Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents

মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

 - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First
    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents

    প্রার্থনার উত্তর পাইবার সর্ত্তাবলী

    কেবল ত্রাণকর্ত্তার বাক্যানুযায়ী জীবন যাপন করিয়াই আমরা তাঁহার প্রতিজ্ঞাকলাপের পূর্ণতার দাবী করিতে পারি। গীতরচক বলেন, “যদি চিত্তে অধর্ম্মের প্রতি তাকাইতাম, তবে প্রভু শুনিতেন না।” (গীত ৬৬ : ১৮)। আমরা যদি কেবল আংশিকরূপে বা আগ্রহশূন্যভাবে তাঁহার আজ্ঞাবহ হই, তাহা হইলে আমাদের নিকটে তাঁহার প্রতিজ্ঞাকলাপ পূর্ণ হইবে না।CCh 590.1

    পীড়া আরোগ্যের জন্য বিশেষ প্রার্থনা সম্পর্কে ঈশ্বরের বাক্যে উপদেশ রহিয়াছে। কিন্তু এইরূপ প্রার্থনা উৎসর্গ করা একটী মহা পবিত্র কার্য্য, এই নিমিত্ত অবিবেচনার সহিত ঐ কার্য্যে অগ্রসর হওয়া কর্ত্তব্য নহে। পীড়া আরোগ্যের জন্য অনেক সময়ে যে প্রার্থনা উৎসর্গ করা হয়, তাহাকে বিশ্বাস বলা হয়, কিন্তু উহা দুঃসাহস ভিন্ন অন্য কিছুই নহে।CCh 590.2

    আত্ম-চরিতার্থতা সাধনের দ্বারা বহুলোকেরই নিজের উপরে ব্যাধি আনয়ন করিয়া থাকে। তাহারা প্রাকৃতিক নিয়মানুযায়ী জীবন যাপন করে না, কিংবা নিখুঁত পবিত্রতার নীতিগুলি পালন করে না। অন্যেরা আহার, পানীয়, বসন-ভূষণ বা কাজকর্ম্মের অভ্যাসের মধ্য দিয়া স্বাস্থ্যবিধি অগ্রাহ্য করে। কখন-কখন কোন কোন প্রকারের অনাচার দেহের ও মনের দুর্ব্বলতার কারণ স্বরূপ দেখা যায়। এই সকল লোক যদি স্বাস্থ্য- আশীর্ব্বাদ লাভ করিত, তবে তাহাদের মধ্যে অনেকেই ঈশ্বরের প্রাকৃতিক ও আধ্যাত্মিক ব্যবস্থাগুলির প্রতি অমনোযোগী হইয়া এই বলিয়া সেই সকল লঙ্ঘন করিত যে, ঈশ্বর যখন প্রার্থনা শুনিয়া সুস্থ করেন, তখন তাহারা বিনা বাধায় তাহাদের অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসসমূহ স্বেচ্ছায় চালাইয়া যাইতে পারে ও তাহাদের কলুষিত লালসার বা ক্ষুৎ-পিপাসার প্রশ্রয় দিতে পারে। এই সকল লোকের স্বাস্থ্য ফিরাইয়া আনিবার জন্য ঈশ্বর যদি কোন আশ্চর্য্য কার্য্য সাধন করেন, তবে তাহাতে পাপে উৎসাহ দেওয়া হইবে।CCh 590.3

    লোকদিগকে অস্বাস্থ্যকর কুঅভ্যাসগুলি পরিত্যাগ করিতে শিক্ষা না দিয়া রোগ আরোগ্যের জন্য ঈশ্বরের উপরে নির্ভর করিতে শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা বৃথা। প্রার্থনার উত্তরস্বরূপ ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হইতে হইলে সর্ব্বপ্রকার মন্দ হইতে বিরত থাকা ও যাহা ভাল তাহাই করিতে শিক্ষা করা প্রয়োজন। তাহাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা স্বাস্থ্যজনক ও তাহাদের জীবনের অভ্যাসগুলি বিশুদ্ধ হওয়া আবশ্যক। ঈশ্বরের আধ্যাত্মিক ও প্রাকৃতিক এই উভয় বিধ ব্যবস্থানুযায়ী তাহাদের জীবন যাপন করা প্রয়োজন।CCh 591.1

