আমাদের ঈশ্বরের মহত্ত্ব
তাঁর ভাববাদীর কাছে পবিত্র আত্মা কর্তৃক যে তাঁর ভাববাদীকে প্রতিনিধি প্রদত্ত হয়েছে, যেন আমরা ঈশ্বরের মহত্ত্ব সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করি, ভাববাদী যিশাইয় লিখেছেন:-MHBen 412.1
“যে বৎসর উষিয় রাজার মৃত্যু হয়, আমি প্রভুকে এক উচ্চ ও উন্নত সিংহাসনে উপবিষ্ট দেখিলাম; তাহার রাজবস্ত্রের অঞ্চলে মন্দির পূর্ণ হইয়াছিল; তাঁহার নিকটে সরাফগণ দণ্ডায়মান ছিলেন; উহাদের মধ্যে প্রত্যেক জনের ছয় ছয় পক্ষ, প্রত্যেকে দুই পক্ষ দ্বারা আপন মুখ আছাদন করেন, দুই পক্ষ দ্বারা চরণ আছাদন করেন ও দুই পক্ষ দ্বারা উড্ডীন হন। আর তাহারা পরস্পর ডাকিয়া বলিতে লাগিলেন,MHBen 412.2
‘পবিত্র পবিত্র, পবিত্র, বাহিনীগণের সদাপ্রভু;
সমস্ত পৃথিবী তাঁহার প্রতাপে পরিপূর্ণ।’MHBen 412.3
“তখন ঘোষণাকারীর রবে শিলামূল সকল কাঁপিতে লাগিল, ও গৃহ ধূমে পরিপূর্ণ হইতে লাগিল।”MHBen 412.4
“তখন আমি কহিলাম, হায়, আমি নষ্ট হইলাম, কেননা আমি অশুচি ওষ্ঠাধর মনুষ্য, এবং অশুচি ওষ্ঠাধর জাতির মধ্যে বাস করিতেছি; আর আমার চক্ষু রাজাকে, বাহিনীগণের সদাপ্রভুকে, দেখিতে পাইয়াছে।”MHBen 412.5
“পরে ঐ সরাফগণের মধ্যে একজন আমার কাছে উড়িয়া আসিলেন, তাঁহার হস্তে একখানি জ্বলন্ত অঙ্গার ছিল, তিনি যজ্ঞবেদির উপর হইতে চিমটা দ্বারা তা লইয়াছিলেন। আর তিনি আমার মুখে তাহা স্পর্শ করাইয়া কহিলেন, দেখ, ইহা তোমার ওষ্ঠাধর স্পর্শ করিয়াছে, তোমার অপরাধ ঘুচিয়া গেল ও তোমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত হইল।”(যিশাইয় ৬:১-৭)।MHBen 412.6
“হে সদাপ্রভু, তোমার তুল্য কেহই নাই; তুমি মহান্,
তোমার নামও পরাক্রমে মহৎ।
হে জাতিগণের রাজন, তোমাকে কে না ভয় করিবে?”MHBen 412.7
- (যিরিমিয় ১০:৬,৭)।
“হে সদাপ্রভু, তুমি আমাকে অনুসন্ধান করিয়াছ,
আমাকে জ্ঞাত হইয়াছ।
তুমিই আমার উপবেশন ও আমার উত্থান জানিতেছ,
তুমি দূর হইতে আমার সংকল্প বুঝিতেছ।
তুমি আমার পথ ও আমার শয়ন তদন্ত করিতেছ,
আমার সমস্ত পথ ভালরূপে জান।
যখন আমার জিহ্বাতে একটি কথাও নাই,
দেখ, সদাপ্রভু, তুমি উহা সমস্তই জানিতেছ।
তুমি আমার অগ্রপশ্চাৎ ঘেরিয়াছ,
আমার উপরে তোমার করতল রাখিয়াছ।
এই জ্ঞান আমার নিকটে অতি আশ্চর্য,
তাহা উচ, আমার বোধের অগম্য।”MHBen 413.1
