সহানুভূতি
মনের রোগ নিয়ে কাজ করতে জ্ঞানের প্রয়োজন। ক্ষত, ভগ্ন হৃদয় এবং নিরুৎসাহিত মনের চিকিৎসার জন্য সহানুভূতি প্রয়োজন। অনেক সময় পারিবারিক সমস্যা ক্যান্সারের মত মনকে খেয়ে ফেলে এবং জীবনীশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। অনেক সময় পাপের জন্য তীব্র অনুশোচনা মনের ভারসাম্যতা হারিয়ে ফেলে। এরূপ পরিস্থিতিতে সহানুভূতি একজন হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করে। চিকিৎসকের প্রথমে তাদের আস্থা অর্জন করা আবশ্যক, তারপর তাদের মহান সুস্তকারীর দিকে নিয়ে যাওয়া উচিত। যদি প্রকৃত মহান চিকিৎসকের ওপর তাদের আস্থা স্থাপন করানো যায়, এবং তারা অনুভব করে যে তিনি তাদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তবে তাদের মনের উপশম হবে এবং দেহ সুস্থ হবে।MHBen 228.1
রোগীদের প্রতি শীতল ও তািছল্য মনোভাবের সঙ্গে দক্ষতাপূর্ণ চিকিৎসার চেয়ে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও রোগীদের মানসিকতা বুঝে আচরণ করলে অনেক বেশী সুফল পাওয়া যায়। যখন একজন চিকিৎসক রোগীর বিছানার কাছে উদাস, যত্নহীন মনোভাব এবং বাক্য বা কার্যে এমন ভাব দেখান যে এ বিষয় তার বিন্দুমাত্র আকর্ষণ নেই; তারপর রোগীকে তার নিজের ভাগ্যের ওপর ছেড়ে চলে যান তখন তিনি রোগীর ক্ষতি করে থাকেন। এতে যে সন্দেহ এবং নিরুৎসাহতা সৃষ্টি হয় তার ফলে ভাল ঔষধাদির ব্যবস্থাপত্র দেয়া সত্ত্বেও বিপরীত প্রভাব বিস্তার লাভ করে।MHBen 228.2
যদি চিকিৎসকরা নিজেদের একজন অসহায় লোকের স্থানে বসান, যার কষ্টের ফলে ইছা শক্তি দুর্বল হয়ে গেছে এবং যার সহানুভূতি, আশা ও নিশ্চয়তার বাক্য শুনতে খুব ইছা করে তবে তারা আরো ভাল করে রোগীদের অনুভূতি বুঝতে পারবেন। রোগীদের প্রতি যীশু খ্রীষ্টের যে প্রেম ও সহানুভূতি ছিল তার সঙ্গে চিকিৎসকদের জ্ঞান যদি সম্মিলিত করা যায় তবে তা হবে তাদের জন্য প্রকৃত আশীর্বাদ। রোগীদের সঙ্গে সরল মনে, প্রাণ খোলা ব্যবহার আস্থা স্থাপনে উৎসাহিত করে এবং তার ফলে আরোগ্য লাভের বিশেষ ভূমিকা সহায়তা করে। অনেক চিকিৎসক রোগীর রোগ ও কারণ গোপন রাখা উত্তম নীতি বা বিজ্ঞতার পরিচয় মনে করেন। অনেকে রোগীকে সত্য কথা বলে ভয় অথবা উত্তেজিত করতে ভয় পায় এবং সুস্থ হবার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ধরে রাখেন এমন কি তারা তাদের বিপদের কথা না জেনেই কবরের অভিমুখে নেমে যায়। এটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নয়। হয়তো সব সময় রোগীদের সম্পূর্ণ বিপক্ষে কথা বলা নিরাপদ অথবা উত্তম নয়। এরূপ অসতর্কতা হয়তো আরোগ্য লাভে ক্ষতি বা বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। যে সব রোগীদের অসুস্থতা বহুলাংশে কাল্পনিক তাদের কাছে সব সময় সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশ না করা যেতে পারে। কারণ, এদের মধ্যে অনেকেই অযে․ক্তিক মনা এবং নিজেদের আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে অভ্যস্ত নয়। তারা নিজের এবং অন্যের বিষয় অনেক অলীক ও কাল্পনিক বিষয় ভাবে। তাদের কাছে এগুলোই বাস্তব। তাই যারা তাদের যত্ন নিয়ে থাকেন তাদের সর্বদা দয়ালু এবং রোগীর মন বুঝে আচরণ করা আবশ্যক। এ প্রকার রোগীদের যদি সত্য কথা বলা হয় তবে তারা হয়তো লজ্জা পাবে অথবা অনেকে নিরুৎসাহিত হবে। যীশু খ্রীষ্ট তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন, “তোমাদিগকে বলিবার আমার আরও অনেক কথা আছে, কিন্তু তোমরা এখন সেই সকল সহ্য করিতে পার না।”(যোহন ১৬:১২) যদিও সব সময় বা সর্বক্ষেত্রে সত্য বলা যায় না, তবে এটা কোনক্রমেই প্রবঞ্চনাকে স্বীকৃতি দান করে না। কখনো চিকিৎসক বা সেবিকাদের কে․শলে সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া সমীচিন নয়। যে নিজেকে এরূপভাবে ব্যবহার করেন, ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করতে পারেন না; এবং রোগীরা তার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন। মানুষের পুনরুদ্বার করার জন্য যে সক্রিয় সহায়তাটি প্রয়োজন তা তিনি দূরে সরিয়ে দেন।MHBen 228.3