Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents

মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

 - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First

    ১৭ অধ্যায়

    সমুদয় জগতের সকল খ্রীষ্টীয়ান খ্রীষ্টে এক

    শিশু যেমন সরল ও সাদাসিধে ভাবে তদীয় জাগতিক মাতাপিতার নিকটে আইসে, আমরা যদি সেই ভাবে খ্রীষ্টের নিকটে আইসি এবং তাঁহার প্রতিজ্ঞানুযায়ী বিশ্বাস করি যে, আমরা যাহা চাহিয়াছি, তাহা পাইয়াছি, তাহা হইলে আমরা তাহা পাইব । যেরূপ বিশ্বাস করা উচিত, আমরা সকলে যদি সেরূপ বিশ্বাস করিতাম, তাহা হইলে আমাদের সভায় আমরা এ পর্য্যন্ত যে পরিমাণে ঈশ্বরের আত্মার আশীর্বাদ প্রাপ্ত হইয়াছি, তদপেক্ষা অধিকতর মাত্রায় প্রাপ্ত হইতে পারিতাম । আমি অতিশয় সুখী যে, সভার কয়েকটী দিন এখনও বাকী আছে । এক্ষণে প্রশ্ন এই,— আমরা উৎসের নিকটে আসিয়া পান করিব কি ? সত্যের গুরুগণ দৃষ্টান্ত দেখাইবেন কি ? তাঁহার বাক্যে যেরূপ লিখিত আছে, আমরা যদি বিশ্বাসপূর্ব্বক তাঁহাকে সেই ভাবে গ্রহণ করি, তবে ঈশ্বর আমাদের জন্য মহৎ কার্য্য সকল সাধন করিবেন । আহা ! এস্থানের সকলেই যদি একযোগে ঈশ্বরের সম্মুখে আপন আপন হৃদয় নত করিত, তাহা হইলে কতই না মধুর হইত !CCh 243.1

    এই সকল সভা হওয়া অবধি আমি হৃদয়ে অনুভব করিয়া আসিতেছি যে, প্রেম ও বিশ্বাস সম্বন্ধে আরও অধিক উপদেশ দেওয়া আবশ্যক । কারণ আপনাদের প্রত্যেকেরই এই সাক্ষের প্রয়োজন । এই সকল মিশন-ক্ষেত্রে যাঁহারা প্রবেশ করিয়াছেন, তাঁহাদের মধ্যে কেহ কেহ বলিয়া থাকেন, “আপনি ফরাসী লোকদিগকে জানেন না ; জর্ম্মান লোকদিগকে ও জানেন না । তাহাদের সহিত ঠিক্ এইরূপ ব্যবহারই করিতে হয় ।”CCh 243.2

    কিন্ত আমি জিজ্ঞাসা করি;— ঈশ্বর কি তাহাদিগকে জানেন? ঐ লোকদের জন্য ঈশ্বর কি তাঁহার দাসগণকে বার্তা দেন না ? তাহাদের কি প্রয়োজন তাহা তিনি জানেন ; আর তাঁহার দাসগণের দ্বারাই যদি ঐ বার্তা তাহাদের নিকটে আসিয়া থাকে, তবে যে জন্য উহা প্রেরিত হইয়াছে, সেই বিষষে ইহা সিদ্ধার্থ হইবে ; ইহা সকলকে খ্রীষ্টে এক করিবে । যদিও ইহাতে বিন্দমাত্র সন্দেহ নাই যে, কেহ কেহ ফরাসী, কেহ কেহ জার্ম্মানী এবং অন্যেরা আমেরিকান, তথাপি তাহারা সকলেই ঠিক্ খ্রীষ্টের মতন হইবে, ইহাতেও বিন্দমাত্র সন্দেহ নাই ।CCh 244.1