    যাহারা স্বাস্থ্য পুনঃপ্রাপ্তির আকাঙক্ষা করে, তাহাদিগকে সম্পূর্ণরূপে বুঝাইয়া দিতে হইবে যে, প্রাকৃতিক হউক কিংবা আধ্যাত্মিক হউক, এই উভয়-বিধ ব্যবস্থা লঙ্ঘনই পাপ, আর ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হইতে হইলে পাপ স্বীকার করিয়া ত্যাগ করিতে হইবে। শাস্ত্রের আদেশ এই, -- “তোমরা একজন অন্য জনের কাছে আপন আপন পাপ স্বীকার কর, ও একজন অন্যজনের নিমিত্ত প্রার্থনা কর, যেন সুস্থ হইতে পার।” (যাকোব ৫ : ১৬) যে কেহ প্রার্থনা করিতে অনুরোধ করেন, তাঁহকে এইরূপ বলুন যে,-- “আপনার অন্তঃকরণে কি আছে বলিতে পারি না, কিংবা আপনার জীবনের গুপ্ত বিষয়সমূহ আমরা জানি না। এক মাত্র আপনি এবং আপনার ঈশ্বরই সে সকল অবগত আছেন। আপনি যদি আপনার পাপের সম্বন্ধে প্রকৃতই অনুতপ্ত হন, তাহা হইলে আপনার কর্ত্তব্য—সেগুলি স্বীকার করা”। সাধারণের অজ্ঞাত পাপ খ্রীষ্টের নিকটে,--- ঈশ্বরের ও মানুষের মধ্যে যিনি একমাত্র মধ্যস্থ, সেই ত্রাণকর্ত্তার নিকটে স্বীকার করিতে হইবে। কারণ “যদি কেহ পাপ করে, তবে পিতার কাছে আমাদের এক সহায় আছেন, তিনি ধার্ম্মিক যীশু খ্রীষ্ট।” (১ যোহন ২ : ১)। প্রত্যেকটী পাপই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে এক একটী অপরাধ, এবং খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের নিকটে উহা স্বীকার করিতেই হইবে। প্রকাশ্য পাপ, প্রকাশ্যে স্বীকার করিতে হইবে। সহ মানবের বিরুদ্ধে কোন দোষ করিলে যাহার বিরুদ্ধে দোষ করা হইয়াছে, তাহারই সহিত উহার মীমাংসা করিতে বা তাহার নিকট দোষ স্বীকার করিতে হইবে। যাঁহারা স্বাস্থ্যান্বেষী তাঁহারা যদি কুবাক্য ব্যবহার দোষে দোষী হইয়া থাকেন, তাহারা যদি আপন আপন গৃহে, পাড়ার অথবা মন্ডলীর মধ্যে অনৈক্যের বীজ বপন করিয়া বিচ্ছেদ ও মতভেদ উৎপন্ন করিয়া থাকেন, কোন মন্দ অভ্যাসের দ্বারা অপরকে পাপে পরিচালিত করিয়া থাকেন, তাহা হইলে এই সকল বিষয় ঈশ্বরের কাছে ও যাহাদের বিরুদ্ধে এই সকল দোষ করা হইয়াছে, তাহাদের কাছে স্বীকার করিতে হইবে। “যদি আমরা আপন আপন পাপ স্বীকার করি, তিনি বিশ্বস্ত ও ধার্ম্মিক, সুতরাং আমাদের পাপ সকল মোচন করিবেন এবং আমাদিগকে সমস্ত অধার্ম্মিকতা হইতে শুচি করিবেন।” (১ যোহন ১ : ১৯)।CCh 591.2

