সময় প্রায় শেষ। প্রতিশোধের মেঘ জমা হচ্ছে। ঈশ্বরের অনুগ্রহ প্রত্যাখ্যানকারীরা খুব দ্রুত এবং অপূরণীয় ধ্বংসের মধ্যে নিজেকে জড়িত করতে যাচ্ছে। COLBen 287.3

    তবুও পৃথিবীর মানুষ ঘুমিয়ে আছে। লোকেরা তাদের প্রতিফলের সময় সম্পর্কে জানে না। COLBen 287.4

    এই সঙ্কটকালে, কোথায় মণ্ডলীর দেখা পাব? এর সদস্যরা কি ঈশ্বরের দাবী মেটাচ্ছে? তারা কি তাঁর আদেশ পূর্ণ করেছে এবং তাঁর চরিত্র জগতের লোকদের কাছে প্রকাশ করেছে? তারা কি তাদের সহমানবদের কাছে সতর্কতার শেষ দয়াপূর্ণ সংবাদ দিয়ে তাদের সজাগ করেছে? COLBen 287.5

    মানুষ বিপদগ্রস্থঅবস্থায় আছে। লোকেরা জীবন হারাচ্ছে। কিন্তু প্রকাশ্যে খ্রীষ্টিয়ান বলে দাবি করা খুব অল্প সংখ্যক খ্রীষ্টের অনুসারীরা কেবল তাঁর কথা অন্যদের কাছে তুলে ধরার জন্য দায়ভার আছে বলে মনে করছে। পৃথিবীর গন্তব্য পাল্লায় ঝুলে রয়েছে; এই অবস্থা দূর হচ্ছে না। যারা দাবি করে যে তারা খ্রীষ্টের অনুসারী তাদের মধ্যে অনেকেই সত্য থেকে দূরে অবস্থান করছে, যা তাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে ভালোবাসার অভাব ছিল; ও জন্য খ্রীষ্ট স্বর্গের সিংহাসন ছেড়ে মাটির পৃথিবীতে এসেছিল এবং মানুষের স্বভাব গ্রহণ করেছিলেন, এমনই যেন মানুষ ঈশ্বরের কাছে আকর্ষিত করতে পারে। আর ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে অচেতন এবং পক্ষাঘাতের মত অবস্থা বিরাজ করছে। এই অবস্থা যথা সময়ে যথাযথ দায়িত্ব পালন করার মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব।COLBen 287.6

    ইস্রায়েল জাতি যখন কনান দেশে প্রবেশ করেছিল, তখন তারা সমস্ত দেশ অধিকার করেনি। তারা এভাবেই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যপূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। তারা কনান দেশের আংশিক দখল করার পর তাদের বিজয়ের ফল লাভের আনন্দ অনুষ্ঠান করেছিল। নতুন নতুন অঞ্চল দখল করার পরিবর্তে তারা তাদের অবিশ্বস্ততা এবং অসার ভালোবাসার মনোভাব নিয়ে এক স্থানে একত্রিত হয়েছিল। এভাবেই তারা নিজেদের ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। ঈশ্বরের কাছে তাদের ব্যর্থতার জন্য পূর্ণ হয়নি। তাদের প্রতি তাঁর আশীর্বাদের প্রতিজ্ঞার পূর্ণতাকে তারা অসম্ভব করে তুলেছিল। বর্তমান মণ্ডলী সমূহ কি একই রকম কাজ করছে না? সমস্ত পৃথিবীর মানুষের কাছে সুসমাচার তুলে দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু নামধারী খ্রীষ্টিয়ানরা যেখানে সুসমাচার নিয়ে আনন্দ করতে পারবে বলে তারা মনে করে, সেখানে তারা সমবেত হয়। অথচ যারা সুসমাচার শোনেনি তাদের কাছে সুসমাচার পৌঁছে দেবার কারণে তারা আনন্দ করে না। নতুন জায়গায় গিয়ে সুসমাচার প্রচার করে লোকদের প্রভুর জন্য জয় করার যে প্রয়োজন রয়েছে তা তারা উপলব্ধি করে না। তারা খ্রীষ্টের মহান আদেশ পালন করতে সম্মত নয়, “তোমরা সমুদয় জগতে যাও, সমস্ত সৃষ্টির নিকট সুসমাচার প্রচার কর।” মার্ক ১৬:১৫। তারা কি যিহুদীদের মণ্ডলীর চেয়ে কম দোষী? COLBen 288.1