    পর্ব্বত হইতে তক্ষিত প্রস্তরের দ্বারা যিহূদী মন্দিরটী নির্ম্মিত হইয়াছিল ; মন্দিরের যথাস্থানে বসাইবার নিমিত্ত যিরুশালেমে আনিবার পুর্ব্বে ইহার প্রত্যেকখানি প্রস্তর উপযুক্তরুপে খনন করা, মসৃণ করা ও পরীক্ষা করা হইয়াছিল । প্রস্তরখণ্ড সকল যখন নির্দ্দিষ্ট ভূমিখণ্ডে আনীত হইল, তখন কুড়ালির কিংবা হাতুড়ীর শব্দ বিনা মন্দিরটী গঠিত হইল । এই মন্দির ঈশ্বরের আধ্যাত্মিক মন্দিরের নিদর্শনস্বরূপ । ইহা উচ্চ নীচ, ধনী দরিদ্র, শিক্ষিত অশিক্ষিত, সকল শ্রেণীর প্রত্যেক জাতি ও ভাষা ও প্রজাবৃন্দ লইয়া গঠিত । এই সকল মৃত পদার্থ নহে যে, হাতুড়ী কিংবা বাটালী দ্বারা ব্যবহারপযোগী করিয়া লওয়া হইবে । ইহারা জীবন্ত প্রস্তর, সত্যের দ্বারা ইহাদিগকে জগত হইতে খনন করিয়া লওয়া হইয়াছে ; এবং মন্দিরের যথাস্থানে সন্নিবেশিত করিবার নিমিত্ত তাহাদিগকে এক্ষণে খনন করিতেছেন ও মসৃণ করিতেছেন । যখন এই মন্দির নির্ম্মাণ কার্য্য শেষ হইবে, তখন ইহা সর্ব্বাংশে নিখুঁত হইয়া দূতগণের ও মানবের বিস্নয় উৎপাদন করিবে ; কারণ ইহার নির্ম্মাতা ও স্থাপনকর্ত্তা স্বয়ং ঈশ্বর । কেহ যেন মনে না করে যে, এই মন্দিরে ব্যবহারপযোগী হইবার নিমিত্ত তাহার কোন আঘাত সহ্য করিবার প্রয়োজন নাই ।CCh 244.2

    পৃথিবীতে এমন কোন ব্যক্তি, কিংবা জাতি নাই, যে প্রত্যেকটী আচার ব্যবহারে ও চিন্তায় সম্পূর্ণ নিখুঁত । একজনের অন্যের নিকট শিক্ষা গ্রহণ করা আবশ্যক । এই জন্যই ঈশ্বর চাহেন, যেন বিভিন্ন জাতি পরস্পরের সহিত মিলিত হইয়া বিচারে ও উদ্দেশ্যে এক হয় । তাহা হইলে খ্রীষ্টে যে একতা আছে, তাহাই সুপ্রকাশিত হইবে ।CCh 244.3

    আমি এই দেশে আসিতে প্রায় ভীত হইয়া পড়িয়াছিলাম, কারণ আমি অনেককে বলিতে শুনিয়াছিলাম যে, ইউরোপের বিভিন্ন জাতি বড়ই অদ্ভুত, সুতরাং কোন নির্দ্দিষ্ট উপায়ে তাহাদের নিকটে উপস্থিত হইবে হইবে । কিন্ত যাহারা নিজেদের অভাব উপলব্দি করিয়া ঈশ্বরের নিকটে জ্ঞান যাঞ্ছা করিবে, ঈশ্বর তাহদিগকে তাহা দান করিবেন বলিয়া প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন । লোকেরা যে অবস্থায় সত্য গ্রহণ করিবে, ঈশ্বর তাহাদিগকে সেই অবস্থায় আনয়ন করিতে পারেন । কুম্ভকারের হস্তে কর্দ্দম যেমন সুগঠিত করুণ, যেন মনের মধ্যে এই সকল পার্থক্য স্থান না পায় । ভ্রাতৃগণ, যীশুর দিকে দৃষ্টিপাত করুণ ; তাঁহার আচার ব্যবহারের ও আত্মার অনুকরণ করুণ, তাহা হইলে এই সকল বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের নিকটে উপস্থিত হইতে আপনার কোনই বেগ পাইতে হইবে না ।CCh 245.1