    দোষ সংশোধিত হইলে ঈশ্বরের আত্মার নির্দ্দশানুযায়ী আমরা স্থির বিশ্বাসে পীড়িতগণের অভাব অভিযোগ প্রভুর নিকটে উপস্থিত করিতে পারি। তিনি প্রত্যেক ব্যক্তির নাম জানেন, এবং প্রত্যেকের এরূপ ভাবে যত্ন লইয়া থাকেন, মনে হয় যেন, পৃথিবীতে এমন আর অন্য কেহ নাই, যাহার জন্য তিনি তাঁহার প্রিয় পুত্রকে দান করিয়াছিলেন। কারণ ঈশ্বরের প্রেম এত মহৎ ও এত অব্যর্থ যে, পীড়িত ব্যক্তি তাঁহাতে নির্ভর করিতে উৎসাহিত হইবে ও সর্ব্বদা প্রফুল্লিত থাকিবে। নিজেদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হইলে তাহারা দুর্ব্বল ও ব্যাধিগ্রস্ত হইয়া পড়িবে। কিন্তু বিষাদ ও নৈরাশাকে স্থান না দিলে তাহাদের স্বাস্থ্য পুনঃপ্রাপ্তির আশা অধিকতর ফলবতী হইবে; কারণ “সদাপ্রভুর দৃষ্টি তাহাদের উপরে, ......যাহারা তাঁহার দয়ার প্রতীক্ষা করে।” (গীত ৩৩ : ১৮)।CCh 592.1

    পীড়িতের জন্য প্রার্থনা করিতে যাইয়া স্মরণে রাখিতে হইবে যে, “উচিত মতে কি প্রার্থনা করিতে হয়, তাহা আমরা জানি না”। (রোমীয় ৮ : ২৬) আমরা যে আশীর্ব্বাদের আকাঙক্ষী তাহা আমাদের পক্ষে সর্ব্বোত্তম হইবে কি না তাহা আমরা জানি না। অতএব আমাদের প্রার্থনা এই চিন্তার অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিতঃ— “প্রভু আপনি প্রত্যেক প্রাণীর প্রত্যেক গুপ্ত বিষয় অবগত আছেন আপনি এই সকল পীড়িতকে জানেন। তাহাদের সহায় যীশু তাহাদের জন্য স্বীয় জীবন দান করিয়াছেন। তাহাদের প্রতি আমাদের যতটা প্রেম থাকা সম্ভব, তাঁহার প্রেম তাহা অপেক্ষা অনেক বেশী। অতএব, এই পীড়িতেরা সুস্থ হইলে ইহাতে যদি আপনার গৌরব হয় ও তাহাদের মঙ্গল হয়, তবে যীশুর নামে আমরা আপনার নিকটে নিবেদন করি— যেন ইহারা সুস্থ হইতে পারে। তাহারা সুস্থ হইবে— ইহা যদি আপনার অভিপ্রেত না হয়, তবে আমরা নিবেদন করি— আপনার অনুগ্রহ যেন ইহাদিগকে সান্ত্বনা দান করে, ও তাহাদের ক্লেশের মধ্যে, আপনার উপস্থিতি যেন তাহাদিগকে পতন হইতে রক্ষা করে।”CCh 593.1

    ঈশ্বর আদি হইতে অন্ত পর্য্যন্ত সকলেই অবগত আছেন। তিনি সকল মানবের অন্তঃকরণ জ্ঞাত আছেন। তিনি প্রত্যেক ব্যক্তির প্রতিটী গুপ্ত বিষয় জানেন। তিনি বিদিত আছেন,-- যাহাদের জন্য প্রার্থনা উৎসর্গ করা হইতেছে, তাহারা বাঁচিয়া থাকিলে তাহাদের উপরে যে সকল পরীক্ষা আসিবে, সেগুলি তাহারা সহ্য করিতে পারিবে কি না। তিনি জানেন, তাহাদের জীবন তাহাদের পক্ষে আশীর্ব্বাদস্বরূপ হইবে, অথবা অভিশাপ স্বরূপ হইবে। আমরা যখন ব্যগ্রতা সহকারে প্রার্থনা করি, তখন এই একটী কারণের জন্যই আমাদের কর্ত্তব্য--- “তথাপি আমার ইচ্ছা নয়, কিন্তু তোমারই ইচ্ছা সিদ্ধ হউক।” (লূক ২২ : ৪২)। গেৎশিমানী বাগানে ঈশ্বরের জ্ঞানের ও তাঁহার ইচ্ছার উপরে নির্ভর করিয়া যীশু আরও বলিয়াছিলেন, “হে আমার পিতা; যদি হইতে পারে, তবে এই পান—পাত্র আমার নিকট হইতে দূরে যাউক।” (মথি ২৬ : ৩৯) এই সকল বাক্য বলা ঈশ্বরের পুত্র যীশুর পক্ষে যদি সঙ্গত ছিল, তবে সীমাবদ্ধ ভ্রান্ত মর্ত্ত্যের পক্ষে ইহা আরো কত না উপযোগী !CCh 593.2