    যারা খ্রীষ্টের শিষ্য বলে দাবী করে তারা স্বর্গীয় বিশ্বেও পরীক্ষাধীনে আছে; কিন্তু তাদের আগ্রহের শীতলতা, ঈশ্বরের কাজে তাদের প্রচেষ্টার দুর্বলতা তাদের অবিশ্বস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যা কিছু তারা করেছে যদি এর চেয়ে আরো ভালো কিছু করত তাহলে তাদের উপর দোষারোপ করা হত না। কিন্তু তাদের হৃদয় যদি কাজে ব্যাপৃত থাকত তাহলে, তারা আরও অনেক কিছু করতে পারত। তারা জানে এবং জগতও জানে যে, নিজেকে অস্বীকার করলে এবং ক্রুশ বহন করলে, জগতের সব কিছু তারা হারাবে। অনেকে আছেন যারা নিজেকে অস্বীকার করেছে এবং নিজ ক্রুশ বহন করেছে। তাদের নাম স্বর্গের পুস্তকে লেখা হয়েছে। কিন্তু অনেকে নামধারী বিশ্বাসী আছে যারা খ্রীষ্টের নাম বহন করার দ্বারা, তার মহিমাকে অন্ধকারময় করেছে, তার সৌন্দর্যকে ঢেকে ফেলেছে, তার সম্মানকে ধুলিস্মাৎ করেছে।COLBen 288.2

    এমন অনেকে আছেন যাদের নাম মণ্ডলীর খাতায় লেখা আছে, কিন্তু তারা খ্রীষ্টের নিয়ম অনুসারে চলছে না। তারা তাঁর নির্দেশের প্রতি মনোযোগ দেয় না এবং তাঁর কাজও করে না। এই জন্য তারা শত্রুর নিয়ন্ত্রণে থাকে। তারা যথার্থ ভালো কিছু করে না। এই জন্য তারা অসংখ্য ক্ষতিকর কাজ করছে। যেহেতু তারা জীবনের সুগন্ধের জন্য কোন চেষ্টা করেনি তাই মৃত্যুও দুর্গন্ধের দিকে তাদের জীবন চালিত হয়েছে। COLBen 289.1

    প্রভু বলেছেন, “আমি কি এই সকলের প্রতিফল দিব না,” যিরমিয় ৫:৯। ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল বলে ইস্রায়েল সন্তানদের অগ্রাহ্য করা হয়েছিল এবং ঈশ্বর অন্য লোকদের কাছে তার নিমন্ত্রণ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। যদি তারাও নিজেদেরকে অবিশ্বস্ত হিসেবে প্রমাণ করে তাহলে কি তারা একই ভাবে প্রত্যাখ্যাত হবে না?COLBen 289.2

    দ্রাক্ষাক্ষেত্রের দৃষ্টান্তমূলক গল্পের কৃষকদের খ্রীষ্ট দোষী বলে উল্লেখ করেছেন। এরা ছিল তারাই যারা তাদের মালিককে তার জমির ফল দিতে অসম্মত হয়েছিল। যিহুদী জাতির মধ্যে যে সমস্ত যাজক এবং ধর্ম শিক্ষকরা ছিল তারাই তাঁর লোকদের ভুল পথে চালিত করেছিল; এবং ঈশ্বর যে কাজ তাদের কাছ থেকে চেয়েছিলেন তা থেকে তারা বঞ্চিত করেছিল। এরাই ছিল তারা যারা লোকদের খ্রীষ্টের কাছ থেকে অন্য দিকে সরিয়ে দিয়েছিল। COLBen 289.3