    অনুসরণ করিবার নিমিত্ত আমাদের ছয়টী আদর্শ নাই, কিংবা পাঁচটীই নাই ; আমাদের কেবলমাত্র একটী আদর্শ আছে, আর তাহা খ্রীষ্ট যীশু । ইটালীর ভ্রাতৃগণ, ফ্রান্সের ও জার্ম্মানীর ভ্রাতৃগণ, যদি খ্রীষ্টের মত হইতে চেষ্টা করেন, তাহা হইলে সত্যের সেই একই ভিত্তিমূলের উপরে তাঁহারা তাঁহাদের চরণ প্রতিষ্ঠিত করিবেন ; যে আত্মা একের মধ্যে অবস্থিতি করিবে, ঠিক্ সেই আত্মা অন্যের মধ্যে অবস্থিতি করিবে,— গৌরবের আশা খ্রীষ্ট, তাঁহাদের মধ্যে বিরাজ করিবেন । ভ্রাতা ও ভগ্নিগণ, আমি আপনাদিগকে পূর্ব্বেই সাবধান করিয়া দেই যে, বিভিন্ন জাতির মধ্যে আপনারা বিচ্ছেদের এক প্রাচীর নির্ম্মাণ করিবেন না । বরং যে স্থানে ইহা আছে, তাহা ভাঙ্গিয়া ফেলিবার চেষ্টা করুণ । আমাদের সহমানবের পরিত্রান,— এই একমাত্র প্রণোদিত হইয়া খ্রীষ্ট যীশুতে যে একতা বিরাজমান, সকলকে তাহাতে আনয়ন করিবার নিমিত্ত আপ্রাণ চেষ্টা করা কর্ত্তব্য।CCh 245.2

    হে আমার প্রিয় ভ্রাতৃগণ, আপনারা যাহারা প্রভুর সেবাকার্য্য নিয়োজিত আছেন, আপনারা কি ঈশ্বরের বহুমূল্য প্রতিজ্ঞা সকল আঁকড়াইয়া ধরিবেন না ? আপনারা কি “নিজেকে” দৃষ্টির বহির্ভূত করিয়া যীশুকে আপনার হৃদয়ে প্রত্যক্ষ হইতে দিবেন না ? ঈশ্বর যেন আপনার মধ্য দিয়া কার্য্য করিতে পারেন, তজজন্য অগ্রেই “স্বার্থের” বা আমিত্বের মরণ আবশ্যক । “স্বার্থকে” এখানে যেখানে স্থান পাইতে দেখিয়া আসন্ন বিপদের আশঙ্কায় আমি অভিভূত হইয়া পড়ি । নাসারতীয় যীশুর নামে আমি আপনাদিগকে জ্ঞাত করি, আপনাদের ইচ্ছাসমূহ মরা আবশ্যক, এবং আপনাদের সমস্ত ইচ্ছা ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী হওয়া আবশ্যক । তিনি আপনাদিগকে বিগলিত করিতে এবং প্রত্যেক অপবিত্রতা হইতে পরিষ্কৃত করিতে চাহেন । ঈশ্বরের শক্তিতে পরিপূর্ণ হইবার পূর্ব্বে, আপনাদের নিমিত্ত এক মহৎ কার্য্য সাধনের প্রয়োজন । এই সভা শেষ হইবার পূর্ব্বে আপনারা যেন তাঁহার বহুমূল্য আশীর্ব্বাদের বিষয় সম্যকরুপে উপলব্দি করিতে পারেন, তজজন্য তাঁহার নিকটে আসিতে আমি আপনাদিগকে সনির্ব্বন্ধ অনুরোধ জানাই ।19T 179-182;CCh 246.1