- (গীত ১৩৯:১-৬)।
“আমাদের প্রভু মহান্ ও অতিশয় শক্তিমান, তাঁহার বুদ্ধির ইয়ত্তা নাই।” (গীত ১৪৭:৫)।MHBen 413.2
“মনুষ্যের পথ ত সদাপ্রভুর দৃষ্টিগোচর; তিনি তাহার সকল পথ সমান করেন।” (হিতোপদেশ ৫:২১)।MHBen 413.3
“তিনিই গভীর ও গুপ্ত বিষয় প্রকাশ করেন, অন্ধকারে যাহা আছে তাহা তিনি জানেন এবং তাঁহার কাছে জ্যোতি: বাস করে।” (দানিয়েল ২:২২)।MHBen 413.4
“প্রভু এই কথা কহেন; তিনি পুরাকাল অবধি এই সকল বিষয় জ্ঞাত করেন।” (প্রেরিত ১৫:১৮)।MHBen 413.5
“কেননা প্রভুর মন কে জানিয়াছে? তাঁহার মন্ত্রীই বা কে হইয়াছে? অথবা কে অগ্রে তাহাকে কিছু দান করিয়াছে যে, এ জন্য তাঁহার প্রত্যুপকার করিতে হইবে? যে হেতু সকলই তাঁহা হইতে ও তাঁহার দ্বারা ও তাঁহার নিমিত্ত। যুগে যুগে তাঁহারই গৌরব হউক।” (রোমীয় ১১:৩৪-৩৬)।MHBen 413.6
“যিনি যুগ পর্যায়ের রাজা, অক্ষয় অদৃশ্য,” (১তীম ১:১৭)।MHBen 413.7
“যিনি অমরতার একমাত্র অধিকারী, অগম্য দীপ্তিনিবাসী, যাঁহাকে মনুষ্যদের মধ্যে কেহ কখনও দেখিতে পায় নাই, দেখিতে পারেও না, তাঁহারই সমাদর ও অনন্তকালস্থায়ী পরাক্রম হউক।”(১তীম ৬:১৬)।MHBen 414.1
“তাঁহার মহত্ত্ব কি তোমাদিগকে ত্রাসযুক্ত করিবে না? তাঁহার ভয়ানকতায় কি তোমরা ভীত হও না?” (ইয়োব ১৩:১১)।MHBen 414.2
“ঈশ্বর কি উচতম স্বর্গে থাকেন না?
তারাগণের মাথা দেখ, সে সকল কেমন উচ্চ!”MHBen 414.3
- (ইয়োব ২২:১২)।
“তাঁহার সৈন্যদল কি গণনা করা যায়?
তাঁহার দীপ্তি কাহার উপরে না উঠে?”MHBen 414.4
- (ইয়োব ২৫:৩)।
“ঈশ্বর স্বীয় রবে আশ্চর্যরূপ গর্জন করেন,
“আমাদের বোধের অগম্য মহৎ মহৎ কার্য করেন।
ফলে তিনি হিমানীকে বলেন, পৃথিবীতে পড়;
সামান্য বৃষ্টিকেও তাহা বলেন,
তাঁহার পরাক্রমের বৃষ্টিকেও বলেন।
তিনি মনুষ্যমাত্রের হস্ত মুদ্রাঙ্কিত করেন,
যেন তাঁহার নির্মিত সকল মনুষ্যই জ্ঞান পায়।...
আপন বিজলির মেঘ বিস্তার করেন।
তাঁহার পরিচালনে তাহা ঘুরে;
যেন তাহারা তাঁহার আজ্ঞানুসারে কার্য করে,
সমস্ত ভূমণ্ডলেই যেন করে;
তিনি কখনও দণ্ডের, কখনও নিজ দেশের নিমিত্ত,
কখনও বা দয়ার নিমিত্ত এই সকল ঘটান।
“হে ইয়োব, আপনি ইহাতে কর্ণপাত করুন,
স্থির থাকুন, ঈশ্বরের আশ্চর্য কার্য সকল বিবেচনা করুন।
আপনি কি জানেন, ঈশ্বর কিরূপে এই সকলের উপরে ভার রাখেন,
আর আপনি মেঘের দীপ্তি বিরাজমান করেন?