    সর্ব্বজ্ঞানী স্বর্গীয় পিতার হস্তে আমাদের সকল বাসনা অর্পণ করা এবং পরে পূর্ণ বিশ্বাসে তাঁহাতে নির্ভর করা সর্ব্বতোভাবে উপযোগী। ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী যাচঞা করিলে ঈশ্বর তাহা শুনিয়া থাকেন, ইহা আমরা জানি। কিন্তু বশ্যতার আত্মা না লইয়া কোন কিছুর জন্য সনির্ব্বন্ধ অনুরোধ করা অসঙ্গত; আমাদের প্রার্থনা আদেশ ব্যঞ্জক না হইয়া অনুরোধ মূলক হওয়া একান্ত আবশ্যক।CCh 594.1

    স্বীয় ঐশ্বরিক শক্তি বলে ঈশ্বর কোন কোন ক্ষেত্রে নিঃসন্দিগ্ধরূপে আরোগ্য করিয়া থাকেন। কিন্তু সকল পীড়িত-ই সুস্থতা লাভ করেন না অনেকেই প্রভুতে নিদ্রিত হন। পাটম্ দ্বীপে বসিয়া যোহনকে লিখিতে আদেশ করা হইয়াছিল :-- “ধন্য সেই মৃতেরা যাহারা একন অবধি প্রভুতে মরে, হাঁ, আত্মা কহিতেছেন তাহারা আপন আপন শ্রম হইতে বিশ্রাম পাইবে, কারণ তাহাদের কার্য্য সকল তাহাদের সঙ্গে সঙ্গে চলে।” প্রকা ১৪ : ১৩। এতদ্দ্বারা আমরা বুঝিতে পারি যে, পীড়িতেরা যদি সুস্থ নাও হন, তথাপি তাঁহাদের সম্বন্ধে এই বিচার করিতে হইবে না যে, তাঁহারা বিশ্বাসে দুর্ব্বল ছিলেন।CCh 594.2

    আমরা সকলেই চাহি, যেন তৎক্ষণাৎ সরাসরিভাবে আমাদের প্রার্থনার উত্তর দেওয়া হয়, এবং যখনই কোন প্রার্থনার উত্তর বিলম্বে কিংবা অপ্রত্যাশিত ভাবে আইসে, তখনই আমরা হতাশ বা নিরাশ হইয়া পড়ি। কিন্তু ঈশ্বর পরম জ্ঞানী ও পরম মঙ্গলময় বলিয়া আমরা, যখনই চাহি এবং যে ভাবে চাহি, তিনি সকল সময়ে সেই ভাবে উত্তর দেন না। আমাদের সকল ইচ্ছা পূর্ণ না করিয়া আমাদের পক্ষে যাহা অধিকতর উত্তম, আমাদের জন্য তাহাই অধিকতর মাত্রায় সাধন করিয়া থাকেন। আর আমারা তাঁহার জ্ঞানে ও প্রেমে নির্ভর করিতে পারি বলিয়া আমাদের প্রার্থনা করা উচিত নহে যে, তিনি আমাদের ইচ্ছা মানিয়া লইবেন, কিন্তু আমাদের কর্ত্তব্য তাঁহার ইচ্ছা কি তাহা বুঝিতে চেষ্টা করা ও তাঁহার ইচ্ছা সাধন করা। তাঁহারই ইচ্ছায় আমাদের আকাঙক্ষা ও স্বার্থাদি বিসর্জ্জন দেওয়া বিধেয়। এই সকল অভিজ্ঞতা দ্বারা আমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা হইয়া থাকে, সে গুলি আমাদের মঙ্গলের জন্যই ঘটিয়া থাকে। আমাদের বিশ্বাস সত্য এবং অকপট কি না, আমরা একমাত্র ঈশ্বরের বাক্যে নির্ভর করি কি না, অথবা অবস্থা বিশেষের উপরে নির্ভর করিতেছি না কি এবং আমাদের বিশ্বাস অনিশ্চিত ও পরিবর্ত্তনীয় না কি, এই সকলের দ্বারা তাহাই প্রকাশিত হয়। ব্যাবহারের দ্বারা বিশ্বাসের বৃদ্ধি সাধন হয়। যাহারা প্রভুর অনুসরণ করে এবং তাঁহার অপেক্ষায় থাকে, শাস্ত্রে তাহাদের জন্য যে সকল অমূল্য প্রতিজ্ঞা রহিয়াছে সে গুলি স্মরণে রাখিয়া ধৈর্য্যকে সিদ্ধ কার্য্য বিশিষ্ট হইতে দেওয়া আমাদের অবশ্য কর্ত্তব্য।CCh 594.3