    মানুষের তৈরি নিয়মের সঙ্গে ঈশ্বরের নিয়ম মিশ্রিত হয়নি এটা খ্রীষ্টের চরম বাধ্যতা-ই প্রকাশ করেছে। এই ধর্মশিক্ষকদের কাজ শত্রুতা আর বিদ্বেষকে জাগিয়ে তুলেছিল। তারা মানুষের শিক্ষাকে ঈশ্বরের রাজ্যের উপরে স্থাপন করেছিল এবং লোকদের তাঁর শিক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল। ঈশ্বরের বাক্য পালনের জন্য মানুষের তৈরি নিয়মগুলো তারা পরিত্যাগ করে নি। সত্যের জন্য, তাদের গর্বের বিষয়গুলো এবং মানুষের প্রশংসার বিষয়গুলো পরিত্যাগ করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তারা তা করে নি। যখন খ্রীষ্ট এসে জাতির কাছে ঈশ্বরের দাবী উপস্থাপন করলেন, তখন যাজক এবং প্রাচীনরা তাদের এবং লোকদের মধ্যে তাঁর মধ্যস্ততা করার অধিকারকে অস্বীকার করল। তারা তার অভিযোগ এবং সতর্কবার্তাকে গ্রহণ করল না। তারা লোকদের তার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে তোলার কাজে লিপ্ত হল এবং তাকে ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র করতে লাগল। COLBen 289.4

    খ্রীষ্টকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য যে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল এর জন্য তারা দায়ী ছিল। একটি জাতির পাপ এবং একটি জাতির ধ্বংস, ধর্মীয় নেতাদের পাওনা ছিল। COLBen 290.1

    বর্তমান সময়ে কি কাজের মধ্যে একই রকম প্রভাব দেখা যায় না? মালিকের দ্রাক্ষাক্ষেত্রের কৃষকদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যিহুদী নেতারা কি তাদের পা ফেলেনি? ঈশ্বরের বাক্য পালনের আবশ্যকতা থেকে ধর্মীয় নেতারা কি লোকদের দূরে সরিয়ে রাখে নি? ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি বাধ্যতার বিষয়ে শিক্ষা দেয়ার বদলে তারা কি আজ্ঞা লঙ্ঘনের বিষয়ে শিক্ষা দেয় নি? মণ্ডলীর অনেক পুলপিট থেকে লোকদের কাছে ঈশ্বরের যে বাক্য শিক্ষা দেয়া হয়, তাতে তাদের বাধ্যবাধকতার কিছু থাকে না। মানুষের ঐতিহ্য, অধ্যাদেশ, এবং প্রাকে মহিমান্বিত করা হয়। যখন ঈশ্বরের দাবিকে অবজ্ঞা করা হয় তখন ঈশ্বরের দান মানুষের কাছে প্রয়োজনহীন বলে মনে হবে।COLBen 290.2

    ঈশ্বরের নিয়মকে পাশে সরিয়ে রাখার ফলে মানুষ কি করছে তা সে বুঝতে পারে না। ঈশ্বরের আজ্ঞা হল তার প্রতিরূপ। এটি তাঁর রাজ্যের নীতিকে বাস্তব রূপ দান করে। যে এই সব নীতিকে প্রত্যাখ্যান করে সে নিজেকে সেই নদী থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখে যেখানে ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রবাহিত হয়। COLBen 290.3

    কেবল ঈশ্বরের আদেশের প্রতি বাধ্যতার মধ্য দিয়ে গৌরবময় সম্ভবনাকে উপলব্ধি করতে পারত। চরিত্রের একই উচ্চতা, আশীর্বাদের একই পূর্ণতা মনে, হৃদয়ে, এবং দেহের উপর আশীর্বাদ ডেকে আনায় সবই আমাদের পক্ষে সম্ভব। COLBen 290.4

    প্রাকৃতিক জগতের মত আত্মিকভাবে ফল উৎপন্ন করার শর্ত হল ঈশ্বরের আদেশের প্রতি বাধ্যতা। যখন মানুষ লোকদের কাছে ঈশ্বরের আদেশ লঙ্ঘন করার জন্য শিক্ষা দেয়, তখন তারা তাঁর মহিমার জন্য ফল উৎপন্ন করতে বাধাগ্রস্থকরে। তাঁর দ্রাক্ষাক্ষেত্রের ফল তাকে দিতে অসম্মত হওয়ার জন্য প্রভু তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছেন। COLBen 290.5