আপনি কি মেঘমালার দোলনী জানেন? পরম জ্ঞানীর আশ্চর্য ক্রিয়াসকল জানেন?...
আপনি কি তাঁহার সঙ্গে আকাশমণ্ডল
বিস্তার করিয়াছেন?
যাহা ছাঁচে ঢালা দর্পণের ন্যায় দৃঢ়?
আমাদিগকে জানান তাঁহাকে কি বলিব?
কেননা আমরা অন্ধকার হেতু বাক্য বিন্যাস করিতে পারি না।...
এখন মনুষ্য দীপ্তি দেখিতে পারে না,
যখন তাহা আকাশে উজ্জ্বল হয়,
“যখন বায়ু বহিয়া তাহা পরিষ্কার করিয়াছে।
উত্তরদিক হইতে কাঞ্চনাভা আইসে,
ঈশ্বরের ঊর্ধ্বে ভয়ানক প্রভা থাকে।
সর্বশক্তিমান! তিনি আমাদের বোধের অগম্য;
তিনি পরাক্রমে মহান
তিনি ন্যায়বিচার ও প্রচুর ধর্মগুণ বিপরীত করেন না।
একারণ মনুষ্যগণ তাঁহাকে ভয় করে।”MHBen 414.5
-(ইয়োব ৩৭:৫-২৪)।
“কে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর তুল্য,
তিনি ঊর্ধ্বে সমাসীন;
তিনি অবনত হয়ে দৃষ্টিপাত করেন আকাশে ও পৃথিবীতে।”MHBen 415.1
- (গীত ১১৩:৫, ৬)।
“ঘূর্ণবায়ু ও ঝড় সদাপ্রভুর পথ, মেঘ তাহার পদধূলি।”MHBen 415.2
- (নহূম ১:৩)।
“সদাপ্রভু মহান্ ও অতীব প্রশংসনীয়,
তাঁহার মহিমার তত্ত পাওয়া যায় না।
বংশানুক্রমে এক পুরুষ অন্য পুরুষের কাছে
তোমার ক্রিয়া সকলের প্রশংসা করিবে,
তোমার পরাক্রমের কার্য সকল প্রচার করিবে। তোমার প্রভার গৌরবযুক্ত প্রতাপ
ও তোমার আশ্চর্য ক্রিয়া সকল আমি ধ্যান করিব।
আর লোকে তোমার ভয়াবহ কর্ম সকলের বিক্রমের কথা বলিবে।
এবং আমি তোমার মহিমার বর্ণনা করিব।
তারা তোমার মহৎ মঙ্গলভাবের খ্যাতি প্রচার করিবে,
তোমার ধর্মশীলতার বিষয় গান করিবে।...
“হে সদাপ্রভু, তোমার সমস্ত পদার্থ তোমার প্রশংসা করে,
এবং তোমার সাধুগণ তোমার ধন্যবাদ করে।
তাহারা তোমার রাজ্যের গৌরব বর্ণনা করে,
তোমার পরাক্রমের কথা বলে।
যেন মনুষ্য সন্তানগণকে জানাইতে পারে
তাঁহার পরাক্রমের কার্য্য সকল, এবং তাঁহার রাজ্যের প্রতাপের গৌরব।
তোমার রাজ্য সর্বযুগের রাজ্য,
তোমার কর্তৃত্ব পুরুষে পুরুষে চিরস্থায়ী।...
আমার মুখ সদাপ্রভুর প্রশংসা বর্ণনা করিবে;
আর সমুদয় প্রাণী যুগে যুগে চিরকাল
তাঁহার পবিত্র নামের ধন্যবাদ করুক।”MHBen 415.3
- (গীত ১৪৩:৫-২১)।