    এই সকল মূলনীতি সকলেই যে বুঝে, এমন নহে। যাহারা প্রভুর আরোগ্য-দায়ক অনুগ্রহের ভিখারী তাহাদের মধ্যে অনেকে মনে করে যে, তাহাদের প্রার্থনার উত্তর তৎক্ষণাৎ ও সরাসরি ভাবে পাওয়া আবশ্যক; তাহা না হইলে বুঝিতে হইবে যে, তাহাদের বিশ্বাসে গলদ্ রহিয়াছে। এই নিমিত্ত যাহারা ব্যাধি প্রযুক্ত দুর্ব্বল, তাহাদিগকে জ্ঞানপূর্ব্বক পরামর্শ দিতে হইবে, যেন তাঁহারা বুদ্ধি পূর্ব্বক কার্য্য করিতে পারে। তাহাদের মৃতুর পর যে সকল বন্ধু বাঁচিয়া থাকিতে পারে, তাহাদের উদাসীন হওয়া কিংবা স্বাস্থ্য পুনঃপ্রাপ্তির নিমিত্ত প্রকৃতির নিয়মকানুনের আশ্রয় লইতে অবহেলা করা কর্ত্তব্য নহে।CCh 595.1

    এই বিষয়ে অনেকে প্রায়ই ভুল করিয়া থাকে। প্রার্থনার উত্তরস্বরূপে তাঁহারা সুস্থ হইবে, এই বিশ্বাসে কেহ কেহ এমন কোন কিছু করিতে ভীত হয়, যাহাতে তাহাদের বিশ্বাসের দুর্ব্বলতা প্রকাশিত হইতে পারে। কিন্তু তাহরা যদি মৃত্যু দ্বারা অপসারিত হইতে চাহিত, তাহা হইলে তাহারা যে ভাবে তাহাদের বিষয় কর্ম্ম ঠিক্ ঠাক্ করিয়া রাখিয়া যাইত, সেই ভাবে সকল কিছু ঠিক্ করিতে তাহাদের বিন্দুমাত্র অবহেলা করা কর্ত্তব্য নহে। অথবা মহা প্রস্থানের সময়ে তাহারা তাহাদের প্রিয়গণের নিকটে যে উৎসাহ অথবা উপদেশ বাক্য বলিতে ইচ্ছা করে, তাহা বলিতে ভীত হওয়া উচিত নহে।CCh 595.2