    ঈশ্বরের সংবাদদাতারা প্রভুর আদেশ নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। খ্রীষ্ট যেভাবে ঈশ্বরের বাধ্য ছিলেন, আমরাও যেন অনুরূপ বাধ্য থাকি এই দাবি নিয়ে তারা আমাদের কাছে আসেন। তারা তাঁর দ্রাক্ষাক্ষেত্রের ফল নম্রতা, এবং আত্মোৎসর্গের কাজের ফলের দাবী আমাদের কাছে উপস্থাপন করেন। যিহুদী নেতাদের মত ও দ্রাক্ষাক্ষেত্রের অনেক কৃষকেরা কি একই ভাবে রাগান্বিত হন না? যখন ঈশ্বরের আজ্ঞা লোকদের সামনে তুলে ধরা উচিত, এই সময় কি এই সব ধর্মশিক্ষকেরা তাদের প্রভাব প্রয়োগ করে লোকদের তা প্রত্যাখ্যান করতে উদ্দীপ্ত করে নি? এই রকম নেতাদের ঈশ্বর অবিশ্বস্ত দাস বলে অভিহিত করেছেন। COLBen 290.6

    প্রাচীনকালে ইস্রায়েলদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য ছিল মণ্ডলীর প্রতি এবং নেতাদের প্রতি ধর্মীয় সতর্কীকরণ বার্তা। ইস্রায়েলদের কাছে ঈশ্বর প্রভু বলেছেন, “আমি তাহার জন্য আপন ব্যবস্থার দশসহস্র কথা লিখি; কিন্তু সকল বিজাতীয়রূপে গণিত হয়।” হোশেয় ৮:১২। যাজক এবং ধর্মশিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, “জ্ঞানের অভাব প্রযুক্ত আমার প্রজাগণ বিন্ষ্ট হইতেছে। তুমিই তো জ্ঞান অগ্রাহ্য করিয়াছ, এই জন্য আমিও তোমাকে নিতান্ত অগ্রাহ্য করিলাম, তুমি আর আমার যাজক থাকিবে না; তুমি আপন ঈশ্বরের ব্যবস্থা ভুলিয়া গিয়াছ, আমিও তোমার সন্তানগণকে ভুলিয়া যাইব” হোশেয় ৪:৬। COLBen 291.1

    ঈশ্বরের সতর্কবাণী কি অবহেলায় উপেক্ষা করা যায়? এর কাজের জন্য যে সুযোগ রয়েছে তা কি অপব্যবহার করা যায়? জাগতিক বিষয় বর্জন করে, নিজের বুদ্ধি জ্ঞানের জন্য অহংকার না করে, মানুষের প্রা এবং ঐতিহ্য পরিহার করে খ্রীষ্টের অনুসারীরা কি ঈশ্বরের পক্ষে কাজ করছে? যিহুদী নেতারা যেভাবে খ্রীষ্টকে অগ্রাহ্য করেছিল তারাও কি তেমনি ঈশ্বরেরবাক্য অগ্রাহ্য করবে? ইস্রায়েল জাতির পাপের ফল আমাদের সামনে রয়েছে। বর্তমান মণ্ডলী সমূহে কি সতর্ক রয়েছে? COLBen 291.2

    “আর কতগুলি শাখা যদি ভাঙ্গিয়া ফেলা হইল, এবং তুমি বন্য জলপাই বৃক্ষের চারা হইলেও যদি তাদের মধ্যে তোমাকে কলমরূপে লাগানো গেল, আর তুমি জলপাই বৃক্ষের রসের মূলের অংশী হইলে; শ্লাঘা করিও না. . . অবিশ্বাস হেতুই উহাদিগকে ভাঙ্গিয়া ফেলা হইয়াছে, এবং বিশ্বাস হেতুই তুমি দাঁড়াইয়া আছ। উচ্চ বিষয় ভাবিও না, বরং ভয় কর, কেননা যখন সেই প্রকৃত শাখাগুলির প্রতি মমতা করেন নাই, এখন তোমার প্রতিও ক্ষমতা করিবেন না।” রোমীয় ১১:১৭-২১।COLBen 291.3

    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents