সদয় আবেগ ও স্নেহ
সদয় স্নেহ, উদার প্রেরণা, এবং আত্মিক ভাবে উদ্দীপনা জাগ্রত করা হল মহা মূল্যবান তালন্ত, এবং এই তালন্ত যারা পেয়েছেন তাদের উপর অনেক বড় দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। এই তালন্ত ঈশ্বরের কাজে ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু এই বিষয়ে অনেকে ভুল করে। এই সব গুণের অধিকারী হওয়ার কারণে তারা সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু অন্যদের উপকারের জন্য এই গুণগুলো কার্যকর ভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়। তারা নিজেদের মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে রাখে যে, যদি তারা কোন সুযোগ পেত, যদি পরিস্থিতি ও পরিবেশ তাদের অনুকূলে থাকত তাহলে তারা অনেক মহৎ এবং অনেক মঙ্গলজনক কাজ করতে পারত। কিন্তু তারা সুযোগের জন্য কেবল অপেক্ষা করে থাকত। তারা দরিদ্রদের দারিদ্রকে অবজ্ঞা করে, তাদের সাহায্য করতে কার্পণ্য করে, এমন কি তাদের টাকা পয়সার অতি সামান্য অংশ দিয়েও সাহায্য করতে চায় না। আর যদি সাহায্য করেও থাকে তবে সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ভাবে। তারা মনে করে যে, গরীবদের জীবন তাদের নিজেদের জীবন। তাদের এই দারিদ্রের জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। তারা সেই সব লোকের সঙ্গে নিজেদের তুলনা করে আত্ম সুখ লাভ করে, যারা নিচু মনা স্বভাবের লোক, এবং তারা মনে করে যে, তাদের গরীব নিঃস্ব প্রতিবেশীর চেয়ে তারা অনেক ভালো অবস্থায় আছে। কিন্তু তারা নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করে। তাদের অব্যবহৃত যোগ্যতা ও গুণের উন্নতি এবং বৃদ্ধি করা তাদের দায়িত্ব ছিল। যারা অনেক স্নেহ মমতা দ্বারা অন্তরকে পূর্ণ করে রেখেছে, যাদের মধ্যে সদয় আবেগ রয়েছে, তারা তাদের সাহায্য এবং দান করার জন্য ঈশ্বরের কাছে দায়বদ্ধ । কেবল তাদের বন্ধুদেরকে নয়, কিন্তু যাদের সাহায্যের প্রয়োজন আছে তাদের সাহায্য করতে হবে। সামাজিক সুযোগ সুবিধা লাভ করাও তালন্ত, আর এই সুযোগ লাভ করার জন্য আমাদের আয়ত্বের মধ্যে যারা আছে তাদের উপকার করা আমাদের দায়িত্ব। যদি কেবল মাত্র কয়েক জনের প্রতি ভালবাসা দেখানো হয় তাহলে তা ভালবাসা নয়, তা হল স্বার্থপরতা। এটি কোন ক্রমেই মানুষের মঙ্গলের জন্য এবং ঈশ্বরের গৌরবের জন্য কাজ হতে পারে না। যারা তাদের প্রভুর তালন্তকে সদ্ব্যবহার না করে রেখে দেয়, তারা তাদের চেয়ে আরও বেশি দোষী, যাদের সম্পর্কে তারা মনে করত যে, তারা একই রকম দোষী। তাদের জন্য এই কথা বলা হয়েছে, তুমি তোমার প্রভু ইচ্ছা জানতে, কিন্তু তুমি তা পালন করনি।COLBen 336.3