    যাহারা প্রার্থনা দ্বারা সুস্থ হইতে চাহে, তাহাদের কর্ত্তব্য, প্রাপ্তব্য প্রতিষেধক ঔষধ ব্যবহারে অবহেলা না করা। বেদনা উপশমের ও স্বাস্থ্য পুনঃপ্রাপ্তির জন্য প্রাকৃতিতে ঈশ্বর যে সকল রোগ নিবারক ঔষধ রাখিয়াছেন, সে গুলি ব্যবহার করিলে বিশ্বাস অস্বীকার করা হয় না। ঈশ্বরের সহিত সহযোগিতা রক্ষা করিলে ও আরোগ্যলাভের অনুকূলে সে গুলি নির্দ্দেশ করিলে তাহাতে বিশ্বাস অস্বীকার করা হয় না। জীবনের নিয়ম-কানুন সম্বন্ধে জ্ঞান লাভার্থে ইশ্বর আমাদিগকে ক্ষমতা দিয়াছেন। এই জ্ঞান আমাদের নাগালের মধ্যে রাখা হইয়াছে, যেন আমরা উহা উপযুক্ত ভাবে ব্যবহার করিতে পারি। স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের নিমিত্ত প্রকৃতির নিয়মাদির সহিত সামঞ্জস্য রক্ষা করতঃ প্রত্যেকটী সম্ভব্য সুযোগের সদ্ব্যবহার করিয়া প্রতিটী সুবিধা জনক উপায় কার্য্যে খাটান আমাদের অবশ্য কর্ত্তব্য। পীড়িতের স্বাস্থ্য লাভের জন্য যখন প্রার্থনা করি, তখন আমরা অধিকতর শক্তির সহিত কার্য্য করিতে পারি এবং ঈশ্বরের ধন্যবাদ দিতে পারি যে, আমরা ঈশ্বরের সহিত কার্য্য করিবার সুযোগ প্রাপ্ত হইয়াছি ; আর আমরা ঈশ্বর-দত্ত উপায়ের বা ঔষধের উপরে তাঁহার আশীর্ব্বাদ যাচ্ঞা করিতে পারি।CCh 596.1

    ঈশ্বরের বাক্যে রোগ-নিবারক ঔষধ ব্যাবহারের অনুমতি রহিয়াছে। ইস্রায়েলরাজ হিষ্কিয় পীড়িত হইলে ঈশ্বরের এক ভাববাদী তাঁহার নিকটে এই বার্ত্তা লইয়া উপস্থিত হইয়াছিলেন যে, তিনি মরিবেন। তাহাতে রাজা সদাপ্রভুর কাছে ক্রন্দন করিলে, সদাপ্রভু তাঁহার দাসের ক্রন্দন শুনিলেন, এবং তাঁহার কাছে এই বার্ত্তা পাঠাইলেন যে, তাঁহার আয়ু পনর বৎসর বৃদ্ধি করা যাইবে। ঈশ্বর কেবল মাত্র একটী বাক্যেই হিষ্কিয়কে তৎক্ষণাৎ সুস্থ করিতে পারিতেন ; কিন্তু তাহা না করিয়া এই বিশেষ আদেশ দেওয়া হইল, --- “ডুমুর ফলের চাপ লইয়া ছেঁচিয়া স্ফোটকের উপরে দেওয়া হউক, তাহাতে তিনি বাঁচিবেন।” ( যিশাইয় ৩৮ : ২১)।CCh 596.2

    পীড়িতের সুস্থতার জন্য যখন আমরা প্রার্থনা করি, তখন ফলাফল যাহাই হউক না কেন, আমরা যেন কখনও ঈশ্বরে বিশ্বাস না হারাই। আমাদের যদি বিরহ বেদনা ভোগ করিতে হয়, তাহা হইলে আমাদের প্রেমময় পিতার হস্তই উক্ত তিক্ত-পান-পাত্র আমাদের ঔষ্ঠাধরে ধরিয়াছেন, ইহা স্মরণে রাখিয়া আমরা যেন বিনা বচসায় উহা গ্রহন করি। কিন্তু স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার হইলে আমরা যেন ভুলিয়া না যাই যে, স্বাস্থ্য-অনুগ্রহ-প্রাপ্ত ব্যক্তি সৃষ্টিকর্ত্তার নিকটে নব বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ। দশজন কুষ্ঠী শুচিকৃত হইলে কেবল একজন যীশুকে গৌরব প্রদান করিতে আসিয়া-ছিল। যে নয় জনের হৃদয় ঈশ্বরের অনুগ্রহে আর্দ্র হয় নাই, আমাদের কেহই যেন তাহাদের মত না হই। “সমস্ত উত্তম দান ও সমস্ত সিদ্ধ বর উপর হইতে আইসে, জ্যোতির্গণের সেই পিতা হইতে নামিয়া আইসে, যাহাতে অবস্থান্তর কিংবা পরিবর্ত্তন জনিত ছায়া হইতে পারে না।” (যাকোব ১ : ১৭)CCh 597.1

    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents