খাদ্যে সংস্কার
যাদের আহারের মন্দ অভ্যাস জন্মেেেছ, তাদের অবিলম্বে তা সংশোধন করা কর্তব্য। পাকস্থলীর অপব্যবহারে যাদের অজীর্ণ রোগ জন্মেছে, তাদের কর্তব্য পাকস্থলীর প্রত্যেক অতিরিক্ত খাটুনির ভার অপসারিত করে প্রধান শক্তির অবশিষ্ট বল সযত্নে রক্ষা করবার চেষ্টা করা। বহুদিন পর্যন্তঅপব্যবহারের পর, পাকস্থলী হয়ত কখনো তার পূর্ণ স্বাস্থ্য লাভ করতে না-ও পেতে পারে; কিন্তু যথোপযুক্ত আহারের ফলে আর অধিক দুর্বলতা আসে না, এবং অনেকে অল্প বিস্তর সুস্থ হয়ে ওঠে।MHBen 285.3
পানাহার ও ভোগ বিলাসে মিতাচারের পুরস্কার মানসিক এবং নৈতিক শক্তি; এটা মত্ততা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। যারা মিতাচারে আলস্যপরায়ন, তাদের পক্ষে অতিভোজন বিশেষভাবে ক্ষতিকর, এই সকল লোকদের আহারে আতিশয্য বিমুখ হওয়া উচিত; এবং অনেক শারীরিক ব্যায়াম করা উচিত। অনেক নর-নারী রয়েছেন, অত্যুৎকৃষ্ট স্বাভাবিক দক্ষতা রয়েছে যারা যা করতে পারত তার অর্দ্ধেকও করে না, তারা যদি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে আত্ম-সংযম অভ্যাস করত।MHBen 285.4
অনেক লেখক এবং বক্তা এখানে ব্যর্থ হন। মনোযোগ এবং আন্তরিকভাবে আহার গ্রহণ করার পর তারা বসে থাকা পেশায় নিয়োজিত হয়, যেমন বই পড়া, অধ্যয়ন, বা লেখার কাজ, তাদের ব্যায়াম করার সময় হয় না। ফলে, চিন্তা এবং বাক্যের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। তারা লোকদের হৃদয় স্পর্শ করার জন্য ক্ষমতার সঙ্গে কথা বলতে পারে না; তাদের চেষ্টা নিস্তেজ এবং নিষ্ফল।MHBen 286.1
যাদের ওপর গুরুদায়িত্ব অর্পিত, তারা, সর্বোপরি, যারা আত্মিক সম্পর্কের অভিভাবক, তারা হবেন সুক্ষ অনুভূতি এবং ত্বরিত উপলব্ধির মানুষ। অন্যদের অপেক্ষা আহারে তাদের অধিক মিতাচারী হতে হবে। দামী এবং বিলাসবহুল কোন খাদ্য তাদের টেবিলে স্থান পাবে না।MHBen 286.2
প্রতিদিন পদস্থ এবং দায়িত্বপূর্ণ লোকদের অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় যার ওপর মহাগুরুত্বপূর্ণ পরিণতি নির্ভর করে। তাদের প্রায়ই অতিদ্রুত চিন্তাভাবনা করতে হয়, এবং এটা কেবলমাত্র যারা কঠোর মিতাচার অভ্যাস করে, তাদের ও মানসিক শক্তি সমূহের সঠিক চিকিৎসার ফলে মন শক্তিশালী হয়। চাপ যদি বেশী প্রবল না হয়, তবে প্রতিটি চাপ প্রয়োগে নতুন শক্তি আসে। কিন্তু প্রায়ই, যাদের বিবেচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা রয়েছে, এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কাজ রয়েছে তা অনুপযুক্ত খাদ্যের ফলে মন্দর জন্য প্রভাবান্বিত হয়। একটা অসুস্থ পাকস্থলী মনের একটা অনিশ্চিত অবস্থার সৃষ্টি করে। এটা প্রায়ই খিট্খিটে ভাব, কর্কশ ভাব, বা অবিচার সৃষ্টি করে। বহু পরিকল্পনা যা জগতের নিকটে আশীর্বাদ স্বরূপ তা এক পার্শ্বে রেখে দেয়া হয়েছে, অনেক অন্যায্য, পীড়নকর, এমন কি নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে যা খাবারের ভুল অভ্যাস হেতু অসুস্থ অবস্থার পরিণাম।MHBen 286.3
যারা বসা কাজ, বিশেষ করে প্রধানত মানসিক কাজ করেন, তাদের সকলের প্রতি এই পরামর্শ যাদের যথেষ্ট ক্সনতিক সাহস ও আত্মনিয়ন্ত্রণ রয়েছে, তারা এটা চেষ্টা করুক: প্রতি আহারের সময়ে দুই বা তিন প্রকার সাদাসিধে খাবার গ্রহণ করুন, এবং ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য যা খাওয়া প্রয়োজন তার অতিরিক্ত খাবেন না। প্রতিদিন সক্রিয় ব্যায়াম করুন, এবং আপনি উপকার পান কি-না তা লক্ষ্য করুন।MHBen 286.4
যে সকল বলবান ব্যক্তি শারীরিক পরিশ্রমে তৎপর, অলস স্বভাবের লোকদের কিম্বা উপবেশনকারী কর্মীর খাদ্যের পরিমাণ বা খাদ্যের প্রকারভেদের বিষয় তাদের তত সতর্ক হওয়া প্রয়োজন হয় না; কিন্তু খাদ্য ও পানীয়ে তারা যদি আত্ম সংযম করতে অভ্যস্ত হত, তাহলে এমন কি তারাও অধিকতর উত্তম খাদ্য লাভ করতে পারত।MHBen 287.1
কেউ কেউ চায় যেন, তাদের আহার্য দ্রব্য সম্বন্ধে একটা বাঁধা নিয়ম করে দেয়া হয়। একজন অন্য একজনের জন্য কোন নির্দিষ্ট নিয়ম করে দিতে পারে না। প্রত্যেককেই বুদ্ধি বিবেচনা পূর্বক চলা এবং আত্মসংযমী হওয়া ও নীতি অনুযায়ী কাজ করা উচিত।MHBen 287.2
আমাদের দেহ খ্রীষ্টের ক্রীত অধিকার, আর এ দিয়ে আমরা যােছ তাই কাজ করতে পারি না। যারা স্বাস্থ্যনীতি অবগত আছেন, তাদের উচিত যেন তারা এই নীতিমালা পালন করেন, যা ঈশ্বর আদিতে স্থাপন করেছিলেন। স্বাস্থ্য নীতি পালন করা হবে একটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। নিয়ম লঘন হেতু আমাদের কষ্ট পেতে হবে। আমাদের অভ্যাস এবং অনুশীলন হেতু আমাদের ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি হতে হবে। সুতরাং আমাদের কাজে এই প্রশ্ন করা হবে না, MHBen 287.3
“জগৎ কি অনুশীলন করে?” “একজন স্বতন্ত্র ব্যক্তিরূপে আমি কিরূপে ঈশ্বর দত্ত বাসস্থান ব্যবহার করি?”MHBen 287.4
*****